Class12 Education Half Yearly Suggestion 2024-25 Pdf Download

Class12 Education Half Yearly Suggestion 2024-25 Pdf Download
Class12 Education Half Yearly Suggestion 2024-25 Pdf Download  “Stay Ahead of the Curve: Education Class 12 Suggestion 2024 -25 !
As the Class 12 half-yearly examinations approach, students and parents alike are gearing up for a crucial milestone in the academic journey. Scoring well in these exams sets the stage for a successful board exam performance. To ease your preparation and ensure you’re well-prepared, we’ve compiled a comprehensive Education Class 12 Suggestion 2024 -25 PDF Download.
This valuable resource outlines essential topics, key concepts, and likely questions, helping you focus your study sessions and maximize your scores. In this blog post, we’ll guide you through the benefits and usage of our half-yearly suggestion PDF, ensuring you’re confidently equipped to tackle the upcoming exams.
Download your Education Class 12 Suggestion 2024 -25 PDF now and embark on a strategic study plan that guarantees success!”
Feel free to modify it according to your needs!

Class12 Education Half Yearly Suggestion 2024-25 Pdf Download

Class 12 শিক্ষা ও দর্শন একটি পূর্ণাঙ্গ বাক্যে উত্তর দাও: প্রতিটি প্রশ্নের মান-১  ১। Class 12 Education Half Yearly Suggestion 2024-25 PDF Download. Title: Class 12 Education Half Yearly Suggestion 2024-25 PDF Download. ২। যোগ বলতে কী বোঝায় ? উত্তর: যোগ বলতে চিত্তবৃত্তি নিরোধকে বোঝায়। ৩৷ ‘Educere’ শব্দের অর্থ কী? উত্তর: ‘Educere’ শব্দের অর্থ হল নিষ্কাশন করা বা নির্দেশনারমধ্য দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। ৪। জ্ঞানই হল শ্রেষ্ঠ গুণ (Knowledge is the greatest virtue) একথা কে বলেছেন? উত্তর: জ্ঞানই হল শ্রেষ্ঠ গুণ (Knowledge is the greatest) একথা বলেছেন সক্রেটিস। ৫। দর্শন শাস্ত্র কী? উত্তর: যে শাস্ত্র সমগ্রভাবে জগৎ ও জীবনের প্রকৃতি ব্যাখ্যা ও তার মূল্যায়ন করেন তাকে দর্শন নামে চিহ্নিত করা হয়। ৬। প্রমাজ্ঞান কাকে বলে? উত্তর: যে জ্ঞানকে সরাসরি উপলব্ধি করা যায় তাকে বলে প্রমাজ্ঞান। ৭। ‘Educatum’ শব্দের অর্থ কী? উত্তর: ‘Educatum’ শব্দের অর্থ হল শিক্ষাদান। ৮। ন্যায় দর্শনের প্রথম প্রবক্তা কে ছিলেন ? উত্তর: ন্যায় দর্শনের প্রথম প্রবক্তা ছিলেন মহর্ষি গৌতম। ৯। যোগ দর্শনের প্রতিষ্ঠাপক কে? উত্তর: যোগ দর্শনের প্রতিষ্ঠাপক হলেন মহর্ষি পতঞ্জলি। ১০। শিক্ষার প্রধান দুটি মেরু কী কী? উত্তর: শিক্ষার প্রধান দুটি মেরু হল – শিক্ষার্থী ও শিক্ষক। ১১। ‘Pragmatism’ শব্দের অর্থ কী? উত্তর: ‘Pragmatism’ শব্দের অর্থ হল প্রয়োগবাদ। ১২। চিত্তবৃত্তি কাকে বলে? উত্তর: চিত্তের পরিণাম বা বিকারকে চিত্তবৃত্তি বলে। ১৩। ‘Philosophy শব্দটির অর্থ কী? উত্তর: ‘Philosophy’ শব্দটির অর্থ হল জ্ঞানের প্রতি অনুরাগ বা ভালোবাসা। ১৪। ভাববাদী দার্শনিকদের মতে শিক্ষার উদ্দেশ্য কী? উত্তর: ভাববাদী দার্শনিকদের মতে ব্যক্তিত্বের পরিপূর্ণতাই হল শিক্ষার উদ্দেশ্য। ১৫। প্রত্যভিজ্ঞজ্ঞ কাকে বলে? উত্তর: প্রত্যভিক্ষা হল কোনো বস্তুকে পূর্ব পরিচিত বস্তু বলে চিনতে পারা। ১৬। যুক্তিবিদ্যা অভিন্ন।”— একথা কে বলেছেন? উত্তর: “দর্শন ও যুক্তিবিদ্যা অভিন্ন।” একথা বলেছেন হেগেল। ১৭। অপ্রমাজ্ঞান কাকে বলে? উত্তর:যে জ্ঞান সরাসরি উপলব্ধি করা যায় না তাকে বলে অপ্রমাজ্ঞান। ১৮। কে সর্বপ্রথম ‘Philosophy’ শব্দটি ব্যবহার করেন? উত্তর: পিথাগোরাস সর্বপ্রথম ‘philosophy’ শব্দটি ব্যবহার করেন। ১৯। ইংরেজি ‘Pragmatism’ শব্দটি কোন্ শব্দ থেকে এসেছে? উত্তর: ইংরেজি ‘pragmatism’ শব্দটি গ্রিক শব্দ থেকে ‘pragma’ থেকে এসেছে। ২০। “Republic” গ্রন্থটির লেখক কে? উত্তর: “Republic”গ্রন্থটির লেখক প্লেটো। ২১। সা বিদ্যা যা বিমুক্তয়ে” – কথাটির অর্থ কী? উত্তর: “সা বিদ্যা যা বিমুক্তয়ে”— কথাটির অর্থ হল যা মানুষকে মুক্তিলাভে সহায়তা করে, সেই হল বিদ্যা। ২২। দর্শন ও শিক্ষা হচ্ছে একই মুদ্রার দুটি দিক”-কে বলেছেন? উত্তর: “দর্শন ও শিক্ষা হচ্ছে একই মুদ্রার দুটি দিক” বলেছেন জেমস ফ্রান্সিস। ২৩। ইংরেজি ‘philosophy’ শব্দটি কোন্ দুটি গ্রিক্ শব্দ থেকে উদ্ভূত হয়েছে? – উত্তর: ইংরেজি ‘philosophy’ শব্দটি দুটি গ্রিক্ শব্দ ‘philos’ এবং ‘Sophia’ থেকে উদ্ভূত হয়েছে। ২৪। শিক্ষা হল দর্শনের গতীয় অভিব্যক্তিকে বলেছেন? উত্তর: ‘শিক্ষা’ হল দর্শনের গতীয় অভিব্যক্তি বলেছেন জন অ্যাডামস। ২৫। কার মতবাদে প্রথম ভাববাদের সূত্রপাত হয় ? উত্তর: গ্রিক দার্শনিক অ্যানাস্কাগোরাস-এর মতবাদে প্রথম ভাববাদের সূত্রপাত হয়। ২৬প্রয়োগবাদের কয়টি শাখা ও কী কী? উত্তর: : প্রয়োগবাদের তিনটি শাখা। যথা— মানবতাবাদী, পরীক্ষামূলক ও জীববৈজ্ঞানিক। ২৭। যতদিন বাঁচি, ততদিন শিখি”—উক্তিটি কার? উত্তর: “যতদিন বাঁচি, ততদিন শিখি”— উক্তিটি রামকৃয় পরমহংসদেব-এর। ২৮। দর্শনের প্রাচীনতম শাখাটির নাম কী? উত্তর: ভাববাদ। ২৯। প্রয়োগবাদদর্শনের জনন কাকে বলা হয়? উত্তর: চার্লস পিয়ার্স। ৩০। শিক্ষাশব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ কী? উত্তর: ‘শিক্ষা’ শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হল মানুষের জ্ঞান অর্জনের ক্ষমতা বা অভিজ্ঞতা লাভের কৌশলকে নিয়ন্ত্রণ করা। ৩১। আধুনিক অর্থে শিক্ষা কী? উত্তর: আধুনিক অর্থে শিক্ষা হল শিশু বা ব্যক্তির জীবনবিকাশের প্রচেষ্টাকে সহায়তা করার প্রক্রিয়া। ৩২। বৈদিক যুগে শিক্ষার প্রকৃতি কীরুপ ছিল? উত্তর: বৈদিক যুগে শিক্ষার প্রকৃতি ছিল আত্মজ্ঞান ও আত্মোপলব্ধি। ৩৩। ন্যায় দর্শনের প্রথম প্রবক্তা কে ছিলেন? উত্তর: ন্যায় দর্শনের প্রথম প্রবক্তা ছিলেন মহর্ষি গৌতম। ৩৪। ন্যায় দর্শনের আকর গ্রন্থ কোন্‌টি? উত্তর: ন্যায় দর্শনের আকর গ্রন্থ হল মহর্ষি গৌতম প্রণীত ‘ন্যায়সূত্র’। ৩৫। দর্শন হল সত্যের প্রতি অনুরাগ।”— একথা কে বলেছেন? উত্তর: “দর্শন হল সত্যের প্রতি অনুরাগ।”— একথা বলেছেন মারভিন। ৩৬। প্রকৃতবাদের মুখ্য প্রবক্তা কে ছিলেন? উত্তর: প্রকৃতবাদের মুখ্য প্রবক্তা হলেন রুশো। ৩৭। শিক্ষাশব্দটি সংস্কৃতি কোন ধাতু থেকে এসেছে? উত্তর: শিক্ষা শব্দটি সংস্কৃত ‘শিক্ষ্’ ধাতু থেকে এসেছে যার অর্থ হল শৃঙ্খলিত করা বা নিয়ন্ত্রিত করা বা নির্দেশনা দেওয়া। মহান পাশ্চাত্য শিক্ষাবিদগণ ১। ফ্রয়েবেল করে জন্মগ্রহণ করেছিলেন? উত্তর: 1782 সালের 21 এপ্রিল ফ্রয়েবেল জার্মানিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ২। প্রথম ইটালিয় মহিলা চিকিৎসক কে ছিলেন? উত্তর: মারিয়া মন্তেসরি। ৩।  ফ্রয়েবেল করে কিন্ডারগার্টেন বিদ্যালয়টি স্থাপন করেন? উত্তর: ফ্রয়েবেল 1837 সালে কিন্ডারগার্টেন বিদ্যালয়টি স্থাপন করেন। ৪। ‘Children’s House’ নামক বিদ্যালয়টি কে কবে প্রতিষ্ঠাতা করেন? উত্তর:‘Children’s House’নামক বিদ্যালয়টি 1907 খ্রিস্টাব্দে মারিয়া মন্তেসরি প্রতিষ্ঠা করেন। ৫। কে, কবে রোমে কাসা দাই বামবিনি (Casa dei Bamban) প্রতিষ্ঠা করেন? উত্তর: মারিয়া মন্তেসরি, 1907 সালে রোমে কাসা দাই বামবিনি প্রতিষ্ঠা করেন। ৬। ফ্রয়েবেল শিশুর শিক্ষায় কোন্ নীতি গ্রহণ করেছিলেন? উত্তর: ফ্রয়েবেল শিশুর শিক্ষায় ‘আত্মবিকাশ’ এবং ‘স্বাধীন বিকাশে’র নীতি গ্রহণ করেছিলেন। ৭। ‘House of Children’ অপর কী নামে পরিচিত? উত্তর: ‘House of Children”কাসা দাই বামবিনি’ নামে পরিচিত। ৮। কিন্ডারগার্টেন শব্দের অর্থ কী? উত্তর: কিন্ডারগার্টেন শব্দের অর্থ হল শিশু উদ্যান। ৯। শিশুর স্বাধীনতাকেই প্রথম ও শেষ বলে গুরুত্ব প্রদান করেছেন কে? উত্তর: মারিয়া মন্তেসরি। ১০। শিশুকে শিক্ষা দিতে হলে প্রথমেই তার ইন্দ্রিয়কে কীসের জন্য প্রশিক্ষণ দিতে হবে? উত্তর: শিশুকে শিক্ষা দিতে হলে প্রথমেই তার ইন্দ্রিয়কে অভিজ্ঞতা গ্রহনের জন্য প্রশিক্ষণ দিতে হবে। ১১। শিক্ষণ পদ্ধতিতে স্বাধীনতার নীতি (Principal of Freedom) প্রয়োগ করেছেন কে? উত্তর:শিক্ষণ পদ্ধতিতে স্বাধীনতার নীতি (Principal of Freedom) প্রয়োগ করেছেন মারিয়া মন্তেসরি। ১২ফ্রয়েবেল কীভাবে শিশুদের শিক্ষা দেওয়ার কথা বলেছেন? উত্তর:ফ্রয়েবেল সাতটি মায়ের গান ও পঞ্চাশটি খেলার গানের মাধ্যমে শিশুদের শিক্ষা দেওয়ার কথা বলেছেন। ১৩। ঐক্য ও সুখ সামঞ্জস্যের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ কী? উত্তর: ঐক্য ও সুখ সামঞ্জস্যের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ হল গোলক। ১৪। পেস্তালৎসির মতে শিক্ষা কী? উত্তর: পেস্তালৎসির মতে শিক্ষা হল মানুষের সহজাতক্ষমতাগুলির স্বাভাবিক, সুসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং ক্রমোন্নয়নমূলক বিকাশ। ১৫। কিন্ডারগার্টেনের প্রবর্তক কে? উত্তর: কিন্ডারগার্টেনের প্রবর্তক হলেন ফ্রয়েবেল। ১৬ কে বিদ্যালয়কে “Epitome of the World” (বিশ্বের ক্ষুদ্র সংস্করণ) বলেছেন? উত্তর: ফ্রয়েবেল/বিদ্যালয় কে “Epitome of the World” (বিশ্বের ক্ষুদ্র সংস্করণ) বলেছেন। ১৭। মারিয়া মন্তেসরির মতে শিক্ষার লক্ষ্য কী? উত্তর: মন্তেসরির মর্তে শিক্ষার লক্ষ্য হল শিশুর অভ্যন্তরীণ সম্ভাবনার বিকাশ সাধন। ১৮। “The Education of Man” বইটি লেখক কে? উত্তর: “The Education of Man”বইটির লেখক হলেন ফ্রয়েবেল। করেছিলেন? ১৯। বস্তুভিত্তিক পাঠদান (Object lesson) কে উদ্ভাবন করেছিলেন? উত্তর: বস্তুভিত্তিক পাঠদান (Object lesson) উদ্ভাবন করেছিলেন জোহান হেনরিক পেস্তালৎসি। ২০। ‘Emile’ গ্রন্থটি প্রকাশিত হয় উত্তর: ‘Emile’ গ্রন্থটি প্রকাশিত হয় 1762 সালে। ২১। শিশুকে স্বাধীনতা দাওএকথা কে বলেছেন? উত্তর: “শিশুকে স্বাধীনতা দাও” বলেছেন রঁশো। ২২। রুশো কী বিষয়ে ‘The first of my misortunes’ কথাটি বলেন? উত্তর: রঁশো তাঁর মাতার অকস্মাৎ মৃত্যু বিষয়ে ‘The first of my misfortues’ কথাটি বলেন। ২৩। রঁশো তাঁর এমিল’ (Emile) গ্রন্থে যে দুটি কাল্পনিক চরিত্রের কথা বলেছেন, তাদের নাম কী ? উত্তর: রঁশো তাঁর ‘এমিল’ (Emile) গ্রন্থে যে দুটি কাল্পনিক চরিত্রের কথা বলেছেন, তার নাম —এমিল (ছেলে) এবং সোফি (মেয়ে)। ২৪। ফ্রয়েবেলের শিক্ষণ পদ্ধতির মূল কথা কী ? উত্তর: ফ্রয়েবেলের শিক্ষণ পদ্ধতির মূল কথা হল— শিশুকে তার মনোধর্মী অনুযায়ী শিক্ষা দিতে হবে। ২৫। ডিডাকটিক অ্যাপারেটাস্কী? উত্তর: মারিয়া মন্তেসরি বিদ্যালয়ে যে যান্ত্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষা দেওয়া হয়, তাকে বলে ‘ডিডাকটিক অ্যাপারেটাস্’। ২৬।প্রকৃতির মধ্যে ফিরে যাও।‘ (Back to Nature) উক্তিটির বক্তা কে? উত্তর: ৱুশো। ২৭। ফ্রয়েবেলের মতে শিশু ও শিক্ষকের মধ্যে সম্পর্ক কেমন হবে? উত্তর: ফ্রয়েবেলের মতে শিশুরা হল উদ্যানের চারাগাছ এবং শিক্ষক হবেন মালি। ২৮। ফ্রয়েবেলের মতে শিক্ষার মূল মাধ্যম কী? উত্তর: ফ্রয়েবেলের মতে খেলাই শিক্ষার মূল মাধ্যম। ২৯। শিক্ষার জন্য ফ্রয়েবেল কয়টি ধারণার কথা বলেছেন ও কী কী? উত্তর: শিক্ষার জন্য ফ্রয়েবেল দুটি ধারণার কথা বলেছেন। যথা— উপহার(Gift) এবং হাতের কাজ(Occupation)। ৩০। মারিয়া মন্ডেসরি কবে জন্মগ্রহণ করেন? উত্তর: 1870 সালের 31 আগস্ট মারিয়া জন্মগ্রহণ করেন। ৩১। রঁশোর মতে শিক্ষার লক্ষ্য কী? উত্তর: শিশুর অন্তর্নিহিত সামর্থ্যের বিকাশ সাধনই হবে শিক্ষার লক্ষ্য। ৩২। রুশোর লেখা এমিল’ (1762) নামক গ্রন্থে মোট কয়টি খণ্ড ছিল? উত্তর: রুশোর লেখা ‘এমিল’ (1762) নামক গ্রন্থে মোট পাঁচটি খণ্ড ছিল। ৩৩। ‘Othello’ নামক গ্রন্থটি কার লেখা। উত্তর: রুশোর (1778 সালে 22 জুলাই)। ৩৪। আধুনিক শিশুকেন্দ্রিক শিক্ষার জনক কে? উত্তর: আধুনিক শিশুকেন্দ্রিক শিক্ষার জনক হলেন রুশো। ৩৫।‘Emile’ এই গ্রন্থটি কে লিখেছেন? উত্তর: ‘Emile’ এই গ্রন্থটি লিখেছেন জ্যাঁ জ্যাকুইস রঁশো। ৩৬|’কাসা দাই বামবিনিকথার অর্থ কী? উত্তর: ‘কাসা দাই বামবিনি’ কথার অর্থ হল ‘শিশুদের জন্য গৃহ’ বা ‘শিশুনিকেতন’। ৩৭ | “Discourse on the Arts and Scionce” গ্রন্থটি কার লেখা? উত্তর: রুশো-এর। ৩৮ফ্রয়েবেলের মতে শিক্ষার লক্ষ্যকী? উত্তর: ফ্রয়েবেলের মতে শিক্ষার লক্ষ্য হল বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের মধ্যে যে আধ্যাত্মিক ঐক্য বিদ্যমান তাকে উপলব্ধি করা। শিক্ষার মনোবৈজ্ঞানিক দিকসমূহ | সৃজনশীলতা শব্দটির সাধারণ অর্থ কী? উত্তর: সৃজনশীলতা শব্দটির সাধারণ অর্থ হল নতুন কিছু সৃষ্টি করার ক্ষমতা। ২। IQ-এর পুরো নাম কী? উত্তর: IQ-এর পুরো নাম Intelligence Quotient | সৃজনশীলতার দুটি উপাদানের উল্লেখ করো। উত্তর: সৃজনশীলতার দুটি উপাদান হল – এবং (ii) নমনীয়তা। – (i) সাবলীলতা | উডওয়ার্থের মতে বুদ্ধি কী? উত্তর: উডওয়ার্থের মতে, বুদ্ধি হল এমন তাকে কাজে লাগানো হয়। ৫। বুদ্ধি বলতে মনোবিদ উড্রো কী বুঝিয়েছেন? উত্তর: মনোবিদ উড্রো ‘বুদ্ধি’ বলতে বিশেষ সামর্থ্য অর্জনকরার ক্ষমতাকে বুঝিয়েছেন। | বুদ্ধির পরমাণুবাদ তত্ত্ব বা Anarchic Theoryটি কার? উত্তর: বুদ্ধির পরমাণুবাদ তত্ত্ব বা Anarchic Theory থর্নডাইকের। ৭। প্রেষণা কাকে বলে? উত্তর: প্রেষণা হল এমন এক দীর্ঘস্থায়ী প্রবণতা যা ব্যক্তিকে উদ্দেশ্যমুখী আচরণে উদ্বুদ্ধ করে। অথবা, উদ্দেশ্যের দ্বারা প্রণোদিত হলে যে সক্রিয় বা গভীর অবস্থার সৃষ্টি হয় তাকে প্রেষণা বলে। | প্রেষণা সৃষ্টির মূলে কী থাকে? উত্তর: প্রেষণা সৃষ্টির মূলে থাকে কোনো অভাববোধ বা চাহিদা ০৯। প্রেষণা শব্দটির ইংরেজী প্রতিশব্দ কী? উত্তর: প্রেষণা শব্দটির ইংরেজী প্রতিশব্দ হল Motivation. ১০। প্রেষণার মূল উৎস কী? উত্তর: প্রেষণার মূল উৎস চাহিদা। ১১। প্রেষণা চক্র কী? উত্তর: প্রাণীর জীবনে অভাববোধ, তাড়না, সহায়ক, লক্ষ্য—প্রেষনার এই চারটি স্তর পর্যায়ক্রমে চক্রাকারে আবর্তিত হয়, একেই প্রেষণা চক্র বলে। ১২। থার্স্টোন ক্ষমতা সংক্রান্ত কোন্ তত্ত্বটি প্রচার করেন? উত্তর: থার্স্টোন ক্ষমতা সংক্রান্ত বহু উপাদান তত্ত্বটি প্রচার করেন। ১৩। বুদ্ধির গ্রুপ ফ্যাক্টর তত্ত্বের প্রবক্তা কে? উত্তর: বুদ্ধির গ্রুপ ফ্যাক্টর তত্ত্বের প্রবক্তা হলেন থার্স্টোন। ১৪। সহগতি সহগাঙ্ক কাকে বলে? উত্তর: সহগতির পরিমাণকে যে সংখ্যামান দ্বারা প্রকাশ করা হয়, তাকে সহগতির সহগাঙ্ক বলে। ১৫বংশধারা কাকে বলে? উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় পিতা-মাতার চারিত্রিক গুণাবলি বংশপরম্পরায় সন্তান-সন্ততির সঞ্চালিত হয়, তাকে বলে বংশধারা। ১৬। সহজাত বা জন্মগত বৈষম্যের মূলে কীসের প্রভাব লক্ষ করা যায় ? উত্তর: সহজাত বা জন্মগত বৈষম্যের মূলে বংশধারার প্রভাব লক্ষ করা যায়। ১৭। সাবলীলতা (Fluency) কী ? উত্তর: স্বাধীন প্রচেষ্টাবিহীন এবং সহজে চিন্তা করার ক্ষমতাই হল সাবলীলতা (Fluency) । ১৮। সৃজনশীলতার বিকাশে শিক্ষকের একটি ভূমিকা লেখো। উত্তর: শিক্ষার্থীরা যাতে গঠনমূলক কল্পনার ব্যবহার করতে শেখে সে ব্যাপারে শিক্ষিককে যত্ন নিতে হবে। ১৯।‘Movers’/’Moveers’ শব্দটির অর্থ কী? উত্তর: ‘Movers’/‘Moveers’ শব্দটির অর্থ হল To move অর্থাৎ চলা। ২০। ব্যক্তিগত বৈষম্যের আধুনিক শিক্ষায় ফলশ্রুতি কী? উত্তর: আধুনিক শিক্ষায় ব্যক্তিগত বৈষম্যের দ্বারা শিশুর সামর্থ্যভি ত্তিক শিক্ষার ধারণা সৃষ্টি হয়। ২১৷ বুদ্ধি কী জাতীয় ক্ষমতা? উত্তর: মানসিক ক্ষমতা। ২২। বুদ্ধাঙ্ক পরিমাপের সূত্রটি কী? উত্তর: বুদ্ধ্যাঙ্ক (l.Q) = ব্যক্তির মানসিক বয়স (M.A) ব্যক্তির সাধারণ বয়স (C.A)×100 ২৩। সৃজনশীলতা‘ (Creativityকোন্ শব্দ থেকে এসেছে? উত্তর: ‘সৃজনশীলতা’ (Creativity) কথাটি ল্যাটিন শব্দ ‘creare’ থেকে এসেছে। ২৪। বুদ্ধি সম্পর্কিত স্পিয়ারম্যানের তত্ত্বটির নাম কী? উত্তর: বুদ্ধি সম্পর্কিত স্পিয়ারম্যানের তত্ত্বটির নাম দ্বি-উপাদান তত্ত্ব। ২৫। সৃজনশীলতার প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ উপাদান কী? উত্তর: সৃজনশীলতার প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল সাবলীলতা বা fluency ২৬। মানসিক বয়স-সংক্রান্ত ধারণার জনক কে? উত্তর: মানসিক বয়স-সংক্রান্ত ধারণার জনক হলেন আলফ্রেড বিনে। ২৭। সৃজনশীলতা কীসের দ্বারা পরিচালিত হয় ? উত্তর: সৃজনশীলতা ব্যক্তির কৌতূহলী চিন্তন দ্বারা পরিচালিত হয়। ২৮। GMA-এর পুরো নাম কী? উত্তর: GMA-এর পুরো নাম হল General Mental Ability ২৯। বুদ্ধির একটি বৈশিষ্ট্য লেখো। উত্তর: বুদ্ধি হল মৌলিক মানসিক ক্ষমতা। ৩০৷ ‘Ametrical scale of Intelligence”-বইটি কার লেখা? এটি কবে প্রকাশিত হয়? উত্তর: ‘A metrical scale of Intelligence”-বইটি মনোবিদ বিনে ও তাঁর সহকর্মী সাইমন যৌথভাবে লেখেন। এটি 1905 সালে প্রকাশিত হয়। ৩১। ব্যক্তিগত বৈষম্যকে প্রধানত কয়টি ভাগে ভাগ করা যায় এবং সেগুলি কী কী? উত্তর: ব্যক্তিগত বৈষম্যকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা—(i) সহজাত বৈষম্য ও (ii) অর্জিত বৈষম্য। ৩২। বুদ্ধির একককে কী বলে? উত্তর: বুদ্ধির একককে IQ বা Intelligence Quotient বা বুদ্ধ্যাঙ্ক। ৩৪। বুদ্ধির অভীক্ষা কাকে বলে? উত্তর: বুদ্ধি পরিমাপ করার জন্য যে সব কৌশল অবলম্বন করা হয় তাকে বলা হয় বুদ্ধির অভীক্ষা। ৩৫। দ্বি-উপাদান তত্ত্বের অপর নাম কী? উত্তর: দ্বি-উপাদান তত্ত্বের অপর নাম ইলেকট্রিক থিয়োরি ( Electric Theory) ৩৬। G-উপদান কী? উত্তর: G-উপদান হল সাধারণ মানসিক ক্ষমতা (General Factor)। ৩৭। দ্বি-উপাদান তত্ত্বের প্রবক্তা কে? উত্তর: দ্বি-উপাদান তত্ত্বের প্রবক্তা হলেন— চার্লস স্পিয়ারম্যান ৩৮। ‘Abilities of man’ নামক গ্রন্থটির লেখক কে? উত্তর: ‘Abilities of man’ গ্রন্থটির লেখক স্পিয়ারম্যান। ৩৯। স্পিয়ারম্যানের মানসিক ক্ষমতা সংক্রান্ত মতবাদটি কী নামে পরিচিত? উত্তর: স্পিয়ারম্যানের মানসিক ক্ষমতা সংক্রান্ত মতবাদটি ‘দ্বি-উপাদান তত্ত্ব’ নামে পরিচিত। ৪০। S-উপাদান কী? উত্তর: S-উপদান হল বিশেষ মানসিক ক্ষমতা (Specific Factor)। ৪১। দলগত বা বহু উপাদান তত্ত্বের প্রবক্তা কে? উত্তর: দলগত বা বহু উপাদান তত্ত্বের প্রবক্তা হলেন— এল. এল. থার্স্টোন। ৪২| “Creativity”কথাটি কোন্ শব্দ থেকে এসেছে? উত্তর: “Creativity”কথাটি ল্যাটিন শব্দ ‘Creare’ (ক্রিয়ারে) থেকে এসেছে। যার অর্থ ‘to create, make’. ৪৩। বুদ্ধি হল বিমূর্ত চিন্তন করার ক্ষমতা”—কে বলেছেন উত্তর: “বুদ্ধি হল বিমূর্ত চিন্তন করার ক্ষমতা”—বলেছেন মনোবিদ ট্যারম্যান। ৪৪। ব্যক্তিগত বৈষম্য কত প্রকার ও কী কী? উত্তর: ব্যক্তিগত বৈষম্য দুই প্রকার, যথা— সহজাত ও অর্জিত। ৪৫| প্রেষণা কত প্রকার ও কী কী? উত্তর: প্রেষণা মূলত দুই প্রকার, যথা—(i) অন্তর্জাত প্রেষণা ও (ii) বহির্জাত প্রেষণা। ৪৬। ‘Creare’ এর অর্থ কী? উত্তর: ‘Creare’ এর অর্থ হল ‘to create, make’ ৪৭। থার্স্টোর্ন-এর মতে, বুদ্ধি কী? উত্তর: থার্স্টোর্ন-এর মতে, বুদ্ধি হল প্রচেষ্টা ও ভুলের মাধ্যমে জীবনযাপনের ক্ষমতা। ৪৮| বুদ্ধি কয় প্রকার ও কী কী? উত্তর: বুদ্ধি তিন প্রকার, যথা— বিমূর্ত বুদ্ধি, মূর্ত বুদ্ধি এবং সামাজিক বুদ্ধি। শিক্ষার বিভিন্ন বিষয় সমূহ | সহপাঠ্যক্রমিক কার্যাবলির গতানুগতিক নাম কী ছিল? উত্তর: সহপাঠ্যক্রমিক কার্যাবলির গতানুগতিক নাম বহি: পাঠ্যক্রমিক কার্যাবলি। | বিদ্যালয়ে প্রশাসনমূলক সহপাঠক্রমিক কাজের একটি উদাহরণ দাও। উত্তর: বিদ্যালয়ে প্রশাসনমূলক সহপাঠক্রমিক কাজের একটি | উদাহরণ হল ক্যাপ্টেন বা মনিটরের কাজ। | সহপাঠক্রমিক কার্যাবলিকে কী কী ভাগে ভাগ করা হয়? উত্তর: তিনভাগে – শরীরচর্চামূলক, বিশেষ শিক্ষামূলক এবং সামাজিক কার্যাবলি। ৪। অনাবৃত স্কুল বলতে কী বোঝো? উত্তর: বিদ্যালয়ের খেলার মাঠকে ‘অনাবৃত স্কুল’ বলা হয়। ৫। কান্ট অন্তর্জাত শৃঙ্খলাকে কী আখ্যা দিয়েছেন? উত্তর: কান্ট অন্তর্জাত শৃঙ্খলাকে ‘ইচ্ছার স্বায়ত্তশাসন নামে আখ্যা দিয়েছেন। ৬। শৃঙ্খলার আধুনিক ধারণার প্রবর্তক কে? উত্তর: শৃঙ্খলার আধুনিক ধারনার প্রবর্তক হলেন রুশো। ৭। সর্বাঙ্গীন বিকাশকথার অর্থ কী? উত্তর: শিক্ষার্থীর দৈহিক, মানসিক, প্রাক্ষোভিক, সামাজিক, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক বিকাশ ইত্যাদি। ৮। অন্তর্জাত শৃঙ্খলাকে কী নামে অভিহিত করা হয়? উত্তর: অন্তর্জাত শৃঙ্খলাকে আত্মশৃঙ্খলা নামে অভিহিত করা হয় ৯। ছবি আঁকাকোন্ ধরনের সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির উদাহরণ দাও। উত্তর: ‘ছবি আঁকা’ সৃজনাত্মক সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির উদাহরণ। ১০। সহপাঠক্রমিকের একটি উদ্দেশ্য উল্লেখ করো। উত্তর: শিক্ষার্থীর আত্মবিশ্বাস এবং আত্মনির্ভরশীলতার বিকাশ ঘটানো। ১১। শরীরচর্চামূলক সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির কয়েকটি উদাহরণ দাও। উত্তর: শরীরচর্চামূলক সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির কয়েকটি উদাহরণ হল ব্যায়াম, খেলাধূলা ইত্যাদি। ১২। আধুনিক শিক্ষাবিদদের মতে শৃঙ্খলা কী? উত্তর: আধুনিক শিক্ষাবিদদের মতে, স্বত: :স্ফূর্তভাবে শিক্ষার্থীর অন্তর থেকে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার স্পৃহার তাড়নায় যে আত্মনিয়ন্ত্রণ তা-ই হল শৃঙ্খলা। ১৩। বহির্জাত শৃঙ্খলার অপর নাম কী ? উত্তর: বহির্জাত শৃঙ্খলার অপর নাম কৃত্রিম বা নেতিবাচক শৃঙ্খলা বা বাহ্যিক শৃঙ্খলা। ১৪। প্রাকৃতিক ফলাফলের তত্ত্বের শৃঙ্খলা বা মুক্ত শৃঙ্খলার জনক কে? উত্তর: প্রাকৃতিক ফলাফলের তত্ত্বের ভিত্তিতে শৃঙ্খলা বা মুক্ত শৃঙ্খলার জনক হলেন প্রকৃতিবাদী দার্শনিক ও শিক্ষাবিদ রুশো। ১৫| মনেবৈজ্ঞানিক দিক থেকে মূল্যবোধ কী? উত্তর: মনোবৈজ্ঞানিক দিক থেকে মূল্যবোধ হল জটিল এবং চূড়ান্ত পর্যায়ের আচরণ। ১৬। দুটি সহ পাঠক্রমিক কাজের উদাহরণ দাও। উত্তর: দুটি সহ পাঠক্রমিক কাজের উদাহরণ হল ব্যায়াম, আবৃত্তি। ১৭। মূল্যবোধবা ‘value’ শব্দটির আক্ষরিক অর্থ কী? উত্তর: ‘মূল্যবোধ’ বা ‘value’ শব্দটির আক্ষরিক অর্থ হল নির্বাচনের যোগ্যতা। ১৮। শৃঙ্খলা গঠনে সহায়তা করে এমন দুটি সহপাঠক্রমিক কাজের নাম লেখো। উত্তর: শৃঙ্খলা গঠনে সহায়তা করে এমন দুটি সহপাঠক্রমিক কাজ হল ব্রতচারী ও এন.সি.সি.। ১৯। শৃঙ্খলার ভিত্তি কী? উত্তর: শৃঙ্খলার ভিত্তি হল মানবতাবাদ। ২০। অন্তর্জাত শৃঙ্খলা আর কী কী নামে পরিচিত? উত্তর: অন্তর্জাত শৃঙ্খলা আর যে যে নামে নামে পরিচিত সেগুলি হল— মুক্ত শৃঙ্খলা, ইতিবাচক শৃঙ্খলা, স্বয়ং শৃঙ্খলা, স্বাভাবিক – শৃঙ্খলা। ২১| সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির একটি উপযোগিতা উল্লেখ করো। উত্তর: সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির একটি উপযোগিতা হল শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণতান্ত্রিক চেতনার বিকাশ ঘটায়। ২২। সর্বাঙ্গীন বিকাশকথার অর্থ কী? উত্তর: শিক্ষার্থীর দৈহিক, মানসিক, প্রাক্ষোভিক, সামাজিক,নৈতিক ও আধ্যাত্মিক বিকাশ ইত্যাদি। ২৩। প্রাচীন ধারণা অনুযায়ী শৃঙ্খলা কী? উত্তর: প্রাচীন ধারণা অনুযায়ী ‘শাসন’ বা ‘দমন’ই হল শৃঙ্খলা। ২৪। মূল্যবোধের উৎস কী? উত্তর: মূল্যবোধের উৎস হল জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতা অথবা বিভিন্ন পারিবেশিক অবস্থা এবং জীবন-জগৎ সম্পর্কে ধারণা। ২৯। দুটি সৃজনাত্মক কার্যাবলির উদাহরণ দাও। উত্তর: দুটি সৃজনাত্মক কার্যাবলির উদাহরণ হল অভিনয় ও অঙ্কন। ৩০| অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা কী? উত্তর: যে শৃঙ্খলাবোধ ব্যক্তির অন্তরে জাগ্রত হয় এবং যা ব্যক্তির ইচ্ছাপ্রসূত, তাকে অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা বলে। শিক্ষার মনোবৈজ্ঞানিক দিকসমূহ ১। প্রেষণার স্তরগুলি কী কী? উত্তর: প্রেষণার স্তরগুলি হল— (i) ব্যক্তিমনের অভাববোধ বা চাহিদা (Need), (ii) তাড়না (Drive), (iii) নির্বাচিত আচরণ(Selected Behaviour), (iv) লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য (Goal)। প্রেষণা বিশ্লেষণ করলে চারটি গুরুত্বপূর্ণ স্তর লক্ষ করা যায়। এই স্তরগুলি চক্রাকারে আবর্তিত হয়ে প্রেষণাচক্র সম্পন্ন করে। ২।সহজাত বৈষম্য কাকে বলে? উত্তর: শিশু জন্মের সময় তার পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে যে বৈশিষ্ট্য পেয়ে থাকে বংশ ধারায় পার্থক্য অনুযায়ী সহজাত বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যেও পার্থক্য দেখা যায়, একেই সহজাত বৈষম্য বলে। যেমন ফর্সা বাবা-মায়ের সন্তানগণ ফর্সা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ৩। ব্যক্তিগত বৈষম্যের কারণগুলি উল্লেখ করো। উত্তর: ব্যক্তিগত বৈষম্যের কারণগুলি হল – বংশগতি, পরিবেশ, জাতিগত প্রভেদ, লিঙ্গগত প্রভেদ, সামাজিক অবস্থার ভিন্নতা, অর্থনৈতিক অবস্থার ভিন্নতা, বিকাশের হারের বিভিন্নতা, ব্যক্তিত্ব ইত্যাদি। ৪। ক্ষমতা বা সক্ষমতা বা সামর্থ্য (Ability) কাকে বলে? উত্তর: প্রকৃতপক্ষে কোনো কাজ দক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করার পেছনে যে বৈশিষ্ট্য বা গুণ কাজ করে তাই হল ক্ষমতা বা সক্ষমতা বা সামর্থ্য। সুতরাং ক্ষমতা বলতে বোঝায় কাজ করার শক্তি, যা প্রতিটি মানুষের ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র। ৫। সৃজনশীলতার বিকাশে শিক্ষকের দুটি ভূমিকা উল্লেখ করো। উত্তর: সৃজনশীলতার বিকাশে শিক্ষকের দুটি ভূমিকা হল—  (i) কল্পনা প্রসারের সুযোগ : শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতার বিকাশের জন্য তাদের কল্পনার প্রসারের সুযোগ ও উৎসাহ দিতে হবে। (ii) আগ্রহ অনুযায়ী কাজের সুযোগ: বিদ্যালয়ের গতানুগতিক শিক্ষাসূচির বাইরে যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের আগ্রহঅনুযায়ী কাজ করতে পারে তারজন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ ও উপকরণের আয়োজন রাখতে হবে। ৬। সৃজনশীলতার উপাদানগুলি লিখ। উত্তর: সৃজনশীলতার উপাদানগুলি হল – (i) সাবলীলতা – (Fluency)। (ii) নমনীয়তা (Flexibility)। (iii) মৌলিকত্ব (Originality) এবং (iv) বিস্তৃতি (Elaboration)। ৭। সৃজনশীলতার সংজ্ঞা দাও? উত্তর: সৃজনশীলতা হল অপসারী চিন্তন ক্ষমতার সঙ্গে যুক্ত কতগুলি বৌদ্ধিক ও ব্যক্তিগত বৈশিষ্ঠ্যের সমন্বয়, যাদের সমবেত প্রভাবে ব্যক্তি তার কর্মফলে সম্পূর্ণভাবে অভিনবত্ব প্রকাশ করে। ৮।শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যক্তিগত বৈষম্যের দুটি প্রভাব উল্লেখ করো। উত্তর: শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যক্তিগত বৈষম্যের দুটি প্রভাব হল—  (i) শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত বৈষম্য সম্পর্কে ধারণা: প্রত্যেক শিক্ষকের উচিত তাদের শিক্ষার্থীদের দক্ষতা, আগ্রহ, প্রবণতা, ব্যক্তিত্বের সংরক্ষণ ইত্যাদি সম্পর্কে সুনিশ্চিত ধারণা গঠন করা এবং জ্ঞানকে ভিত্তি করে তাদেরকে সেইভাবে শিক্ষাদান করা। | (ii) বহুমুখী পাঠক্রম অনুসরণ : ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে পার্থক্য | রয়েছে তাই সকল শিক্ষার্থী একইরকম পাঠক্রম থেকে উপকৃত হতে পারে না। তাই শিক্ষকের উচিত ব্যক্তিগত বৈষম্যের | ভাবনাকে মনে রেখে শিক্ষার্থীর আগ্রহ, প্রবণতা, ক্ষমতা অনুযায়ী বহুমুখী পাঠক্রম গড়ে তোলা। ৯। বুদ্ধ্যাঙ্ককী? উত্তর: 1916 খ্রিস্টাব্দে টারম্যান বুদ্ধির সংখ্যামান নির্ণয়ের জন্য প্রথম বুদ্ধ্যাঙ্কের ব্যবহার করেন। কোনো শিক্ষার্থীর বা ব্যক্তির মানসিক বয়সকে সাধারণ বয়স দিয়ে ভাগ করলে যে ভাগফল পাওয়া যায়, সেই সংখ্যাই ওই শিক্ষার্থীর বা ব্যক্তির বুদ্ধ্যাঙ্ক। বুদ্ধ্যাঙ্ক (IQ) =  x 100 তবে সুবিধার জন্য ভাফলকে 100 দিয়ে গুণ করা হয়। ১০।সাধারণ মানসিক ক্ষমতা বা বুদ্ধি বলতে কী বোঝায়? উত্তর: যে সহজাত বা জন্মগত মানসিক ক্ষমতা বা শক্তি সবরকম বৌদ্ধিক কাজ করতে কাজে লাগে এবং যা পরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে ব্যক্তিকে মানিয়ে নিতে সাহায্য করে তাকে সাধারণ মানসিক ক্ষমতা বা বুদ্ধি বলে। ১১। সৃজনশীলতা কথাটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ লিখ? উত্তর: ‘সৃজনশীলতা’ শব্দটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ ‘Creare’ (ক্রিয়ারে) থেকে। যার অর্থ হল, to create, make’| সৃজনশীলতা শব্দটির সাধারণ অর্থ হল নতুন কিছু সৃষ্টি করার ক্ষমতা। Education Class 12 Suggestion 2024 -25 শিক্ষার বিভিন্ন বিষয়সমূহ 1.সহপাঠ্যক্রমিক কার্যাবলি বলতে কী বোঝো এবং এর একটি উদাহরণ দাও। উত্তর: যে সমস্ত কার্যাবলি শিক্ষার্থীর বৌদ্ধিক বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে তার সর্বাঙ্গীন বিকাশে সহায়তা করে তাকে বলা হয় সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি। অর্থাৎ শিক্ষার্থীরা যথাযথ এবং সর্বাঙ্গীন বিকাশের জন্য শ্রেণিকক্ষের ভেতরে এবং বাইরে,পুঁথিগত বিদ্যা ছাড়া, যেসকল কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা অংশ গ্রহণ করে, সেইগুলিকেই বলা হয় ‘সহপাঠ্যক্রমিক কার্যাবলি’। যেমন— আবৃত্তি, অভিনয়, নাচ, গান,বিতর্ক, চিত্রাঙ্কন প্রভৃতি। 2.সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো। উত্তর(i) সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি শিক্ষার্থীর সর্বাঙ্গীন বিকাশে সহায়তা করে।এবং (ii) সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি শিক্ষার্থীর একঘেয়েমি দূর করতে সাহায্য করে। 3.সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির দুটি উপযোগিতা উল্লেখ করো। উত্তর: সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির দুটি উপযোগিতা হল – (i) সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি শিক্ষার্থীদের শারীরিক বিকাশে সহায়তা করে। (ii) শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণতান্ত্রিক চেতনার বিকাশ ঘটায়। 4.সৃজণাত্মক সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি বলতে কী বোঝো? উত্তর:নির্দিষ্ট পাঠক্রমের বাইরে নৃত্যগীত,সাহিত্যচর্চা, বক্তৃতা, অভিনয় প্রভৃতি কার্যাবলিতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর ব্যক্তিত্বের বিকাশ হয়ে থাকে এসব কার্যাবলিকে সৃজণাত্মক সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি বলে।এই সমস্ত সৃজণাত্মক কাজ একদিকে যেমন শিক্ষার্থীর উৎসাহ,দক্ষতা প্রভৃতির বিকাশ ঘটায়, অন্যদিকে নান্দনিক দিকেরও বিকাশ ঘটায়। 5.সামাজিক মূল্যবোধ বিকাশের তিনটি মৌলিক উপাদান কী কী? উত্তর: সামাজিক মূল্যবোধ বিকাশের তিনটি মৌলিক উপাদান হল– (i) সংস্কৃতি, (ii) আচরণধারা এবং (iii) জ্ঞান বা শিক্ষা। 6.শিক্ষাক্ষেত্রে সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি এত গুরুত্বপূর্ণ কেন? উত্তর: সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির মাধ্যমে বিকাশমান শিক্ষার্থী ভবিষ্যৎ সমাজের যোগ্য নাগরিক রূপে আত্মনির্ভরশীল হয়ে গড়ে উঠতে পারে। এর সাহায্যে বিদ্যালয় পরিবেশটি শিক্ষার্থীর কাছে সহজ, সরল ও সজীব হয়ে উঠে। 7.দুটি সৃজণাত্মক সহপাঠক্রমিক কাজের নাম লেখো। উত্তর: দুটি সৃজনাত্মক সহপাঠক্রমিক কাজ হল (i) বৌদ্ধিক সৃজনাত্মক কাজ: বিতর্কসভা, সেমিনার,তাৎক্ষণিক বক্তৃতা ইত্যাদিতে অংশগ্রহণ। (ii) নান্দনিক সৃজণাত্মক কাজ : মৃৎশিল্প, খোদাই শিল্প, নাচ,গান ইত্যাদি। 8.সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি একঘেয়েমি দূর করতে কীভাবে সাহায্য করে? উত্তর:সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় জীবনের গতানুগতিকতা থেকে মুক্তি দেয়। তত্ত্বগত ও বাঁধাধরা পাঠক্রমের মাঝে কিছু বৈচিত্র্য আসে। এর ফলে একঘেয়েমি কেটে গিয়ে বিদ্যালয়ের প্রতি তাদের আকর্ষণ বৃদ্ধি পায় এবং তারা লেখাপড়ায় মনোযোগী হয়। 9.শৃঙ্খলা বলতে কী বোঝো? উত্তর: কতকগুলি নিয়মানীতি মেনে চলাই হল শৃঙ্খলা স্বতঃস্ফূর্তভাবে শিক্ষার্থীর অন্তর থেকে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার যে স্পৃহার প্রকাশ পায় তাই হলো শৃঙ্খলা। 10.স্বতঃস্ফূর্ত শৃঙ্খলা মুক্ত শৃঙ্খলা বা আত্মশৃঙ্খলা বলতে কী বোঝো? উত্তর: যে শৃঙ্খলা ব্যক্তি ভেতরে থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে আসে , যে ক্ষেত্রে বাইরে থেকে কোনো প্রকার বিধিনিষেধ ব্যক্তির ওপর চাপিয়ে দেওয়া বা আরোপ করা হয়না, ব্যক্তি স্বেচ্ছায় সবরকম নিয়মনীতি মেনে চলতে চেষ্টা করে,তাকে মুক্ত শৃঙ্খল বা আত্মশৃঙ্খল বলে । 11.অন্তর্জাত শৃঙ্খলা বলতে কী বোঝো? উত্তর: যখন কোনো কাজ করার সময় শিক্ষার্থী কারও প্ররোচনা বা শাসন ছাড়াই  স্বতঃপ্রণোদিতভাবে কতকগুলি সুনির্দিষ্ট নিয়মকানুন মেনে চলে এবং নিজের ওপর বিধি নিষেধের অনুশাসন আরোপ করে, তখন তার মধ্যে যে শৃঙ্খলা দেখা দেয় তাকে অন্তর্জাত শৃঙ্খলা বলা হয়। 12.স্বাধীনতা কী? স্বাধীনতা কয় প্রকার ও কী কী? উত্তর: স্বাধীনতা হল মানুষের এক ধরনের অধিকার বা ক্ষমতা,যা তাকে নিজের ইচ্ছানুসারে কোনো কিছু করতে, বলতে বা চিন্তা করতে সহায়তা করে।স্বাধীনতা দু প্রকারের হতে পারে।যথা-(ক)প্রকৃত স্বাধীনতা ও(খ)কৃত্রিম স্বাধীনতা। 13.মুক্ত শৃঙ্খলা বা আত্মশৃঙ্খলা বলতে কী বোঝো? উত্তর: যে শৃঙ্খলা ব্যক্তি ভেতরে থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে আসেবা উৎসারিত হয়, যে ক্ষেত্রে বাইরে থেকে কোনো প্রকারবিধিনিষেধ ব্যক্তির ওপর চাপিয়ে দেওয়া বা আরোপ করা হয়না, ব্যক্তি স্বেচ্ছায় সবরকম নিয়মনীতি মেনে চলতে চেষ্টা করে,তাকে মুক্ত শৃঙ্খল বা আত্মশৃঙ্খল বলে । 14.মূল্যবোধ কী? উত্তর: সাধারণভাবে বলা যায়, জীবন বিকাশের পথে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতাসূত্রে এবং ব্যক্তিগত চাহিদা ও সামাজিক রীতিনীতির মধ্যে যে জীবনদর্শ গড়ে ওঠে তাকে মূল্যবোধ বলে। সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন (SA-II) প্রশ্নমান 3 অধ্যায়-২: পাশ্চাত্য শিক্ষাবিদগণ 1.শিক্ষক সম্পর্কে রুশোর ধারণা ব্যক্ত করো। উত্তর: রুশো তাঁর শিক্ষানীতিতে শিক্ষকের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করলেও তার উপর গতানুগতিক দায়িত্ব আরোপ করেননি।তিনি বলেছেন; শিক্ষক হবেন পরিপূর্ণভাবে শিক্ষিত এবং প্রাকৃতিক শিক্ষানীতিতে আস্থাবান, তার মধ্যে সেবামূলক মনোভাব থাকবে। তিনি শিক্ষার্থীর জীবন বিকাশের দায়িত্ব নিঃস্বার্থভাবে গ্রহণ করবেন। রুশোর মতে, শিক্ষকের ভূমিকা হবে পরিচালকের; বন্ধুর ও পথ পদর্শকের।তিনি শিক্ষার্থীর নিত্য সহচর হয়ে তার জীবন উপযোগী বিভিন্ন পরিবেশ রচনা করবেন। শিক্ষক হবেন শিক্ষার্থীর পর্যবেক্ষণ, উদ্ভাবন, সমন্বয় সাধনের সময় উপযুক্ত পথ পদর্শক। তাঁর মতে শিক্ষকের কাজ এবং শিশুকে আগ্রহ সঞ্চার করনো এবং শিশু নিজে থেকেই তা শিখবে। শিশু পরীক্ষা নিরীক্ষার মধ্যে দিয়ে শিখবে ও প্রকৃত জ্ঞান লাভ করবে।শিক্ষক জোর করে কিছু শিখাবেনা। 2.কিন্ডারগার্টেনপদ্ধতির কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো উত্তর: প্রসিদ্ধ জার্মান শিক্ষাবিদ ফ্রয়েবেল প্রবর্তিত কিন্ডারগার্টেন পদ্ধতির কয়েকটি বৈশিষ্ট্য হল— (i)শিশু বিভিন্ন খেলাধুলা,নাচ, গান, ছড়া, আবৃত্তি ও আত্মসক্রিয়তার মাধ্যমে শিক্ষালাভ করবে। (ii)ইন্দ্রিয় পরিমার্জনা হল এই পদ্ধতির একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য। শিশুদের ইন্দ্রিয় পরিমার্জনার জন্য ফ্রয়েবেল কতকগুলি উপহার (Gifts) এবং কাজ (Occupation) এর প্রচলন করেছেন। (iii) এই পদ্ধতিতে শিশু বিভিন্ন ছড়া, গান-এর মাধ্যমে শিক্ষালাভ করবে। (iv)সবশেষে, প্রকৃতি পরিচয় (Na-ture Study) এই পদ্ধতির একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য। শিশু স্বাধীনভাবে চলাফেরা ও সক্রিয়তার মাধ্যমে বিশ্বপ্রকৃতির সাথে পরিচিত হবে। 3.গিফটস ও অকুপেশন সম্পর্কে আলোচনা করো। উত্তর: ফ্রয়েবেল শিশুর আত্ম সক্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে ইন্দ্রিয় পরিমার্জনার উপায় খুঁজতে গিয়ে তাঁর প্রতিষ্ঠিত শিক্ষালয়ে নিম্নলিখিত কৌশল দুটিকে শিক্ষাদানের কৌশলে হিাবে ব্যবহার করেন। গিফটস(Gifts) : শিক্ষাবিদ ফ্রয়েবল কর্তৃক উদ্ভাসিত কতকগুলি খেলনার নাম ‘Gift’। তাঁর মতে এই খেলনাগুলি জগতের প্রতীক এবং এগুলির প্রতি খুব সহজে শিশু আকৃষ্ট হয়। নানা আকৃতির কাঠোর এই টুকরো, কাঠি, তুলো, সুতো, নানা আকৃতির রঙিন উলের বল— এগুলি হল উপহার বা Gift, ছোটো শিশুরা এই আকর্ষণীয় খেলনাগুলি নিয়ে স্বাধীনভাবে খেলতে খেলতেই আকৃতি, রং, আয়তন প্রভৃতি সম্পর্কে ধারণা লাভ করবে। অকুপেশন (Occupation): ফ্রয়েবল খেলার সাথে কাজের সার্থক সমন্বয় করে যে, কৌশলটির উল্লেখ করলেন তার নাম বৃত্তি, এগুলি অনেক বেশি সৃজনাত্মক, কাদামাটি দিয়ে জিনিস তৈরি করা, কাগজের ফুল তৈরি করা, খেলাই করা প্রভৃতি কাজের অকৃত্রিম আনন্দ লাভের মধ্য দিয়ে। কাজের সঙ্গে একাত্ম হয়ে বিশ্ব জগৎ সম্পর্কে ধীরে ধীরে জানা যায় 4.কিন্ডারগার্টেনপদ্ধতির কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো উত্তর: প্রসিদ্ধ জার্মান শিক্ষাবিদ ফ্রয়েবেল প্রবর্তিত কিন্ডারগার্টেন পদ্ধতির কয়েকটি বৈশিষ্ট্য হল— (i)শিশু বিভিন্ন খেলাধুলা,নাচ, গান, ছড়া, আবৃত্তি ও আত্মসক্রিয়তার মাধ্যমে শিক্ষালাভ করবে। (ii)ইন্দ্রিয় পরিমার্জনা হল এই পদ্ধতির একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য। শিশুদের ইন্দ্রিয় পরিমার্জনার জন্য ফ্রয়েবেল কতকগুলি উপহার (Gifts) এবং কাজ (Occupation) এর প্রচলন করেছেন। (iii) এই পদ্ধতিতে শিশু বিভিন্ন ছড়া, গান-এর মাধ্যমে শিক্ষালাভ করবে। (iv)সবশেষে, প্রকৃতি পরিচয়(Na-ture Study) এই পদ্ধতির একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য। শিশু স্বাধীনভাবে চলাফেরা ও সক্রিয়তার মাধ্যমে বিশ্বপ্রকৃতির সাথে পরিচিত হবে। শিক্ষার বিভিন্ন বিষয়সমূহ 1.সহপাঠ্যক্রমিক কার্যাবলির যেকোনো তিনটি উদ্দেশ্য লেখো। উত্তর: সহপাঠ্যক্রমিক কার্যাবলি রূপায়ণের ক্ষেত্রে শিক্ষাবিজ্ঞানীরা কয়েকটি উদ্দেশ্যের কথা বলেছেন। এগুলির মধ্যে তিনটি উদ্দেশ্য হল— (i) দৈহিক বা শারীরিক বিকাশ: বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা, শরীরচর্চা, ব্রতচারী, বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজ, NCC প্রশিক্ষণ, NSS-এর বিভিন্ন কর্মসূচি ইত্যাদি সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির অন্তর্ভুক্ত। এগুলি নিয়মিত চর্চার ফলে শিক্ষার্থীর শারীরিক বিকাশ ঘটে। যেমন— অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পুষ্ট হয়, দেহের প্রতিটি অংশে রক্ত সঞ্চালিত হয় এবং দেহের বৃদ্ধি ঘটে। এরফলে শিক্ষার্থী সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয় অর্থাৎ শিক্ষার্থীর দৈহিক বিকাশ ঘটে। (ii) মানসিক বিকাশ : সুস্থ দেহ সুস্থ মনের অধিকারী। শিক্ষার্থীর দৈহিক বিকাশ যথাযথ হলে তার প্রভাব মনের ওপর পড়ে।তবে বিভিন্ন ধরনের সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি বা কাজ, যেমন—অভিনয়, বিতর্ক,আলোচনা, খেলাধুলা, গানবাজনা, আবৃত্তি, পত্রিকা প্রকাশনা, আলপনা দেওয়া, চিত্রাঙ্কন প্রভৃতি শিক্ষার্থীর মানসিক বিকাশে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। (iii) সামাজিক বিকাশ: বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা শিক্ষালাভের জন্য আসে। বিদ্যালয়ে বিভিন্ন প্রকারের সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির মাধ্যমে, যেমন – NSS, NCC, অভিনয়, সমাজসেবামূলক কাজ ইত্যাদি শিক্ষার্থীকে সমাজজীবনের উপযোগী করে তোলা হয়। অর্থাৎ সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির মাধ্যমে শিক্ষার্থীর সামাজিক বিকাশ ঘটে থাকে। 2.মূল্যবোধ কী? শিক্ষাবিদগণ শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যেসকল মূল্যবোধ বিকাশের কথা বলেছেন তা উল্লেখ করো। উত্তর : মূল্যবোধ : মূল্যবোধ বা Value’ শব্দটির আক্ষরিক অর্থ হল—নির্বাচনের যোগ্যতা। সাধারণভাবে বলা যায়, জীবন বিকাশের পথে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতাসূত্রে এবং ব্যক্তিগত চাহিদা ও সামাজিক রীতিনীতির মধ্যে যে জীবনাদর্শ গড়ে ওঠে, তার সঙ্গে সংবেদন অনুভূতির সম্পর্ক তৈরি হলে, তাকেই মূল্যবোধ (Value) বলে।। শিক্ষাবিগণ শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যেসকল মূল্যবোধ বিকাশের কথা উল্লেখ করেছেন, সেগুলি হল- (i) দৈহিক ও বিনোদনমূলক মূল্যবোধ, (ii) অর্থনৈতিক মূল্যবোধ, (iii) সামাজিক মূল্যবোধ, (iv) বৌদ্ধিক মূল্যবোধ,(v) সৌন্দর্যের মূল্যবোধ এবং (vi) ধর্মীয় মূল্যবোধ ইত্যাদি। 3. অন্তর্জাত শৃঙ্খলা সম্বন্ধে সংক্ষেপে আলোচনা করো। উত্তর: যখন কোনো কাজ করার সময় শিক্ষার্থী স্বত:প্রণোদিতভাবে কতকগুলি সুনির্দিষ্ট নিয়মকানুন মেনে চলে কারও প্ররোচনা বা শাসন ছাড়াই শিক্ষার্থী কাজটিতে নিজের আন্তরিক প্রচেষ্টা নিয়োগ করে এবং নিজেই পরিস্থিতির প্রয়োজনীয় নির্দেশগুলি নিজের ওপর বিধি-নিষেধের অনুশাসন আরোপ করে, তখন তার মধ্যে যে শৃঙ্খলা দেখা দেয় তাকে অন্তর্জাত শৃঙ্খলা বলা হয়। এই অন্তর্জাত শৃঙ্খলা বিভিন্ন নামে পরিচিত। যথা— স্বাভাবিক শৃঙ্খলা, আত্মশৃঙ্খলা, আস্তিবাচক শৃঙ্খলা, মুক্তশৃঙ্খলা ইত্যাদি। অন্তর্জাত শৃঙ্খলার ক্ষেত্রে ব্যক্তির আচরণের ওপর বিদ্যালয়, শিক্ষক পরিচালক, কোনো ব্যক্তি বা কারও কোনো নিয়ন্ত্রণ বা হস্তক্ষেপ থাকে না। অন্তর্জাত শৃঙ্খলা শিক্ষার্থীর স্বাধীন ও মুক্ত প্রচেষ্টা থেকে দেখা দেয় এবং শিক্ষার্থী নিজের আগ্রহ ও প্রেরণায় শৃঙ্খলার নিয়মকানুন মেনে চলে। বস্তুত সমস্ত নতুন সৃষ্টির মূলে আছে এই অন্তর্জাত শৃঙ্খলা। এই জাতীয় শৃঙ্খলাই হল প্রকৃত শৃঙ্খলা। এই জাতীয় শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে ব্যক্তির সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটে। তাই অন্তর্জাত শৃঙ্খলাকে আত্মশৃঙ্খলা বলা হয়। 4.আন্তর্জাত শৃঙ্খলা এবং বহির্জাত শৃঙ্খলা মধ্যে পার্থক্য লিখ? উত্তর:

Education Class 12 Suggestion 2024 -25  রচনাধর্মী প্রশ্ন (LA-I) প্রশ্নমান 4

 

1.প্রজেক্ট পদ্ধতি কাকে বলে? প্রজেক্ট পদ্ধতি যে চারটি স্তরের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয় সেগুলো সম্পর্কে লিখ?

উত্তর: শিক্ষার্থীদের সমস্যাভিত্তিক কর্মনির্বাচনের স্বাধীনতা দিয়ে, সামাজিক উপযোগিতামূলক কর্মসম্পাদনে উৎসাহিত করে, স্বাভাবিক কর্মপরিস্থতিতে যে শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করা হয়, তাই হল প্রজেক্ট পদ্ধতি।অর্থাৎ প্রজেক্ট পদ্ধতির মূল কথা হল জীবনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কোনো সমস্যার সমাধানের সূত্র খুঁজে বের করা এবং তার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় জ্ঞান আহরণ করা।

প্রজেক্ট পদ্ধতিতে চারটি স্তরের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হয় :

(১)উদ্দেশ্যস্থাপন: প্রথমত শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের সহযোগিতায় তাদের কাজটি ঠিক করবে এবং সঙ্গে সেই কাজ করলে কি উদ্দেশ্য সাধিত হবে সে সম্পর্কেও তারা আলোচনা করবে।

(২)পরিকল্পনা:দ্বিতীয় স্তরে শিক্ষার্থীরা এবং শিক্ষক কর্মসম্পাদনের বিভিন্ন সম্ভাব্য দিক বিশ্লেষণ করে তার ভিত্তিতে একটি কার্যকরী পরিকল্পনা রচনা করবে।

(৩)সম্পাদন:এই স্তরে শিক্ষার্থীরা তাদের পরিকল্পনা কাজে অগ্রসর হয় এবং কর্মসম্পাদন করে।

(৪)বিচারকরণ:সর্বশেষ স্তরে সমস্যার বা কাজটির ফলাফল বিচার করা হয়, অর্থাৎ যে উদ্দেশ্যের

ভিত্তিতে কাজ শুরু হয়েছিল তার পরিণতিতে কী ফললাভ হয়েছে বা তা কতটুকু সার্থক হয়েছে তা বিচার করে দেখা হয় ।

 

2.আধুনিক শিক্ষায় চার্বাক দর্শনের প্রাসঙ্গিকতা সম্পর্কে  লিখ?

উত্তর: বিভিন্ন বৈদিক দর্শনে এই মতবাদের সমালোচনা করা হলেও চার্বাক দর্শন পরোক্ষে বিভিন্ন দিক থেকে আধুনিক শিক্ষাতত্ত্বকে প্রভাবিত করেছে এবং তা হল নিম্নরূপ:

(১)আধুনিক শিক্ষা শিশুকেন্দ্রিক শিক্ষা। শিশুর অন্তর্নিহিত সত্ত্বার স্বতঃস্ফূর্ত ও সর্বাঙ্গীন বিকাশ সাধনই হল শিক্ষা।শিক্ষাসংক্রান্ত আধুনিক ধারণা অনেকাংশে চার্বাক দর্শন দ্বারা প্রভাবিত একথা স্বীকার করতে হয়।

(২)আধুনিক শিক্ষার লক্ষ্য হল ব্যক্তি ও সমাজের উন্নতিসাধন করা। চার্বাক দর্শনেও অনুরূপ মতামত ব্যক্ত করা হয়েছে।

(৩)চার্বাক দর্শনে বলা হয়েছে, যা প্রত্যক্ষ তাই একমাত্র সত্য অর্থাৎ যা ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য তা সত্য। আর যা ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য নয় তা অসত্য। আধুনিক শিক্ষানীতিতেও জ্ঞানার্জনের ব্যাপারে ইন্দ্রিয়লব্ধ অভিজ্ঞতার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

3.প্রকৃতিবাদ অনুযায়ী শিক্ষার নীতি কীরূপ হবে তা আলোচনা করো।

উত্তর:প্রকৃতিবাদ অনুযায়ী শিক্ষার নীতিগুলো হলো

(i) আত্মপ্রকাশ-উপযোগী শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি: প্রকৃতিবাদীদের মতে, শিক্ষার লক্ষ্য হল ‘আত্মপ্রকাশ এবং আত্মসংরক্ষণ (self preservation)’। শিক্ষার্থীর আত্মপ্রকাশের উপযোগী শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে,যাতে করে সে আত্মসংরক্ষণের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে অবহতি হওয়ার সুযোগ পায়।

(ii) প্রবৃত্তির যথাযথ পরিচালনা ও উন্নতিসাধনের ব্যবস্থা:মানুষের যাবতীয় আচরণের মূলে থাকে প্রবৃত্তির তাড়না।সেই কারণে শিক্ষার নীতি হবে শিক্ষার্থীর প্রবৃত্তিগুলিকে যথাযথ পথে পরিচালিত করার ব্যবস্থা করা।

(iii) অস্তিত্বরক্ষার সংগ্রামের উপযোগী করে গড়ে তোলা: প্রকৃতিবাদ অনুযায়ী শিক্ষার অপর একটি নীতি হল শিশুকে অস্তিত্বরক্ষার সংগ্রামের উপযোগী করে গড়ে তোলা।

(iv) প্রকৃতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ শিক্ষাদানের ব্যবস্থা: প্রকৃতিবাদ অনুযায়ী শিক্ষার নীতি হল জড়প্রকৃতি ও শিক্ষার্থীর প্রকৃতির মধ্যে সংগতিবিধানের মাধ্যমে শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করা। শিক্ষার্থীর প্রবণতা, সামর্থ্য,প্রবৃত্তি ও চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষাপরিকল্পনা করতে হবে।

(v) ব্যক্তিত্বের পরিপূর্ণ বিকাশসাধন: একদল প্রকৃতিবাদী দার্শনিকের মতে, শিক্ষার চরম লক্ষ্য হল শিশুর বা শিক্ষার্থীর ব্যক্তিত্বের পরিপূর্ণ বিকাশসাধন করা।

অধ্যায়-২: পাশ্চাত্য শিক্ষাবিদগণ 1.  রঁশো প্রস্তাবিত পাঠক্রমের ধারণা লেখো। উত্তর:রঁশো প্রস্তাবিত পাঠ্যক্রমে নির্দিষ্ট কতকগুলি বই পড়ানোর যে নিয়ম প্রচলিত ছিল, রঁশো তার ঘোর বিরোধী ছিলেন। রঁশো বলেছেন—“I hate books because they are a curse to children।” (i) প্রাকৃতিক পরিবেশে দৈহিক অনুশীলন: বাল্যকালে (5 বছর বয়স থেকে 12 বছর বয়স অবধি) পাঠক্রমের অন্তর্ভুক্ত বিষয়বস্তু হবে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, ইন্দ্রিয় সঞ্চালনগুলি যাতে পুষ্ট ও সবল হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। (ii) অন্তর্ভূত বৌদ্ধিক ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা : প্রাক্‌কৈশোরকালে (অর্থাৎ 15 বছর বয়স অবধি) শিক্ষার পাঠক্রমে প্রথম বৌদ্ধিক ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা ভাষা, বিজ্ঞান বিষয়, গণিত, হাতেকলমে কাজ, মানবিক সম্পর্কমূলক পাঠ, শিল্প, সংগীত, অঙ্কন প্রভৃতি বিষয়ে পাঠ গ্রহণ করবে। (iii) নির্দিষ্ট লক্ষ্য অনুসরণ: কৈশোরকাল ও তার পরবর্তী পর্যায়ে (অর্থাৎ 24 বছর বয়স অবধি) পাঠক্রমে নির্দিষ্ট লক্ষ্য অনুসরণ করে ইতিহাস, ভূগোল, ধর্মীয় শিক্ষা, নৈতিক শিক্ষা, যৌনশিক্ষা, নান্দনিক শিক্ষা ইত্যাদি বিষয়গুলি পঠনপাঠনের জন্য গৃহীত হবে। 2.  পেস্তালৎসি প্রবর্তিত শিক্ষণ পদ্ধতির কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লেখো। উত্তর: পেস্তালৎসি প্রবর্তিত শিক্ষণ পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য: পেস্তালৎসি প্রবর্তিত শিক্ষণ পদ্ধতির কয়েকটি বৈশিষ্ট্য হল— (i)শিক্ষাদানের কৌশল হবে পর্যবেক্ষণ ও ইন্দ্রিয়ানুভূতি। অর্থাৎ পর্যবেক্ষণ ও ইন্দ্রিয় অনুভূতির মাধ্যমে শিক্ষাপ্রদান করতে হবে। (ii)পেস্তালৎসি জ্ঞানমূলক বিষয়সমূহকে বা  বিষয়বস্তুকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে বিভক্ত করে শিশুর সামনেপরিবেশনের পক্ষপাতী ছিলেন। তিনি ওই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশের নাম দিয়েছেন syllabaries. (iii) পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে ভাষাশিক্ষা প্রদান করতে হবে। অর্থাৎ শিক্ষার্থীদের মূর্ত বস্তুর মাধ্যমে ভাষা শিক্ষা দিতে হবে। (iv)পেস্তালৎসি শ্রেণি শিক্ষণের ক্ষেত্রে বস্তুনির্ভর পাঠদান পদ্ধতির ওপর গুরুত্ব প্রদান করেছেন। (v) পেস্তালৎসির শিক্ষণ পদ্ধতি মনোবিজ্ঞানসম্মত,সমাজবিজ্ঞানসম্মত এবং গণতান্ত্রিক নীতির ওপর ভিত্তি রচিত (vi) শিক্ষণের সময় শিক্ষার্থীর জীবন বিকাশের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে, তথ্য পরিবেশনের ওপর নয়। (vii) শিক্ষণের সময় শিক্ষার্থীদের মতামতের যথাযোগ্য মর্যাদা দিতে হবে, যাতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক সুস্থ ও সুন্দর থাকে। 3 শিক্ষায় রঁশোর অবদান সংক্ষেপে আলোচনা করো উত্তর: জ্যা জ্যাকুইস রঁশো ছিলেন শিক্ষাবিদ, দার্শনিক, লেখক, সুরকার অর্থাৎ অত্যন্ত বহুমুখী প্রতিভাসম্পন্ন। তাঁর শিক্ষা ভাবনার মধ্যে অনেক পরস্পর বিরোধী ভাবনা থাকলেও শিক্ষাক্ষেত্রে তাঁর অবদান সারা পৃথিবীর মানুষের কাছে আজও প্রশংসনীয়। শিক্ষাক্ষেত্রে রঁশোর অবদানগুলি হল— : (i) আধুনিক শিক্ষায় শিশু সর্বাঙ্গীণ বিকাশ  যে নীতিটি মূলমন্ত্র করে তোলা হয়েছে, তা সর্বপ্রথম রুশোর শিক্ষাদর্শনেই পাওয়া যায়। (ii) মনোবৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রবর্তন : রুশোই প্রথম শিক্ষাক্ষেত্রে মনোবৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রবর্তন বা সূত্রপাত করেন। তাঁর মতে, শিশুর নিজস্ব চাহিদা, আগ্রহ, ক্ষমতা ও প্রবণতার ভিত্তিতে সক্রিয়তাভিত্তিক শিক্ষা দিতে হবে। তিনি তাঁর শিক্ষাচিন্তায় ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যকে প্রাধান্য দিয়েছেন। (iii) সক্রিয়তার ওপর গুরুত্ব : রুশো শিশুর শিক্ষার জন্য তার আগ্রহ, প্রবৃত্তি, চাহিদা, সক্রিয়তা ইত্যাদির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির প্রতি আলোকপাত করেছেন। (iv) সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োগ : রুশোই শিক্ষাক্ষেত্রে প্রথম উন্নত সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োগ করেন। তিনি বিভিন্ন সামাজিক গুণের বিকাশ সাধনকে শিক্ষার লক্ষ্য বলে মনে করেন। 4.মন্তেসরি শিক্ষা পদ্ধতি এবং কিন্ডারগার্টেন শিক্ষা পদ্ধতির সাদৃশ্য এবং বৈসাদৃশ্য লেখ 4 মন্তেসরির শিক্ষণ পদ্ধতির মূল তিনটি নীতি আলোচনা করো। (TBSE Final 2023) উত্তর: মাদাম মারিয়া মন্তেসরির শিক্ষণ পদ্ধতি মূল তিনটি নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল। সেগুলি হল— (i) ইন্দ্রিয় পরিমার্জনার নীতি : মন্তেসরি শিক্ষণ পদ্ধতিতে মূলত শিশুর ইন্দ্রিয় পরিমার্জনার বা অনুশীলনের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা রাখা হয়। শিশুরা প্রধানত ইন্দ্রিয়ের সহায়তায় বহির্জগত থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন করে। তাই শিশুকে শিক্ষা দিতে হলে প্রথমেই তার ইন্দ্রিয়কে অভিজ্ঞতা গ্রহণের জন্য প্রশিক্ষণ  দিতে হবে। তিনি এই কারণে বিভিন্ন ধরনের যান্ত্রিক কৌশল আবিষ্কার করেছিলেন সেগুলিকে বলা হয় ‘ডিডকটিক্ অ্যাপারেটাস’ (Didactic Apparatus)। ‘ডিডাকটিক অ্যাপারেটাস্’ গুলির |মধ্যে আছে কাঠের বিভিন্ন আকারের টুকরো, কাগজ, আসবাবপত্র,  পেনসিল, বিভিন্ন রঙের উল, বাক্স, ঘণ্টা, ঘনক ইত্যাদি। (ii) সক্রিয়তার নীতি : মাদাম মারিয়া মন্তেসরি শিক্ষণের ক্ষেত্রের শিক্ষার্থীর সক্রিয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। মন্তেসরি পদ্ধতির শিক্ষায় শিশু কতকগুলি কাজের মধ্য নিজেকে সক্রিয় রাখে। অর্থাৎ শিক্ষায় শিশু সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের দ্বারা শিখবে। (iii) স্বাধীনতার নীতি : মাদাম মারিয়া মন্তেসরি তাঁর শিক্ষণ পদ্ধতিতে স্বাধীনতার নীতি প্রয়োগ করেছেন। এই পদ্ধতিতে শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে শিক্ষিকারা যথাসম্ভব শিশুদের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দেন। পরিশেষে বলা যায় যে, মারিয়া মন্তেসরি শিক্ষণ সংক্রান্ত এই তিনটি নীতিই পরস্পর সম্পর্কযুক্ত এবং শিক্ষণের ক্ষেত্রে তিনটি নীতিই অপরিহার্য। 5 ফ্রয়েবেলের মতে শিক্ষকের ধারণাটি লেখো। উত্তর:ফ্রয়েবেলের মতে শিক্ষকের ধারণা: হুঁশোর প্রকৃতিবাদী শিক্ষাভাবনায় শিক্ষকের গুরুত্বকে উপেক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু ফ্রয়েবেল শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষকের গুরুত্বপূর্ণ দায়দায়িত্বের কথা উল্লেখ করেছেন। উপযুক্ত ও সার্থক পরিবেশ রচনা: ফ্রয়েবেলের মতে, শিশুরা হল বাগানের চারাগাছ, আর শিক্ষকরা হলেন মালি। শিক্ষকের কাজ হল শিশুকে সুস্থ ও সুন্দরভাবে বিকশিত হতে সাহায্য করা এবং শিশুর যথাযথ বিকাশের জন্য উপযুক্ত ও সার্থক পরিবেশ রচনা করা। ঐক্য উপলব্ধিতে সাহায্য: ফ্রয়েবেল বলেছেন, শিক্ষক প্রথাগতভাবে জ্ঞান বিতরণ করবেন না কিন্তু শিশুর আত্মসক্রিয়তাকে সুনির্দিষ্ট পথে পরিচালিত করবেন। শিশুর মধ্যে যথাসম্ভব আগ্রহ সৃষ্টি করে বিশ্বের সঙ্গে ঐক্য উপলব্ধিতে তিনি সাহায্য করবেন। সার্বিক বিকাশে সহায়তা দান: ফ্রয়েবেলের মতে, শিক্ষক হবেন শিশুর বন্ধু, সাথি, পথপ্রদর্শক দাদা অথবা দিদির মতো। শিক্ষক এখানে হিতকারী সর্বাধ্যক্ষ, যিনি শিশুর সার্বিক বিকাশে সহায়তা করবেন।
Class12 Education Half Yearly Suggestion 2024-25 Pdf Download

Class12 Education Half Yearly Suggestion 2024-25 Pdf Download

অধ্যায়-৩: শিক্ষার মনোবৈজ্ঞানিক দিকসমূহ

1.ব্যক্তিগত বৈষম্যের চারটি কারণ আলোচনা কর?
উত্তর: ব্যাক্তিগত বৈষম্যের কারণসমূহ: ব্যক্তিগত বৈষম্যের বহু কারণ রয়েছে। এখানে কতগুলি কারণ উল্লেখ করা হল— (i) বংশগতি: বিভিন্ন মনোবিজ্ঞানীগণ ব্যক্তিগত বৈষম্যের মূল কারণ হিসেবে বংশগতিকেই দায়ী করেছেন।বংশগতির বিভিন্নতার কারণেই ব্যক্তির গায়ের রং, চুল ও চোখের তারার বর্ণ দৈহিক উচ্চতা, মুখের আকার ইত্যাদি ভিন্ন ভিন্ন প্রকৃতির হয়ে থাকে। মানুষের বুদ্ধিও বংশগতির কারণে ভিন্ন হয়। (ii) পরিবেশ: আধুনিক মনোবিজ্ঞানীগণ মনে করেন যে, ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে পার্থক্যের মূলে কেবলমাত্র বংশগতি নই পরিবেশস্বরূপ একটি বিরাট ভূমিকা রয়েছে।সামাজিক রীতিনীতি, সংস্কৃতি, উত্তরাধিকার, আচার-আচারণ প্রভৃতি সামাজিক পরিবেশের এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের ভিন্নতার কারণেও ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে পার্থক্য লক্ষ করা যায়। (iii) লিঙ্গগত পার্থক্য: নারী-পুরুষভেদেও দেহের গঠন, চলাফেরার ধরন, কণ্ঠস্বর, কথাবলার ভঙ্গি ইত্যাদিতে পার্থক্য দেখা যায়। (iv) জাতিগত প্রভেদ: এক জাতের মানুষ অন্য জাতের মানুষের তুলনায় আলাদা প্রকৃতির হয়। যেমন— রাশিয়ান মানুষেরা ভারতীয় মানুষদের তুলনায় লম্বা ও মজবুত দেহের অধিকারী হয়। (v) সামাজিক অবস্থার ভিন্নতা: সামাজিক অবস্থার ভিন্নতার কারণেও ব্যক্তি ব্যক্তিতে বৈষম্য সৃষ্টি হয়। যেমন— জনবহুল অঞ্চলের মানুষরা অন্তর্গত অল্প জনবসতিপূর্ণ গ্রামীণ অঞ্চলের মানুষের তুলনায় বেশি বুদ্ধিমান হয়। (vi)বিকাশের হারের ভিন্নতা: বিকাশের হারের ভিন্নতার কারণেও ব্যক্তিগত বৈষম্য ঘটে। তাই একই বয়সের দুটি শিশুর মধ্যে প্রভেদ লক্ষ করা যায়। 2.চার্লস স্পিয়ারম্যান দ্বি-উপাদান তত্ত্বটি আলোচনা কর? উত্তরঃ ব্রিটিশ মনোবিজ্ঞানী চার্লস স্পিয়ারম্যান ১৯০৪ খ্রিঃ তার বুদ্ধি সম্পর্কীয় দ্বি-উপাদান তত্ত্বটি প্রকাশ করেন। তার এই তত্ত্ব বুদ্ধি পরিমাপের ক্ষেত্রে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করেছে। দ্বি-উপাদান তত্ত্ব অনুযায়ী যে কোন ধরণের বৌদ্ধিক কাজ বা বিচার বিবেচনামূলক কাজ সম্পাদন করার জন্য মানুষের দুই রকমের মানসিক উপাদান বা ক্ষমতার প্রয়োজন হয়। এদের মধ্যে একটি হল সাধারণ মানসিক উপাদান (General Factor) বা সাধারণ ক্ষমতা এবং অপরটি হল বিশেষ মানসিক উপাদান (Special Factor) বা বিশেষ ক্ষমতা। সাধারণ মানসিক উপাদান (General Factor) বা সাধারণ ক্ষমতা সকল রকমের বৌদ্ধিক কাজ বা বিচার বিবেচনামূলক কাজ সম্পাদন করার জন্য প্রয়োজন হয়। একে সংক্ষেপে g-factor বলা হয়। অপর দিকে বৌদ্ধিক কাজ বা বিচার বিবেচনামূলক কাজ করার জন্য আর একটি মানসিক উপাদান বা ক্ষমতার প্রয়োজন হয়। কিন্তু এই মানসিক উপাদান বা ক্ষমতা সব কাজের জন্য এক রকম নয়। এই দ্বিতীয় উপাদান বা ক্ষমতাটি প্রত্যেক ভিন্ন ভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন রুপে দেখা যায়। এই জাতিয় মানসিক উপাদান বা ক্ষমতা গুলিকে স্পিয়ারম্যান নাম দিয়েছেন বিশেষ মানসিক উপাদান (Special Factor) বা বিশেষ ক্ষমতা। এদের সংক্ষেপে বলা হয় s-factor। চিত্র স্পিয়ারম্যানের দ্বি- উপাদান তত্ত্বটি উপরের জ্যামিতিক চিত্রের সাহায্যে বোঝানো যায়। ব্যক্তির সাধারণ মানসিক ক্ষমতার পূর্ণ আধারটি চিত্রে পরিবেশিত হয়েছে বড় উপবৃত্তের অন্তর্ভুক্ত ক্ষেত্রের মাধ্যমে। আর বিশেষ মানসিক ক্ষমতা গুলিকে চিত্রে এক একটি ছোট উপবৃত্তের মাধ্যমে পরিবেশন করা হয়েছে। যার কিছুটা সাধারণ মানসিক ক্ষমতা বা General Mental Ability বা g এবং কিছুটা বিশেষ মানসিক ক্ষমতা বা Special Mental Ability বা s। ছোট উপবৃত্ত গুলিকে এক একটি কাজ হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে, ১ নং কাজের উপবৃত্তটিতে বিশেষ মানসিক ক্ষমতা বা Special Mental Ability বা s হিসাবে রয়েছে গাণিত সংক্রান্ত বিশেষ মানসিক ক্ষমতা বা s/m (Special Mental Ability of Mathematics)। অনুরুপভাবে ২ নং কাজের উপবৃত্তটিতে রয়েছে ভাষা সংক্রান্ত বিশেষ মানসিক ক্ষমতা বা s/l (Special Mental Ability of Language), ৩ নং কাজের উপবৃত্তটিতে রয়েছে লেখা সংক্রান্ত বিশেষ মানসিক ক্ষমতা বা s/w (Special Mental Ability of Writing), ৪ নং কাজের উপবৃত্তটিতে রয়েছে পঠন সংক্রান্ত বিশেষ মানসিক ক্ষমতা বা s/r (Special Mental Ability of Reading)। এই বিশেষ মানসিক ক্ষমতা গুলির মধ্যে একটির সঙ্গে অন্যটির কোন মিল নেই। এরা প্রকৃতিগত দিক থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রকৃতির। কিন্তু ৪ টি কাজে অবস্থিত সাধারণ মানসিক ক্ষমতা বা General Mental Ability বা g প্রকৃতিগত দিক থেকে সম্পূর্ণ অভিন্ন।
3.সাধারণ মানুষের ক্ষমতা বিশেষ মানসিক ক্ষমতার মধ্যে চারটি পার্থক্য লিখ?TBSE 2023 FINAL
4.শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যক্তিগত বৈষম্যের প্রভাব আলোচনা করো।
উত্তরঃ শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যক্তিগত বৈষম্যের প্রভাব : আধুনিক শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য হল শিক্ষার্থীর নিজস্ব ক্ষমতার যথাযথ বিকাশ ঘটিয়ে তার সর্বাঙ্গীন বিকাশ সাধন করা। ব্যক্তিগত বৈষম্য প্রভাবিত শিক্ষাব্যবস্থা শিক্ষার যে সকল দিকে গুরুত্ব আরোপ করেছে, সেগুলি হল— শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত বৈষম্য সম্পর্কে ধারণা: প্রত্যেক শিক্ষকের উচিত তাদের শিক্ষার্থীদের দক্ষতা, আগ্রহ, প্রবণতা, ব্যক্তিত্বের সংলক্ষণ ইত্যাদি সম্পর্কে সুনিশ্চিত ধারণা গঠন করা এবং সেই জ্ঞানকে ভিত্তি করে তাদেরকে সেইভাবেশিক্ষাদান করা। বহুমুখী পাঠক্রম অনুসরণ: ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে যেহেতু পার্থক্য রয়েছে তাই সকল শিক্ষার্থী একইরকম পাঠক্রম থেকে উপকৃত হতে পারে না। তাই শিক্ষকের উচিত ব্যক্তিগত বৈষম্যের ভাবনাকে মনে রেখে শিক্ষার্থীর আগ্রহ, প্রবণতা, ক্ষমতা, প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী বহুমুখী পাঠক্রম গড়ে তোলা। বহুমুখী পাঠদান পদ্ধতি অনুসরণ: কেবলমাত্র বহুমুখী পাঠক্রমই নয় শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত বৈষম্যকে গুরুত্বদান করে পাঠদান পদ্ধতিতে বিভিন্নতা আনা প্রয়োজন। (iv)সহপাঠক্রমিক ব্যবস্থা : প্রত্যেক্ষ শিক্ষার্থী পাঠক্রমিক বিষয়ে পারদর্শিতা নাও হতে পারে। তাই বিদ্যালয়ে পাঠক্রমিক বিষয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের খেলাধূলা, এন. সি. সি. এন. এস. এস ইত্যাদির আয়োজন করা। 5.বুদ্ধির বৈশিষ্ট্যাবলি আলোচনা করো।

উত্তর: বুদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নে আলোচনা করা হল—

(i) বুদ্ধি একটি ব্যক্তিশিশুর জন্মগত গুণ যা প্রকৃতিগতভাবে সে লাভ করে।

(ii) বুদ্ধি শিশুকে শিখন প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে এবং ন্যূনতম সময়ে সর্বোচ্চ শিখনমূলক লক্ষ্য অর্জনে নিবিষ্ট করে।

(iii) বুদ্ধি মূত থেকে অমূর্তের দিকে ধারণা গঠনে সমর্থ করে।

(iv) বুদ্ধি অন্যদের থেকে এবং পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে উপযোগী মূল্যলাভে ক্ষমতা অর্জনে সহায়তা করে।

(v) বুদ্ধির বিকাশ জন্মমূহূর্তে থেকে শুরু হয় এবং যদিও পরিব্যাপ্তি শেষ হয় বয়ঃসন্ধিকালে।

(vi) বুদ্ধি আমাদের বিচার বিশ্লেষণে সাহায্য করে।

(vii) বুদ্ধি মানুষকে বৃত্তিগত বা পেশাগত সাফল্য এনে দেয়।

Education Class 12 Suggestion 2024 -25

শিক্ষায় মনোবিজ্ঞানিক দিকসমূহ

1.সৃজনশীলতা কী? সৃজনশীলতার উপাদানসমূহ উল্লেখ করো।
উত্তর: সৃজনশীলতা সংজ্ঞা: সৃজনশীলতা হল অপসারী চিন্তন ক্ষমতার সঙ্গে যুক্ত কতকগুলি বৌদ্ধিক ও ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্যের সমন্বয়, যাদের সমবেত প্রভাবে ব্যক্তি তার কর্মফলে সম্পূর্ণভাবে অভিনবত্ব প্রকাশ করে।সৃজনশীলতার উপাদান : বিভিন্ন মনোবিদগণ সৃজনশীলতার কিছু উপাদানের উল্লেখ করেছেন। যেমন— সাবলীলতা : সৃজনশীলতার প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল সাবলীলতা। স্বাধীন প্রচেষ্টাবিহীন এবং সহজে চিন্তা করার ক্ষমতাই হল সাবলীলতা। সাবলীলতা বিভিন্ন রকম হতে পারে। যেমন— শব্দগত সাবলীলতা, সমন্বয়ের সাবলীলতা, বহি:প্রকাশগত সাবলীলতা। নমনীয়তা: নমনীয়তা বলতে বোজায় কোনো বিষয়কে নিয়ে বিভিন্ন দিক থেকে চিন্তা করার ক্ষমতা। এই ক্ষমতা কোনো বিষয় বা সমস্যাকে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে চিন্তা করতে চেষ্টা করে। নমনীয়তা দুধরনের হয়ে থাকে। যথা—স্বত:স্ফূর্ত নমনীয়তা ও অভিযোজনমূলক নমনীয়তা। মৌলিকত্ব: উৎপাদনের মৌলিকত্বও সৃজনক্ষমতার আর একটি উপাদান। মৌলিকত্ব বলতে ভবিষ্যৎ চিন্তা বা চিন্তার স্পষ্টতাকেও বোঝানো হয়। বিস্তৃতি: সৃজনশীলতার ওপর প্রভাব বিস্তারকারী আর একটি উপাদান হল বিস্তৃতির ক্ষমতা। এই ক্ষমতার দ্বারা বিষয়বস্তু বা সমস্যা সংক্রান্ত বিস্তারিত জ্ঞান বা ধারণা সৃষ্টি হওয়াকে বোঝায়।
2.সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির 4টি উদ্দেশ্য লেখো।
উত্তর: শিক্ষাবিজ্ঞানীরা সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি রূপায়ণের ক্ষেত্রে কয়েকটি উদ্দেশ্যের কথা বলেছেন। এর মধ্যে প্রধান কয়েকটি উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা করা হল— (i) দৈহিক বিকাশ: সহপাঠক্রমিক কার্যাবলীর একটি অন্যতম উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীর দৈহিক বিকাশে সহায়তা করা।শরীরচর্চা, বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলো, বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজ, ব্রতচারী, NCC প্রশিক্ষণ এগুলি নিয়মিত চর্চার ফলে শিক্ষার্থীর শারীরিক বিকাশ ঘটে। (ii) মানসিক বিকাশ: সুস্থ দেহেই থাকে সুস্থ মন। দৈহিক বিকাশ যথাযথ হলে তার প্রভাব মনের ওপর পড়ে এবং মন পরিণত হয়। বিভিন্ন প্রকার সহপাঠক্রমিক কাজ, যেমন— খেলাধুলো, গানবাজনা, আবৃত্তি, অভিনয়, বিতর্ক, আলোচনা, আলপনা দেওয়া প্রভৃতি শিক্ষার্থীর মানসিক বিকাশে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। (iii) সামাজিক বিকাশ: শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসে শিক্ষালাভের জন্য। বিদ্যালয়ে বিভিন্ন সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির মাধ্যমে শিক্ষার্থীকে সমাজজীবনের উপযোগী করে তোলা হয়। এইভাবে সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির মাধ্যমে শিক্ষার্থীর মধ্যে সামাজিক বিকাশ ঘটে। (যেমন—অভিনয়, যৌথ প্রোজেক্ট, সমাজসেবামূলক কাজ, NCC, NSS প্রভৃতি) (iv) সহযোগিতার মনোভাব গঠন: বিদ্যালয় দ্বারা সংগঠিত বিভিন্ন সহপাঠক্রমিক কাজে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সহপাঠীদের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া গড়ে ওঠে, যা শিক্ষার্থীর সমাজজীবনের পক্ষে অপরিহার্য। (v) আত্মবিশ্বাস গঠন: সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হল ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে, তথা শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলা। (vi) অভ্যন্তরীণ চাহিদাপূরণ: বিভিন্ন ধরনের সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির মধ্য দিয়ে শিশুর অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ হওয়ার সুযোগ পায়।
3. জাতীয় সংহতির পথে বাধাগুলি বা অন্তরায়গুলি সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর:আমাদের দেশে জাতীয় সংহতির পথে অন্তরায় বা বাধাগুলি হল— (i) সাম্প্রদায়িকতা: নিজের সম্প্রদায়ের প্রতি বিশেষ আনুগত্য এবং অন্য সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ থেকেই সাম্প্রদায়িক অনৈক্যের সৃষ্টি হয়। এই সাম্প্রদায়িক অনৈক্য জাতীয় সংহতির পথে একটি বড়ো অন্তরায়। (ii) জাতিগত বিদ্বেষ: প্রতিটি জাতি মনে করে তারা অন্য জাতির তুলনায় উন্নত। এর থেকেই জন্ম নেয় বিদ্বেষ। এই জাতিগত বিদ্বেষ জাতীয় সংহতি রক্ষায় প্রবল বাধা হয়ে দাঁড়ায়। (iii) ভাষাগত বিদ্বেষ: কোনো অঞ্চলে বহু ভাষাভাষি মানুষ একসাথে বসবাস করলে সেখানে ভাষাগত সমস্যা সৃষ্টি হওয়াই স্বাভাবিক। ভাষাগত সমস্যা স্বাভাবিকভাবে দেশের জাতীয় সংহতি রক্ষার পথে একটি বড়ো অন্তরায়। (iv) প্রাদেশিকতা: ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের জনগণ তাদের ভারতবাসী পরিচয়ের পরিবর্তে নিজ নিজ প্রাদেশিক, পরিচয়ে (যেমন—বাঙালি, পাঞ্জাবি, বিহারি ইত্যাদি) পরিচিত হতেই বেশি আগ্রহী। এই ধরনের সংকীর্ণতাও জাতীয় সংহতির ক্ষেত্রে একটি অন্তরায়। (v) অর্থনৈতিক অসাম্য: অর্থনৈতিক দিক থেকে সুবিধাভোগী শ্রেণির উন্নত জীবনযাত্রা অর্থনৈতিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া মানুষের ঈর্ষার(jealous) কারণ। এই ঈর্ষার মনোভাব জাতীয় সংহতির পথে অন্তরায়।
3. সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির শিক্ষামূলক গুরুত্ব বা উপযোগিতা লেখো।
উত্তর:সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির শিক্ষামূলক গুরুত্ব বা উপযোগিতা: সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির শিক্ষামূলক গুরুত্ব বা উপযোগিতা নিয়ে আধুনিক শিক্ষাবিদদের মধ্যে তেমন কোনো মতবিরোধ নেই। সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির শিক্ষামূলক গুরুত্ব বা উপযোগিতাগুলি হল— (i) শিক্ষার্থীর চাহিদার পরিতৃপ্তি: সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি শিক্ষার্থীর চাহিদার পরিতৃপ্তিতে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে। শিক্ষার্থীর চাহিদা ও প্রবণতা অনুযায়ী সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি নির্দিষ্ট করা হয়। (ii) সামাজিক বিকাশ: সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির যথাযথ সংগঠনের ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহযোগিতা, সমবেদনা, ভ্রাতৃত্ববোধ, পারস্পরিক বোঝাপড়া প্রভৃতি গুণের বিকাশ ঘটে, যা প্রতিটি সমাজের পক্ষে বিশেষ প্রয়োজনীয়। (iii) আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলা: শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। শিক্ষার্থী যে বিষয়ে দক্ষ সেই বিষয়গুলিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়ে সে নিজেকে নতুন করে অবিষ্কার করার সুযোগ পায় । (iv)একঘেয়েমিদূরীকরণ: সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি শিক্ষার্থীদের একঘেয়েমিদূরীকরণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।বিদ্যালয়জীবনের গতানুগতিকতা থেকে মুক্তি দেয়। বিভিন্ন বিনোদনমূলক, ক্রীড়ামূলক এবং সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে বিদ্যালয় তাদের কাছে এক আনন্দনিকেতন হয়ে ওঠে। (v) শৃঙ্খলা গঠন: সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির প্রতিটি কাজ সম্পাদন করতে গেলে শিক্ষার্থীদের কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। (vi) বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ: বিদ্যালয়ের প্রশিক্ষণ: বিদ্যালয়ের সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির মাধ্যমে অনেক সময় বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। শিক্ষার্থীরা সেই সমস্ত বৃত্তি প্রশিক্ষণ নিয়ে বার বার সেগুলির অনুশীলন করে, যেগুলি শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ জীবনের জীবিকা অর্জনে সহায়তা করে। (vii) শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্ক স্থাপন: বিদ্যালয়ের সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির অনুশীলন শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ককে অনেক বেশি প্রাণবন্ত করে। সেই কারণে সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির শিক্ষাগত গুরুত্ব বিদ্যালয়শিক্ষায় অনস্বীকার্য।
4.শিক্ষায় শৃঙ্খলার গুরুত্ব আলোচনা করো।
উত্তর ঃ শিক্ষায় বা শিক্ষাক্ষেত্রে শৃঙ্খলার গুরুত্ব অপরিসীম। শৃঙ্খলা ব্যক্তিজীবনে ও সমাজ জীবনের পক্ষে একান্ত প্রয়োজন। বিদ্যালয়ে কাজ পরিচালনার জন্যও শৃঙ্খলার গুরুত্ব আধুনিককালের সমস্ত শিক্ষাবিদ স্বীকার করেন। শিক্ষাবিগণ বলেছেন, যে কোনো শিক্ষা পরিকল্পনাকে বা যেকোনো শিক্ষণ পদ্ধতিকে সার্থক করতে হলে শৃঙ্খলা একান্তভাবে প্রয়োজন। শৃঙ্খলাই থাকলেই শিক্ষার্থী তার নিজের জীবনের সার্থকতা উপলব্ধি করতে পারে। তাই আধুনিক শিক্ষার উদ্দেশ্য হল শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত জীবন বিকাশ সাধনে সহায়তা করা। শিক্ষায় শৃঙ্খলার স্থাপন নিম্নলিখিতভাবে করা যায়। যথা— (i) শিক্ষার্থীর চাহিদা ও আগ্রহ অনুযায়ী পাঠক্রম নির্বাচিত হবে। পাঠ্যক্রমে সৃজনধর্মী বিভিন্ন কাজের ব্যবস্থা থাকবে। (ii)শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল ও দায়িত্বপূর্ণ কাজে নিযুক্ত করতে পারলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে শৃঙ্খলা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আসবে। (iii) বিদ্যালয়ে শিক্ষায় শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষকের দায়িত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষকদের পারস্পরিক সম্পর্ক, পাঠদান পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে শৃঙ্খলা আনতে সহায়তা করে। (iv)বিদ্যালয় পরিচালনার ওপর বিদ্যালয়ে শৃঙ্খল নির্ভর করে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে যদি বিদ্যালয়ের কোনো বিষয় নিয়ে অসন্তোষ সৃষ্টি হয় তাহলে তার প্রতিকারের ব্যবস্থা করতে হবে। পরিশেষে বলা যায় যে, খেলাধূলা, বিতর্ক সভার ব্যবসা, বিভিন্ন উৎসব পালন, মনীষীদের জন্মদিন পালন, সমাজ সেবামূলক কাজ ইত্যাদি বিষয়গুলির দায়িত্ব শিক্ষার্থীদের ওপর ন্যস্ত করলে শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ সহজ হয়। 5 Mark Questions 5 শিক্ষা ও দর্শন ১। শিক্ষার লক্ষ্য ও পাঠক্রম সম্পর্কে ভাববাদীদের ধারণা ব্যক্ত করো। উত্তর: শিক্ষার লক্ষ্য সম্পর্কে ভাববাদীদের ধারণা: ভাববাদী দার্শনিক প্লেটো, হেগেল, কান্ট, পেস্তালৎসি, ফ্রয়েবেল,রবীন্দ্রনাথ, মহাত্মা গান্ধি প্রমুখের মতে জীবাত্মা পরমাত্মারই অংশবিশেষ। তাই মানুষের মধ্যে সত্য, শিব ও সুন্দরকে উপলব্ধি করার একটা বাসনা বা সুপ্ত ইচ্ছা জাগ্রত হয়। মানুষের ওই বাসনা বা সুপ্ত ইচ্ছা পূরণে সহায়তা করা শিক্ষার উদ্দেশ্য। ভাববাদী শিক্ষা দার্শনিকদের শিক্ষার লক্ষ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, শিক্ষার লক্ষ্য বস্তুকেন্দ্রিক নয়। শিক্ষার লক্ষ্য জীবনের মূল লক্ষ্যের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত এবং আত্মকেন্দ্রিক। ভাববাদীদের মতে, শিক্ষার্থীর মধ্যে জীবনের উন্নত মূল্যবোধগুলি জাগ্রত করাই হল শিক্ষার লক্ষ্য। শিক্ষার পাঠক্রম সম্পর্কে ভাববাদীদের ধারণা : ভাববাদীদের মতে শিক্ষার পাঠক্রম পুরাতন চিন্তা ভাবনা বা আদর্শের পরিপ্রেক্ষিতে নির্ধারণ করতে হবে। তাই ভাববাদ আধ্যাত্মিক ধারণা ও আদর্শের মধ্যে থেকে পাঠক্রম গঠনের প্রতি দিক্ নির্দেশ করেছেন। ভাববাদীরা পাঠক্রমের ব্যবহারিক দিকের তুলনায় তাত্ত্বিক দিকের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।ভাববাদী দার্শনিকগণ শিক্ষার্থীর বৌদ্ধিক চেতনা জাগ্রত করার জন্য পাঠক্রমের মধ্যে ভাষা, সাহিত্য, ইতিহাস, ভূগোল, গণিত, বিজ্ঞান ও সমাজবিদ্যা ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন। আবার শিক্ষার্থীর মধ্যে নৈতিক চেতনা জাগ্রত করার জন্য পাঠক্রমে নীতিশাস্ত্র, অধিবিদ্যা ও ধর্মশাস্ত্র ইত্যাদি বিষয়কে অন্তর্ভূক্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন।এছাড়া কাব্য, শিল্পকলা ইত্যাদির মাধ্যমে নান্দনিক কার্যাবলিকে রূপদানের কথা বলা হয়েছে। পরিশেষে বলা যায় যে, বিশ্বের পরিপ্রেক্ষিে সমগ্র মানব জাতির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও আধ্যাত্মিক অধিকারকে পাঠক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। 2.শিক্ষাক্ষেত্রে প্রকৃতিবাদ দর্শনের প্রভাব আলোচনা করো। ঊত্তর: প্রকৃতিবাদ হল এক ধরনের দার্শনিক মতবাদ। এই দার্শনিক ধারণা অনুযায়ী প্রকৃতিই হল পরম সত্য, এর বাইরে যা কিছু রয়েছে বলে মনে হয়, সেগুলি সবই মানুষের কল্পনা। প্রকৃতির মধ্যে সকল প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে এবং প্রকৃতিই সকল দার্শনিক সমস্যার সমাধান করতে পারবে। প্রকৃতিবাদের মূল কথা : প্রকৃতিবাদে বিশ্বাসী দার্শনিকগণ মনে করেন এই বিশ্বজগতে যা কিছু রয়েছে, তার সবই হল প্রকৃতির। প্রকৃতি একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ সত্তা। প্রকৃতিবাদীদের মতে, পদার্থ বা বস্তু হল সত্য। প্রকৃতিবাদের বিভাগ : প্রকৃতিবাদে বিশ্বাসী দার্শনিকগণ প্রকৃতিকে তিন দিক থেকে বিশ্লেষণ করেছেন। ফলে তিন ধরনের প্রকৃতিবাদ সৃষ্টি হয়েছে। যেমন— জড় প্রকৃতিবাদ বা বস্তুবাদ, যান্ত্রিক প্রকৃতিবাদ, জৈবিক প্রকৃতিবাদ। প্রকৃতিবাদ অনুযায়ী শিক্ষার লক্ষ্য : প্রকৃতিবাদী দার্শনিকদের মতে প্রকৃতি যেহেতু পরিবর্তনশীল সেহেতু শিক্ষার লক্ষ্য ও পরিবর্তনশীল। জৈবিক প্রকৃতিবাদীদের মতে শিক্ষার লক্ষ্য হল শিশুকে ভবিষ্যৎ জীবনের উপযোগী করে গড়ে তোলা। জড়, প্রকৃতিবাদীদের মতে শিশুকে পরিপূর্ণ ও আনন্দদায়ক জীবনযাপনের প্রশিক্ষণ দেওয়াই শিক্ষার লক্ষ্য। প্রকৃতিবাদ অনুযায়ী পাঠক্রম: প্রকৃতিবাদীদের মতে, প্রকৃতিই হবে শিক্ষার্থীর শিক্ষক, শিক্ষালয় এবং শিক্ষার উপাদান। প্রকৃতি ও পরিবেশ সংক্রান্ত তথ্যই পাঠক্রমের বিষয়বস্তু হবে। পাঠ্যক্রমে প্রাণীবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা, রসায়নবিদ্যা, পদার্থবিদ্যা, গণিত ও ভাষাশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা প্রকৃতিবাদীরা স্বীকার করেছেন। প্রকৃতিবাদ অনুযায়ী শিক্ষণ পদ্ধতি: প্রকৃতিবাদী দার্শনিকদের মতে শিশু আত্মসক্রিয়তায় শিক্ষা লাভ করবে। প্রকৃতিবাদ অনুযায়ী শৃঙ্খলা: প্রকৃতিবাদী শিক্ষা দার্শনিকগণ মুক্তশৃঙ্খলা বা স্বত:স্ফূর্ত শৃঙ্খলাকে অবদমন বা শাস্তির মাধ্যমে যে শৃঙ্খলা স্থাপিত হয়, তা শিক্ষার্থীদের মন:প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তাঁদের মতে, কর্মফলের মাধ্যমে শিক্ষার্থীকে নিজের আচার নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগ করে দেওয়াই হবে শৃঙ্খলা স্থাপনের প্রধান উপায়। প্রকৃতিবাদ অনুযায়ী শিক্ষক ও তাঁর দায়িত্ব : প্রকৃতিবাদীরা বলেছেন, শিক্ষকের কাজ জ্ঞান বিতরণ করা নয়, তাঁর কাজ হবে উপযুক্ত পরিবেশ রচনা করা যায় মধ্যে শিশু স্বাধীনভাবে অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ পাবে। তাঁদের মতে, শিক্ষকের ভূমিকা হবে পর্যবেক্ষকের। তিনি শিশুদের কর্মপ্রণালী পর্যবেক্ষণ করবেন এবং প্রয়োজনে তাদের বিভিন্ন কাজে সহায়তা করবেন। পরিশেষে বলা যায় যে, আধুনিক শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রকৃতিবাদী দর্শনের অবদান অসামান্য। প্রকৃতিবাদের প্রভাবে আধুনিক শিক্ষা অনেক বেশি বাস্তবসম্মত ও বিজ্ঞানসম্মতভাবে গড়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে। 3.শিক্ষাক্ষেত্রে ভাববাদী দর্শনের প্রভাব আলোচনা করো। উত্তরঃভাববাদ হল দর্শনশাস্ত্রের প্রাচীনতম শাখা। ভাববাদী শিক্ষা দার্শনিকদের মতে, মানুষ হল আধ্যাত্মিক প্রাণী এবং মানুষ হল সমস্ত কিছুর ঊর্ধ্বে। শিক্ষার মধ্য দিয়েই মানুষের আধ্যাত্মিকসত্ত্বার বিকাশ ঘটে থাকে। ভাববাদের মূলকথা : মানবজীবনের মূল লক্ষ্য হবে ওই সর্বশক্তিমান বা সর্বজনীন মনের অধিকারী ঈশ্বর বা পরমব্রত্মকে উপলব্ধি করা। ভাববাদী দার্শনিকরা আরও বলেন ব্রহ্ম বা ঈশ্বর যেমন পরম সত্য, তেমনি জীবনের মূল্যবোধগুলি চিরন্তন সত্য। ভাববাদ অনুযায়ী শিক্ষার লক্ষ্য : ভাববাদী দার্শনিকদের মতে, ব্যক্তিত্বের পরিপূর্ণতাই হল শিক্ষার লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য।তাঁরা মানুষের জীবনের চরম লক্ষ্যের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন এবং শিক্ষার মাধ্যমেই মানুষের মধ্যে দিব্যতার উন্মোচন ঘটা উচিত। কিছু সুনির্দিষ্ট অপরিহার্য নিয়ম এই বিশ্বকে নিয়ন্ত্রণ করছে আর নিয়মগুলিকে উপলব্ধি করার জন্য শিক্ষার্থী প্রত্যক্ষ প্রচেষ্টাকে সাহায্য করাই হল শিক্ষার উদ্দেশ্য। ভাববাদ অনুযায়ী পাঠক্রম: ভাববাদ আধ্যাত্মিক ধারণা ও আদর্শের মধ্যে থেকে পাঠক্রম গঠনের প্রতি দিক নির্দেশ করেছেন, বিভিন্ন ভাববাদী দার্শনিক শিক্ষার্থীর বৌদ্ধিক চেতনা জাগ্রত করার জন্য পাঠক্রমের মধ্যে ভাষা, সাহিত্য, ইতিহাস, ভূগোল, গণিত ও বিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন। ভাববাদ অনুযায়ী শিক্ষণ বা শিক্ষাদান পদ্ধতি: ভাববাদী দার্শনিক বিভিন্ন শিক্ষা পদ্ধতি অবলম্বনের কথা বলেছেন। দার্শনিক প্লেটো আলোচনা ও বিতর্ক পদ্ধতি অনুসরণের কথা বলেছেন। হাবার্ট স্পেনসার নির্দেশদান ও বক্তৃতা পদ্ধতির ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।দার্শনিক ফ্রয়েবেল শিক্ষা পদ্ধতি হিসেবে শিশুর স্বত:স্ফূর্ত সক্রিয়তা এবং খেলার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। ভাববাদ অনুযায়ী শিক্ষক ও তার দায়িত্ব: ভাববাদী দার্শনিকদের মতে, শিক্ষক হবেন আদর্শ চরিত্রের অধিকারী।তিনি তাঁর ব্যক্তিত্বের প্রভাবে শিক্ষার্থীদের প্রভাবিত করবেন। শিক্ষকের কাজ জ্ঞান বিতরণ করা নয়, শিক্ষার্থীদের নির্দেশনা দেওয়া। ভাববাদ অনুযায়ী শৃঙ্খলা : ভাববাদীরা কঠোর শৃঙ্খলার পক্ষপাতী ছিলেন। তাঁদের মতে কঠোর শৃঙ্খলা শিক্ষার্থীর বিভিন্ন রিপুকে নিবৃত্ত করে এবং শিক্ষার্থীদের আত্মোপলব্ধির স্তরে পৌঁছাতে সাহায্য করে। ভাববাদীরা শিক্ষাক্ষেত্রে যে শৃঙ্খলার কথা বলেছেন তা হবে অন্ত:জ এবং স্বত:স্ফূর্ত। পরিশেষে বলা যায় যে, ভাববাদী আদর্শের ভিত্তিতে পরিচালিত শিক্ষা বিশ্ব মানবতার প্রকৃতি উপলব্ধিতে শিক্ষার্থীদের সহায়তা করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *