HISTORY PRE and FINAL SUGGESTION 2024 25 CLASS 12 PDF

HISTORY PRE and FINAL SUGGESTION 2024 25 CLASS 12 PDF

HISTORY PRE and FINAL SUGGESTION 2024 25 CLASS 12 PDF The CBSE Class 12 History exam is just around the corner! As you gear up for this crucial test, it’s time to refine your preparation strategy. This blog post offers valuable pre and final suggestions to help you ace your History exam. We’ll delve into key topics, revision tips, and exam day strategies to ensure you’re well-prepared.

HISTORY PRE and FINAL SUGGESTION 2024 25 CLASS 12 PDF

MARK-2

 

(রাজা ,কৃষক ও শহর)

 

১)মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের দুটি কারণ লেখো।

২) ষোড়শ মহাজনপদ কি? ষোড়শ মহাজনপদ গুলির নাম লিখ।

৩) অশোক মৌর্য বংশের শ্রেষ্ঠ সম্রাট বলার কারণ কী?

৪) মেগাস্থিনিস সম্বন্ধে কি জানো?

৫) সমুদ্র গুপ্ত কে ‘ভারতের নেপোলিয়ন’ বলা হয় কেন?

৬) মৌর্য বংশের প্রতিষ্ঠাতা কে? তার বংশ মৌর্য বংশ নামে খ্যাত কেন?

৭) এপিগ্রাফিস্ট যেসব সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন তার মধ্যে দুটি লেখ।

৮) মৌর্য সাম্রাজ্যের যেকোনো দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

৯) স্কন্দগুপ্তকে ভারতের রক্ষাকর্তা বলা হয় কেন?

১০) ‘দেবনাম পিয় প্রিয়দর্শী’ কাকে বলা হয়? তিনি কেন যুদ্ধ নীতি পরিত্যাগ করেছিলেন?

 

(পর্যটকদের চোখে)

১) আবুল ফজলের কৃতিত্ব সম্পর্কে লেখো।

২)ইবনবতুতাকে ‘পৃথিবীর পর্যটক ‘বা বিশ্ব অভিযাত্রী বলা হয় কেন?

৩) আল -বিরুনীর লেখা গ্রন্থ থেকে কি জানা যায়?

৪) ইবনবতুতার ‘রিহলা গ্রন্থ’ থেকে দাসপ্রথা সম্পর্কে কি জানা যায়?

৫) ‘কিতাব- উল-হিন্দ ‘গ্রন্থ থেকে তৎকালীন ভারতবর্ষের ধর্মীয় ও সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে কি জানা যায়?

৬) ইবনবতুতা যে দৃষ্টিকোণ থেকে ভারত ভ্রমণ বৃত্তান্ত লিখে গেছেন তা দুটি দিক ও উল্লেখ করো।

৭) বানিয়ার তাঁর বিবরণে বণিক গোষ্ঠীর যে পরিচয় দিয়েছেন তা লেখো।

 

(ভক্তি ও সুফিবাদের ঐতিহ্য)

১) ভক্তিবাদের প্রচারক হিসেবে গুরু নানকের ভূমিকা আলোচনা করো।

২) ভক্তিবাদের উৎপত্তি দুটি কারণ লেখো।

৩) ভক্তি আন্দোলন কাকে বলে।

৪) সুফি পরম্পরায় বে-শরিয়া বা বা-শরিয়ার মধ্যে দুটি সাদৃশ্য লেখ।

৫) ভক্তিবাদের প্রচারক হিসেবে শ্রীচৈতন্যের ভূমিকা আলোচনা করো।

৬) খাজা মইনউদ্দিন চিসতি দরগা-র জনপ্রিয়তার দুটি কারণ লেখো।

৭) ভক্তিবাদের দুটি অবদান লেখো।

 

(একটি সাম্রাজ্যের রাজধানী :বিজয়নগর)

১) শিল্প ও সাহিত্যের কৃষ্ণদেব রায়ের অবদান কি ছিল?

২) বিজয়নগর সাম্রাজ্যের ইতিহাস রচনায় কর্নেল ম্যাকেনজির অবদান লেখো।

৩) তালিকোটার যুদ্ধের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করো।

৪) সুলতান মাহমুদের সোমনাথ আক্রমণের কাহিনী লিখো।

৫) বিট্টল মন্দির সম্পর্কে যা জানো লেখো।

 

(কৃষক ,জমিদার ও রাষ্ট্র)

 

১) আইন-ই আকবরীর দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর।

২) ‘জাবতি প্রথা’ সম্পর্কে লেখো।

৩) মোগল আমলে গ্রাম পঞ্চায়েতে দুটি কাজ লেখো।

৪) মনসবদারি ব্যবস্থার দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।

৫) মোগল আমলের পঞ্চায়েতের সঙ্গে বর্তমান সময়ের পঞ্চায়েতের দুটি সাদৃশ্য লেখ।

৬) মোগল যুগে আমদানি ও রপ্তানি দ্রব্য সম্পর্কে লেখ।

৭) আকবর প্রবর্তিত মনসবদারি ব্যবস্থার দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ।

 

(মহাত্মা গান্ধী এবং জাতীয়তাবাদী আন্দোলন)

১) গান্ধী -আরউইন চুক্তির দুটি শর্ত লেখো।

২) চম্পারণ সত্যাগ্রহের গুরুত্ব কি ছিল?

৩) চৌরিচৌরা-র ঘটনার প্রতিক্রিয়া কি ছিল?

৪) ‘সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারা’ নীতি কি?

৫) লবন আইন সংগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে ওঠার দুটি কারণ লেখ।

৬) অসহযোগ আন্দোলনের দুটি উদ্দেশ্য ও দুটি গুরুত্ব লেখো।

৭)১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠিত লাহোর কংগ্রেসের গুরুত্ব লেখ।

৮) জালিওনাবাগের হত্যাকান্ড সম্পর্কে লেখো।

 

MARK-3

(সম্পর্ক ,বর্ণ ও শ্রেণী)

১) মহাভারতের যুগে মানুষের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জীবন সম্পর্কে লেখ।

২) মহাভারতের যুগে নারীদের শিক্ষা ও সমাজে নারীর স্থান সম্পর্কে লেখ।

৩) যাঞ্জবল্ক্য স্মৃতিতে বর্ণীত স্ত্রীধন সম্পর্কে আলোচনা কর।

 

(ভক্তি ও সুফিবাদের ঐতিহ্য)

১) ভক্তিবাদের প্রচারক হিসেবে কবীর ও শ্রীচৈতন্যদেবের অবদান সম্পর্কে লেখো।

২) ভক্তিবাদের যে-কোনো তিনটি মূলনীতি ও উৎপত্তি তিনটি কারণ লেখো।

৩) জৈন ধর্ম ও বৌদ্ধ ধর্মের মধ্যে তিনটি সাদৃশ্য ও তিনটি বৈ-সাদৃশ্য লেখ।

৪)গুরু নানক প্রচারিত মূল শিক্ষা ও আদর্শগুলি কি কি ছিল?

 

(উপনিবেশবাদ এবং গ্রামাঞ্চল)

১) সাঁওতালরা কেন ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল?

২) ফ্রান্সিস বুকানন পাহাড়ীয়াদের সম্পর্কে প্রতিবেদনে কি লিখেছিলেন? তার প্রতিবেদনে কোম্পানি কিভাবে উপকৃত হয়?

৩) রাজমহলে ‘পাহাড়ীয়া ও সাঁওতালীদের’ সঙ্গে যে সংঘর্ষ হয় তা আলোচনা করো।

৪) চিরস্থায়ী বন্দেবস্তের তিনটি শর্ত উল্লেখ করো।

 

MARK-4

(রাজা ,কৃষক ও শহর)

 

১) ৬০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের পরবর্তী সময়ে কৃষিক্ষেত্রে কি কি পরিবর্তন হয়েছিল?

২) মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের কারণগুলি আলোচনা করো।

৩) গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের চারটি কারণ লেখ।

৪) এপিগ্রাফিস্টরা (লিপিকাররা)রাজ্যে যে যে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন সেগুলোর একটি তালিকা তৈরি করো।

৫) মহাজনপদের চারটি বৈশিষ্ট্য লেখ।

৬) ইতিহাসবিদরা কিভাবে সাধারণ মানুষের জীবন পুর্নগঠন করেছেন ?

 

(চিন্তাবিদ বিশ্বাস এবং ইমারতসমূহ)

১) বৌদ্ধ ধর্ম এবং জৈন ধর্মের মূলনীতি সমূহ আলোচনা কর।

২) স্তূপ কেন এবং কিভাবে নির্মিত হয়? তুমি কি মনে কর বৌদ্ধ সংস্কৃতি বিস্তারে স্তূপের ভূমিকা অপরিসীম আলোচনা করো।

৩) জৈন ধর্মের মুখ্য শিক্ষা সম্পর্কে আলোচনা করো।

৪)সা৺চীর মূতিকলা সম্পর্কে জানার জন্য বৌদ্ধ সাহিত্যের জ্ঞান কতটুকু সহায়ক?

 

(পর্যটকদের চোখে)

১)কাকে পৃথিবীর পর্যটক বা বিশ্ব অভিযাত্রী বলা হয় এবং কেন?

২)ইবনবতুতা দাসপ্রথা সম্বন্ধে যে সাক্ষ্য প্রদান করেছেন তা বিশ্লেষণ করো।

৩) তৎকালীন নগরজীবন সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করতে ইবনবতুতার বৃত্তান্ত কতটা সহায়তা করেছিল?

৪) কিতাব-উল- হিন্দের উপর টীকা লেখো।

৫) বানিয়ার এর বিবরণে যে নগরকেন্দ্রের চিত্র পাওয়া গেছে তা আলোচনা

করো।

(একটি সাম্রাজ্যের রাজধানীর :বিজয়নগর)

১) হাম্পি নগরের স্থাপত্য কলা সম্পর্কে আলোচনা করো।

২) বিজয়নগরের জলের চাহিদা কে কিভাবে মেটানো হত।

৩) বিজয়নগর সাম্রাজ্যের পতনের কারণ সমূহ উল্লেখ কর।

৪) শেষ দুই শতাব্দী ধরে হাম্পির ধ্বংসাবশেষ অধ্যয়নের জন্য কি কি পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে? তোমার উত্তরের মতে এই পদ্ধতিগুলি কিভাবে বিরূপাক্ষ মন্দিরের পুরোহিতদের দেওয়া তথ্যের পরিপূরক হতে পারে?

 

(ব্রিটিশ রাজত্ব এবং বিদ্রোহীরা)

১) কত সালে সিপাহী বিদ্রোহ হয়? এই বিদ্রোহের প্রধান তিনটি কারণ লেখ?

২) ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের ফলাফল উল্লেখ কর।

৩) তুমি কি মনে কর ১৮৫৭ সালে মহাবিদ্রোহ ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সূচনা করেছিল?

৪) স্বত্ববিলোপ নীতি কে প্রবর্তন করেন? সত্য বিলোপ নীতি কি বা এর মূল বক্তব্য কি? এই নীতির ফল কি হয়েছিল?

৫) অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি কে প্রবর্তন করেন? অধীনতামূলক মিত্রতা নীতির বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর। এই নীতি ফলাফল কি হয়েছিল?

৬) ইংরেজরা বিদ্রোহীদের দমন করার জন্য কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল?

 

(সংবিধান প্রণয়ন)

১) ভারতের গণপরিষদের গঠন কিভাবে হয়েছিল? ব্যাখ্যা কর।

২) ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনায় তাৎপর্য সম্পর্কে আলোচনা করো।

৩) ভারতের সংবিধানের প্রধান চারটি বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর।

 

 

MARK-5

(ইট পুঁতি ও অস্থি সমূহ)

 

১) হরপ্পা সভ্যতার অধিবাসীদের অর্থনৈতিক জীবন ও সামাজিক জীবন সম্পর্কে আলোচনা কর।

২) হরপ্পা সভ্যতাকে কেন নগরকেন্দ্রিক সভ্যতা বলা হয়- আলোচনা কর।

 

(মহাত্মা গান্ধী এবং জাতীয়তাবাদী আন্দোলন)

১) মহাত্মা গান্ধী কিভাবে জাতীয় আন্দোলনের চরিত্রে পরিবর্তন ঘটালেন?

২) কি পরিস্থিতিতে গান্ধীজি ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ডাক দেন ?এটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল কেন?

৩) অসহযোগ আন্দোলনের উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব বা ফলাফল সম্পর্কে লেখো।

 

মানচিত্র ভিত্তিক প্রশ্নো।

 

 

১) প্রদত্ত ভারতের মানচিত্রে নিম্নলিখিত স্থান গুলি চিহ্নিত এবং শনাক্ত করো

মগধ, সাচী স্তূপ,বিজয়নগর সাম্রাজ্য ,মহাজনপদ (কাশি ),লোথাল, মীরাট, আমেদাবাদ ,মহাজনপদ (মগধ),সিপাহী বিদ্রোহের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র(আজমগড়), সোপারা (অশোকের পার্বত্য শিলালিপি), সা৺চী, সিপাহী বিদ্রোহের স্থান -ব্যারাকপুর, গান্ধীজীর প্রথম সত্যাগ্রহ স্থান (চম্পারন), আহমেদাবাদ , ঝাঁসি,আগ্রা ,সিপাহী বিদ্রোহের কেন্দ্র (ঝাঁসি),চৌরিচৌরা, মোগল আমলে বিখ্যাত শহর আগ্রা ,নাসিক, ধোলাবিরা, মগধের রাজধানী (পাটলিপুত্র), মোগল আমলের বিখ্যাত শহর- আগ্রা।

২) প্রদত্ত ভারতীয় উপ-মহাদেশের মানচিত্রে নিম্নলিখিত স্থানগুলি চিহ্নিত এবং শনাক্ত করো।

মহেঞ্জোদারো ,কালিবঙ্গান ,বালাকোট ,লোথাল, হরপ্পা, বানাওয়ালি।

ভাগ – ১

অধ্যায় – ১ ইট, পুঁতি ও অস্থিসমূহ(হরপ্পা সভ্যতা) (MCQ-1 VSA-3=4)
মান-1
A. সঠিক উত্তর বাছাই করো:
1. ভারতের প্রথম নগরকেন্দ্রিক সভ্যতা ছিল
(a) মেহেরগড় সভ্যতা (b) সিন্ধু সভ্যতা (c) কোটদিজি সভ্যতা (d) হেলমান্দ সভ্যতা
উত্তর: (b) সিন্ধু সভ্যতা।

2. হরপ্পা সভ্যতায় শহরের উঁচু এলাকাকে বলা হত–
(a) সিটাডেল(b)অ্যাগোরা(c) টেল(d)অ্যাক্রোপলিস
উত্তর:(a) সিটাডেল
3. হরপ্পা সভ্যতায় কোন্ ধাতুর ব্যবহার দেখা যায় না ?
(a) তামা(b) ব্রোঞ্জ(c) লোহা(d) সোনা
উত্তর: (c)লোহা।
4. সিন্ধু সভ্যতার সিলগুলির আকার ছিল—
(a) গোলাকার(b)আয়তাকার(c) বর্গাকার(d) ত্রিভুজাকার
উত্তর: (b) আয়তাকার।
5. মহেন-জো-দারোর একটি সিলমোহরে তিনটি শৃঙ্গবিশিষ্ট এক যোগীমূর্তি খোদিত রয়েছে
(a)পশুপতি শিব(b)প্রজাপতি দক্ষ(c)পালকপতি নারায়ণ(d) পুরোহিত রাজা
ঊত্তর: (a) পশুপতি শিব।
6. কোন্ বেদকে প্রাচীনতম ধর্মগ্রন্থ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় ?
(a) ঋগবেদ(b) যজুর্বেদ(c) সামবেদ(d) অথর্ববেদ
ঊত্তর: (a)ঋগ্‌বেদ।
7. ভারতীয় আর্কিয়োলজিক্যাল সার্ভে-এর প্রথম অধিকর্তা ছিলেন—
(a) দয়ারাম সাহনি(b)রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়(c) আলেকজান্ডার ক্যানিংহাম(d) আর্নেস্ট ম্যাকে
উত্তর: © আলেকজান্ডার ক্যানিংহাম।
৪. হরপ্পা সভ্যতায় বিখ্যাত স্নানাগারটি কোথায় অবস্থিত ?
(a) হরপ্পায়b) লোথালে(c) মহেন-জো-দারো(d) কালিবঙ্গানে
উত্তর:(c) মহেন-জো-দারো।
9. লোথাল কোন্ নদীর তীরে অবস্থিত ছিল ?
(a) ভোগাবর নদী(b) ইরাবতী নদী(c) শতদ্রু নদী(d) ঘাঘর নদী
উত্তর: (a)ভোগাবর নদী
10. কোন্ পশুকে সিন্ধুবাসীরা পোষ মানাতে পারেনি ?
(a) ঘোড়া(b) উট(c)হাঁস(d) ছাগল
ঊত্তর: (a)ঘোড়া
একটি পূর্ণাঙ্গ বাক্যে উত্তর দাও: মান-1(1×3=3)
1. হরপ্পা সংস্কৃতির সময়কাল কী ছিল ?
উত্তর: হরপ্পা সংস্কৃতির সময়কাল ছিল খ্রি. পূ. 2600 থেকে 1900 খ্রি. পূ.।
2. হরপ্পা সভ্যতায় কী কী ধরনের শস্য ব্যবহার করা হত ?
উত্তর: হরপ্পা সভ্যতায় গম, যব, জোয়ার, বাজরা, মটরকলাই, মসুর ও তিল ইত্যাদি শস্য ব্যবহার করা হত।
3. ভারতীয় আর্কিয়োলজিক্যাল সার্ভে-এর প্রথমঅধিকর্তা কে ছিলেন ?
উত্তর: ভারতীয় আর্কিয়োলজিক্যাল সার্ভে-এর প্রথম অধিকর্তা ছিলেন আলেকজান্ডার ক্যানিংহাম।
4. সিন্ধুসভ্যতায় বসতিগুলি কয়ভাগে বিভক্ত ছিল ও কী কী ?
উত্তর: হরপ্পা সভ্যতায় বসতিগুলি দুটি ভাগে বিভক্ত ছিল। যথা— সিটাডেল অথবা উচ্চ শহর এবং নিম্ন শহর।

5. হরপ্পা সভ্যতায় কী কী ধরনের ধাতু ব্যবহার করা হয় ?
ঊত্তর: হরপ্পা সভ্যতায়— স্বর্ণ, পিতল, ব্রোঞ্জ ও তামাএর ব্যবহার করা হত।
6. কোন্ ধাতুর ব্যবহার হরপ্পা সভ্যতায় পাওয়া যায় না ?
উত্তর: লোহা ধাতুর ব্যবহার হরপ্পা সভ্যতায় পাওয়া যায় না।
7. স্টিয়াটাইট কী?
ঊত্তর: স্টিয়াটাইট হল এক ধরনের নরম পাথর। হরপ্পা সভ্যতার শিল্পীরা এই পাথর দিয়ে পুঁতির মালা তৈরি করত।
৪. ভারতের প্রাচীনতম ধর্মগ্রন্থ কোনটি ?
উত্তর: ভারতের প্রাচীনতম ধর্মগ্রন্থ ঋকবেদ।
9. “The Story of Indian Archaeology’ কে রচনা করেন ?
উত্তর: ‘The Story of Indian Archaeologyগ্রন্থটি এস এন রায় রচনা করেন।
10. মহেন-জো-দারো ও কালিবঙ্গান শব্দের অর্থ কী ?
ঊত্তর: মহেন-জো-দারো কথার অর্থ মৃতের স্তূপ এবং কালিবঙ্গান কথার অর্থ কালো বালা।
11. সিন্ধুসভ্যতার দুটি গুরুত্বপূর্ণ নগরীর নাম লেখো।
উত্তর: সিন্ধুসভ্যতার দুটি গুরুত্বপূর্ণ নগরীর নাম হরপ্পা ও মহেনজোদারো।
12. সিন্ধুবাসীরা সিন্ধম কাকে বলত ?
ঊত্তর: সিন্ধুবাসীরা সিন্ধম বলত কার্পাস বা তুলোকে।
13. মেসোপটেমিয়ার মানুষের কাছে ভারত কী নামে পরিচিত ছিল ?
ঊত্তর: মেসোপটেমিয়ার মানুষের কাছে ভারত মেলুহা নামে পরিচিত ছিল।
14. হরপ্পা সভ্যতার সবচেয়ে ছোটো নগরীর নাম লেখো।
উত্তর: হরপ্পা সভ্যতার সবচেয়ে ছোটো নগরীর নাম চানহুদারো।
15. হরপ্পা কোথায় অবস্থিত ?
ঊত্তর: হরপ্পা পাঞ্জাবের ইরাবতী বা রাভী নদীর তীরে মন্টোগোমারি জেলায় অবস্থিত।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর প্রশ্নমান 5

1. সিন্ধু সভ্যতার ধ্বংসপ্রাপ্তের বা পতনের কারণগুলি আলোচনা করো।***
উত্তর: আনুমানিক কৃষির ১৫০০ খ্রিস্টাব্দে হরপ্পা সভ্যতা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। তবে এই ধ্বংসের সঠিক কোনো কারণ জানা যায় নি। ঐতিহাসিকরা শুধুমাত্র এই সভ্যতার ধ্বংসের কতগুলি কারণ অনুমান করেছেন।
নিচে এই সম্ভাব্য কারণগুলি আলোচনা করা হলো—
জলবায়ুর পরিবর্তন : ঐতিহাসিকরা হরপ্পা সভ্যতার ধ্বংসের পশ্চাতে জলবায়ুর পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন। তাঁরা বলেছেন—এই সভ্যতায় একসময় বৃষ্টির পরিমাণ হ্রাস পায়। ফলে ভূগর্ভস্থ লবন উপরে ওঠে আসে এবং এই সভ্যতাকে মরুভূমিতে পরিণত করে। ফলে ইহা ধ্বংস হয়ে যায়।
প্রাকৃতিক বিপর্যয় : অধিকাংশ ঐতিহাসিক হরপ্পা সভ্যতার ধ্বংসের পেছনে প্রাকৃতিক শক্তির ভূমিকাকে মেনে নিয়েছেন। তাঁদের মতে, বন্যা, ভূমিকম্প, খড়া, অগ্নিকান্ড ইত্যাদির কারণে এই সভ্যতা ধ্বংসের মুখে পতিত হয়।
বৈদেশিক আক্রমণ : ঐতিহাসিকদের মতে, হরপ্পার অধিবাসীরা নিজেদের প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা করতে না পারায় বৈদেশিক আক্রমণকে তারা প্রতিহত কতে পারেন নি। তাই বৈদেশিক আক্রমণ হরপ্পা সভ্যতার অন্যতম কারণ বলে অনেকে মনে করেন।
গৃহ যুদ্ধ : বিভিন্ন ঐতিহাসিক হরপ্পা সভ্যতা ধ্বংসের জন্য গৃহযুদ্ধকেও দায়ী করেছেন। হরপ্পা উপত্যকা অঞ্চলে খননকার্যের ফলে প্রাপ্ত স্তুপিকৃত কঙ্কাল, মাথায় ভারী আঘাতের ফলে মৃত কঙ্কাল প্রভৃতি এই মতকে সমর্থন করে।
সিন্ধু নদের বন্যা: সিন্ধু নদের বন্যাকে হরপ্পা সভ্যতার ধ্বংসের আরেকটি কারণ বলে ঐতিহাসিকরা মতামত ব্যক্ত করেছেন। বস্তুত সিন্ধু নদের গর্ভে বালির স্তুপ জমে যাওয়ায় নদের গভীরতা নষ্ট হয় এবং এর ফলে হরপ্পা সভ্যতায় প্রায়ই বন্যা হতো। বন্যার হাত থেকে নগরকে রক্ষার করার জন্য বাঁধ নির্মাণ করা হলেও সেগুলিকে সময়মতো মেরামত না করায় তা সভ্যতা ধ্বংসের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
পরিশেষে এটুকুই বলা যায় যে, হরপ্পা সভ্যতা ধ্বংসের পেছনে এক বা একাধিক কারণ থাকতে পারে বলে অনেক আধুনিক ঐতিহাসিক মত পোষণ করেছেন।
2. হরপ্পা সভ্যতার বহির্বাণিজ্য সম্পর্কে কী জান?***
উত্তর: হরপ্পার মানুষ সমসাময়িক অন্যান্য সভ্যতার সঙ্গে যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল তার অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া গেছে।
(i) পণ্ডিতেরা অভিমত ব্যক্ত করেন যে, হরপ্পার সঙ্গে পশ্চিম এশিয়া, ওমান, এবং মেসোপটেমিয়ার বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল। মেসোপটেমিয়ার সঙ্গে হরপ্পার যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল তার অনেক নিদর্শন পাওয়া গেছে। মেসোপটেমিয়াতে হরপ্পা সংস্কৃতির পুঁতি, সিলমোহর ইত্যাদি পাওয়া গেছে।
(ii) সুমেরীয় সভ্যতার উপাদান যেমন, ভেড়ার নমুনা, মূর্তি এবং পোড়ামাটির আংটি হরপ্পায় পাওয়া গেছে।
(iii) মেসোপটেমীয় গ্রন্থে উল্লেখ আছে যে, মেসোপটেমিয়ার পণ্য আমদানি-রপ্তানি কেন্দ্র ছিল দিলমুন (সম্ভবত বাহারিন দ্বীপ), মেলুহা এবং মগান।
(iv) হরপ্পা অঞ্চলে মেলুহা ও মগানের চিহ্নিত সামগ্রী পাওয়া গেছে। মেলুহাকে সমুদ্র ভ্রমণকারীদের স্থান বলে বর্ণনা করা হয়েছে।
(v) জাহাজ এবং নৌকার নিদর্শন দেখে পণ্ডিতেরা মনে করেন যে সেগুলি হরপ্পার সঙ্গে বহির্বিশ্বের বাণিজ্যিক সম্পর্কের প্রমাণ বহন করে।
(vi) প্রত্নতাত্ত্বিক উৎস থেকে জানা যায় যে, হরপ্পার মানুষ ওমান থেকে তামা আমদানি করত। হরপ্পার একটি বিশাল পাত্র পাওয়া গেছে ওমানে। এতে অনেকে মনে করেন যে হয়তো তামার বিনিময়ে ওমানে পাত্রটি পাঠানো হয়েছিল।
(vii) রাসায়নিক বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, হরপ্পার শিল্পের মধ্যে নিকেলের উপস্থিতি রয়েছে। মেসোপটেমীয় গ্রন্থ থেকে আরও জানা যায় যে, মগান থেকে হরপ্পায় তামা আসত এবং মেসোপটেমিয়া অঞ্চলে প্রাপ্ত তামাতেও নিকেলের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর
3. হরপ্পা সভ্যতার অধিবাসীদের অর্থনৈতিক জীবন সম্পর্কে আলোচনা করো।***
উত্তর: হরপ্পা সভ্যতার অধিবাসীরা বিভিন্ন অর্থনৈতিক দিক দিয়ে স্বল্প পরিমাণে অগ্রসর ছিল। তারা বিভিন্ন প্রকারের কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কৃষি, পশুপালন, ব্যবসা-বাণিজ্য, বিভিন্ন শিল্পের কাজ, বাসগৃহ প্রভৃতি নিয়েই তৎকালীন সময়ের অর্থনৈতিক ও সামাজিক দিক নিয়ন্ত্রিত হতো।
হরপ্পার অধিবাসীদের বিভিন্ন অর্থনৈতিক কার্যাবলি নিম্নে আলোচিত হল—
কৃষিকাজ : হরপ্পা সভ্যতার অধিবাসীদের প্রধান জীবিকা ছিল কৃষিকাজ ৷ কালিবঙ্গানে প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান হিসেবে কাঠের লাঙ্গল পাওয়া গিয়েছে। তৎকালীন সময়ে উৎপাদিত প্রধান কৃষিজ ফসল ছিল—গম, যব, তুলো,তিল।
পশুপালন : হরপ্পা সভ্যতার অধিবাসীরা খাদ্যের প্রয়োজনে হাঁস, মুরগি, ছাগল, গরু, মহিষ, ভেড়া, উট, ষাঁড় প্রভৃতি পালন করতো। মালপত্র পরিবহনের জন্য বলদ, ষাঁড়, গাধা, উট, হাতি প্রভৃতি পশুকে পোষ মানানো হতো।
ব্যাবসা-বাণিজ্য : ব্যাবসা-বাণিজ্য ছিল হরপ্পার অধিবাসীদের গুরুত্বপূর্ণ জীবিকা। এখানকার বণিকদের ‘পণি’ বলা হতো। তারা স্থল ও জলপথে অভ্যন্তরীন ও বৈদেশিক উভয় প্রকার বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত ছিল।
শিল্প : হরপ্পা সভ্যতায় বিভিন্ন শিল্পের বিকাশ ঘটেছিল। যেমন—বয়ন শিল্প, ধাতুশিল্প, মৃৎশিল্প, প্রস্তর শিল্প। এই শিল্পগুলিতে জড়িত থেকে মানুষ তাদের জীবনে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা আনার চেষ্টা করতো।
সামুদ্রিক বাণিজ্য : হরপ্পা সভ্যতায় প্রাপ্ত কিছু সিলমোহর নৌকা, জাহাজ, মাস্তুল, নোঙর, মাঝি প্রভৃতির ছবি থেকে তখনকার মানুষের সামুদ্রিক কার্যকলাপের ইঙ্গিত মেলে। গুজরাটের লোথাল ছিল হরপ্পা সভ্যতার সামুদ্রিক বন্দর।
আমদানি-রপ্তানি : হরপ্পা সভ্যতায় সুতিবস্ত্র, খাদ্যশস্য, ময়ুর, হাতির দাঁতের সামগ্রী, নীলকান্তমনি, অন্যান্য মণিমুক্তা প্রভৃতি রপ্তানি করা হতো। তাছাড়া দেবদারু কাঠ, সোনা, তামা, সিসা ও চুনাপাথর, রূপো এবং শ্বেত পাথর প্রভৃতি আমদানি করা হতো।
EXTRA QUESTIONS
1. (ক) হরপ্পা সভ্যতা কে, কত খ্রিস্টাব্দে আবিষ্কার করেন। (খ) হরপ্পা সভ্যতার বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর: (ক) আবিষ্কার: ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে প্রখ্যাত প্রত্নতত্ত্ববিদ রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় দয়ারাম সাহানির সহায়তায় যথাক্রমে সিন্ধুপ্রদেশের লারকানা জেলার মহেন-জো-দারো এবং পাঞ্জাবের মন্টগোমারি জেলার হরপ্পা নামক স্থান দুটিতে খননকার্য চালিয়ে এক সুপ্রাচীন সভ্যতার আবিষ্কার করেন। এই সুপ্রাচীন সভ্যতাই হল—হরপ্পা সভ্যতা।
(খ)বৈশিষ্ট্যসমূহ: হরপ্পা সভ্যতার আবিষ্কার ভারত তথা বিশ্বের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা। নীচে এই সভ্যতার বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করা হল—
(i) নগর বিন্যাস: হরপ্পা সভ্যতার একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল এর সুপরিকল্পিত নগরী। শহরের অধিকাংশ বাড়িই ছিল পোড়াইটের দ্বারা নির্মিত।
(ii) স্নানাগার ও পয়ঃপ্রণালী: হরপ্পা সভ্যতার আবিষ্কৃত প্রতিটি বাড়িতেই স্নানাগার ও পয়ঃপ্রণালীর সুবন্দোবস্ত ছিল। হরপ্পা নগরীতে খননকার্যের ফলে একটি সুবৃহৎ স্নানাগার আবিষ্কৃত হয়েছিল। এই স্নানাগারটি ৩৯ ফুট লম্বা, ২৩ ফুট প্রশস্ত এবং ৮ ফুট গভীর।
(iii) দুর্গের অবস্থান: হরপ্পা ও মহেন-জো-দারোতে নিরাপত্তার জন্য যে বড়ো বড়ো দুর্গ নির্মিত হয়েছিল তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।
(iv) কৃষিকাজ: হরপ্পা সভ্যতার অধিবাসীদের প্রধান জীবিকা ছিল কৃষি। কৃষিজাত দ্রব্যের মধ্যে গম, যব, বার্লি ছিল প্রধান।
(v) আবর্জনাগারের অবস্থান: হরপ্পা সভ্যতায় নগরীর রাস্তাগুলি ছিল প্রশস্ত এবং রাস্তার মাঝে আবর্জনা ফেলার জন্য আবর্জনাগারের ব্যবস্থা ছিল। এ ছাড়াও প্রত্যেক বাড়ি থেকে জল নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা ছিল।
(vi) পোশাক-পরিচ্ছদ: হরপ্পা সভ্যতায় সুতিবস্ত্র ও পশম বস্ত্রের ব্যাপক ব্যবহার ছিল। সে যুগে স্ত্রী ও পুরুষ উভয়ই বিভিন্ন ধরনের অলংকার পরিধান করত। স্ত্রীলোকেরা কেশ বিন্যাসও করতো।
(vii) ধর্ম: হরপ্পা সভ্যতার লোকেরা প্রধানত প্রকৃতির উপাসক হলেও মাতৃদেবী এবং শিবের পুজো করত। সিলমোহর থেকে জানা যায় যে, তারা শিব ও শক্তির পুজো ছাড়াও অগ্নি, গাছ প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তির পুজো করত।
সবশেষে বলা যায় যে, প্রতিটি সভ্যতার মানুষের মতো হরপ্পা সভ্যতার মানুষও ব্যতিক্রম ছিল না। তাই হরপ্পা সভ্যতার মানুষেরও জীবনধারণের নানা বৈশিষ্ট্য ছিল।

2. মহেনজোদারোর লেখো স্নানাগারটির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে।
উত্তর: মহেন-জো-দারোতে একটি সুবৃহৎ আয়তাকার স্নানাগার আবিষ্কৃত হয়েছে। এর স্থাপত্যগত বৈশিষ্ট্য ছিল খুবই উন্নতমানের। যেমন—
(i) আয়তাকার এই স্নানাগারটির আয়তন ১৮০ × ১৮০ বর্গফুট ছিল। এর মাঝখানে রয়েছে একটি জলাধার, যার দৈর্ঘ্য ৩৯ ফুট এবং প্রস্থ ২৩ ফুট। আর গভীরতা ছিল ৮ ফুট। এই স্নানাগারটির চারপাশে ছিল একটি বারান্দা।
(ii) জলাধারটির নীচে নামতে উত্তর এবং দক্ষিণ দিকে ছিল চওড়া সিড়ি।
(iii) জলাধারের জলকে ঠান্ডা রাখতে এর দেয়ালে বিটুমিনের মোটা আস্তরণ করা হয়েছিল।
(iv) জলাধারের জল যাতে কোনো ছিদ্র দিয়ে বের হতে না পারে সেদিকেও স্থপতিরা নজর দিয়েছিল।
(v) জলাধারের নোংরা জল সুড়ঙ্গের মধ্য দিয়ে নিষ্কাশন করার ব্যবস্থা ছিল।
(vi) স্নানাগারটির পূর্ব প্রান্তে বেশ কয়েকটি সারিবদ্ধ ছোটো ছোটো ঘর ছিল। পণ্ডিতেরা অনুমান করেন যে, এখানে হয়তো মানুষেরা ধর্মীয় ক্রিয়াকলাপ সম্পন্ন করত
-2.রাজা, কৃষক এবং শহর : প্রারম্ভিক রাজ্য এবং অর্থনীতি (৬০০ খ্রি. পূ.-৬০০ খ্রি.)
1.ভারতের প্রথম ঐতিহাসিক সম্রাট বলা হয়-
(ক)সম্রাট অশোককে (খ)চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যকে (গ)কনিষ্ককে (ঘ) মহাপদ্মনন্দকে
উত্তর:(খ)চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যকে
2.যৌড়শ জনপদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ সাম্রাজ্যে পরিণত হয়-
(ক)অঙ্গ (খ)মগধ (গ) গান্ধার (ঘ)বজ্জি
উত্তর:(খ)মগধ
3. ‘আইনি-ই-আকবরি’ গ্রন্থের লেখক হলেন—
(ক) বিশাখ দত্ত (খ) আবুল ফজল (গ) বরাহমিহির (ঘ) ফা-হিয়েন
উত্তর: (খ) আবুল ফজল।
4.দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের রাজসভার সভাকবি ছিলেন-
(ক)কালিদাস(খ)ফা-হিয়েন(গ)রবিশংকর(ঘ)মেগাস্থিনিস
উত্তর:(ক)কালিদাস।
5.মগধরাজ বিম্বিসারের রাজধানী ছিল
(ক)ইন্দ্ৰপ্ৰস্থ (খ)পাটলিপুত্র (গ)রাজগৃহ (ঘ)বৈশালি
উত্তরঃ (গ) রাজগৃহ।
6.মগধ সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন—
(ক)বিম্বিসার(খ)অশোক(গ)মহাপদ্মনন্দ(ঘ)চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য
উত্তর: (ক) বিম্বিসার।
7. ভারতের রাজাদের মধ্যে যাঁকে ‘দ্বিতীয় অশোক’ বলা হয় তিনি হলেন-
(ক)সম্রাট অশোক(খ)জীবিতগুপ্ত (গ)প্রথম কণিষ্ক (ঘ)চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য
উত্তর: (গ) প্রথম কণিষ্ক
8.দক্ষিণ ভারতের একমাত্র জনপদ হল –
(ক)মগধ (খ)বৃজ্জি (গ)অম্মক (ঘ)মল্ল
উত্তর: (গ) অম্মক।
9.কণিষ্ক কত খ্রিস্টাব্দে সিংহাসনে আরোহণ করেন?
(ক)৭৮ খ্রিস্টাব্দে(খ)৭৯ খ্রিস্টাব্দে(গ)৮০ খ্রিস্টাব্দে(ঘ)৮১ খ্রিস্টাব্দে
উত্তর: (ক) ৭৮ খ্রিস্টাব্দে।
10.’অর্থশাস্ত্র’-এর রচয়িতা হলেন—
(ক)কৌটিল্য (গ)অশোক (গ)প্রথম কণিষ্ক (ঘ)চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য
উত্তরঃ (ক) কৌটিল্য।
11. ‘ভারতের নেপোলিয়ন’ বলা হয়—
(ক) চন্দ্রগুপ্তকে(খ) অশোক(গ) চন্দ্রগুপ্ত (ঘ) সমুদ্রগুপ্তকে
উত্তর: (ঘ) সমুদ্রগুপ্তকে
12.মৌর্য সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ছিল –
(ক)চন্দ্রগুপ্ত(খ)সমুদ্রগুপ্ত (গ)স্কন্দগুপ্ত(ঘ)চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য
উত্তর: (ঘ)চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য
13. প্রাচীন ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ শাসক ছিলেন-
(খ) স্কন্দগুপ্ত
(ঘ) অশোক
(গ) বৃহদ্রথ
উত্তর: (গ) বৃহদ্রথ ।
14.মৌর্য বংশের শেষ শাসক ছিলেন—
(ক)মহেন্দ্ৰ (খ)ধননন্দ (গ)বৃহদ্রথ (ঘ)অজাতশত্রু
উত্তর: (গ) বৃহদ্রথ ।
15.’বুদ্ধচরিত’ গ্রন্থের রচয়িতা ছিলেন-
(ক)বিশাখ দত্ত (খ)অশ্বঘোষ (গ)আর্যভট্ট (ঘ)বরাহমিহির
উত্তর: (খ) অশ্বঘোষ।
16.কণিষ্কের রাজধানীর নাম-
(ক)পুরুষপুর (খ)বজ্জি (গ)ইন্দ্ৰপ্ৰস্থ (ঘ)মল্ল।
উত্তর: (ক)পুরুষপুর।
17.’সূর্যসিন্ধান্ত’ গ্রন্থের রচয়িতা হলেন-
(ক)বিশাখ দত্ত (খ)অশ্বঘোষ (গ)আর্যভট্ট (ঘ)বরাহমিহির
উত্তর: (গ)আর্যভট্ট
VSA 1 MARK
1. এপিগ্রাফি শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: এপিগ্রাফি শব্দের অর্থ হল ‘শিলালিপি অধ্যয়ন’।
2. ষোড়শ মহাজনপদের দুটি প্রজাতান্ত্রিক রাজ্যের নাম লেখো।
উত্তর: ষোড়শ মহাজনপদের একটি প্রজাতান্ত্রিক রাজ্য ছিল বজ্জি ও মল্ল।
3. কে ‘শ্রেণিক’ উপাধি ধারণ করেন?
উত্তর: বিম্বিসার ‘শ্রেণিক’ উপাধি ধারণ করেন।
4. কে ‘কুণিক’ উপাধি ধারণ করেন?
উত্তর: অজাতশত্রু ‘কুণিক’ উপাধি ধারণ করেন।
5. মগধের রাজধানী প্রথমে কোথায় ছিল?
উত্তর: মগধের রাজধানী প্রথমে রাজগৃহে বা রাজগিরে ছিল।
6. ধননন্দ কে ছিলেন ?
উত্তর: ধননন্দ ছিলেন নন্দবংশের শেষ রাজা।
7. হর্ষঙ্ক বংশের পর মগধের রাজা কে হন?
উত্তর: হর্যঙ্ক বংশের পর মগধের রাজা হন শিশুনাগ।এবং ওনি নাগ বংশ প্রতিষ্ঠা করেন।
৪. সেলুকাস কে ছিলেন?
উত্তর: সেলুকাস ছিলেন গ্রিক বীর আলেকজান্ডারের প্রধান সেনাপতি।
9. যে বংশের নেতৃত্বে মগধ সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয় সেটির নাম কী?
উত্তর: হর্যঙ্ক বংশের নেতৃত্বে মগধ সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
10. পলিবোথরা কার নাম?
উত্তর: পলিবোথরা পাটলীপুত্রের নাম। গ্রিক বিবরণে এই নামটির উল্লেখ আছে।
11. নন্দবংশ ধ্বংস করতে চন্দ্রগুপ্তের প্রধান সহায়ক কে ছিলেন?
উত্তর: নন্দবংশ ধ্বংস করতে চন্দ্রগুপ্তের প্রধান সহায়ক ছিলেন কৌটিল্য বা চাণক্য।
12. মৌর্য বংশের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্রাট কে ছিলেন?
উত্তর: মৌর্য বংশের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্রাট ছিলেন অশোক।
13. কনিষ্কের শ্রেষ্ঠ শিল্পকীর্তি কোন্‌টি?
উত্তর: কনিষ্কের শ্রেষ্ঠ শিল্পকীর্তি হল ৬৩৮ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট বৌদ্ধবিহার নির্মাণ।
14. কনিষ্কের রাজধানী কোথায় ছিল?
উত্তর: পেশোয়ার বা পুরুষপুরে কনিষ্কের রাজধানী ছিল।
15. কনিষ্কের আমলে কোন্ বৌদ্ধসংগীতি অনুষ্ঠিত হয়?
উত্তর: কাশ্মীরে (জলন্ধরে) চতুর্থ বৌদ্ধসংগীতি অনুষ্ঠিত হয়।
16. গুপ্ত বংশের শ্রেষ্ঠ নরপতি কে ছিলেন?
উত্তর: গুপ্ত বংশের শ্রেষ্ঠ নরপতি ছিলেন সমুদ্রগুপ্ত।
17. কুষাণ যুগের শেষ শক্তিশালী রাজা কে ছিলেন?
উত্তর: কুষাণ যুগের শেষ শক্তিশালী রাজা ছিলেন বাসুদেব।
18. ‘ভারতের নেপোলিয়ন’ কাকে বলা হয়?
উত্তর: সমুদ্রগুপ্তকে ‘ভারতের নেপোলিয়ন’ বলা হয়।
19. দশমিক পদ্ধতি ও শূন্য চিহ্ন কোন্ যুগে আবিষ্কৃত হয়?
উত্তর: দশমিক পদ্ধতি ও শূন্য চিহ্ন গুপ্ত যুগে আবিষ্কৃত হয়।
20. ‘শকারী’ কাকে বলা হত?
উত্তর: দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তকে ‘শকারী’ বলা হত।
21. দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত কী উপাধি গ্রহণ করেছিলেন?
উত্তর: দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত ‘বিক্রমাদিত্য’ উপাধি গ্রহণ করেছিলেন।
22. ফা-হিয়েন রচিত গ্রন্থটির নাম লেখো।
উত্তর: ফা-হিয়েন রচিত গ্রন্থটির নাম হল ‘ফো কুয়ো কি’।
23. ফা-হিয়েন কত খ্রিস্টাব্দে ভারতে আসেন?
উত্তর: ফা-হিয়েন ভারতে আসেন ৩৯৯ খ্রিস্টাব্দে।
24. কালীদাসের লেখা দুটি গ্রন্থের নাম লেখো।
উত্তর: কালীদাসের লেখা দুটি গ্রন্থের নাম হলো ‘রঘুবংশম’ এবং ‘মেঘদূতম’।
25. কোন্ গুপ্তরাজা হুনদের পরাজিত করেন?
উত্তর: গুপ্ত সম্রাট স্কন্দগুপ্ত হুনদের পরাজিত করেন।
26. কোন্ গুপ্তরাজাকে ‘ভারতের রক্ষাকর্তা’ বলা হয়?
উত্তর: স্কন্দগুপ্তকে ‘ভারতের রক্ষাকর্তা’ বলা হয়।
27. গুপ্ত যুগের বিখ্যাত কবি কে ছিলেন?
উত্তর: গুপ্ত যুগের বিখ্যাত কবি ছিলেন কালীদাস।
28. ‘সূর্যসিদ্ধান্ত’ গ্রন্থের লেখকের নাম কী?
উত্তর: ‘সূর্যসিদ্ধান্ত’ গ্রন্থের লেখকের নাম আর্যভট্ট।
29. ‘হর্ষচরিত’ গ্রন্থের লেখক কে?
উত্তর: ‘হর্ষচরিত’ গ্রন্থের লেখক হলেন বাণভট্ট।
30. পাটলিপুত্রের বর্তমান নাম কী?
উত্তর: পাটলিপুত্রের বর্তমান নাম পাটনা।
31. ‘কুমারসম্ভব’ গ্রন্থটির লেখক কে?
উত্তর: ‘কুমারসম্ভব’ গ্রন্থটির লেখক হলেন কালীদাস।
32. ‘অভিজ্ঞান শকুন্তলম’ গ্রন্থটির লেখক কে?
উত্তর: ‘অভিজ্ঞান শকুন্তলম’ গ্রন্থটির লেখক কালীদাস।
33. সম্রাট অশোক কবে কলিঙ্গ জয় করেন?
উত্তর: সম্রাট অশোক রাজ্য অভিষেক করার প্রায় ৮ বছর পর আনুমানিক ২৬১ খ্রিস্টপূর্বাব্দে কলিঙ্গ রাজ্য জয় করেন। কাদের বলে?
34. প্রথমে মগধের রাজধানী কোথায় ছিল?
উত্তর: প্রথমে মগধের রাজধানী ছিল রাজগৃহে।

35. কোন ভাষা ও লিপিতে অশোকের শিলালিপি রচিত হয়েছিল?
উত্তর: অশোকের অধিকাংশ শিলালিপি প্রাকৃত ভাষায় এবং ব্রাহ্মী ও খরোষ্ঠী লিপিতে রচিত হয়েছিল।
36. কে মৌর্য সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর: চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য ৩২১ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মৌর্য সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।
37. মেগাস্থিনিস কে ছিলেন?
উত্তর: মেগাস্থিনিস ছিলেন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের রাজসভায় গ্রিকরাজা সেলুকাস প্রেরিত দূত।
38. মেগাস্থিনিস রচিত গ্রন্থটির নাম লেখো।
উত্তর: মেগাস্থিনিস রচিত গ্রন্থটির নাম হল ‘ইন্ডিকা’।
39. হরিষেণ কে ছিলেন?
উত্তর: হরিষেণ ছিলেন গুপ্ত বংশের শ্রেষ্ঠ সম্রাট সমুদ্রগুপ্তের সভাকবি।
40. বাণভট্ট রচিত গ্রন্থটির নাম কী?
উত্তর: বাণভট্ট রচিত গ্রন্থটির নাম হল ‘হর্ষচরিত’।
41. মৌর্য যুগের ইতিহাস জানার অন্যতম উপাদান কী কী?
উত্তর: মৌর্য যুগের ইতিহাস জানার অন্যতম উপাদান হল কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র এবং অশোকের শিলালিপিসমূহ।
42. কুষাণ কারা?
উত্তর: কুষাণরা ছিল মধ্য এশিয়া থেকে আগত একটি যাযাবর জাতি যারা মধ্য এশিয়া থেকে উত্তর-পশ্চিম ভারত অবধি বিশাল অঞ্চল শাসন করত এবং তাঁরাই ভারতে প্রথম স্বর্ণমুদ্রা প্রচলন করেন।
43. ‘সমাহর্তা’ কাকে বলা হত?
উত্তর: মৌর্য শাসনব্যবস্থায় রাজস্ব বিভাগের মন্ত্রীদের ‘সমাহর্তা’ বলা হত।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর: প্রতিটি প্রশ্নের মান-২
1.ষোড়শ মহাজন পদের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো। M-4
উঃষোড়শ মহাজন পদের দুটি বৈশিষ্ট্য হল-
(i)মহাজনপদগুলি নিজেদের মধ্যে অবিরাম লড়াই ও সংঘর্ষের মাধ্যমে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরার চেষ্টা করেছিল।
(ii)মহাজনপদগুলি শাসনব্যবস্থার প্রকৃতিতে ১৪ টি ছিল রাজতান্ত্রিক ও ২ টি ছিল প্রজাতান্ত্রিক রাজ্য।
(iii)মহাজনপদ গুলির নিজেদের মধ্যে বিরোধের ফলে তারা প্রতিবেশী মহাজনপদের বিরুদ্ধে বৈদেশিক আক্রমণকারীকে সহায়তা করতে প্রস্তুত ছিল।
2.মৌর্য সাম্রাজ্যের যে-কোনো দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তরঃ মৌর্য সাম্রাজ্যের দুটি বৈশিষ্ট্য হল-
(i) মৌর্য শাসন ব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন মৌর্য সম্রাট নিজে, তবে তিনি স্বেচ্ছাচারী ছিলেন না।অশোক বলতেন—সব মুনিষে প্ৰজা মমঃ’ অর্থাৎ সব মানুষই আমার সন্তান।
(ii)মৌর্য শাসন ব্যবস্থায় বৈশিষ্ট্য ছিল কেন্দ্রীভূত আমলাতন্ত্র। এদের আনুগত্য সরাসরি সম্রাটের প্রতি ছিল।সম্রাটের ব্যক্তিগত কর্মদক্ষতার ওপরই আমলাদের দক্ষতা নির্ভরশীল ছিল।
3.কুষাণ বংশের শ্রেষ্ঠ রাজা কে? এই বংশের রাজারা কী উপাধি গ্রহণ করতেন?
উত্তরঃ কুষাণ বংশের শ্রেষ্ঠ রাজা ছিলেন কণিষ্ক। এই বংশের রাজারা নিজেদের ‘দেবপুত্র’ অর্থাৎ ভগবানের পুত্র-সহ বিভিন্ন উপাধি গ্রহণ করতেন
4. মৌর্য শিল্পকলা সম্পর্কে লেখো।
উঃ মৌর্য যুগে স্থাপত্য ও ভাস্কর্যের বহুমুখী বিকাশ হয়েছিল।পাটলীপুত্রে কাষ্ঠনির্মিত রাজপ্রাসাদ ছিল বিশেষ সুষমামন্ডিত।অশোকের প্রাসাদ ছিল বড়ো বড়ো পাথরে তৈরি অপূর্ব স্থাপত্য সৃষ্টি। সাঁচী স্তুপের নির্মাণ কৌশল দর্শকদের মনে বিস্ময় উদ্রেক করে।এই যুগে নির্মিত গৃহগুলোর নির্মাণ কৌশলও অপূর্ব।পাটলীপুত্র নগর ছিল পরিখা, তোষণ ও গম্বুজ দিয়ে সুসজ্জিত।মৌর্য শিল্পকলায় গ্রিক ও পারসিক প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।
5. মগধ সবচেয়ে শক্তিশালী গণরাজ্যে পরিণত হওয়ার দুটি কারণ লেখো। M-4
উত্তর: মগধ সবচেয়ে শক্তিশালী গণরাজ্যে পরিণত হওয়ার দুটি কারণ হল
(i) অনুকূল ভৌগোলিক পরিস্থিতি। মগধ নদী ও পর্বত পরিবেষ্টিত হওয়ায় শত্রুপক্ষের সাথে মোকাবেলা সহজ ছিল।
(ii) মগধে তামা ও লোহার প্রাচুর্য্য থাকায় অস্ত্র ও কৃষি যন্ত্রপাতি নির্মাণে সুবিধা হয়।
6. গুপ্তসাম্রাজ্যের পতনের দুটি কারণ লেখো।
উত্তর: গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের দুটি কারণ হল –
(i) অযোগ্য উত্তরাধিকারী – উত্তরাধিকারীদের অযোগ্যতা গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের জন্য অনেকাংশে দায়ী। স্কন্দগুপ্তের পরবর্তী রাজারা সমসময় আরাম আয়েশে মেতে থাকত। যার পরিণতিতে গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতন অনিবার্য হয়ে উঠে।
(ii) বহিরাক্রমণ- গুপ্তরাজারা এক সময় সাময়িক শক্তির সাহায্যে বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিল। কুমারগুপ্ত, স্কন্দগুপ্ত প্রমুখ রাজারা এই সাম্রাজ্যকে বহিঃশত্রুর হাত থেকে রক্ষা করতে পারে নি।
7. গুপ্ত সম্রাট স্কন্দগুপ্তকে ভারতের রক্ষাকর্তা বলা হয় কেন?
উত্তর: ৪৫৫ খ্রিঃপূঃ স্কন্দগুপ্ত সিংহাসনে বসেন। তাঁর রাজত্বকালেই উত্তর-পশ্চিম ভারতে হুণ আক্রমণ শুরু হয়। তিনি এই বর্বর জাতিদের আক্রমণ রোধ করেন। তিনি তাদের এমনভাবে প্রতিহত করেন যে পরবর্তী ৫০ বছরের মধ্যে হুণরা ভারতে আক্রমণের সাহস পায় নি। যদি হুণরা জয়লাভ করতে পারতো তবে ভারতের ইতিহাসের গতিধারা পাল্টে যেতো।এই কারণে ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার স্কন্দগুপ্তকে ‘ভারতের রক্ষাকর্তা’ বলে অভিহিত করেছেন।
8.অশোককে মৌর্য বংশের শ্রেষ্ঠ সম্রাট বলার কারণ কী? M-4
উত্তর: মৌর্য বংশের শ্রেষ্ঠ সম্রাট অশোককে বলা হয়। বিভিন্ন ঐতিহাসিকরা অশোককে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্রাট বলে অভিহিত করেছেন। রাজা হিসাবে কলিঙ্গ রাজ্য জয় করেও রাজ্যবিজয় নীতি পরিত্যাগ করে তিনি ধর্মনীতি গ্রহণ করেন। সাম্য, মৈত্রী ও ভ্রাতৃত্ববোধ দ্বারা প্রজাদের মন তিনি জয় করে নেন।যুদ্ধভেরির পরিবর্তে ধর্মঘোষণা নীতি গ্রহণ করে মানুষের প্রিয়পাত্রে পরিণত হন। এই সমস্ত কারণে অশোককে শ্রেষ্ঠ সম্রাট বলা হয়।
ইতিহাস রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর প্রশ্নমান 4
1.খ্রি.পূর্ব 600 শতক-এর পর থেকে কৃষি ব্যবস্থায় কী কী পরিবর্তন হয়েছিল ?
ঊত্তর:600 খ্রিস্টপূর্ব নাগাদ ভারতবর্ষের শাসকবর্গ ভূমিরাজস্বের পরিমাণ বৃদ্ধি করে।এই অবস্থায় কৃষকরা বাধ্য হয়ে কৃষিপণ্য উৎপাদন বৃদ্ধির দিকে নজর দেয় সেক্ষেত্রে প্রয়োজন ছিল উন্নত ও আধুনিক কৃষি সরঞ্জাম নিম্নে তা আলোচনা করা হল:
(ক)লাঙলের ব্যবহার: প্রথমেই লাঙলের ব্যবহার ও তার উন্নত রূপের কথা বলা দরকার। পরবর্তী বৈদিক যুগে মানুষ লোহাকে কৃষিকাজে ব্যাপক হারে ব্যবহার করা শুরু করে তখন থেকেই কৃষকরা লোহানির্মিত লাঙলের ফালের ব্যবহার শুরু করে। বিশেষ করে ভারতের গঙ্গা ও কাবেরী নদীবিধৌত সমভূমিতে কৃষকরা এরূপ লাঙল ব্যবহার করে চাষের প্রভূত উন্নতি করে।
(খ)কোদালের ব্যবহার: এই সময় কৃষিকাজে লোহার কোদালের ব্যবহার শুরু হয়। বিশেষ করে কাঁকুরে জমিতে কোদাল ব্যবহার করে দারুণ সুফল পায়। ফলে জমিতে ফলন বৃদ্ধি পায়।
(গ)উন্নত ধান চাষ: এই সময় ধান চাষের ক্ষেত্রে আর-এক ধরনের কৌশল তারা রপ্ত করে। ধানের চারাকে পুনঃরোপণ করে ধান উৎপাদনে তারা তাক লাগিয়ে দেয়।
(ঘ) কৃষিজ সেচ: যে সমস্ত জায়গায় চাষ উপযোগী বৃষ্টিপাত হয় না, সেখানে কৃষকরা কৃত্রিম উপায়ে জমিতে জলসেচনের ব্যবস্থা শেখে।জলসেচনের জন্য সরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় খাল, কূপ ইত্যাদি।স্বাভাবিকভাবেই ধান ও অন্যান্য কৃষিজাত পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।
2. এপিগ্রাফিস্ট (লিপিকাররা) যেসব সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন তার মধ্যে পাঁচটি সমস্যা লেখো।
উত্তর: এপিগ্রাফিস্ট (লিপিকাররা) যেসব সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন, তার মধ্যে পাঁচটি সমস্যা হল –
(i) প্রাচীন ভারতের কয়েক হাজার বছর পূর্বের খোদিত লিপি আবিষ্কৃত করা হলেও এগুলির পাঠোদ্ধার করা এবং অনুবাদ প্রকাশ করা আজও সম্ভব হয় নি। এছাড়াও বলা যায় যে, সেই সময়ের অনেক লিপি সময়ের সাথে সাথে নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
(ii) পুরানো হওয়ার ফলে অনেক খোদিত লিপিসমূহ বর্তমানে অস্পষ্ট হয়ে পড়েছে। যার ফলে লিপির পাঠোদ্ধার করতে গিয়ে লিপিকাররা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।
(iii)অনেক সময় লেখমালায় উৎকীর্ণ বর্ণগুলি কোনো কারণে আবছা ও অস্পষ্ট থাকে এবং হারিয়ে যায়।
(iv)এমন কিছু শব্দের উল্লেখ থাকে যার অর্থ বোঝা যায় না। কারণ দেখা গেছে, বর্তমানে সেই শব্দগুলির অর্থভিত্তিক ব্যবহার আর নেই।
(v)আবার অনেক সময় লিপিতে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন কৃষিকাজ, সুখ-দুঃখের
কথার উল্লেখ থাকে না। ফলে সমকালীন রাজত্বের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজ সম্পর্কে অনেক কথাই অজানা থেকে যায়।
03.সম্পর্ক, বর্ণ এবং শ্রেণি : প্রারম্ভিক সমাজ (৬০০ খ্রি.পূ – ৬০০ খ্রি.) W
1. মহাকাব্য (Epic) বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: মহাকাব্য হল এক বিশালাকৃতির কাব্যগ্রন্থ যাতে বীরদের জীবন এবং বিজয়ের বা জাতির অতীতের বিস্তৃত বিবরণ থাকে।
2. মহাভারতের মূল বিষয়বস্তু কী?
উত্তর: কৌরব ও পাণ্ডব এই দুই ভাতৃকুলের মধ্যে ক্ষমতা ও সম্পদের অধিকার নিয়ে যুদ্ধই হল মহাভারতের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়।
3. মাতৃগোত্র ও পিতৃগোত্রের মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর: মাতৃগোত্র হল মায়ের সূত্র থেকে ক্রম বংশবিস্তার আর অপরদিকে পিতৃগোত্র বা কুল হল পিতার সূত্র থেকে পুত্র, পুত্র থেকে নাতি এইভাবে ক্রম বংশবিস্তার।
4. কন্যাদান কেন পিতার গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য?
উত্তর: পিতৃকুলের বংশরক্ষায় একমাত্র অধিকারী হল পুত্র, তাই কন্যাকে সঠিক সময়ে সঠিক পাত্রের হাতে দান করাই হল পিতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য।
5. কুল এবং জাতি কাকে বলে?
উত্তৱ: সংস্কৃত সাহিত্যে কুল বলতে বোঝানো হয়েছে পরিবারকে এবং জাতি বলতে বোঝানো হয়েছে একই রকম আচারআচরণসম্পন্ন মানবগোষ্ঠীকে।
6. ‘স্বরুবিবাহ’ (Polygamy)কী ?
উত্তর: কোনো পুরুষের অধিক সংখ্যক স্ত্রী থাকেলে তাকে বুহবিবাহ বলে।
7. ‘বহুভর্তৃত্ব’ (Polyandry) কী ?
উত্তর: কোনো নারীর একাধিক স্বামী থাকলে তাকে ‘বহুভর্তৃকত্ব’
8. ‘বহির্বিবাহ’ (Exogamy) কাকে বলে?
উত্তর: স্বগোত্রের বাইরে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়াকে ‘বহির্বিবাহ’ বলে।
9.অন্তর্বিবাহ’ বলতে কী বোঝ?
উত্তর: প্রাচীন ভারতে যে বিবাহ কোনো নিকটাত্মীয় বা স্বজাতি গোষ্ঠীর মধ্যে সম্পাদিত হত তাকে বলা হত অন্তর্বিবাহ।
10. ‘গোত্র’ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: ব্রাহ্মণ্য নিদান অনুযায়ী মানুষ বিভিন্ন গোত্রে বিভাজিত, যারা বিভিন্ন ঋষির বংশধর বলে পরিচিত।

11. ‘ম্লেচ্ছ’ কাদের বলা হত?
উত্তর: শক প্রভৃতি জাতি যারা মধ্য এশিয়া থেকে ভারতে এসে শাসকদের স্থান দখল করেছিল, তাদের ব্রাহ্মণরা ম্লেচ্ছ বলে অভিহিত করতেন।
12. শক কারা?
উত্তর:শকগণ মধ্য এশিয়া থেকে ভারতে এসেছিল এবং উত্তর- রচি পশ্চিম ভারতে বসতি স্থাপন করেছিল। ব্রাহ্মণরা তাদেরকে ম্লেচ্ছ, বর্বর বা বহির্দেশীয় বলতেন।
13. রুদ্রদামন কে ছিলেন ?
উত্তর: খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় শতকের বিখ্যাত শক শাসক ছিলেন রুদ্রদামন।
14. সাতবাহন বংশের শ্রেষ্ঠ রাজা কে ছিলেন?
উত্তর: সাতবাহন বংশের শ্রেষ্ঠ রাজা ছিলেন গৌতমীপুত্র সাতকর্ণী, যিনি নিজেকে উচ্চবর্গীয় ব্রাক্ষ্মণ বলে দাবি করতেন।
15. একলব্য কে ছিলেন?
উত্তর: একলব্য ছিলেন নিষাদ বংশীয়, যারা শিকার এবং খাদ্য সংগ্রহের মাধ্যমে জীবিকার্জন করত। ছোটো জাতি বলে দ্রোণাচার্য তাঁকে ধনুর্বিদ্যা শেখাতে চাননি।
16. দ্রোণ কে ছিলেন?
উত্তর: দ্রোণ ছিলেন একজন ব্রাক্ষ্মণ যিনি কৌরবদের ধনুর্বিদ্যা শিক্ষা দান করতেন।
17. স্ত্রীধন বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: নারীরা কোনো ধরনের পৈত্রিক সম্পত্তির অধিকার পেত না কিন্তু বিবাহের সময় যৌতুকরূপে যেসব সম্পদ পেত, সেসব তারা নিজের অধীনে রাখতে পারত—এগুলিকেই ‘স্ত্রীধন’ বলা হত।
18. ‘মহাভারত’-এর আদি নাম কী ছিল ?
উত্তর: ‘মহাভারত’-এর আদি নাম ছিল জয়কাব্য।
19. মহাভারতের কয়টি পর্ব আছে?
উত্তর: মহাভারতের ১৮টি পর্ব আছে।
20. গৌতমীপুত্র সাতকর্ণী কে ছিলেন?
উত্তর: গৌতমীপুত্র সাতকর্ণী ছিলেন সাতবাহন বংশের শ্রেষ্ঠ রাজা।
21. মহাভারত কখন রচিত হয়?
উত্তর: মহাভারত খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ অব্দ থেকে ৫০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে রচিত হয়।
22. মনুস্মৃতি কোন্ সময় রচিত হয়?
উত্তর: মনুস্মৃতি খ্রিস্টপূর্ব ২০০ অব্দ থেকে ২০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে রচিত হয়।
23. ‘মহাভারত-এর নামকরণ কে করেন?
উত্তর: ‘মহাভারত’-এর নামকরণ করেন সৌতি।
24. ‘মহাভারতের’ মূল কাহিনি কাদের নিয়ে গড়ে উঠেছিল?
উত্তর: ‘মহাভারত’-এর মূল কাহিনি পাণ্ডব ও কৌরবদের নিয়ে গড়ে উঠেছিল।
25. ঘটোৎকচ কে ছিলেন?
উত্তর: ঘটোৎকচ ছিলেন হিড়িম্বা রাক্ষসীর পুত্র।
26. বর্ণ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: প্রাচীন বৈদিক সমাজে কর্ম বা পেশার ভিত্তিতে সাধারণ জনসাধারণকে ৪টি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। এই ৪টি শ্রেণির মানুষদের বলা হত বর্ণ।
27. ‘বর্ণাশ্রম’ প্রথার প্রথম উল্লেখ কোথায় পাওয়া যায় ?
উত্তর: ‘বর্ণাশ্রম’ প্রথার প্রথম উল্লেখ ঋগবেদের দশম মণ্ডলের পুরুষসূত্তে পাওয়া যায়।
28. ‘মৃচ্ছকটিকম্’ গ্রন্থটি কে রচনা করেন?
উত্তর: ‘মৃচ্ছকটিকম্’ গ্রন্থটি শূদ্রক রচনা করেন।
29. হিড়িম্বা কে ছিলেন?
উত্তর: হিড়িম্বা একজন নরখাদক রাক্ষসের বোন ছিলেন।
30. দ্রৌপদী কে ছিলেন?
উত্তর: মহারাজ দ্রুপদের কন্যা ছিলন দ্রৌপদী।
31. ‘কুন্তী ও নিষাদী’ গ্রন্থের রচয়িতার নাম লেখো।
উত্তর: ‘কুন্তী ও নিষাদী’ গ্রন্থের রচয়িতার নাম মহাশ্বেতা দেবী।
32. ভারতের একটি মহাকাব্যের নাম লেখো।
উত্তর: ভারতের একটি মহাকাব্যের নাম ‘মহাভারত’।
33.অন্ধ্ৰভৃত্য কাদের বলা হয়?
উত্তর: পুরাণ অনুসারে দক্ষিণ ভারতের সাতবাহনদের অন্ধ্ৰভৃত্য বলা হয়।
34. সাতবাহন বংশের প্রতিষ্ঠাতা কে?
উত্তর: সাতবাহন বংশের প্রতিষ্ঠাতা সিমুক।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর: প্রতিটি প্রশ্নের মান-3
1.মহাভারতের যুগে মানুষের অর্থনৈতিক জীবন সম্পর্কে লেখো।***
উত্তর: মহাভারতের যুগে সব মানুষের অর্থনৈতিক জীবন সমান ছিল না। নিচে এই সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
কৃষিকাজঃ তৎকালীন সময়ে কৃষিকাজ ছিল অর্থনীতির মূল স্তম্ভ। সেই সময় কৃষিকাজ করেই বেশিরভাগ মানুষ তাদের জীবিকা নির্বাহ করতো। মূলত উন্নত এবং কৃষিকাজের উপযুক্ত পরিবেশ থাকায় কৃষিকাজ করে তখনকার সময়ের অধিকাংশ মানুষ তাদের জীবনযাত্রা অতিবাহিত করতো।
পশুপালন: মহাভারতের যুগের মানুষেরা কৃষিকাজের পাশাপাশি পশুপালনও করতো। মূলত জীবিকার তাগিদে তারা পশুপালন করতো। গোরু, উট, ভেড়া, হাতি প্রভৃতি জীবজন্তু পশুপালনের অন্তর্ভুক্ত ছিল।
কুটির শিল্প: এছাড়াও সেই সময়ের মানুষ কুটির শিল্পের কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল।বিভিন্ন কুটির শিল্পজাত দ্রব্যাদি তৈরি করে মূলত সমজের নিম্নস্তরের মানুষেরা তাদের জীবিকা নির্বাহ করতো।মৃৎশিল্প, অলঙ্কার শিল্প, লৌহ শিল্প এবং বিভিন্ন হস্তজাত শিল্প কুটির শিল্পের অন্তর্ভুক্ত ছিল।
ব্যবসা-বাণিজ্য: ব্যবসা-বাণিজ্য করেও সেই সময় কিছু শ্রেণির মানুষ নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করতো। সেই সময় সমাজে যে চারটি শ্রেণি ছিল তাদের মধ্যে অন্যতম একটি শ্রেণির মানুষ তথা বৈশ্যরা ব্যবসা-বাণিজ্য করে নিজেদের অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য বজায় রাখতো।
2.মহাভারতের যুগে মানুষের রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে লেখো।***
উঃ মহাভারতের যুগে মানুষের মধ্যে যে রাজনৈতিক চেতনাবোধ ছিল সে সম্পর্কে নিচে উল্লেখ করা হলো-
(ক)রাজার স্থান: মহাভারতের যুগে রাজার স্থান ছিল সবার ওপরে। সাম্রাজ্য পরিচালনার যাবতীয় ক্ষমতা সেই সময় রাজার হাতেই ন্যস্ত ছিল। সেই সময়ের বৃহদায়তন সাম্রাজ্যগুলি ছিল কুরু, পাঞ্চাল, কোশল এবং পান্ডু। রাজারা তৎকালীন সময়ে মন্ত্রীপরিষদের দ্বারা সেই সমস্ত রাজ্যগুলির শাসন কার্য পরিচালনা করতেন। তবে মন্ত্রীরা ইচ্ছে করলেও স্বাধীনভাবে কোনো কাজ করতে পারতো না।
(খ)সাম্রাজ্যবাদী : মহাভারতের যুগে রাজারা ছিলেন সাম্রাজ্যবাদী। সেই সময় তাঁরা নানা ধরনের উপাধি ধারণ করে। নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব জাহির করতেন। রাজচক্রবর্তী উপাধি ধারণ করার জন্য রাজারা অশ্বমেধ যজ্ঞের আয়োজন করতেন।এছাড়াও তাঁরা বিশাল প্রাসাদে বসবাস করতেন
চারিত্রিক দুর্বলতা: মহাভারতের যুগে রাজাদের বিভিন্ন চারিত্রিক দুর্বলতাও ছিল। তাঁরা মনোরঞ্জনের জন্য নিয়মিত মদ্যপান করতেন। এছাড়াও পাশাখেলা তাদের চরিত্রের আরেকটি প্রধান দুর্বলতা ছিল।

3.প্রাচীন ভারতে স্বাস্থ্য মধ্যে কত ধরনের বিবাহ পদ্ধতি উল্লেখ আছে তাদের সম্পর্কে বিশদ আলোচনা কর। অথবা
বিবাহের ব্রাত্মণিক রীতি-নঙ্গীতি সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো।***
উত্তর: ধর্ম শাস্ত্র ওষুধ ধর্ম সূত্র অনুযায়ী প্রাচীনকালে বৈদিক সমাজে বিভিন্ন ধরনের বিবাহ রীতি-নীতি প্রচলন ছিল।
এই পদ্ধতি গুলি হল –
১। ব্রাহ্ণ : এই পদ্ধতি অনুসারে স্ববর্ণের পাত্রের সাথে যৌতুক সহ বিবাহ প্রদান।
২। দৈব : পরিবারের মঙ্গালার্থে কৃতযজ্ঞের পুরোহিতকে প্রাপ্য অন্যান্য সামগ্রীর সাথে যদি স্বীয় কন্যাকে দান করা হয়, তাহলে এটাকে বলা হয় দৈব বিবাহ।
৩। আর্য: এই পদ্ধতির বিবাহে পাত্র পক্ষকে যৌতকের পরিবর্তে কন্যাদানের মূল স্বরূপ একটি গাভি ও একটি ষাঁড় দান করা হত।
৪। প্রজাপাত্য : এটা হল যৌতুক ও কন্যার মূল বিবাহ পদ্ধতি।
৫। গন্ধর্ব: পাত্র ও পাত্রীর পরস্পর সম্মতিক্রমে এই বিবাহ অনুষ্ঠিত হত। এখানে উভয়কে শুধু শপথ বাক্য উচ্চারণ করানো হত। এই বিবাহে গোপনীয়তা রক্ষা করা হত।
৬। আসুর: এই পদ্ধতির বিবাহের কন্যা ক্রয় করা হত।
৭। রাক্ষস : কন্যাকে বলপূর্বক অপহরণ করে বিবাহ করাতে বলা হত রাক্ষস বিবাহ।
৮। পৈশাচ : ঘুমন্ত বা মানসিক বিকারগ্রস্ত বা মত্ত অবস্থায় কন্যার ইজ্জত লুণ্ঠন করে বিবাহ করাকে পৈশাচ বিবাহ বলা হত । এই আট প্রকারের বিবাহের মধ্যে প্রথম চার প্রকার বিবাহকে শুভ হিসাবে গণ করা হলেও অবশিষ্ট চার প্রকার নিন্দনীয় বলে বিবেচিত হত।
EXTRA QUESTIONS
1. ‘প্রাচীন ভারতের সামাজিক মূল্যবোধের এক উত্তম উৎস হল মহাভারত’— ব্যাখ্যা করো।
অথবা
মহাভারতের যুগে যে সামাজিক রীতি পরিবর্তনের ধারা লক্ষ্য করা যায় তুমি কি মনে কর বর্তমানে ওই ধারা প্রচলিত আছে এ বিষয়ে তোমার মতামত ব্যক্ত কর?
উত্তর: প্রাচীন ভারতের সামাজিক মূল্যবোধ সম্পর্কে জানার এক উত্তম উৎস হল মহাভারত ।

(i) মহাভারত থেকে আমরা ওই যুগের সামাজিক মূল্যবোধ সম্পর্কে বিস্তৃত জানতে পারি। দুই দল জ্ঞাতিভ্রাতার মধ্যে সংগঠিত যুদ্ধ নিয়েই মহাভারতের গল্প, যাতে সেই সময়ের সামাজিক চিত্রের প্রতিফলন ফুটে উঠেছে।
(ii) মহাকাব্যটিতে পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থারই প্রতিফলন ঘটেছে।
(iii) মহাভারতে জাতি এবং পেশার উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। সবটাই অন্তসরণ করা হত ধর্মশাস্ত্র নির্দেশিত পথ অনুসরণ করে। একলব্যের উদাহরণ থেকে গুরুশিষ্যের ওই সময় কেমন ছিল সেটি বোঝা যায়।
(iv) জাতিব্যবস্থা সম্পর্কে মহাভারতে বিস্তৃত বিবরণ রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর অভ্যন্তরীন সম্পর্কের চিত্র। সেই সম্পর্কের অন্যতম উদাহরণ হল হিড়িস্বার সাথে ভীমের বিবাহ।
(v) পুরুষতান্ত্রিক সমাজের চিত্রও পাওয়া যায় মহাভারতে। এর সবচেয়ে বড়ো উদাহরণ হল যুধিষ্ঠির দাবা খেলায় দ্রৌপদীকে দান হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন।
2. ‘প্রাচীন কালে নারীরা কীভাবে স্ত্রী ধনের উত্তরাধিকারী হতেন বলে তুমি মনে করো।
উত্তর: প্রাচীনকালে নারীরা মূলত ছয়টি উপায় স্ত্রীধনের মালিক হতে পারত। যেমন
(i) বিবাহের সময় অগ্নিকুন্ডের সামনে প্রদত্ত উপহারসামগ্রী। একে বলে অধ্যাগ্নি ।
(ii) পতিগৃহে যাত্রাকালে নারীরা যে উপহারসামগ্রী পেত, যা অধ্যাবহন নামে পরিচিত ছিল।
(iii) আত্মীয় স্বজন ও বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে নারীরা দানস্বরূপ যে-ধন পেত যা প্রীতিদত্ত নামে পরিচিত ছিল। (iv) এ ছাড়া পিতার কাছে প্রাপ্ত পিতৃদত্ত।
(v) মাতার কাছে প্রাপ্ত মাতৃদত্ত এবং
(vi) ভাইয়ের কাছে প্রাপ্ত ভ্রাতৃদত্ত নামক ধনসম্পদ পেয়ে থাকতো।
3.প্রাচীন ভারতে চণ্ডালদের জীবন-যাপন সম্পর্কে লেখো।
উত্তর: প্রাচীন ভারতে চণ্ডালদের জীবন-যাপন ছিল অত্যন্ত নিম্ন মানের।
যেমন— (i) অস্পৃশ্যতার সূচনা ঃ ভারতীয় সমাজে অস্পৃশ্যতার সূচনা শ্রেণি উৎপীড়নের অঙ্গরুপে সৃষ্টি হয়। বৈদিক যুগে সাধারণের দৃষ্টিতে শূদ্রগণ অস্পৃশ্য’ বলে বিবেচিত হতো।
(ii)নিচু কাজ ঃ চন্ডালরা সেই সময় সমাজে নিচু শ্রেণির কাজ করে নিেেজদের জীবিকা নির্বাহ করতো। এই কাজগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল–মৃতদেহ সৎকার, মৃত পশু-পাখিদের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে গিয়ে মাটিতে পুঁতে দেওয়া বা পুড়িয়ে দেওয়া।
(iii) অশচিঃ তৎকালীন সময়ে তাদেরকে এতটাই অপবিত্র ও অশুচি বলে মনে করা হতো যে তার জন্য তাদের শহরে প্রবেশ করা। সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ছিল। এছাড়াও সমাজের উঁচু শ্রেণির মানুষেরা তাদেরকে স্পর্শও করতো না।
(iv) শব্দ করে যাতায়াতঃ তবে চন্ডালরা কোনো কারণে যদি শহরে প্রবেশ করতো তবে তাদেরকে মুখ দিয়ে উঁচু শব্দ উচ্চারণ করে রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হতো।
04চিন্তাবিদ, বিশ্বাস এবং ইমারতসমূহ: সাংস্কৃতিক বিকাশ (৬০০ খ্রি.পূ. -৬০০ খ্রি.)

সঠিক উত্তর বাছাই করো মান-1
1. সাঁচি স্তূপ কোথায় অবস্থিত ?
(a) ভোপাল(b)লখনউ(c) বেনারস (d) আহমেদাবাদ
উত্তর: (a) ভোপাল।
2. গৌতমবুদ্ধ যে বংশে জন্মগ্রহণ করেন—
(a) শাক্য(b)সাতবাহন(c) কুষাণ (d) মুনি
উত্তর:(a)শাক্য।
3. ‘চতুর্যামের’ আদর্শ প্রচার করেন—
(a) পার্শ্বনাথ(b)ঋষভ(c) মহাবীর(d)গৌতমবুদ্ধ
উত্তর:(c)মহাবীর।
4. প্রথম জৈন সংগীতি অনুষ্ঠিত হয়—
(a)কাশ্মীরে(b) বৈশালিতে(c)পাটলিপুত্র(d)রাজগৃহে
ঊত্তর: © পাটলিপুত্রে।
5. দ্বিতীয় বৌদ্ধ সংগীতি অনুষ্ঠিত হয় এর আমলে
(a)অজাতশত্রু(b)কালাশোক (c)অশোক(d)কণিষ্ক
উত্তর: (b)কালাশোক।
6. অশোকের ধম্মের মূলভিত্তি ছিল—
(a)অহিংসা (b)হিংসা(c) ভক্তি (d) শ্রদ্ধা
উত্তর:(a)অহিংসা।
7. গৌতমবুদ্ধের মতে মানুষের নির্বাণ লাভ ঘটে—-পালন করলে।
(a)আর্যসত্য(b)অষ্টাঙ্গিক মার্গ(c) ভক্তি (d) শ্রদ্ধা
ঊত্তর: (b)অষ্টাঙ্গিক মার্গ।
৪. জৈন শব্দটি যে শব্দটি থেকে উদ্ভূত, তা হল
(a)জড়(b) জীব (c) জিন(d) জিও
উত্তর:(c)জিন।
9. গৌতমবুদ্ধের গৃহত্যাগের ঘটনা কী নামে পরিচিত ?
(a)মহাভিনিষ্ক্রমণ(b) শোক(c) চতুৰ্যাম(d) মহাপরিনির্বাণ
উত্তর:© মহাভিনিষ্ক্রমণ।
10. ভারতের অধিকাংশ বৌদ্ধ সাহিত্য যে ভাষায় লিখিত
(a)সংস্কৃত(b)পালি(c) মাগদী (d) হিন্দি
উত্তর: (b)পালি।
11. গ্রাণাইটের পাহাড় কেটে রথের আদলে মন্দির নির্মাণ হয়—
(a) পল্লব যুগে (b) চোল যুগে (c)গুপ্তযুগে (d)চান্দেল যুগে
উত্তর: (a)পল্লব যুগে।
12. জৈন ধর্মের মূলনীতি ছিল—
(a) হিংসা(b)অহিংসা(c)ঈশ্বরে বিশ্বাস(d)সত্যবাদিতা
উত্তর:(b)অহিংসা।

VAS মান-1
1. ‘ত্রিপিটক’ কী?
উত্তর: ত্রিপিটক শব্দের আক্ষরিক অর্থ হল তিনটি ঝুড়ি। তিনটি বৌদ্ধ গ্রন্থ বিনয়পিটক, সূত্রপিটক এবং অভিধম্ম পিটক-কে একসাথে ত্রিপিটক বলে।
1. বুদ্ধের জীবনের সাথে জড়িত চারটি স্থানের নাম লেখো।
উত্তর: বুদ্ধের স্মৃতি বিজাড়িত চারটি স্থান হল—লুম্বিনি যেখানে বুদ্ধ জন্মেছেন, বোধগয়া যেখানে বুদ্ধ জ্ঞান লাভ করেছেন, সারনাথ যেখানে বুদ্ধ প্রথম ধর্ম প্রচার করেন এবং কুশিনগর যেখানে তিনি নির্বাণ লাভ করেন।
3. ‘ধর্মচক্র প্রবর্তন’ কী?
উত্তর: গৌতম বুদ্ধ ‘জ্ঞানালোকপ্রাপ্ত’ হওয়ার পর বারাণসীর নিকট সারনাথ থেকে তাঁর ধর্মমত (ধম্ম) প্রচার যাত্রা শুরু করেন। এটিই ‘ধর্মচক্র প্রবর্তন’ নামে পরিচিত।
4. ‘স্তূপ’ কী?
উত্তর: স্তূপ হল একটি সাধারণ অর্ধবৃত্তাকার মাটির ঢিবি যার কাঠামো পাথর বা ইট দিয়ে তৈরি। এর গঠনে গোল এবং চৌকোনা আকারের মধ্যে সামঞ্জস্য রাখা হয়।
5. ‘বিহার’ কী?
উত্তর: বিহার হল বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের আবাস স্থল। এতে ছোটো ছোটো কুঠুরি সহ বিশাল হলঘর থাকে।
6. ‘বুদ্ধ’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ‘বুদ্ধ’ শব্দের অর্থ হল যিনি ‘জ্ঞানের আলোকপ্রাপ্ত’ হয়েছেন।
7. ‘তীর্থঙ্কর’ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: জৈনধর্ম মতানুসারে তীর্থঙ্কর হলেন তারা, যারা পুরুষনারী উভয়কেই সাংসারিক বন্ধন থেকে মুক্তির পথপ্রদর্শক।
8. ফা-হিয়েন এবং হিউয়েন সাঙ কে ছিলেন? তাঁরা কেন ভারতে আসেন ?
উত্তর: ফা-হিয়েন এবং হিউয়েন সাঙ উভয়ই ছিলেন চৈনিক বৌদ্ধ তীর্থযাত্রী। তাঁরা ভারতে এসেছিলেন বৌদ্ধ সাহিত্য সম্পর্কে জ্ঞান আহরণ করতে।
9. বৌদ্ধধর্মের দুটি মতবাদ কী?
উত্তর: বৌদ্ধধর্মের দুটি মতবাদ হল মহাযান এবং হীনযান। হীনযান হল বৌদ্ধধর্মের আদি পথ। আর মহাযান হল অনেকটা আধুনিক।
10. সাঁচী কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: ভোপাল থেকে ২০ মাইল উত্তর-পূর্ব দিকে সাঁচী অবস্থিত। সেখানে এক আশ্চর্যজনক বৌদ্ধস্তূপ আবিষ্কৃত হয়।
11. জৈনধর্মে ‘ত্রিরত্ন’ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: জৈনধর্মে ত্রিরত্ন বলতে বোঝায় তিনটি প্রধান নীতি— সঠিক জ্ঞান, সঠিক বিশ্বাস এবং সঠিক কাজ।

12. গোপুরম কাকে বলে?
উত্তর: বৌদ্ধমন্দিরের প্রবেশ দ্বারকে গোপুরম বলে।
13. কোনারকের সূর্যমন্দিরটি কোন্ রাজার আমলে তৈরি হয়?
উত্তর: নরসিংহ বর্মনের আমলে কোনারকের সূর্যমন্দিরটি তৈরি হয়।
14. কৈলাসনাথের মন্দির কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: ইলোরায় কৈলাসনাথের মন্দির অবস্থিত।
15. সাঁচিস্তূপ’ কে নির্মাণ করেন?
উত্তর: মহামতি অশোক ‘সাঁচিস্তূপ’ নির্মাণ করেন।
16. কে, কবে সাঁচিস্তূপ আবিষ্কার করেন?
উত্তর: জেনারেল টেলর, ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে ‘সাঁচিস্তূপ’ আবিষ্কার করেন।
17. জরাথুস্টু কে ছিলেন?
উত্তর: প্রাচীন পারস্যের একজন দার্শনিক ছিলেন জরাথুস্টু।
18. প্রথম জৈন তীর্থংকর কে ছিলেন?
উত্তর:প্রথম জৈন তীর্থংকর ছিলেন ঋষভনাথ।
19. ২৩তম জৈন তীর্থংকর কে ছিলেন?
উত্তর: ২৩তম জৈন তীর্থংকর ছিলেন পার্শ্বনাথ।
20. শেষ বা ২৪তম জৈন তীর্থংকর কে ছিলেন?
উত্তর: শেষ বা ২৪তম জৈন তীর্থংকর ছিলেন মহাবীর।
21. জৈনধর্মের শ্রেষ্ঠ প্রচারক কে?
উত্তর: জৈনধর্মের শ্রেষ্ঠ প্রচারক মহাবীর।
22. প্রথম বৌদ্ধসংগীতি কবে, কোথায় আহ্বান করা হয়?
উত্তর: প্রথম বৌদ্ধ সংগীতি ৪৮৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে রাজগৃহে আহ্বান করা হয়।
*অজাতশত্রুর আমলে রাজগৃহে 483 খ্রীষ্টপূর্বাব্দে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম বৌদ্ধ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন মহাকাশ্যপ।
23. সাঁচি কোন রাজ্যে অবস্থিত?
উত্তর: সাঁচি মধ্যপ্রদেশে অবস্থিত।
24. গৌতম বুদ্ধ কোথায় নির্বাণ লাভ করেন?
উত্তর: গৌতম বুদ্ধ কুশীনগরে নির্বাণ লাভ করেন।
25. মহাপরিনির্বাণ কী?
উত্তর: বুদ্ধদেবের দেহরক্ষার ঘটনাকে মহাপরিনির্বাণ বলে।
*80 বছর বয়সে বুদ্ধদেব দেহত্যাগ করেন।
26. জৈনধর্মের ২টি ভাগ কী কী?
উত্তর: জৈনধর্মের ২টি ভাগ হল—দিগম্বর এবং শ্বেতাম্বর।
27. মহাবীরের পূর্ব নাম কী ছিল?
উত্তর: মহাবীরের পূর্ব নাম ছিল বর্ধমান।
28. ত্রিরত্ন কী?
উত্তর: জৈনধর্মে (i) বিশ্বাস (ii) সদাচারণ এবং (iii) যথার্থ জ্ঞান এই তিনটি আদর্শ ‘ত্রিরত্ন’ নামে পরিচিত।
29.. কোথায় গৌতম বুদ্ধ প্রথম ধর্ম প্রচার করেন?
উত্তর: সারনাথে গৌতম বুদ্ধ প্রথম ধর্ম প্রচার করেন।
30. বৌদ্ধদের ধর্মগ্রন্থের নাম কী?
উত্তর: বৌদ্ধদের ধর্মগ্রন্থের নাম ত্রিপিটক।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর প্রশ্নমান 4
চিন্তাবিদ, বিশ্বাস এবং ইমারতসমূহ: সাংস্কৃতিক বিকাশ (৬০০ খ্রি.পূ.-৬০০ খ্রি.)
1.সাঁচীর মূর্তিকলা সম্পর্কে জানার জন্য বৌদ্ধ সাহিত্যের জ্ঞান কতটুকু সহায়ক?
উত্তর: সাঁচী স্তূপের চতুর্দিকে গৌতম বুদ্ধের জীবনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বিভিন্ন বৃক্ষ, হাতি, মানব-মানবী ইত্যাদির নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়েছে। নিচে এই সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো
(i) বৃক্ষ: বৃক্ষ জ্ঞানের আলোক। গৌতম বুদ্ধ যে বৃক্ষের নিচে বসে ধ্যান করেছেন এবং সিদ্ধিলাভ করেছেন সেই বৃক্ষকে বলা হয় -বোধিবৃক্ষ। বৃক্ষের নিচে বসে গৌতম বুদ্ধের এই সিদ্ধিলাভের ঘটনা সাঁচী স্তূপে অত্যন্ত নিপুনভাবে খোদাই করা হয়েছে।
(ii) প্রতীক চিহ্ন : প্রাচীন স্থাপত্য শিল্পে গৌতম বুদ্ধকে মানুষের রূপের পরিবর্তে বিশেষ প্রতীক চিহ্নের দ্বারা বোঝানো হয়েছে। স্থাপত্যশিল্পে বর্ণিত প্রতিটি প্রতীক গৌতম বুদ্ধের জীবনের কোনো না কোনো ঘটনাকে ব্যাখ্যা প্রদান করেছে। যেমন—শূন্য আসন মূলত গৌতম বুদ্ধের ধ্যানে মগ্ন থাকার ঘটনাকেই নিদর্শন করে।
(iii) খোদিত চক্র : খোদিত চক্র দ্বারা ইহা বোঝানো হয়েছে যে, গৌতম বুদ্ধ সারনাথে প্রথম শ্রমণরূপে নিজের ধর্মপ্রচার করে চলেছেন। এছাড়াও পদ্মফুল তাঁর আধ্যাত্মিক জ্ঞানের স্ফুটনকেই বুঝিয়েছে। তাছাড়া হস্তি তাঁর জন্মবৃত্তান্তের কাহিনির সাথে যুক্ত। সর্বোপরি অশ্ব বা ঘোড়ার দ্বারা তাঁর আত্মত্যাগকেই বোঝানো হয়েছে।
(iv) জাতকের অবদান : জাতকে প্রচুর বন্য পশুর ছবি অঙ্কন করা রয়েছে এবং এগুলির বর্ণনা সাঁচী স্তুপেও পাওয়া গিয়েছে। তৎকালে মানুষের গুণাবলি বোঝাতে পশুর প্রতিকৃতি অঙ্কন করা হতো।
(v) রমণীর চিত্র : তৎকালে পদ্ম এবং হাতি পরিবেষ্টিত অবস্থায় এক রমণীর উপর জল ছিটানোর চিত্র অঙ্কিত হয়েছে। সাহিত্যিকদের মতে, এর দ্বারা রাজ্য অভিষেকের বিষয়টিকে বোঝানো হয়েছে। আবার অনেক ঐতিহাসি এই রমণীকে বুদ্ধের মাতা মায়ার চিত্র হিসেবে কল্পনা করেছেন।
সুতরাং বলা যায় উপরোক্তভাবে বিভিন্ন পন্ডিতগণ বৌদ্ধ সাহিত্যের আঙ্গিকে সাঁচীস্তূপের উপর খোদিত ভাস্কর্যগুলোর রহস্য উদ্ঘাটন করতে প্রচেষ্টা করেছেন।
2.জৈন ধর্মের মুখ্য শিক্ষা বা উপদেশাবলী সম্পর্কে আলোচনা করো।***
উত্তর: জৈন ধর্মের মূল শিক্ষাগুলি নিম্নরূপ
(I)জৈনধর্মের মূল নীতি হল অহিংসা। সকল মানবজাতি, জীবজন্তু গাছপালা, কীটপতঙ্গ সব কিছুর প্রতি দয়া বা অহিংসা প্রদর্শনের কথা লেখা আছে জৈন ধর্মে। জৈনরা মনে করেন এই বিশ্বব্রষ্মন্ডের সব কিছুতেই এমনকি পাথর, শিলা এবং জলে ও প্রাণের অস্তিত্ব বর্তমান।
(II) জৈনরা ঈশ্বরের অস্তিত্ব বিশ্বাস করে। জৈন ধর্মে বেদের কর্তৃত্ব অস্বীকার করে এবং সমাজে ব্রাহ্মণদের আধিপত্য মানেন না। জৈনদের মতে মুক্তির জন্য কোনো যাগযজ্ঞের প্রয়োজন নেই। সঠিক জ্ঞান, সঠিক বিশ্বাস এবং সঠিক কাজের মাধ্যমে মুক্তি সম্ভব।
(III) জৈনদের মতে, পূর্ব জন্মের কর্মফলের জন্যই কোনো মানুষ বিশেষ জাতে জন্ম গ্রহণ করে।মহাবীরের মতে জন্ম ও মৃত্যুর চক্র থেকে নির্বান লাভই মানুষের জীবনের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। অহিংসা, কঠোর কৃচ্ছসাধন, অনাসক্তি, ধ্যান, ইত্যাদির মাধ্যমেই মুক্তিলাভ সম্ভব।
(IV)একজন প্রকৃত জিনকে পাঁচ নীতি মেনে চলতে হয় প্রাণী হত্যা, চুরি, মিথ্যা বলা, কৌমাস লাভ এবং সম্পদ অর্জন থেকে বিরত থাকা।
(V)জৈনধর্ম ঈশ্বরের অস্তিত্ব বিশ্বাস করে। জৈন ধর্মে বেদের কর্তৃত্ব অস্বীকার করে এবং সমাজে ব্রাষ্মনদের আধিপত্য মানেনা।
3.সাঁচী স্তূপ সংরক্ষিত থাকলেও অমরাবতী কেন রইল না, তা আলোচনা করো।***
উঃ সাঁচীস্তূপ সংরক্ষিত থাকার অন্যতম কারণগুলি হল—
(i)1818 খ্রিস্টাব্দে সাঁচী আবিষ্কৃত হয়।ঐ সময় পণ্ডিতগণ এর নির্দেশগুলির গুরুত্বানুধাবন করতে পারেন এবং তাঁরা বুঝতে পারেন যে এইসব নিদর্শন সংরক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ হলেও তা সংরক্ষণ করা খুব কঠিন।
(ii) সাঁচীর এই স্তূপটির সৌভাগ্য যে মহানটি রেলপথ নির্মাণের কন্ট্রাক্টর, রাস্তাঘাত নির্মাতা এবং ইউরোপীয়দের দৃষ্টি এড়াতে পেরেছে।কারণ ওদের জাদু ঘরের জন্য এখানকার মূল্যবান নির্দশনগুলি নিয়ে যেতে পারেনি।
(ii) সাঁচীস্তূপ যখন আবিষ্কৃত তখন এর তিনটি প্রবেশদ্বার অক্ষর থাকলেও চতুর্থটি ভেঙে পড়ে গিয়েছিল। চিহ টির কিন্তু কোনো ক্ষতি হয়নি।
(iv) ভোপালের শাসক শাহজাহান বেগম এবং তাঁর সুযোগ্য উত্তরাধিকারী সুলতান জেহান বেগম–এর ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও অর্থ প্রদানের ফলে ওই প্রাচীন ঐতিহাসিক স্থানটির মেরামতও সংরক্ষণ হয়েছিল।
সাঁচী স্তূপের পূর্বে অমরাবতী আবিষ্কৃত হয়েছিল। তারপরেও আমরাবতী টিকে থাকতে পারেনি কারণ এটি লোভী মানুষের লুঠপাঠের শিকার হয়েছিল। আর এইসব মানুষগুলি এইসব অমূল্য সম্পদের গুরুত্ব অনুধাবণ করতে ব্যর্থ হয়।
ওদের কাছে এগুলি ছিল কয়েক টুকরো সুন্দরভাবে অলংকৃত পাথর মাত্র। কিন্তু এর মধ্যে যে অসাধারণ ঐতিহাসিক রত্নভান্ডার লুকিয়ে আছে তা বোঝার মতো ক্ষমতা গৌরব হারিয়ে একটি মাটির ঢিবির পরিচয় নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
4.তোমার মতে, নারী এবং পুরুষরা কেন সংঘে যোগদান করত?
উত্তরঃ আমার মতে নিম্নলিখিত কারণগুলির জন্য নারী এবং পুরুষরা সংঘে যোগদান করত।
যেমন-(i)বিলাসবহুল জীবন ত্যাগ করে সংঘে গিয়ে গৌতম বুদ্ধের আরাধনা করা।
(ii)সংঘগুলিতে একান্তে ধর্মশাস্ত্র অধ্যয়ন করা যেত তাই তারা সংঘে যোগদান করত।
(iii)সেই সময় অনেকেই বৌদ্ধ সন্ন্যাসী হওয়ার জন্য সংঘে যোগদান করত। সংঘের জীবন-যাপন পদ্ধতি ছিল গণতান্ত্রিক। সেখানে ভোটাদানের মাধ্যমে যে কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হতো। এই জন্য সংঘে যোগদানের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ সকলের আগ্রহ ছিল।
(iv)সংঘের নির্দিষ্ট নিয়মাবলী অনুসরণ করে একজন পুরোহিত বা বৌদ্ধ শিক্ষকের মর্যাদা লাভ করতে পারতো। তাই নারী-পুরুষ সকলেরই সংঘে যোগদানের ক্ষেত্রে সমান উৎসাহ ছিল।
পর্যটকদের নজরে : সমাজ সম্পর্কে তাঁদের উপলব্ধি (দশম-সপ্তদশ শতাব্দী)

A সঠিক উত্তর বাছাই করো MARK 1
1. আল-বিরুনীর জন্মস্থান
(a) কাবুল (b)খোয়ারিজম (c)দিল্লি (d)আজমির
উত্তর:(b)খোয়ারিজম।
2. সুলতান মাহমুদ-এর রাজধানী-
(a)কান্দাহার(b) গজনী (c)পেশোয়ার (d)খোয়ারিজম
উত্তর: (b)গজনী।
3. আল-বিরুনী ভারতে এসেছিলেন—
(a) দ্বাদশ শতকে (b) একাদশ শতকে (c)ত্রয়োদশ শতকে (d)পঞ্চদশ শতকে
উত্তর: (b)একাদশ শতকে।
4. কিতাব-উল-হিন্দের রচয়িতা-
(a)ইবন বতুতা (b)সুলতান মাসুদ (c)বার্নিয়ার (d)আল-বিরুনী
উত্তর: (d)আল-বিরুনী।
5. কিতাব-উল-হিন্দ যে ভাষায় লিখিত
(a)উর্দু(b) পারসি (c) আরবি(d)পারসি
উত্তর: (c) আরবি
6. ইবন বতুতা সিন্ধু প্রদেশে পৌঁছান—
(a) 1330 খ্রিস্টাব্দে(b) 1350 খ্রিস্টাব্দে (c) 1343 খ্রিস্টাব্দে(d) 1333 খ্রিস্টাব্দে
উত্তর: (d) 1333 খ্রিস্টাব্দে
7. ইবন বতুতা ভারত ভ্রমণকালে দিল্লির সুলতান ছিলেন—
(a) ইলতুতমিস্ (b)আলাউদ্দিন খিলজি (c)মোহম্মদ-বিন-তুঘলক (d)গিয়াসুদ্দিন বলবন
ঊত্তর: (c) মোহম্মদ-বিন-তুঘলক।
৪. ‘রিহলা’ গ্রন্থের লেখক হলেন—
(a) বার্নিয়ার (b) আল-বিরুনী (d)ইবন বতুতা
উত্তর: (d)ইবন বতুতা।
9. দারা শিকোর চিকিৎসক ছিলেন—
(a)ইবন বতুতা (b)বার্নিয়ার (c)আল-বিরুনী (d)চরক
উত্তর:(b)বার্নিয়ার।
10. ট্রাভেলস ইন দ্য মোগল এম্পায়ার-এর লেখক—
(a) মার্কো পোলো (b)আকবর (c)দুয়ার্তে (iv) বার্নিয়ার
উত্তর:(iv)বার্নিয়ার।
VSA 1 MARK
1. আল-বিরুনি কোন দেশের পর্যটক ছিলেন?
উত্তর: আল-বিরুনি একাদশ শতকে উজবেকিস্তান থেকে ভারতে আসেন।
2. আল-বিরুনি রচিত গ্রন্থটির নাম কী?
উত্তর: আল-বিরুনি রচিত গ্রন্থটির নাম হল ‘কিতাব-উল-হিন্দ’।
3. আল-বিরুনি কোন্ গ্রিক গণিতজ্ঞের গ্রন্থ সংস্কৃত ভাষায় অনুবাদ করেন?
উত্তর: আল-বিরুনি গ্রিক গণিতজ্ঞ ইউক্লিড-এর রচনা সংস্কৃতে অনুবাদ করেন।
4. আল-বিরুনি কোন্ ভাষায় পতঞ্জলির মহাভারত অনুবাদ করেন?
উত্তর: আল-বিরুনি আরবি ভাষায় পতঞ্জলির মহাভাষ্য অনুবাদ করেন।
5. ইবন বতুতা কখন, কোন্ দেশ থেকে ভারতে আসেন?
উত্তর: চতুর্দশ শতকে ইবন বতুতা উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মরক্কো থেকে ভারতে আসেন।
*১৩৩৪ খ্রিস্টাব্দে ইবন বতুতা ভারতে পৌঁছোন
6. ‘রিলা’ গ্রন্থটি কে রচনা করেন?
উত্তর: ইবন বতুতা ‘রিহ্হ্লা’ গ্রন্থটি রচনা করেন
7. ইবন বতুতা কার শাসনকালে ভারতে আসেন?
উত্তর: মহম্মদ-বিন তুঘলকের রাজত্বকালে ইবন বতুতা ভারতে আসেন।
8. ফ্রাঙ্কোস বার্নিয়ার কে ছিলেন?
উত্তর: ফ্রাঙ্কোস বার্নিয়ার ছিলেন ফরাসি পর্যটক যিনি সপ্তদশ শতকে ভারতে আসেন। তিনি ছিলেন একাধারে চিকিৎসক, · রাজনৈতিক দার্শনিক এবং ঐতিহাসিক।
9. বার্নিয়ারের রচিত গ্রন্থটির নাম কী?
উত্তর: বার্নিয়ার রচিত গ্রন্থটির নাম হল ‘ট্র্যাভেলস ইন দ্য মোগল এম্পায়ার’।
10. ‘ট্র্যাভেলস ইন দ্য মোগল এম্পায়ার’ গ্রন্থটি বার্নিয়ার কোন্ ভাষায় রচনা করেন?
উত্তর: ফ্রাঙ্কোস বার্নিয়ারের বিখ্যাত গ্রন্থ ‘ট্র্যাভেলস ইন দ্য মোগল এম্পায়ার’ ফরাসি ভাষায় রচিত।
11. মার্কোপোলো কে ছিলেন?
উত্তর: মার্কোপোলো ছিলেন একজন ইতালীয় পর্যটক।
12. অন্ত্যজ কাদের বলা হত?
উত্তর: বর্ণপ্রথার অর্থাৎ চতুবর্ণের বাইরে যে সমস্ত মানুষের অবস্থান তাদেরকে অন্ত্যজ বলা হত।
13. আবুল ফজল কে ছিলেন?
উত্তর: আবুল ফজল ছিলেন ষোড়শ শতকের আকবরের একজন সরকারি জীবনীকার।
14. চেতক কী?
উত্তর: রানা প্রতাপের বিখ্যাত ঘোড়ার চেতক।
15. টোডরমল কে ছিলেন?
উত্তর: আকবরের রাজস্বমন্ত্রী ছিলেন টোডরমল।
16. ‘আকবরনামা’ গ্রন্থের লেখক কে?
উত্তর: ‘আকবরনামা’ গ্রন্থের লেখক আবুল ফজল।
17. ‘আমুক্তমাল্যদা’ গ্রন্থটি কে রচনা করেন?
উত্তর: ‘আমুক্তমাল্যদা’ গ্রন্থটি রচনা করেন কৃষ্ণদেব রায়।
18. নিকোলো কন্টি কে ছিলেন?
উত্তর: নিকোলো কন্টি ছিলেন ইটালির পর্যটক।
MARK 2
1. কিতার উল-হিন্দ গ্রন্থটি কে রচনা করেন? সংক্ষেপে গ্রন্থটির বিবরণ দাও।
উত্তর: কিতাব-উল্-হিন্দ একটি গ্রন্থ। বিদেশি পর্যটক আল বিরণী এই গ্রন্থটি রচনা করেন। তিনি 1030 খ্রিস্টাব্দে এই গ্রন্থটি রচনা করেন।
গ্রন্থের বিবরণ – কিতাব-উল্-হিন্দ গ্রন্থটি আরবি ভাষায় লেখা। গ্রন্থটিতে মোট 80 টি অধ্যায় আছে। গ্রন্থটির বিষয়বস্তুকে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেমন—(ক) ভূতত্ত্ব-সম্পর্কিত বিষয় এই গ্রন্থটিতে স্থান পেয়েছে। (খ) ধর্ম,পূজা উপাচার এবং দেবতাদের স্থান এই গ্রন্থটিতে রয়েছে। (গ) তৎকালীন সময়ের ভারতীয় সামাজিক রীতিনীতির বিষয়টিও এই গ্রন্থটিতে স্থান পেয়েছে। (ঘ) হিন্দু দর্শনের বিষয়টিও এই গ্রন্থটিতে প্রাধান্য পেয়েছে।
2. ইবন বতুতা যে দৃষ্টিকোণ থেকে ভারত ভ্রমণ বৃত্তান্ত লিখে গেছেন তার দুটি দিক ও উল্লেখ করো।
উত্তর:ইবন বতুতা যে দৃষ্টিকোণ থেকে ভারত ভ্রমণ বৃত্তান্ত লিখে গেছেন তার দুটি দিক হল:
(i) ইবনবতুতা ভারত সম্পর্কে যে বিবরণ লিপিবদ্ধ করে গিয়েছেন তাতে বিভিন্ন অজানা বিষয় স্থান পেয়েছিল। তিনি ভারত সম্পর্কে বিবরণ লিপিবদ্ধ করার ক্ষেত্রে ভারতীয় সংস্কৃতির দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন।
(ii) ইবনবতুতা সুলতানি যুগের সময় শহরগুলো যে সমৃদ্ধশালী ছিল সে বিষয়টি বিশেষভাবে লিপিবদ্ধ করেছেন।
3. কিতার উল-হিন্দ সম্পর্কে আল-বিরণীর ভাষ্য লেখো।
উত্তর:আল-বিরণী তাঁর গ্রন্থটিতে শূদ্রদের অচ্ছুত, ব্রাম্মণদের দাম্ভিক এবং নারীদের স্ত্রীধন বলে উল্লেখ করেছেন। এছাড়াও তিনি প্রাচীন ভারতীয় সমাজে প্রচলিত ছিল এইরকম কয়েকটি বিষয় গ্রন্থটিতে তুলে ধরেছেন। যেমন—বাল্য বিবাহ, সতীদাহ প্রথা ও জাতিভেদ প্রথা। তাছাড়াও গ্রন্থটিতে তৎকালীন সময়ে প্রচলিত ছিল বিভিন্ন সামাজিক উৎসবের কথা বর্ণনা করেছেন।
4. ইবনবতুতাকে ‘পৃথিবীর পর্যটক’ বা বিশ্ব অভিযাত্রী বলা হয় কেন?
উত্তর: ইবনবতুতাকে ‘পৃথিবীর পর্যটক’ বা ‘বিশ্ব অভিযাত্রী’ বলা হয় কারণ তিনি তাঁর জীবনের প্রায় ৩০ বছর সময়কাল পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করেছেন।তিনি ১৩৩৩ খ্রিস্টাব্দে ভারতের উদ্দেশ্যে যাত্রা আরম্ভ করেন এবং মধ্য এশিয়া হয়ে সিন্ধুতে এসে পৌঁছান। অবশেষে ১৩৪২ খ্রিস্টাব্দে চিনের জায়তুন বন্দরে গিয়ে পৌঁছান। অবশেষে ১৩৫৪ খ্রিস্টাব্দে বিভিন্ন দেশ পরিভ্রমণ করে তিনি ৩০ বছর পর আবার নিজের দেশে ফিরে যান। এভাবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করার জন্য বিভিন্ন ঐতিহাসিকরা তাঁকে যথার্থভাবে ‘পৃথিবীর পর্যটক’ বা ‘বিশ্ব অভিযাত্রী বলা হয়।
5.’হিন্দ’ শব্দটির উৎপত্তি সম্পর্কে লেখো।
উত্তর: কানো একটি একক কারণে ‘হিন্দু’ শব্দটির উৎপত্তি হয় নি। সিন্ধু নদীর পূর্ব তীরে অবস্থানকারী লোকদের অঞ্চলকে পার্শিরা ‘হিন্দু’বলে উল্লেখ করতো। আরবরাও এই ক্ষেত্রে পার্শিদের ব্যবহৃত শব্দটিকেই ব্যবহার করতো এবং তারা উক্ত অঞ্চলের নামকরণ করেছিলেন—’অল-হিন্দ’। পরবর্তীকালে তুর্কীরা সিন্ধু নদীর পূর্ব তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষদেরকে বলতো—‘হিন্দু’ এবং তাদে আবাসভূমিকে বলতো—হিন্দুস্থান। তারা এই অঞ্চলের মানুষদের ভাষাকে ‘হিন্দভি’ বলতো। এক কথায় এই সমস্ত শব্দের মিলনেই একসময় ‘হিন্দু’ শব্দটির উৎপত্তি হয়।
6. ‘কিতাব-উল-হিন্দ’ গ্রন্থে বিষয়বস্তু সম্পর্কে লেখো।
উত্তর: সুলতানি আমলের ধর্মীয় এবং আর্থসামাজিক তথ্য সম্পর্কে বিভিন্ন বিবরণ জানতে সাহায্য করেছে—‘কিতাব-উল-হিন্দ’ গ্রন্থটি। এই গ্রন্থ অধ্যয়ন করে জানা সম্ভব হয়েছে যে, তৎকালীন ভারতবর্ষের সময় হিন্দু ধর্ম কুসংস্কারাচ্ছন্ন ছিল। এছাড়া এই গ্রন্থ থেকে জানা সম্ভব হয়েছে—সেই সময় সমাজে জাতিভেদ প্রথা এবং বর্ণবৈষম্য বিরাজমান ছিল। ব্রাম্মণদের স্থান সমাজে সকলের ওপরে ছিল। পক্ষান্তরে বৈশ্য ও শূদ্রদের সামাজিক অবস্থান মোটেই ভালো ছিল না। তাছাড়াও ‘কিতাব-উল-হিন্দ’ গ্রন্থ থেকে জানা সম্ভব হয়েছে যে, তৎকালীন সময়ের সমাজে সতীদাহ প্রথা এবং বাল্য বিবাহের প্রচলন ছিল।
7.ইবনবতুতার ভারত ভ্রমণ বৃত্তান্ত সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর: মোহম্মদ বিন তুঘলকের রাজত্বকালে ১৫৩৩ খ্রিস্টাব্দে ইবন বতুতা ভারতে আসেন। ইবনবতুতা প্রায় ৮ বছর ভারতে অবস্থান করেন। সুলতান তাঁকে পরম সমাদরে গ্রহণ করেন এবং কাজীর পদে নিয়োগ করেন। তাঁর লিখিত সফরনামা থেকে চিন ও ভারত সম্বন্ধে বহু তথ্য জানা সম্ভব হয়েছে। তাঁর বর্ণনায় জানা যায়—কালিকট ও ব্রোচ ছিল বিখ্যাত বন্দর। তিনি ভারতীয়দের আতিথেয়তার প্রশংসা করেন। ক্রীতদাস প্রথা তখন প্রচলিত ছিল। বাংলার গ্রামগুলি সুখী ও সমৃদ্ধ ছিল। জিনিসপত্র খুবই সস্তা ছিল। মোহম্মদ বিন তুঘলকের তিনি খুবই প্রশংসা করেন।
MARK 4
1.জাতিপ্ৰথা সম্পর্কে আল-বিরুনীর ধারণা আলোচনা করো।
উত্তর: উজবেকিস্তানের পর্যটক আল-বিরুনী ভারতে এসে ‘কিতাব-উল-হিন্দ’ নামে একটি গ্রন্থ রচনা করেন। এই গ্রন্থে তিনি তৎকালীন সময়ে পারস্য এবং ভারতে বিরাজমান জাতিভেদ প্রথা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছেন। যেমন-
(i)বিভক্ত জনসমাজঃ আল-বিরুনী বলেছেন তৎকালীন সময়ে পারস্যের জনসমাজ ৪টি ভাগে বিভক্ত ছিল।এই ৪টি ভাগ হলো—–(অ) সন্ন্যাসী, (খ) নাইট ও রাজকুমার, (গ) কৃষক ও হস্তশিল্পী, (ঘ) পুরোহিত ও আইনজীবী, জ্যোতির্বিদ, চিকিৎসক এবং বিজ্ঞানী।
(ii)চারটি বর্ণের অবস্থান : আল-বিরুনী বলেছেন, সেই সময় ভারতে জাতিভেদ প্রথা নিশ্চিতভাবে ছিল। তৎকালীন সময়ে ভারতীয় জনসমাজ চারটি ভাগে বিভক্ত ছিল। এই চারটি ভাগ ছিল—(ক) ব্রাম্মণ, (খ) ক্ষত্রিয়, (গ)বৈশ্য, (ঘ)শূদ্র।সমাজের উঁচু স্থানে ব্রাম্মণদের অবস্থান ছিল।
(iii)চার বর্ণের উৎপত্তি : আল-বিরুনী বলেছেন, সংস্কৃত সাহিত্য অনুসারে ব্রাম্মণদের জন্ম হয়েছে ব্রম্মার মস্তক বা মুখ থেকে, ক্ষত্রিয়দের জন্ম হয়েছে ব্রম্মার কাঁধ ও হাত থেকে। এছাড়া বৈশ্যদের জন্ম হয়েছে ব্রম্মার উরু থেকে।সর্বোপরি সমাজে নিম্নস্থানের অধিকারী শূদ্রদের জন্ম হয়েছে ব্রম্মার পদযুগল থেকে।
(iv) বৈশ্য ও শূদ্রদের অবস্থান: আল-বিরুনী বলেছেন,তৎকালীন সমাজ ব্যবস্থায় বৈশ্য এবং শূদ্রদের বিশেষ পার্থক্য ছিল না। উভয় শ্রেণির লোকেরাই একই শহর এবং গ্রামে একত্রে মিলেমিশে বসবাস করতো।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, আল-বিরুনী ভারতীয় সমাজ ব্যবস্থায় বিরাজমান তৎকালীন বর্ণ ব্যবস্থাকে একটি সামাজিক কুপ্রথা বলে অভিহিত করেছেন।
পরিশেষে এটুকুই বলা যায় যে, আল-বিরুনী তাঁর গ্রন্থ লেখনীর ক্ষেত্রে পরিপূর্ণভাবে বেদ, গীতা, পুরাণ এবং মনুস্মৃতির উপর নির্ভর করেছিলেন।তাই তাঁর লেখা গ্রন্থ সম্পর্কে কিছুটা হলেও সংশয় থেকেই যায়।
2.ইবনবতুতা দাসপ্রথা সম্বন্ধে যে সাক্ষ্য প্রদান করেছেন তা বিশ্লেষণ করো।
উত্তর: রিহলা’ নামে একটি গ্রন্থ ইবনবতুতা রচনা করেছেন। এই গ্রন্থে তিনি ভারতের দাস প্রথা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছেন।নিচে এই সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
(i) দাস ক্রয় : ইবনবতুতা যখন সিন্ধুপ্রদেশে ছিলেন তখন তিনি মোহম্মদ বিন তুঘলকের জন্য উট, অশ্ব এবং দাস ক্রয় করেছিলেন।এছাড়াও মুলতানে পৌঁছে তিনি বহু দাস সহ খাদ্যসামগ্রীও মোহম্মদ বিন তুঘলকের জন্য ক্রয় করেছিলেন।
(ii)দাসদের কাজঃ ইবনবতুতা বলেছেন সেই সময় দাসরা গৃহস্থালীর বিভিন্ন কাজকর্ম সম্পাদন করতো। এছাড়াও তারা তৎকালীন সময়ে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী পরিবারের পুরুষ এবং মহিলাদের পালকি কিংবা দোলায় নিয়ে সাম্রাজ্যের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ভ্রমণ করতো।
(iii)মহিলা দাস: তৎকালীন সময়ে মহিলা দাসদের অবস্থানও ছিল। তবে পুরুষ দাসদের তুলনায় এদের মূল্য কম ছিল।সেই জন্য অনেকের ঘরেই বিভিন্ন কাজে মহিলা দাসদের ব্যবহার করা হতো। ইবনবতুতার বিবরণ থেকে জানা যায় যে,সেই সময় সাধারণ পরিবারেও কমপক্ষে দুইজন করে মহিলা দাস ছিল।
(iv)নৃত্য-গীত পরিবেশন :‘রিহলা’ নামক গ্রন্থ থেকে জানা সম্ভব হয়েছে যে, তৎকালীন সময়ে সুলতানদের রাজসভায় বহু মহিলা ক্রীতদাস নৃত্য-গীত পরিবেশ করে সভার সকলের মনোরঞ্জন করতেন। এছাড়াও অভিজাতদের নজরদারি করার জন্য সেই সময় মহিলা ক্রীতদাসরা গুপ্তচর হয়েও কাজ করতো।
3.কিতাব-উল-হিন্দের ওপর টীকা লেখো।
উত্তর:কিতাব-উল্-হিন্দ একটি গ্রন্থ। বিদেশি পর্যটক আল বিরুনী এই গ্রন্থটি রচনা করেন। তিনি 1030 খ্রিস্টাব্দে এই গ্রন্থটি রচনা করেন।এই গ্রন্থ থেকে প্রাচীন ভারতের অনেক তথ্য জানা সম্ভব হয়েছে। নিচে এই সম্পর্কে আলোচনা করা
গ্রন্থের বিবরণ : কিতাব-উল্-হিন্দ গ্রন্থটি আরবি ভাষায় লেখা। গ্রন্থটিতে মোট ৪০টি অধ্যায় আছে। গ্রন্থটির বিষয়বস্তুকে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেমন—(ক) ভূতত্ত্ব-সম্পর্কিত বিষয় এই গ্রন্থটিতে স্থান পেয়েছে। (খ) ধর্ম,পূজা উপাচার এবং দেবতাদের স্থান এই গ্রন্থটিতে রয়েছে। (গ) তৎকালীন সময়ের ভারতীয় সামাজিক রীতিনীতির বিষয়টিও এই গ্রন্থটিতে স্থান পেয়েছে।(ঘ)হিন্দু দর্শনের বিষয়টিও এই গ্রন্থটিতে প্রাধান্য পেয়েছে।(ঙ)সাহিত্যকর ব্যাপারও এতে রয়েছে।(চ)প্রকৃতি বিজ্ঞান, গণিত এবং জ্যোতিবিদ্যা সংক্রান্ত বিষয়ও এই গ্রন্থটি স্থান পেয়েছে।(চ)আইনের বিষয়টিকে এই গ্রন্থটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। (ছ) হিন্দু দর্শন এখানে স্থান পেয়েছে।
আল-বিরুনীর ভাষ্য : আল-বিরুনী তাঁর গ্রন্থটিতে শূদ্রদের অচ্ছুত, ব্রাম্মণদের দাম্ভিক এবং নারীদের স্ত্রীধন বলে উল্লেখ করেছেন।এছাড়াও তিনি প্রাচীন ভারতীয় সমাজে প্রচলিত ছিল এইরকম কয়েকটি বিষয় গ্রন্থটিতে তুলে ধরেছেন। যেমন—বাল্য বিবাহ, সতীদাহ প্রথা ও জাতিভেদ প্রথা। তাছাড়াও গ্রন্থটিতে তৎকালীন সময়ে প্রচলিত ছিল।বিভিন্ন সামাজিক উৎসবের কথা বর্ণনা করেছেন।
06.ডক্তি ও সুফিবাদের ঐতিহ্য : ধর্মীয় বিশ্বাসে পরিবর্তন এবং ভক্তিমূলক গ্রন্থ (অষ্টম শতাব্দী-অষ্টাদশ শতাব্দী)

সঠিক উত্তর বাছাই করো।
1. রোবার্ট রেডফিল্ড কোন্ দুটি শব্দের উল্লেখ করেন ?
(a)স্বগুন, নির্গুন (b)বে-শরিয়া, বা-শরিয়া (c) মহান, লঘু (d) চিতি, সিলসিলা
উত্তর: (c) মহান, লঘু
2. বিন্নুর একটি রূপ—
(a) লঘু শিব (b) ইন্দ্ৰ (c)গণেশ (d )জগন্নাথ
উত্তর:(d )জগন্নাথ
3. নির্গুণ ভক্তি পরম্পরায় ভগবানের রূপের উপাসনা করা হয়
(a) আকার (b)নিরাকার (c) সাকার (d )কোন্‌টিই নয়
উত্তর:(b)নিরাকার
4.নায়নাররা উপাসক ছিলেন—
(a) শিব (b) দুর্গা (c)বিন্নু (d )কোন্‌টিই নয়
উত্তর: (a) শিব
5. করাইক্কাল আম্মাইয়ার উপাসক ছিলেন
(a)বিন্নুর (b)শিবের (c) দুর্গার (d) আল্লাহ্র
উত্তর:(b)শিবের
6. চোল সম্রাট প্রথম পরন্তক প্রতিষ্ঠা
(a)বিন্নু মন্দির (b)জৈন মন্দির (c) শিব মন্দির (d )কোন্‌টিই নয়
উত্তর:(c) শিব মন্দির
7. মোহম্মদ-বিন-কাশিম সিন্ধু বিজয় করেন
(a) 751 খ্রিস্টাব্দে (b)711 খ্রিস্টাব্দে (c)731 খ্রিস্টাব্দে (d)733 খ্রিস্টাব্দে
উত্তর: (b)711 খ্রিস্টাব্দে
9. ইসলামের দুটি সম্প্রদায়
(a)রামায়ণ, মহাভারত (b)কোরান, হাদিস (c)শিয়া, সুন্নী (d) কিয়াজ, ইজমা ইসমাইল, শিয়
উত্তর: (c)শিয়া, সুন্নী
10. তুর্কি ও আফগানিদের জন্য যে শব্দটি ব্যবহার করা হত—
উত্তর:শক।
VSA MARK 1
1. সুফিবাদে গুরুকে কী বলা হয়?
উত্তর: সুফিবাদে গুরুকে পির বলা হয়।
2. অদ্বৈতবাদের প্রবর্তক কে?
উত্তর: অদ্বৈতবাদের প্রবর্তক হলেন শঙ্করাচার্য।
3. সর্বপ্রথম মহাভারত বাংলা ভাষায় কে অনুবাদ করেন?
উত্তর: সর্বপ্রথম মহাভারত বাংলা ভাষায় অনুবাদ করেন কবীন্দ্র পরমেশ্বর।
4. ‘রামচরিত মানস’ এবং ‘শ্রীকৃষ্ণবিজয়’ গ্রন্থের রচয়িতা কে?
উত্তর: রামচরিত মানস—তুলসী দাস
শ্রীকৃষ্ণবিজয়—মালাধর বসু।
5. কে শ্রীচৈতন্যকে সন্ন্যাস ধর্মে দীক্ষিত করেন?
উত্তর: তোতাপুরী শ্রীচৈতন্যকে সন্ন্যাস ধর্মে দীক্ষিত করেন।
6. কবীর কার শিষ্য ছিলেন?
উত্তর: কবীর রামানন্দের শিষ্য ছিলেন।
7. নানকের শিষ্যরা কী নামে পরিচিত?
উত্তর: নানকের শিষ্যরা শিখ নামে পরিচিত।
৪. সিলসিলা কোন্ মতবাদের সাথে যুক্ত?
উত্তর: সিলসিলা সুফিবাদের সাথে যুক্ত।
9. শিখদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থের নাম কী?
উত্তর: শিখদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থের নাম গ্রন্থ সাহেব।
10. কবিরের শিষ্যদের কী বলা হয়? ।
উত্তর: কবীরের শিষ্যদের কবিরপন্থী বলা হয়
11. ভক্তিবাদের মূলকথা কী?
উত্তর: আত্মার সাথে পরমাত্মার অতীন্দ্রিয় মিলনই হল ভক্তিবাদের মূলকথা।
12. ‘শিখ’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ‘শিখ’ শব্দের অর্থ শিষ্য।
13. ‘হাদিস’ কী?
উত্তর: ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা হজরত মহম্মদের বাণী সংকলিত গ্রন্থকে ‘হাদিস’ বলা হয়।
14. ‘জাকাত’ কী?
উত্তর: ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী একজন মুসলিম ধর্মের লোক তাঁর সম্পত্তির যে একটি নির্দিষ্ট অংশ গরিবদের দান করে তাকেই ‘জাকাত’ বলে।
15. কবীর কোথায় ভক্তিবাদ প্রচার করেন?
উত্তর: কবীর বারাণসীতে ভক্তিবাদ প্রচার করেন।
16. পুরীর মূল দেবতা কে?
উত্তর: পুরীর মূল দেবতা হলেন ভগবান জগন্নাথ যিনি বিহ্বর অবতাররূপে পরিগণিত। জগন্নাথ শব্দের আক্ষরিক অর্থ হল ‘জগতের প্রভু’।
17. ‘লিঙ্গায়েত’ কারা?
উত্তর: বাসাবন্না নামে এক ব্রাক্ষ্মণ চালুক্য রাজসভায় মন্ত্রী ছিলেন । তিনি বীর শৈব নামে একটি ধর্মীয় ধারার প্রবর্তন করেন। তাঁর অনুগামীরাই বীরশৈব বা লিঙ্গায়েত নামে পরিচিত ছিলেন।
18. ‘উলেমা’ কারা?
উত্তর: ইসলামধর্মের পণ্ডিতদের উলেমা বলা হয়। তাঁদেরকে ইসলামের সংরক্ষক এবং প্রচারক বলা হয়। তাঁরা ধর্মীয় বিষয়ের সাথে বিচার সংক্রান্ত বিষয় দেখাশোনা করতেন।
19. ‘শরিয়া’ কী?
উত্তর: ‘শরিয়া’ বলতে বোঝায় ইসলামিক আইন। কোরান, হাদিস এবং পয়গম্বর মহম্মদের বিভিন্ন বাণী নিয়ে এই আইন রচিত হয়।
20. ‘জিনান’ দ্বারা কী বোঝানো হয়?
উত্তর: ‘জিনান’ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত ‘জ্ঞান’ থেকে।
21. ‘কাওয়াল’ কী?
উত্তর: ‘কাওয়াল’ হল একটি আরবি শব্দ যার অর্থ হল ‘বাণী’। কাওয়ালি গানের আগে বা পরে এটি গাওয়া হয়।
22. কে কাওয়াল প্রবর্তন করেন?
উত্তর: কাওয়াল প্রবর্তন করেন আমির খুসরু।
23. ‘মসনবি’ কী?
উত্তর: সুফি সন্তদের রচিত দীর্ঘ কবিতাকে মসনবি বলা হত।
24. মীরাবাঈ কে ছিলেন?
উত্তর: মীরাবাঈ ছিলেন মেবারের রাজপুত রমণী। তিনি শ্রীকৃষ্ণের উপাসনা করতেন এবং ভক্তি আন্দোলনের তিনি একজন মহিলা কবি ছিলেন।
25. বৈষ্ণব ধর্মের অন্যতম প্রবক্তা কে ছিলেন?
উত্তর:বৈষ্ণব ধর্মের প্রবক্তা ছিলেন শংকরদেব। তাঁর শিক্ষা ‘ভগবতী ধর্ম’ নামে পরিচিত।
26. কারা দিল্লিতে সুলতানি শাসনের প্রবর্তন করেন?
উত্তর: তুর্কি এবং আফগানরা দিল্লিতে সুলতানি শাসনের প্রবর্তন করেন।
27. মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা মক্কায় তীর্থযাত্রাকে কী বলে?
উত্তর: মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা মক্কায় তীর্থযাত্রাকে হজ বলে।
MARK 2
1. ভক্তি আন্দোলন কাকে বলে?
উত্তর: মধ্যযুগে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে রাজনৈতিক সংঘর্ষ ধর্মীয় জীবনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। কিন্তু পরবর্তীতে হিন্দু-মুসলমান বহুকাল একত্রে বসবাস করে তাদের নৈকট্য গড়ে তোলে।ইসলামের গণতান্ত্রিক সংস্পর্শে এসে হিন্দু ধর্মের গোঁড়ামি ও রক্ষণশীলতার বিরুদ্ধে মানুষ সোচ্চার হয়ে উঠে। তারই কল্যাণে ধর্মক্ষেত্রে সমন্বয় দেখা দেয়। এই সমন্বয়ের পেছনে একদিকে,হিন্দু সাধু সন্ন্যাসী ও প্রচারকগণ এবং অন্যদিকে মুসলিম ফকির, দরবেশ ও সুফি সাধকরা অবদান রাখেন। উভয় ধর্মে একেশ্বরবাদের ধারণা ছিল মূলকথা।এই সমন্বয়ধর্মী আন্দোলনই ইতিহাসে ভক্তি আন্দোলন’ নামে পরিচিত
2.ভক্তিবাদের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর: ভক্তিবাদের দুটি বৈশিষ্ট্য হল –
(i) একেশ্বরবাদ : ভক্তিবাদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য বা মূলনীতি হল—একেশ্বরবাদে বিশ্বাস। এখানেই হিন্দু ধর্মের গতানুগতিক বিশ্বাস থেকে ভক্তিবাদ সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র।
(ii) ভক্তির প্রাধান্য : ঈশ্বর সাধনায় সংস্কার রীতিনীতি ইত্যাদি নিয়ে যে চৰ্চা চলছিল—ভক্তিবাদ তার বিরুদ্ধে এক সোচ্চার প্রতিবাদ স্বরুপ দেখা দেয়। যথার্থ ভক্তির দ্বারা যে কোনো সাধনায় যে কোনো মানুষ সফল হতে পারে বলে ভক্তিবাদীরা বিশ্বাস করেন
3. সুফি পরম্পরায় বে-শরিয়া এবং বা শরিয়ার মধ্যে দুটি সাদৃশ্য লেখো।
উত্তর: সুফি পরম্পরায় বে-শরিয়া এবং বা-শরিয়ার মধ্যে দুটি সাদৃশ্য হল—
(i) উভয় শ্রেণিই ছিল মুসলিম ধর্মের অন্তর্গত দুটি শ্রেণি।
(ii) উভয় সম্প্রদায়ের কেহই মুসলিম ধর্মের বিরোধি ছিল

4. সুফি পরম্পরায় বে-শরিয়া এবং বা-শরিয়ার মধ্যে দুটি বৈসাদৃশ্য লেখো।
উত্তর: সুফি পরম্পরায় বে-শরিয়া এবং বা-শরিয়ার মধ্যে দুটি বৈসাদৃশ্য হল—
(i) বা-শরিয়ারা ছিল খুব রক্ষণশীল। তারা মুসলিম রীতিনীতি কঠোরতার সঙ্গে পালন করতো। কিন্তু বে-শরিয়ারা ছিল তুলনামুলক সহজ ও উদার।
(ii) বে-শরিয়ারা সুফি-সন্তদের নেতৃত্বে পরিচালিত হতো। কিন্তু বা-শরিয়ারা সুফি-সন্তদের নেতৃত্বে পরিচালিত হতো না।
6. কবীর সম্পর্কে লেখো।
উত্তর: কবীর ছিলেন একজন প্রসিদ্ধ ভক্তিবাদী সাধক।কবীর যে সমস্ত রচনাবলী রচনা করেছেন তাকে ‘দোঁহা’ বলে।কবীর তৎকালীন সমাজে বিরাজমান জাতিভেদ প্রথার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন। তিনি ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দু ধর্মের বাহ্যিক আচরণ সমন্ধীয় রীতিনীতির তীব্র সমালোচনা করেন। এছাড়াও মুসলিমদের কিছু সামাজিক রীতিনীতির প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাছাড়াও তিনি সমাজে পুরোহিতদের একাধিপত্যকে ঘৃণার চোখে দেখতেন। তাঁর ভাষায় এই পৃথিবীতে একজনই ঈশ্বর আর এই ঈশ্বরই সর্বশক্তিমান ও সর্বশ্রেষ্ঠ।
6. ভক্তিবাদের প্রচারক হিসেবে গুরু নানকের ভূমিকা আলোচনা করো।
উত্তর: পাঞ্জাবের লাহোরের কাছে তালবন্দী (বর্তমান নানকানা) গ্রামে ক্ষত্রীয় পরিবারে গুরু নানক জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকাল থেকেই তাঁর মন এক অতীন্দ্রিয় ভাবরাজ্যে বিভোর ছিল। অল্প বয়সেই তিনি সংসার ত্যাগ করে ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে ভারতের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ায়।গুরু নানকের প্রধান শিক্ষা এক ঈশ্বর, গুরু ও নামজপ। তাঁর মতে ঈশ্বর সত্য, স্রষ্টা, নির্ভীক, অমর ও অজ। তিনি ঈশ্বরের নামজপ করতে বলেছেন।
7. ভক্তিবাদের দুটি অবদান লেখো। :
উত্তর: ভক্তিবাদের দুটি অবদান হল
(i) সামাজিক বৈষম্য হ্রাস: ভক্তিবাদ ভারতীয় সমাজে আলোড়ন তুলেছিল। নারীরা ধর্মীয় এবং সামাজিক জীবনে স্বাধীনতার স্বাদ অনুভব করতে পারে। এর ফলে তৎকালীন সমাজে বিরাজমান নারী-পুরুষ, উঁচু-নিচু ভেদাভেদ অনেকটাই কমে যায়।
(ii) সাহিত্য চর্চায় অবদানঃ ভক্তিবাদ সাহিত্য চর্চায় নতুন ধারা সৃষ্টি করে। বস্তুত ভক্তিবাদের প্রভাবে তৎকালীন সময়ে কবিরের ‘দোঁহা’ নানকের ‘গ্রন্থসাহের’ প্রভৃতি পুস্তকগুলি ছাড়াও বহু আঞ্চলিক ভাষায় সাহিত্য চর্চা শুরু হয়েছিল।
8. ভক্তিবাদের প্রচারক হিসেবে শ্রীচৈতন্যের ভূমিকা আলোচনা করো।
উত্তর: ভক্তিবাদ তথা বৈষুব ধর্মের প্রচারকদের মধ্যে শ্রীচৈতন্যদেব ছিলেন অন্যতম। তিনি নদীয় জেলার এক শিক্ষিত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকাল থেকেই তিনি ছিলেন ধর্মপরায়ণ। মাত্র চব্বিশ বছর বয়সে তিনি সংসারত্যাগী হন এবং সন্ন্যাস ধর্ম গ্রহণ করেন। হিন্দু-মুসলমান, পণ্ডিত-মুখ, ব্রাহ্মাণ-চণ্ডাল নির্বিশেষ সকলের মধ্যেই তিনি ভক্তিধর্ম প্রচার করেন। জীবে দয়া, ঈশ্বরে ঐকান্তিক ভক্তি এবং উদ্দীপনের জন্য নাম সংকীর্তন—এগুলিই তাঁর ধর্মমতের মূলকথা। তিনি প্রচার করেছিলেন যে, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষ সব মানুষই সমান আধ্যাত্মিক শক্তির অধিকারী হতে পারে। তিনি জাতিভেদ প্রথার ঘোর বিরোধী ছিলেন। হিন্দু-মুসলমান সকল ধর্মের লোকই তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছিল।বাংলার জনজীবনে তাঁর প্রভাব ছিল সর্বাত্মক।
9. সুফিবাদের উদ্ভবের কারণ কী?
উত্তর: ইসলাম ধর্মে উদারনৈতিক সংস্কার আন্দোলনের নাম সুফিবাদ। সুফিবাদের মূল উৎস কোরান এবং হজরত মহম্মদ হলেও বিভিন্ন ধর্মের আদর্শের সমন্বয় হতেই এ মতবাদ উদ্ভব হয়েছিল। অনেকে মনে করেন, এই মতবাদে বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাব রয়েছে। মধ্য এশিয়ার বৌদ্ধ অধিবাসীরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলে এই ধর্মে বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাব পড়ে। বৌদ্ধ ও হিন্দু সাধকরা পশ্চিম এশিয়ার ভ্রমণে গেলে এদের সঙ্গে যোগাযোগের ফলে সুফিবাদীদের অহিংসা, ত্যাগ, বৈরাগ্য, উপবাস, যোগসাধনা তাদের কাছ থেকে গ্রহণ করা হয়। সুতরাং, একথা বলা যায় যেবৌদ্ধধর্ম, হিন্দু বেদান্ত, দর্শন, ইসলাম ধর্ম প্রভৃতি নানা ধর্মীয় আদর্শ থেকে সুফিবাদের উদ্ভব ঘটে।

HISTORY PRE and FINAL SUGGESTION 2024 25 CLASS 12 PDF

MARK 3
১। তামিলনাড়ু ও কর্ণাটক রাজ্যে বেদ ও ব্রাত্মণ্যবাদ বিরোধী আন্দোলন সম্পর্কে লেখো।
উত্তর: প্রাচীন ভক্তি আন্দোলনের অন্যতম উদাহরণ হল তামিলনাড়ুর আলভার (বিয়ুর উপাসক) এবং নায়নার (শিবের উপাসক) সম্প্রদায়। ঈশ্বরের স্তুতিগান করতে করতে তাঁরা বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াতেন। পরিক্রমণের সময় এঁরা বিভিন্ন স্থানকে ঈশ্বরের আবাসভূমি হিসেবে নির্বাচিত করতেন। পরবর্তী সময়ে সেই স্থানগুলিতে সুবিশাল মন্দির স্থাপন করা হয় এবং স্থানগুলি তীর্থকেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।অনেক ঐতিহাসিকের মতে আলভার এবং নায়নার সম্প্রদায়ের সন্তরা জাতপাত এবং ব্রাহ্মণ্যবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। শিল্পী, কৃষক, এমনকি তথাকথিত অস্পৃশ্য জাতিভুক্ত বলে চিহ্নিত মানুষও এঁদের ভক্তি আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন। আলভার এবং নায়নার সাধকদের রচনা সমূহকে বেদের মতো অভ্রান্ত বলে বিবেচনা করা হত।
২। সুফি ধর্মগুরুদের মধ্যে দিল্লি সুলতান ও মোগল বংশের শাসকগণের মধ্যে সম্পর্ক কেমন ছিল?
উত্তর: সুফি ধর্মগুরুদের মধ্যে দিল্লি সুলতান ও মোগল বংশের শাসকগণের মধ্যে সুসম্পর্ক ছিল। যেমন— (i) দ্বাদশ শতকে এদেশের দিল্লি এবং এর আশে পাশের কিছু অঞ্চলে মুসলিম শাসক প্রতিষ্ঠিত হয়। এই মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠার পেছনে সুফিবাদ ভীষণ ভাবে কাজ করেছিল। কারণ মুসলিম জনগোষ্ঠী সুফিবাদের সহজ ও সরল নীতিবোধ অনুধাবন করতে পেরে ছিল।
(ii)তৎকালিন সময় মুসলিম ধর্ম পরিত্যাগ না করেও দিল্লির কিছু কিছু শাসক রাজ্য শাসনে বেশ কিছু বাস্তব নীতি গ্রহণ করতে পেরেছিলেন। সুফিবাদের প্রতি জনসাধারণের আনুকুল্যের কারণেই ইহা করা সম্ভব হয়েছিল বলে সমসাময়িক অনেক ঐতিহাসিক তাঁদের মতামত ব্যক্ত করেছেন।
(iii) সেই সময়ের শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং সুফিবাদের অনুপ্রেরণায় সুলতানগণ দরগা বা খানকাহ এবং মিনার নির্মাণ করেছিলেন। ইলতুৎমিস ‘কুতুবমিনার’ তৈরির কাজ সম্পন্ন করেছিলেন। এই মিনারটি তিনি সুফিবাদের অন্যতম সুফি সাধক কুতুবউদ্দিন কাকির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেছিলেন।
৩। ভক্তিবাদের উৎপত্তির যে-কোনো তিনটি কারণ লেখো। ***
উত্তর: ভক্তিবাদের উৎপত্তির তিনটি কারণ হল-
(1) ইসলাম ধর্মের প্রভাব ঃ ভক্তিবাদের উৎপত্তির একটি কারণ হলো—ইসলাম ধর্মের প্রভাব। সাম্য এবং ভ্রাতৃত্ববোদ হলো ইসলাম ধর্মের বৈশিষ্ট্য। এই ধর্মানুসারে পৃথিবীর সব মানুষ ঈশ্বরের করুণার পাত্র। এক কথায় ইসলাম ধর্মের একেশ্বরবাদ, জাতিভেদ প্রথার প্রতি অবিশ্বাস ভক্তিবাদকে অনুপ্রাণিত করেছিল।
(ii) সুফিবাদের প্রভাব ঃ ইসলমা ধর্মের গোঁড়ামির প্রতিবাদস্বরূপ সুফিবাদের উদ্ভভ হয়। এই সুফিবাদও ভক্তিবাদকে প্রভাবিত করেছিল। সুফিগণ ঈশ্বরের প্রতি ঐকান্তিক ভক্তিকে মুক্তির পথ বলে মনে করতেন।
(iii) হিন্দু শাস্ত্রের প্রভাব ঃ নতুন ভক্তিবাদ কোনো নতুন ধর্ম আন্দোলন নয়। অনেকে মনে করেন, এই ধর্ম আন্দোলনে বাইরের প্রভাব তেমন ছিল না। হিন্দু ধর্মে ভক্তিবাদের আদর্শ প্রাচীন। হিন্দু ধর্মশাস্ত্রে লিখিত আছে যে, জ্ঞান, কর্ম ও ভক্তির মাধ্যমে আত্মা মুক্তি পেতে পারে। ভক্তিবাদীরা হিন্দু ধর্মের একটি পুরোনো আদর্শকে প্রচার করেছিল মাত্র।
৪।জৈন ধর্ম বৌদ্ধ ধর্মের মধ্যে তিনটি সাদৃশ্য ও বেসাদৃশ্য লিখ?

৬।গুরু নানক সম্পর্কে লেখ?***
উত্তর: গুরুনানক ছিলেন শিখ ধর্মের প্রবর্তক। তিনি লাহোরের কাছে তালবন্দী গ্রামের এক ক্ষত্রিয় পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন, বাল্যকালে তাঁর বিয়ে হয়। ছোটোবেলা থেকেই তিনি ছিলেন ধর্মপ্রাণ। তিনি স্ত্রী-পুত্র ছেড়ে ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে ভারতের নানা স্থানে ভ্রমণ করেন। তিনি সর্বধর্ম সহিষ্ণুতার কথা বলেন। হিন্দু ধর্মের বাহ্যিক অনুষ্ঠান ও জাতিভেদ প্রথার তিনি ঘোর বিরোধি ছিলেন। তিনি হিন্দু এবং মুসলমানদের অভিন্নতার কথা এবং ঈশ্বরের মোক্ষলাভের কথা বলেন। ধর্ম সংঘাতের অবসান ঘটানোই ছিল গুরু নানকের প্রধান উদ্দেশ্য। নানকের শিষ্যদের মধ্যে বহু মুসলমান ছিলেন।
07.একটি সাম্রাজ্যের রাজধানী: বিজয়নগর (চতুর্দশ শতাব্দী-ষোড়শ শতাব্দী)

MCQ
1. ‘বিজয়নগর’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: বিজয়নগর শব্দের অর্থ হল যে নগর জয় করা হয়েছে।
2. কে, কবে হাম্পি শহরের ধ্বংসাবশেষ প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন?
উত্তর: ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মচারী কর্নেল কলিন ম্যাকেনজি ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে হাম্পি শহরের ধ্বংসাবশেষ প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন।
3. কারা, কবে বিজয়নগর সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর: ঐতিহ্য এবং প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন অনুসারে হরিহর ও বুক্কা নামে দুই ভাই ১৩৩৬ খ্রিস্টাব্দে বিজয়নগর সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।
4. সমসাময়িক যুগের মানুষ বিজয়নগর সাম্রাজ্যকে কী নামে বর্ণনা করেছেন?
উত্তর: সমসাময়িক যুগের মানুষ বিজয়নগর সাম্রাজ্যকে ‘কর্ণাটক সাম্রাজ্যমু’ নামে বর্ণনা করেন।
5. বিজয়নগর সাম্রাজ্য শাসন করেছে এমন চারটি রাজবংশের নাম দাও।
উত্তর: বিজয়নগর শাসন করেছে এমন চারটি রাজ বংশের নাম হল—সঙ্গম, সালুভ, তুলুভ এবং তিরুমালা।
6. কোন্ দেবীকে পম্পাদেবী বলা হয়?
উত্তর: দেবী পার্বতীকে পম্পাদেবী বলা হয়।
7. কর্নেল কলিন ম্যাকেনজি কে ছিলেন?
উত্তর: ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মচারী ভারতের প্রথম সার্ভেয়ার জেনারেল ছিলেন কর্নেল কলিন ম্যাকেনজি।
8. জরিপ করে হাম্পি শহরের মানচিত্র কে প্রথম তৈরি করেন?
উত্তর: জরিপ করে হাম্পি শহরের মানচিত্র প্রথম তৈরি করেন কর্নেল কলিন ম্যাকেনজি।
9. তালিকোটার যুদ্ধ কাদের মধ্যে হয়েছিল?
উত্তর: বিজয়নগর সাম্রাজ্যের সাথে দাক্ষিণাত্যের সুলতানের তালিকোটার যুদ্ধ হয়েছিল।
10. তালিকোটার যুদ্ধে কে পরাজিত হয়েছিল?
উত্তর: তালিকোটার যুদ্ধে বিজয়নগর সাম্রাজ্যের পরাজয় ঘটেছিল।
11. বিজয়নগর শহরের দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাসাদের নাম লেখো।
উত্তর: বিজয়নগর শহরের দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাসাদ ছিল মহানবমী দিব্য এবং পদ্মমহল।
12. গোপুরম কী?
উত্তর: গোপুরম হল মন্দির বা প্রাসাদের পিরামিডাকৃতির চূড়াবিশেষ যা মন্দিরের প্রবেশদ্বারের ওপর থাকত।
13. বিট্টল মন্দির কার উদ্দেশ্যে উৎসর্গীকৃত?
উত্তর: বিউল মন্দিরটি ভগবান বিষ্ণুর উদ্দেশ্যে উৎসর্গীকৃত।
14. বিট্টল মন্দির কে নির্মাণ করেন?
উত্তর: বিট্টল মন্দির নির্মাণ করেন কৃষ্ণদেব রায়
15. কৃষ্ণদেব রায় কোন্ বংশের রাজা ছিলেন?
উত্তর: কৃষ্ণদেব রায় ছিলেন তুলুভ বংশের রাজা।
16. তালিকোটার যুদ্ধে বিজয়নগরের সেনাপতি কে ছিলেন?
উত্তর: তালিকোটার যুদ্ধে বিজয়নগরের সেনাপতি ছিলেন রাম রায়।
17. তালিকোটার যুদ্ধ কবে হয়েছিল?
উত্তর: ১৫৬৫ খ্রিস্টাব্দে তালিকোটার যুদ্ধ হয়েছিল।
18. আবদূর রেজ্জাক কোন্ দেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন?
উত্তর: আবদুর রেজ্জাক ছিলেন পারস্য দেশের রাষ্ট্রদূত।
19. বার্বোসা কোন্ দেশের পর্যটক ছিলেন ?
উত্তর: বার্বোসা ছিলেন একজন পোর্তুগিজ পর্যটক।
20. বিজয়নগর সাম্রাজ্যের রাজধানীর নাম কী ছিল?
উত্তর: বিজয়নগর সাম্রাজ্যের রাজধানীর নাম ছিল হাম্পি।
21. কৃষ্ণদেব রায় কোন্ বংশের রাজা ছিলেন?
উত্তর: কৃষ্ণদেব রায় তুলুভ বংশের রাজা ছিলেন।
22. কৃষ্ণদেব রায় রচিত একটি গ্রন্থের নাম লেখো।
উত্তর: মাহমুদ গাওয়ান আমুক্ত মালা মন্ত্রী ছিলেন।
23. কার রাজসভায় ‘অষ্টদিগ্‌গজ’ নামে পণ্ডিতরা বিরাজ করতেন?
উত্তর: রাজা কৃয়দেব রায়ের রাজসভায় ‘অষ্টদিগ্‌গজ’ নামে পণ্ডিতরা বিরাজ করতেন।
24. ‘বিজয়নগর’ কথার অর্থ কী?
উত্তর: ‘বিজয়নগর’ কথার অর্থ ‘City of Victory |
25. বিজয়নগর সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা কারা ছিলেন?
উত্তর: বিজয়নগর সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন হরিহর এবং বুক্ক।
26. বিজয়নগরের আধুনিক নাম কী ছিল?
উত্তর: বিজয়নগরের আধুনিক নাম ছিল হাম্পি।
27. বিজয়নগর সাম্রাজ্যের অপর নাম কী?
উত্তর: বিজয়নগর সাম্রাজ্যের অপর নাম কর্ণাটকের সাম্রাজ্য।
28. কর্নেল কলিন ম্যাকেনজি কে ছিলেন?
উত্তর: কর্নেল কলিন ম্যাকেনজি ছিলেন একজন ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মচারী।
29. তালিকোটার যুদ্ধ কাদের মধ্যে হয়েছিল?
উত্তর: বিজয়নগর সাম্রাজ্য ও তালিকোটার সুলতানের মধ্যে তালিকোটার যুদ্ধ হয়েছিল।
30. ‘মহানবমী’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ‘মহানবমী’ শব্দের অর্থ হল—নয়টি মহান দিন।
31. Robert Sewell-এর লেখা একটি গ্রন্থের নাম লেখো।
উত্তর: Robert Sewell[ez-toc]-এর লেখা একটি গ্রন্থের নাম হল A Forgotten Empire.
MARK 2
1. হাজারা রাম মন্দিরের 2টি বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা করো।
উত্তর:১৫২০ খ্রিস্টাব্দে কৃয়দেব রায় হাম্পিতে এটি নির্মাণ করেছিলেন এবং এই মন্দিরটি রাজপরিবারের সদস্যরা ব্যবহার করতেন।
(i) এই মন্দিরটি রাজা এবং তার পরিবার পূজার্চনার কাজে ব্যবহার করা হত।
(ii) মন্দিরটি পাথর এবং ইট দিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছিল।
(iii)মন্দিরের ভিতরের দেয়ালে রামায়ণের বিভিন্ন চরিত্র ও ঘটনাবলি খোদিত রয়েছে।
2.বিউল মন্দিরের 2টি বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ করো।
উত্তর:১৫১৩ খ্রিস্টাব্দে কৃষ্ণদেব রায় এটি নির্মাণ করেছিলেন।
(i) এই মন্দিরটি ১৫২ × ৯৪ বর্গমিটার স্থানের ওপর তৈরি হয়েছিল এবং এর তিনটি সুন্দর গোপুরম ছিল।
(ii) কল্যানমণ্ডপে ৪৮টি অপূর্ব স্তম্ভ ছিল সেগুলি ছিল পাথরের ওপর খোদাই করা। স্তম্ভের ওপর করা শিল্পকর্ম ছিল সুনিপুণ।
(iii) মন্দিরের সম্মুখে নির্মিত একটি রথ মন্দিরের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছিল।
3.বিজয়নগর সাম্রাজ্যের ঘোড়ার ব্যাবসা সম্পর্কে লেখো।
উঃ বিজয়নগর সাম্রাজ্যের ঘোড়ার ব্যাবসা সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হল
(i)ওই সময়ে প্রাথমিক পর্যায়ে আরব ব্যবসায়িরা ঘোড়ার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করত।
(ii)কুদিরাই চেটিস নামক স্থানীয় ব্যবসায়িগণ বিনিময় প্রথা দ্বারা ঘোড়ার ব্যবসায়ে অংশগ্রহণ করে থাকত।
(iii) ১৪৯৮ খ্রিস্টাব্দে পোর্তুগিজরা ভারতের পশ্চিম উপকূলে আসে। তারা পরবর্তী সময়ে ঘোড়ার ব্যবসায়ে যুক্ত হয়।
4.তালিকোটীর যুদ্ধ কেন হয়েছিল?
উত্তরঃবিজয়নগরের রাজা কৃষ্ণদেব রায়ের মৃত্যুর পর তাঁর ভাই অচ্যুত রায় 1530-1542 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন।তারপর কৃষ্ণদেব রায়ের ভাইপো সদাশিব রায় 1570 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন। কিন্তু তাঁর অযোগ্যতায় মন্ত্রী রাম রায় প্রকৃত শাসক হয়ে নতুন কৌশল শুরু করেন। তিনি বাহমনির পাঁচটি মুসলিম রাজ্যের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও অন্তর্কলহ সৃষ্টির জন্য কোনো-না-কোনো পক্ষে যোগ দিতেন। শেষপর্যন্ত বাহমনি, বিজাপুর, গোলকুন্ডা প্রভৃতি মুসলিম রাজ্যগুলি নিজেদের ভুল বুঝাতে পেরে মিলিতভাবে 1556 খ্রিস্টাব্দে বিজয়নগরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে।এই যুদ্ধই তালিকোটার যুদ্ধ নামে পরিচিত।
5.তালিকোটার যুদ্ধের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তরঃ ভারতের ইতিহাসে তালিকোটার যুদ্ধের গুরুত্ব অপরিসীম। ড. ঈশ্বরী প্রসাদ তালিকোটার যুদ্ধকে বিজয়নগরের ‘মৃত্যু ঘন্টা’ বলে অভিহিত করেছেন।তালিকোটার যুদ্ধ যখন শেষ হয় তখন বিজয়ী সৈনিকরা বিজয়নগর সাম্রাজ্যে প্রবেশ করে অবাধে বিভিন্ন সম্পদ লুণ্ঠন করে। শেষ পর্যন্ত বিজয়নগর সাম্রাজ্য একটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।যুদ্ধের ফলে দক্ষিণ ভারতের অনেক বাজার নষ্ট হয়ে যায়। সেখানে হিন্দু প্রাধান্য স্থাপনের সুযোগ হাতছাড়া হয়।

MARK 4
1.হাম্পি নগরের স্থাপত্য কলা সম্পর্কে আলোচনা করো।***
উত্তর:হাম্পি নগরটিতে অনেক স্থাপত্যকলার নিদর্শন রয়েছে।নিচে এই সমস্ত স্থাপত্যকলা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো-
বিরুপাক্ষ মন্দির: বিরুপাক্ষ মন্দিরে ভগবান বিরুপাক্ষের মূর্তি আছে। এই মূর্তিটিকে বিশেষ আয়োজন করে পূজা করা হয়।এই মন্দিরে ৩ টি গোপুরম রয়েছে। রাজা কৃষ্ণদেব রায় মন্দিরের পূর্বদিকের সবচেয়ে বৃহৎ এবং উঁচু গোপুরমটি নির্মাণ করেন।এছাড়াও ১৫১০ খ্রিস্টাব্দে এই মন্দিরের সম্মুখভাগে একটি বড়ো হলঘর তৈরি করা হয়।বিরুপাক্ষ মন্দিরের নানা নকশা এবং কারুকাজ সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে।
হাতিশালা: হাম্পি শহরে একটি হাতিশালা রয়েছে। এই হাতিশালাটি নির্মাণ করেন রাজা কৃষ্ণদেব রায়। স্থাপত্যশিল্পের অন্যতম নিদর্শন এই হাতিশালাটিতে ধনুকাকৃতি খিলানের ব্যবহার করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, হাতিশালা ভবনটির ছাদ সমতল।ছাদের ওপর সারিবদ্ধ শিখর এবং চ্যাপ্টা গম্বুজ রয়েছে।
বিট্টল মন্দির: বিট্টল মন্দিরটিতে ভগবান বিষ্ণুর পূজা অর্চনা করা হয়। এই মন্দিরটি পাহাড় কেটে রথের মতো করে নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও বিটুল মন্দিরের অভ্যন্তরে গর্ভগৃহ এবং চন্দ্রাতপ রয়েছে।
পদ্মমহলঃ হাম্পি শহরে পদ্মমহল নামে একটি মন্দির রয়েছে। পদ্মমহলটি হিন্দু এবং মুসলিম স্থাপত্যরীতির সংমিশ্রণে তৈরি করা হয়েছে। পদ্মমহলে মুসলিম স্থাপত্যরীতি মেনে থাম এবং খিলান ব্যবহার করা হয়েছে আবার হিন্দু স্থাপত্যরীতি মেনে প্রাচীর, সমতল ছাদ এবং শিখর এর ব্যবহার করা হয়েছে।
2.বিজয়নগরের জলের চাহিদাকে কীভাবে মেটানো হত?***
উত্তর: প্রাচীন ভারতে বিজয়নগর ছিল একটি সমৃদ্ধশালী নগরী। এই নগরীতে বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে জলের চাহিদাকে মেটানো হত। নিচে এই সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো।
(i) হিরিয়া খালের অবদান : বিজয়নগর সাম্রাজ্যে অবস্থিত ছিল এরকম একটি খালের নাম হলো—হিরিয়া খাল। তুঙ্গভদ্রা নদীর উপর বাঁধ নির্মাণ করে এই খালে তুঙ্গভদ্রার জল আনা হতো এবং তা শহরে পাঠানোর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতো। সঙ্গমবংশীয় রাজারা এই খাল নির্মাণ করেছিলেন।
(ii) তুঙ্গভদ্রা নদীর অবদানঃ তুঙ্গভদ্রা নদী বিজয়নগর সাম্রাজ্যকে চারদিক থেকে ঘিরে রেখেছিল। এর ফরে শহরবাসীর জলের কোনো অভাববোধ হতো না।
(iii) বৃষ্টির জল সংরক্ষণ: বিজয়নগরের জলের চাহিদা মেটানোর জন্য সেই সময়কার শাসকরা বৃষ্টির জলকে সংরক্ষণ করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছিল এবং এতে তাঁরা সফলও হয়েছিল।
(iv) কমলাপুরমের জলাধার : বিজয়নগর সাম্রাজ্যে একটি জলাধার আবিষ্কৃত হয়েছে। এই জলাধারটির নাম–কমলাপুরমের জলাধার। তৎকালীন সময়ের শাসকরা এই জলাধারের জল খাল কেটে হাম্পির মধ্যে প্রবেশ করতে বিভিন্ন ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছিল।
পরিশেষে এটুকুই বলা যায় যে, বিজয়নগরের শাসকরা শাসন কার্যে অত্যন্ত দক্ষ ছিলেন। আর এই শাসন কার্যেরই একটি অঙ্গ হিসেবে তাঁরা বিজয়নগর সাম্রাজ্যের নাগরিকদের জন্য জলের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হয়েছিলেন।
8.বিজয়নগর সাম্রাজ্যের পতনের কারণ আলোচনা করো।***
উত্তর: বিজয়নগর সাম্রাজ্যের পতনের অনেক কারণ রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম হল—
(1) কেন্দ্রীয় শক্তি দুর্বলতা: কেন্দ্রীয় শক্তির দুর্বলতার সুযোগে প্রাদেশিক শক্তিগুলি মাথাচারা দিয়ে ওঠে। এই ব্যবস্থা শক্তিশালী রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে যে মোটেই সহায়ক ছিল না তা পরবর্তীকালে প্রমাণিত হয়। আর এটাই বিজয়নগর সাম্রাজ্যের পতনকে ত্বরান্বিত করে।
(ii) সুযোগ্য উত্তরাধিকারের অভাব: বিজয়নগর সাম্রাজ্যের সবচেয়ে শক্তিশালী রাজা ছিলেন কৃষ্ণদেব রায়। ১৫২৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি মারা গেলে বিজয়নগর সাম্রাজ্য পরিচালনার মতো সুযোগ্য উত্তরাধিকারীর অভাব দেখা দেয়। তারা বিশাল সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়।
(iii) বিলাসবহুল জীবনযাত্রা: বিজয়নগর ছিল সমৃদ্ধশালী রাজ্য। সম্পদের প্রাচুর্যতা মানুষকে ভোগবিলাসী করে তুলেছিল। সমসাময়িক তথ্য থেকে জানা যায় যে সমাজে বেশ্যাবৃত্তি ছিল ব্যাপক। ফলে সমাজে লাম্পট্য, চরিত্রহীনতা ইত্যাদি কোনো দোষ বলে বিবেচিত হত না। এই ধরনের সমাজ যে কালক্রমে সম্পূর্ণ ভেঙে পড়বে এতে কোনো সন্দেহ ছিল না।
(iv) ভিন্ন ভিন্ন বংশের শাসন: পরপর চারটি বিভিন্ন রাজবংশ বিজয়নগর শাসন করে। ফলে রাজ্যটি ষড়যন্ত্র ও অন্তর্ঘাতের কেন্দ্রে পরিণত হয় কারণ প্রত্যেক রাজবংশই চাইত যে-কোনো প্রকারে সিংহাসন দখল করতে। সুতরাং প্রতিনিয়ত চক্রান্ত ও অন্তর্ঘাতের ফলে সাম্রাজ্যের ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ে।
(v) সেনাবাহিনীর দায়িত্ব: বিজয়নগরের শাসকরা সৈন্যবাহিনীর জন্য প্রাদেশিক শক্তির ওপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল ছিলেন। সুতরাং সেনাধ্যক্ষরা রাজার প্রতি অনুগত না থেকে প্রাদেশিক সরকারের প্রতিই অনুগত থাকত। তা ছাড়া বিভিন্ন প্রদেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে ঐক্য এবং পারস্পরিক বোঝাপড়ার প্রচণ্ড অভাব ছিল যা সাম্রাজ্যকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যায়।
EXTRA QUESTIONS
1. বিজয়নগর সাম্রাজ্য কীভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সে সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তর: (i) বিজয়নগর সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিল হরিহর ও বুক্কা নামে দুই ভাই। উভয় ভ্রাতাই কাম পিল্লাই রাজ্যের মন্ত্রী ছিলেন। ১৩২৭ খ্রিস্টাব্দে মহম্মদ-বিন-তুঘলক দক্ষিণ ভারত আক্রমণের সময় দুই ভ্রাতাকেই বন্দি করে দিল্লি নিয়ে আসেন।
(ii) দিল্লিতে এনে এদেরকে বলপূর্বক ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করা হয়। কামপিল্লাইতে হিন্দু বিদ্রোহ দমন করার উদ্দেশ্যে মহম্মদ-বিনতুঘলক বিশাল সৈন্যবাহিনী প্রেরণ করেন। হিন্দুরা তাদেরকে স্বাগত জানায় এবং তাদের অধীনতা স্বীকার করেন।
(iii) তাদের গুরুর নির্দেশানুসারে তারা পুনরায় হিন্দুধর্ম গ্রহণ করে। গুরু বিদ্যারানা তাদেরকে একটি নতুন রাজ্য প্রতিষ্ঠায় উৎসাহিত করেন। এইভাবে তারা ১৩৩৬ খ্রিস্টাব্দে তুঙ্গভদ্রা নদীর তীরে একটি শহর নির্মাণ করেন এবং এটির নাম রাখেন বিজয়নগর।
(iv) দিল্লির জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতির আবর্তে মহম্মদ-বিনতুঘলক তাদের প্রতি দৃষ্টি দিতে পারেননি। এইভাবেই একটি নতুন সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা হয় যা কালক্রমে একটি শক্তিশালী সাম্রাজ্যে পরিণত হয় উপদ্বীপ অঞ্চলে।
2. শিল্প ও সাহিত্যে কৃষ্ণদেব রায়ের অবদান আলোচনা করো।MARK 2
উত্তর: শিল্প ও সাহিত্যে কৃষ্ণদেব রায়ের অবদান নীচে আলোচনা করা হল—
(i) কৃষ্ণদেবরায় ছিলেন বিজয়নগর সাম্রাজ্যের শ্রেষ্ঠ এবং শক্তিশালী রাজা। তিনি ১৫০৯ থেকে ১৫২৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বিজয়নগর রাজ্য শাসন করেন। তিনি বিজয়নগরে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ছিলেন শিল্প ও সাহিত্যের একজন দারুণ পৃষ্ঠপোষক।
(ii) তিনি তাঁর রাজ্যে বিস্ময়কর মন্দির ও প্রাসাদ নির্মাণে দক্ষ কারিগর নিয়োগ করেন। বিজয়নগরের পাশে কৃয়দেব রায় তাঁর মায়ের স্মৃতিতে নাগালপুরম নামে একটি সুন্দর শহর নির্মাণ করেন। তিনি অপূর্ব সৌন্দর্যমণ্ডিত বিটল মন্দির ও হাজারা রাম মন্দির স্থাপন করেন।
(iii) তিনি বহু গোপুরম এবং দক্ষিণ ভারতীয় মন্দির নির্মাণ করেন। কৃষ্ণদেব রায় নিজেই ছিলেন একজন বিদগ্ধ পণ্ডিত। তিনি তেলেগু ভাষায় আমুক্ত মাল্যদা এবং সংস্কৃত ভাষায় জামবভাতি কল্যানম গ্রন্থটি রচনা করেন। তিনি তাঁর রাজসভায় বহু কবি ও পণ্ডিতদের পৃষ্ঠপোষকতা করতেন।
(iv) ডোমিংগোপেস নামে জনৈক পোর্তুগিজ পর্যটক বহু বছর তার রাজসভায় ছিলেন। এই সমস্ত পণ্ডিতগণ তাঁর রাজসভার পৃষ্ঠপোষকতা অর্জন করেছিলেন এবং সাহিত্য জগতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন।
08. অধ্যায় ৮ কৃষক, জমিদার এবং রাষ্ট্র (কৃষিভিত্তিক সমাজ এবং মোগল সাম্রাজ্য) (আনুমানিক ষোড়শ এবং সপ্তদশ শতাব্দী)
B একটি পূর্ণাঙ্গ বাক্যে উত্তর দাও।মান-1
1. আইন-ই-আকবরী-এর মুখ্য উদ্দেশ্য কী ছিল ?
উত্তর: আইন-ই-আকবরী-এর মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল সম্রাট আকবরের শাসনব্যবস্থার একটি আদর্শ রূপকল্প তৈরি করা।
2.বাবরের আমলে সেচ ব্যবস্থার সঙ্গে কোন্ অঞ্চলের সেচ ব্যবস্থার তুলনা করা হত ?
উত্তর: বাবরের আমলে সেচ ব্যবস্থার সঙ্গে উত্তর ভারত অঞ্চলের সেচ ব্যবস্থার তুলনা করা হত।
3. পার্সিয়ান শব্দ ‘মুজারিয়াত’-এর অর্থ কী ?
উত্তর: পার্সিয়ান শব্দ ‘মুজারিয়াত’-এর অর্থ রায়ত বা কৃষক।
4. আকবর কেন তামাক চাষে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন?
উত্তর:আকবর তামাক চাষ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন, কারণ জাহাঙ্গির তামাকাসত্ত্ব হয়ে পড়েছিলেন।
5. জিনস্-ই-কামিল-এর অন্তর্গত দুটি শস্যের নাম করো।
উত্তর: জিনস্-ই-কামিল-এর অন্তর্গত দুটি শস্যের নাম- ধান ও গম।
6. উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা থেকে প্রাপ্ত দুটি ফসলের নাম করো।
উত্তর: উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা থেকে প্রাপ্ত দুটি ফসলের নাম— টম্যাটো ও আলু।
7.জাতি-পঞ্চায়েতের যে-কোনো একটি কাজ উল্লেখ করো।
উত্তর: জাতি পঞ্চায়েতের একটি কাজ ছিল
(i) জমি বিবাদের মধ্যস্থতা করা।(ii) বিভিন্ন
বর্ণের মধ্যে দেওয়ানি মামলার মধ্যস্থতা করা।
8. গ্রামীণ সমাজের শতকরা কতভাগ পরিবার কারিগর শ্রেণির ছিল ?
উত্তর: গ্রামীণ সমাজের 25 শতাংশ পরিবার কারিগর শ্রেণির ছিল।
9. কোন্ মোগল সম্রাট ফতেপুর সিক্রি নির্মাণ করেন ?
উত্তরঃ মোগল সম্রাট আকবর ফতেপুর সিক্রি নির্মাণ করেন।
10. পাইকরা কীসের বিনিময়ে অহোম রাজাদের সামরিক সেবা দিতেন ?
উত্তর: জমির বিনিময়ে পাইকরা অহোম রাজাদের সামরিক সেবা দিত।
11. জমিদারেরা মিল্কিয়ত জমিতে কাদের সাহায্যে চাষাবাস করতেন ?
ঊত্তর: ক্রীতদাস তুল্য শ্রমিকদের সাহায্যে চাষাবাদ করতেন।
12. ‘আমিল গুজুর’ নামে কারা পরিচিত ছিলেন ?
উত্তর: মোগল যুগে রাজস্ব আদায়কারী কর্মচারীদের বলা হত আমিল গুজুর।
13. ‘মনসবদারী প্রথা’ কী ছিল ?
ঊত্তর: সম্রাট আকবর তাঁর পদস্থ রাজকর্মচারীদের নগদ বেতনের বিনিময়ে জায়গির তথা মনসব(পদমর্যাদা) বণ্টনের ব্যবস্থা করেন। এই ব্যবস্থাকেই বলা হয় মনসবদারী প্রথা।
14. কে রূপার বাট আমদানীর মানচিত্র তৈরি
করেছিলেন ?
উত্তর: ইতালির পর্যটক জিওভান্নি কারেরি রূপার বাট আমদানীর মানচিত্র তৈরি করেছিলেন।
15. মোগল সাম্রাজ্যের সমসাময়িক, এশিয়া মহাদেশের দুটি সাম্রাজ্যের নাম লেখো।
উত্তর:এশিয়া মহাদেশের দুটি সাম্রাজ্যের নাম অটোমান সাম্রাজ্য ও চিন সাম্রাজ্য।
MARK 2
1.মোগলদের ভূমি-রাজস্ব নীতি সম্পর্কে লেখো।
উত্তরঃ মোগল সাম্রাজ্যের অর্থনীতির মূল ভিত্তি ছিল ভূমিরাজস্ব। মোগল আমলের ভূমি রাজস্ব নীতি
অনেকাংশেই নমনীয় ছিল। যেমন-
1.তৎকালীন সময়ে জমির উৎপাদিকা শক্তির ওপর বিচার করে ভূমি রাজস্ব নেওয়া হতো। সেই সময় বলতে গেলে সব ধরনের জমি থেকে ভূমি রাজস্ব নেওয়া হতো না। শুধুমাত্র আবাদি জমি থেকেই নির্দিষ্ট হারে রাজস্ব আদায় করা হতো। আবাদি ভূমির মধ্যে তিনটি শ্রেণি ছিল, যথা—ভাল, মাঝারি এবং খারাপ।
2.ভালো ও মাঝারি জমির উৎপাদিত ফসলের প্রায় ৩ ভাগের ১ অংশ রাজস্ব হিসেবে আদায় করা হতো।
3.কৃষকদের সেই সময় শস্য অথবা নগদে রাজস্ব মেটানোর অধিকার ছিল
2.‘খুদকাস্তা’ সম্পর্কে লেখো।
উত্তরঃ ‘খুদকাস্তা’ ছিল মোগল আমলের এক ধরনের কৃষক। তারা যে গ্রামে বসবাস করতো সেই গ্রামের মধ্যে
থেকেই কৃষিকাজ করতো।তারা মূলত তাদের নিজস্ব জমিতে কৃষিকাজ করতো। এই ক্ষেত্রে তারাই কৃষিজ : উপকরণ, শ্রমিক প্রভৃতি সংগ্রহ করতো।
3.মোগল আমলে কেন্দ্রীভূত শাসন সম্পর্কে লেখো।
উত্তরঃ মোগল আমলে সুলতানী যুগে বিধিবদ্ধ আইনের চেয়ে সুলতানের খামখেয়ালিপনাই ছিল বেশি। মোগল যুগে সম্রাট ছিলেন সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। তবে আইন বিধি মেনে চলাই ছিল রীতি।
4. ‘নাসক’ ব্যবস্থা সম্পর্কে লেখো।
উঃ নাসক ব্যবস্থা অনুসারে জমি জরিপ করা হতো না বা জমির উৎপাদিকা শক্তিও দেখা হতো না। ক্ষেতে সরে জমিনে শস্যের ফলন দেখে সরকারি কর্মচারী মোটামুটিভাবে একটি অনুমানের ওপর রাজস্ব স্থির করতেন।সরকার সরাসরি রায়তের কাছ থেকে এই ক্ষেত্রে রাজস্ব আদায় করতেন।
5.মোগল আমলে গ্রাম পঞ্চায়েতের দুটি কাজ লেখো
উঃ মোগল আমলে গ্রাম পঞ্চায়েতের দুটি কাজ হল—
প্রথমতঃ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কাজ ছিল—গ্রামের সমস্ত জাতি এবং সকল সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে ঐক্যবোধ জাগ্রত করা। এছাড়াও গ্রাম পঞ্চায়েত কাউকে কোনো ঘৃণিত অপরাধের জন্য গ্রাম থেকে বহিষ্কার পর্যন্ত করতে পারতো।
দ্বিতীয়ত: অনেক ঐতিহাসিক বলেছেন, তৎকালে পঞ্চায়েতগুলিকে আপীল কোর্ট হিসেবেও বিবেচনা করা হতো।
6.‘জাবতি প্রথা’ সম্পর্কে লেখো।
উত্তরঃ ‘জাবতি প্রথা’ অনুসারে জমির উৎপাদিকা শক্তি বিবেচনা করে জমিকে চারভাগে বিভক্ত করা হয়। এই ভাগগুলি হলো—’পোলাজ’, ‘পোরীতি’, ‘চাচর’ এবং ‘বানজার’। ‘পোলাজ’ জমিতে সারা বছর চাষ করা হতো।‘পোরীতি’ জমিতে কিছুকাল চাষের পর উর্বরতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে দুই বা এক বছরের জন্য জমি পতিত করে রাখা হতো। চাচর’ জমি তিন-চার বছর অনাবাদি থাকতো। ‘বানজার’ জমি চার-পাঁচ বছর এবং অনেক সময় তারও বেশি সময় ধরে অনাবাদি রাখা হতো।
7.মোগল আমলের পঞ্চায়েতের সঙ্গে বর্তমান সময়ের পঞ্চায়েতের দুটি সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য লেখ?

10.উপনিবেশবাদ এবং গ্রামাঞ্চল: সরকারি নথিপত্রের অনুসন্ধান তথা বিশ্লেষণ

HISTORY PRE and FINAL SUGGESTION 2024 25 CLASS 12 PDF

MCQ 1
1. সাঁওতাল বিদ্রোহের কয়েকজন নেতার নাম লেখো।
উত্তর: সাঁওতাল বিদ্রোহের কয়েকজন নেতার নাম হল— চাঁদভৈরব, বীরসিং, কালু প্রামানিক, দ্রোমন মাঝি।
2. রংপুরে কৃষক বিদ্রোহের নেতা কে ছিলেন?
উত্তর: রংপুরে কৃষক বিদ্রোহের নেতা ছিলেন নুরুলউদ্দিন।
3. ‘দামিন-ই-কোহ’ কথাটির অর্থ কী? ।
উত্তর: ‘দামিন-ই-কোহ’ কথাটির অর্থ পাহাড়ের প্রান্তর
4. কে, কবে ‘আমিনি কমিশন’ নিয়োগ করেন?
উত্তর: ১৭৭৬ খ্রিস্টাব্দে ওয়ারেন হেস্টিংস ‘আমিনি কমিশননিয়োগ করেন।
5. ইস্ট ইন্ডিয়া কবে দেওয়ানি লাভ করেন?
উত্তর: ইস্ট ইন্ডিয়া ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে দেওয়ানি লাভ করেন।
6. মুর্শিদ কুলি খাঁ-র আদি নাম কী ছিল?
উত্তর: মুর্শিদ কুলি খাঁর আদি নাম ছিল মহম্মদ হাদি।
7. বাংলায় নবাবি শাসনের প্রতিষ্ঠা কে করেন?
উত্তর: বাংলায় নবাবি শাসনের প্রতিষ্ঠা করেন মুর্শিদকুলি খাঁ।
৪. সূর্যাস্ত আইন কী?
উত্তর: জমিদারদের প্রদেয় রাজস্ব নির্দিষ্ট দিনে সূর্যাস্তের পূর্বে মিটিয়ে দেওয়ার আইনকে ‘সূর্যাস্ত আইন’ বলা হত।
9. সন্ন্যাসী বিদ্রোহ কবে হয়?
উত্তর: সন্ন্যাসী বিদ্রোহ ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দে হয়
10. চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের একটি সুবিধা উল্লেখ করো।
উত্তর: চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে কোম্পানির বাৎসরিক আয় নির্দিষ্ট হয়।
11. রায়তওয়ারি ব্যবস্থা কোথায় প্রবর্তিত হয়েছিল?
উত্তর: রায়তওয়ারি ব্যবস্থা বোম্বের প্রেসিডেন্সিতে প্রবর্তিত হয়েছিল।
12. সাঁওতালরা প্রথম কোথায় এবং কবে বিদ্রোহ করেছিল?
উত্তর: সাঁওতালরা প্রথম ভাগলপুর ও বীরভূম জেলায় বিদ্রোহ শুরু করেছিল ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে।

13. ‘Decan Riots Reports’ কবে পার্লামেন্টে উপস্থাপন করা হয়েছিল?
উত্তর: ‘Decan Riots Reports’ ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে পার্লামেন্টে উপস্থাপন করা হয়েছিল।
14. কে প্রথম ভারতীয়দের ব্রিটিশ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োজিত করেন?
উত্তর: লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক প্রথম ভারতীয়দের ব্রিটিশ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োজিত করেন।
15. ১৭৭৩ খ্রিস্টাব্দে রেগুলেটিং আইনের ভিত্তিতে কোথায় সুপ্রিম কোর্টপ্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তর: ১৭৭৩ খ্রিস্টাব্দে রেগুলেটিং আইনের ভিত্তিতে কলকাতায় সুপ্রিম কোর্ট প্রতিষ্ঠিত হয়।
16. ‘দস্তক প্ৰথা’ কে লোপ করেন?
উত্তর: দস্তক প্রথা’ ওয়ারেন হেস্টিংস লোপ করেন
17. কবে ‘দ্বৈত শাসন ব্যবস্থার অবসান ঘটে?
উত্তর: ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দে ‘দ্বৈত শাসন’ ব্যবস্থার অবসান ঘটে।
18. ভারতে ‘আধুনিক পুলিশি’ ব্যবস্থা’র প্রথিকৃৎ কে ছিলেন?
উত্তর: ভারতে ‘আধুনিক পুলিশি ব্যবস্থা’র পথিকৃৎ ছিলেন লর্ড কর্ণওয়ালিশ।
19. ১৭৯০ খ্রিস্টাব্দে কে প্রতিটি জেলায় স্থানীয় বিচারালয় প্রতিষ্ঠিত করেন?
উত্তর: ১৭৯০ খ্রিস্টাব্দে কর্নওয়ালিশ প্রতিটি জেলায় স্থানীয় বিচারালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
MARK 3
1.অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষদিকে বাংলায় কেন চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রথা চালু হয়?
উত্তর: 1793 সালের 22 March লর্ড কর্ণওয়ালিশ চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তন করেন। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের শর্ত অনুযায়ী ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী নির্ধারিত মূল্যের রাজস্ব ধার্য করেছিল যা প্রত্যেক জমিদারকে পরিশোধ করতে হত। যেসব জমিদাররা নির্ধারিত মূল্যের রাজস্বগুলিকে পরিশোধ করতে পারত না, সেইসব রাজস্ব আদায় করার জন্য তাদের ভূসম্পতিকে নিলাম করা হত।
চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের কারণগুলি হল—
(i)অনিয়মিত ভূমি রাজ-স্ব ব্যবস্থায় স্থিরতা আনা এবং কোম্পানির আয়ের ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করা।
(ii) কোম্পানির ভূমি রাজস্ব সংগ্রহের পরিমাণ বৃদ্ধি করা।
(iii) কোম্পানির মতে এই ব্যবস্থা প্রবর্তনে এক শ্রেণির কৃষক কৃষি কাজের উন্নয়নে আগ্রহী হবে এবং ধনী উন্নয়নে অর্থ বিনিয়োগে উদ্যোগী হবে।
(iv) এছাড়াও তারা চেয়েছিল জমিতে স্থায়ীভাবে জমিদারদের মালিকানা প্রতিষ্ঠা করে জমির উন্নতি বিধান করা।
2.দাক্ষিণাত্যে বিদ্রোহের কারণ কি ছিল এবং কিভাবে তা বিস্তার লাভ করে?
উত্তর: 1875 খ্রিস্টাব্দে দাক্ষিণাত্য বিদ্রোহের কারণ— (i) কৃষকদের ওপর শোধখোর মহাজনদের শোষণ।
(ii) মহাজনরা অনেক সময় রায়তদের ওপর ঋণের বোঝা চাপিয়ে দিত।
(iii) মিথ্যা টাকার অংক বসিয়ে রায়তদের কাছ থেকে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর নিয়ে নিতো। এই টাকা এক সময়ে এতো বিশাল পরিমাণ হতো যে, রায়তদের পক্ষে তা মেটানো সম্ভব হতো না। মহাজনেরা এই সুযোগে তাদের সমস্ত ঋণ-সম্পদ এবং জমি দখল করে নিত।
(iv) অনেক সময় মহাজনরা রায়তদের প্রয়োজনের সময় ঋণ দিতে অস্বীকার করতো।
3.রাজমহলে ‘পাহাড়ীয়া’ ও ‘সাঁওতালীদের’ সঙ্গে যে সংঘর্ষ হয় তা আলোচনা করো।
উত্তর: রাজমহল পাহাড়ে ‘পাহাড়িয়া’ নামক এক উপজাতি থাকত। এরা শিকার, জুম চাষ এবং খাদ্যসংগ্রহের মাধ্যমে জীবনধারণ করত। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষের দিকে সরকার কৃষির বিকাশ ঘটাতে উৎসাহিত করলে জমিদার এবং জোতদাররা অকৃষিযোগ্য জমিকে খুব দ্রুত চাষযোগ্য জমিতে পরিণত করেন। 1770-এর দশকে ব্রিটিশ অধিকারিকরা পাহাড়িয়াদের উৎখাত করতে চরম দমনপীড়নের আশ্রয় নেন। পাহাড়িয়ানা শত্রুপক্ষীর সৈন্যদল থেকে বাঁচতে পাহাড়ের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে এক বহিরাগতদের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যায়। ব্রিটিশরা যখন পাহাড়িয়াদের নিজেদের বশে আনতে এবং তাদেরকে স্থায়ীভাবে বসবাস ও কৃষিকাজ করতে ব্যর্থ হয় তখন তাদের নজর সাঁওতালদের ওপর পড়ে। সাঁওতালরা রাজমহল পাহাড়ের পাদদেশে বসতি স্থাপন করতে শুরু করলে পাহাড়িয়া তাদের বিরোধিতা করে। পাহাড়িয়ারা সরকারি অধিকারিকদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখত। তারা সমতলে বসবাসকারী লোকেদের উপর হামলা করে সম্পদ তাদের লুঠ করত। তারা অভাবের দিনে এই কাজ করতে বাধ্য হত। তবে ক্ষমতা জাহির করতেও তারা এই হামলা চালাত। ব্যবসায়ী নির্বিঘ্নে পণ্য পরিবহণের জন্য পাহাড়ি পথ ব্যবহারে করার জন্য পাহাড়ি সর্দারদের উপটোকন দিত। ইংরেজরা জঙ্গল পরিষ্কার করে কৃষিজমির পরিমাণ বৃদ্ধি করলে পাহাড়িয়াদের জীবনযাত্রা বিরূপ প্রভাব পড়ে। তারা জোর করে পাহাড়িয়াদের কৃষিকাজে বাধ্য করে। এসব থেকে বাঁচার জন্য এবং ইংরেজদের সাথে লড়ার জন্য পাহাড়িয়ারা গভীর জঙ্গলে চলে যায়।
4.ব্রিটিশ সরকার কেন ১৮৯৫ খ্রিঃ ‘Limitation Law’ তৈরী করেছিল, এর ফলে কি রায়তদের অবস্থার উন্নতি হয় ?
উত্তর: 1859 সালে ব্রিটিশ সরকার ‘Limitation Law’ নামে একটি আইন পাশ করে। এই আইনের উদ্দেশ্য ছিল অনেক দিন ধরে জমা শোধের পরিমানকে নিয়ন্ত্রণ করা। Limitation আইনের ফলে রায়তদের অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি।মহাজনরা এই আইনটিকে ঘুরিয়ে নিজেদের পক্ষে নিয়ে আসে এবং প্রতি তিন বছরে রায়তদের নতুন ঋণপত্র স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে। যখন কোনো নতুন ঋণপত্র স্বাক্ষর করা হয় তখন আগের অপরিশোধিত ঋণ অর্থাৎ মূল ঋণ এবং অপরিশোধিত ঋণকে মূলধন হিসেবে দেখানো হত এবং তার উপর নতুন করে সুদ ধার্য করা হত।মহাজনরা রায়তদের প্রতারনা করার জন্য বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করত ঋণ পরিশোধ করলে তারা রায়তদের রসিদ দিতে অস্বীকার করত, ঋণপাত্রে কল্পিত রাশি লিখে রাখত, খুব কম দামে কৃষকদের থেকে ফসল সংগ্রহ করে নিত এবং শেষপর্যন্ত কৃষকদের ঋণ সম্পত্তিও আত্মসাৎ করে নিত।
5.জমিদাররা কীভাবে জমিদারির উপর ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ রাখতেন?
উত্তর: জমিদাররা যেসব ব্যবস্থার মাধ্যমে জমিদারির ওপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতেন সেগুলি হলো-
(i) বেশিরভাগ সময়ই রায়তরা পুরোনো জমিদারের প্রতি অনুগত থাকতেন এবং নিজেদেরকে ওই জমিদারের প্রজা বলেই মনে করতেন। তাই রায়তরা নতুন জমিদারকে ওই জমিদারিতে প্রবেশে বাধা দিত।
(ii) জমিদারির বাইরের কোনো ব্যক্তি জমিদারির অংশ ক্রয় করলেও তা নিজের অধিকারে নিতে পারতো না।
(iii) জমিদাররা তাদের জমিদারির অংশ বিশেষ কোনো না কোনো আত্মীয়ের নামে নথিভুক্ত করতেন। এর ফলে সরকারকে কম ‘কর’ প্রদান করা যেতো। তাছাড়া সরকার নিলামের দ্বারা কোনো জমি বিক্রয় করতে উদ্যোগী হয়। তারা নিজের লোক দিয়ে সর্বোচ্চ ডাক হাঁকাতেন যাতে পরবর্তী সময়ে ওই জমিদার আবার তাদের আয়ত্তে চলে আসে।
11.ব্রিটিশ রাজত্ব এবং বিদ্রোহীরা : ১৮৫৭-এর বিদ্রোহ এবং এর বিবরণ
MCQ 1 VSA 1
1. সিপাহি বিদ্রোহ প্রথম কোথায় আত্মপ্রকাশ করে?
উত্তর: সিপাহি বিদ্রোহ প্রথম কলকাতার কাছে ব্যারাকপুরে আত্মপ্রকাশ করে।
1. ‘মেরা ঝাঁসি নেহি দেউঙ্গা”—কার উক্তি?
উত্তর: ‘মেরা ঝাঁসি নেহী দেউঙ্গা’—উক্তিটি লক্ষ্মীবাঈয়ের।
3. নানা সাহেব কে ছিলেন?
উত্তর: নানা সাহেব ছিলেন পেশোয়া দ্বিতীয় বাজিরাও-এর দত্তক
4. তাঁতিয়া তোপি কে ছিলেন?
উত্তর: নানা সাহেবের অন্যতম সহযোগী ছিলেন তাঁতিয়া তোপি।
5. লক্ষ্মীবাঈ-এর দত্তক পুত্রের কী নাম ছিল?
উত্তর: লক্ষ্মীবাঈ-এর দত্তক পুত্রের নাম ছিল দামোদর রাও।
6. কোথায় দ্বিতীয় বাহাদুর শাহের মৃত্যু হয়?
উত্তর: বার্মার রেঙ্গুনে দ্বিতীয় বাহাদুর শাহের মৃত্যু হয়।
7. ভাইসরয় শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ভাইসরয় শব্দের অর্থ রাজপ্রতিনিধি।
9. কোন্ আইনের দ্বারা কোম্পানির শাসনের অবসান হয়?
উত্তর: ‘Act for the Better Government of India’ নামক আইন দ্বারা কোম্পানির শাসনের অবসান হয়।
10. স্বত্ববিলোপ নীতি প্রথম কোন্ রাজ্য গ্রহণ করে?
উত্তর: স্বত্ববিলোপ নীতি প্রথম সাতারা রাজ্য গ্রহণ করে।
11. ‘অধীনতামূলক মিত্ৰতা নীতি’ প্রথম কে গ্রহণ করেন?
উত্তর: অধীনতামূলক মিত্ৰতা নীতি’ প্রথম হায়দ্রাবাদের নিজাম গ্রহণ করেন।
12. মহাবিদ্রোহ কবে শুরু হয়।
উত্তর: ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের ১০ মে মহাবিদ্রোহ শুরু হয়।
13. কোথায় প্রথম সিপাহি বিদ্রোহ শুরু হয়?
উত্তর: সিপাহি বিদ্রোহ প্রথম শুরু হয় মিরাটে
14. ‘ফিরিঙ্গি’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ফিরিঙ্গি একটি ফারসি শব্দ যার অর্থ হল বিদেশি।ফিরিঙ্গি শব্দ দ্বারা ইউরোপীয়দের বোঝানো হত।
15. সিপাহি বিদ্রোহের তিনজন নেতার নাম লেখো।
উত্তর: সিপাহি বিদ্রোহের অন্যতম তিনজন নেতা হলেন—ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাঈ, কানপুরের নানা সাহেব এবং লক্ষ্ণৌয়ের বিরজিস কাদের।
16. সতীদাহপ্রথা কবে রদ হয়?
উত্তর: ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে সতীদাহপ্রথা রদ হয়।
17. অবধের শেষ নবাব কে ছিলেন?
উত্তর: অবধের শেষ নবাব ছিলেন ওয়াজেদ আলি শাহ।
18. সিপাহি বিদ্রোহের দুজন মহিলা নেতৃত্বের নাম লেখো।
উত্তর: সিপাহি বিদ্রোহের দুজন মহিলা নেতৃত্বে ছিলেন ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাঈ এবং বেগম হজরত মহল।
19. কোন্ গভর্নর জেনারেল ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তনের নীতি ঘোষণা করেছিলেন?
উত্তর: লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তনের নীতি ঘোষণা করেছিলেন।

MARK 4
1. ১৮৫৭-র বিদ্রোহ ব্যর্থ হয়েছিল কেন আলোচনা করো।***
উত্তর: ১৮৫৭-র বিদ্রোহের ব্যর্থতার পেছনে অনেকগুলি কারণ ছিল—
(i) পরিকল্পনা ও সংগঠনের অভাব: ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদারের মতে, বিদ্রোহীদের কোনো প্রকার সামরিক পরিকল্পনা ও সংগঠন ছিল না। দিল্লি-সব কিছু অঞ্চলে ব্রিটিশ শাসনের উচ্ছেদ ঘটালেও ইংরেজদের বিরুদ্ধে পালটা আক্রমণের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি।ফলে বিদ্রোহীদের মনোবল ভেঙে যায়।
(ii) উপযুক্ত নেতৃত্বের অভাব: এই বিদ্রোহকে সফল করার জন্য বিদ্রোহীদের মধ্যে উপযুক্ত কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব গড়ে ওঠেনি। রানি লক্ষ্মণীবাঈ, নানাসাহেব,বাহাদুর শাহ প্রমুখ নিজ নিজ রাজা পুনরুদ্ধার করতে বস্ত ছিলে। ফলে ভারত থেকে ইংরেজদের বিতাড়িত করার জন্য কোনো কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা তৈরি করা হয়নি।
(iii) বিদ্রোহের স্বল্প ব্যাপ্তি: চতুর্থত, মহাবিদ্রোহ ভারতের সমস্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েনি। দক্ষিণ ভারত ও পশ্চিম ভারতের বিস্তীর্ণ অংশ শান্ত ছিল। এমনকি শিখ ও গোর্খা বাহিনী বিদ্রোহ দমনে ব্রিটিশদেরসাহায্য করেছিল। বস্তুত সারা দেশে বিদ্রোহ ছড়িয়ে না পড়ার ফলে ইংরেজরা দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারত থেকে সেনাবাহিনী এনে সহজেই বিদ্রোহ দমন করেছিল।
(iv) উন্নত সমারস্ত্রের অভাব: বিদ্রোহী সেনাদের উন্নত অস্ত্রশস্ত্রের অভাব ছিল। অন্যদিকে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে উন্নত মানের অস্ত্র এবং আউট্রাম, হিউরোজ প্রমুখদক্ষ সেনাপতি নেতৃত্ব দিয়েছিল। এদের আক্রমণের সামনে ভাতীয় সিপাহিরা সফলহতে পারেনি।
পরিশেষে বলা যায়, সিপাহিরা এই বিদ্রোহ শুরু করলেও সাধারণ মানুষ এই বিদ্রোহে স্বতঃস্ফূর্তভাবে যোগাদনা করেনি। শুধুমাত্র কিছু রাজা, জমিদার ও অভিজাত শ্রেণিরমানুষ মহাবিদ্রোহের যোগ দিয়েছিল। ফলে জনসমর্থনের অভাবে বিদ্রোহ সহজেই ব্যর্থ হয়ে যায়।
2.ইংরেজরা বিদ্রোহীদের দমন করার জন্য কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল?***
উত্তর: ইংরেজরা বিদ্রোহীদের দমন করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল। নিচে এই পদক্ষেপগুলি সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো-
কূটনীতি: বিদ্রোহীদের দুর্বল এবং ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ প্রভুরা কূটনীতির আশ্রয় গ্রহণ করে। বিদ্রোহীদের সাথে যোগাযোগ নেই এমন দেশীয় রাজাদের, তারা স্বপক্ষে রাখতে চেষ্টা করত।
প্রযুক্তির ব্যবহার: যুদ্ধক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনের জন্য. ব্রিটিশরা আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে। শুধু উন্নত অস্ত্রের ব্যবহারই নয়, বিদ্রোহ দমনে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থারও সাহায্য নেওয়া হয়।
যাই হোক, এত কিছুর মধ্যে অসীম সাহসে লড়াই করা সত্ত্বেও বিদ্রোহীরা একসময় ব্রিটিশ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ায় শক্তি হারায়।

আইন পাস: মহাবিদ্রোহে অংশগ্রহণকারী বিদ্রোহীদের দমন করার জন্য ব্রিটিশ সরকার বিভিন্ন আইন পাস করে।১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মে এবং জুন মাসে এই ধরনের আইনগুলি পাস করা হয়। এর ফলে সম্পূর্ণ উত্তর ভারতে সামরিক আইন কার্যকর কর হয়।
শাস্তি প্রদানের ক্ষমতা: তৎসময়ে বিভিন্ন ব্রিটিশ পদস্থ কর্মকর্তা ছাড়াও সাধারণ ইংরেজদেরকে বিশেষ ক্ষমতা প্রদান করা হয়।এই ক্ষমতা বলে সাধারণ ইংরেজরা পর্যন্ত বিদ্রোহের সঙ্গে জড়িত যে-কোনো ব্যক্তিকে শাস্তি প্রদান করতে পারতো।
সৈন্যবাহিনী আনয়ন: মহাবিদ্রোহ দমন করার জন্য ব্রিটিশ সরকার ব্যাপক সামরিক বলপ্রয়োগ করে। আর এই বলপ্রয়োগকে তীব্রতর করার জন্য ইংল্যান্ড থেকে আরও অতিরিক্ত সৈন্যবাহিনী আনয়নের ব্যবস্থা করা হয়।
দিল্লি দখল : ব্রিটিশ সরকার দিল্লি দখল করার জন্য পাঞ্জাব এবং কলকাতা থেকে বিপুল পরিমাণে সেনাবাহিনী এনে আক্রমণের ব্যবস্থা করে। এক সময় তীব্র সংগ্রামের পর তারা ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে দিল্লি দখল করে।
3.তুমি কি মনে করো ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের পেছনে ধর্মীয় ভাবাবেগ বিদ্রোহ ত্বরান্বিত করেছিল?***
উত্তর: ১৮৫৭ সালে মহাবিদ্রোহ সিপাহীদের মধ্যে প্রথম সূচনা হলেও তা অচিরেই সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপ্তি লাভ করে।বিদ্রোহের শুরুতে ভারতীয় সিপাহীরা এনফিল্ড রাইফেলের কাতুর্জে গরু ও শূকরের চর্বির প্রলেপ সন্ধেহে তা দাঁতেকেটে ব্যবহার করতে অসম্মতি জানায়, জাতি-বর্ণ উভয়দিকে তাদের ধর্মীয় ভাবাবেগ আঘাত আসে।গ্রামাঞ্চলের সিপাহিদের আত্মীয়রা তাদের দাবী মেনে এই বিদ্রোহে যোগ দেয়। ইংরেজ, খ্রিস্টধর্মাবলম্বী শাসকদের শাসনে সংস্কারমূলক অনেক আইন হয় যেমন, বাল্য-বিবাহ রোধ করা, সতীদাহ প্রথা বন্ধ করা, ইত্যাদি বিষয়ে সাধারণ মানুষ সন্দেহ প্রকাশ করে।তাছাড়া ইংরেজদের বিরুদ্ধে অনেক উলেমা জিহাদের ডাক দেয়, মৌলবি আহমদউল্লাহ শাহ চিন হাটের যুদ্ধে হেনরি লরেন্সের বাহিনীকে পরাজিত করেন। এছাড়াও ভারতীয় চিরাচরিত ধর্মীয় সামাজিক আচার-আচরণের উপর খ্রিস্টান মিশনারিদের হস্তক্ষেপ এবং ভারতীয়দের খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরিত করা সাধারণ মানুষ ভালো চোখে দেখেনি।বিদ্রোহের ফলস্বরূপ হিন্দু-মুসলিম ঐক্য সুদৃঢ় হতে থাকে।
4.ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের কীরূপ প্রতিক্রিয়া ছিল? এর ফলাফল কী ছিল?
উত্তর: 1857 সালে মহাবিদ্রোহের মূল ছিল কোম্পানির শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ। প্রায় এক শতাব্দিকাল ধরে কোম্পানী,ভারতে বিভিন্ন অঞ্চল দখল করে নিজেদের আধিপত্য ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে এর ফলে ভারতের বিভিন্ন মানুষের মধ্যে অসন্তোষ ও বিক্ষোভের দানা বাধতে থাকে। এই অসন্তোষ এর বহিঃপ্রকাশই হল 1857 সালের মহাবিদ্রোহ।
ফলাফল:(i) 1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের ফলে শাসন ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন আসে।
(ii) মহাবিদ্রোহের ফলে কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটে।
(iii) মহাবিদ্রোহের ফলে ব্রিটিশ সরকার ভারতে সাম্রাজ্যবিস্তার নীতি বাতিল করে।
(iv) মহাবিদ্রোহের ফলে মোগল সাম্রাজ্যের পরিপূর্ণ বিলুপ্তি ঘটে।
4. ১৮৫৭-র মহাবিদ্রোহের ফলাফল বা তাৎপর্য লেখো।
উত্তর: ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহ ভারতের ইতিহাসে এক গৌরবময় অধ্যায়। এটি ছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম। এই বিদ্রোহ ব্যর্থ হলেও ভারতবর্ষের ইতিহাসে মহাবিদ্রোহের ফলাফল বা তাৎপর্য ছিল নিম্নরূপ—
(i) ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহে সিপাহি ও জনসাধারণের মিলিত প্রয়াস ব্রিটিশ শাসনের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিল। তাই এই বিদ্রোহ থেকে শিক্ষা নিয়ে ইংরেজরা পরবর্তীকালে সামরিক শক্তিকে জনসাধারণের কাছে থেকে বিচ্ছিন্ন রাখার নীতি অনুসরণ করে।
(ii) মহাবিদ্রোহের ফলে কোম্পানির শাসন বাতিল হয়। পরিবর্তে সরাসরি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের শাসনাধীনে ভারতকে আনা হয়। রানি ভিক্টোরিয়া ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের এক ঘোষণার মাধ্যমে কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটান। ভারত সচিবের মাধ্যমে এদেশকে শাসনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ভারত সচিব ভাইসরয়দের সাহায্যে ভারতবর্ষের শাসন পরিচালনা শুরু করেন।
(iii) মহারানি ভিক্টোরিয়ার ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে স্বত্ববিলোপ নীতি বাতিল হয়। ব্রিটিশ সরকার ভারতে সাম্রাজ্যবিস্তার নীতি বাতিল করে। দেশীয় রাজারা পুনারায় দত্তক পুত্র গ্রহণের অধিকার পায়। এ ছাড়া ভারতীয়দের জাতিধর্মবর্ণনির্বিশেষে সরকারি উচ্চপদে নিয়োগের কথা বলা হয়।
(iv) মহাবিদ্রোহের সেনাবাহিনীকে সাজানো হয়। সেনাবাহিনীতে ইউরোপীয় সৈন্যের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়। এ ছাড়া কামান ও গোলন্দাজ বাহিনীর মতো গুরুত্বপূর্ণ বাহিনীতে ইংরেজ সৈন্যদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। আর ভারতীয় সৈন্যের সংখ্যা হ্রাস করা হয়।
(v) মহাবিদ্রোহের ফলে মোগল সাম্রাজ্যের সম্পূর্ণ বিলুপ্তি ঘটে। মুসলিম সমাজের দ্বারা ইংরেজদের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়েছিল। ফলে মুসলমানদের প্রতি বিট্রিশ সরকারের বিরোধিতা বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে দমন নীতির ফলে ইংরেজ সরকারের সঙ্গে ভারতীয়দের সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে |
পরিশেষে বলা যায়, মহাবিদ্রোহের ফলে ভারতের সমাজজীবনে পরিবর্তন আসে। হিন্দুরা ইংরেজি শিক্ষা গ্রহণ করে বিভিন্ন সুযোগসুবিধা লাভ করে। আর মুসলমান সম্প্রদায় ক্রমশ পিছিয়ে পড়ে।
A সঠিক উত্তর বাছাই করো।মান-1
1. জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল 1919-এর-
(a)জানুয়ারি মাসে (b) মার্চ মাসে (c)এপ্রিল মাসে (13 এপ্রিল) (d)জুন মাসে
উত্তর: (c)এপ্রিল মাসে (13 এপ্রিল)
2. গান্ধিজি দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়েছিলেন—
(a)1890 খ্রিস্টাব্দে (b)1893 খ্রিস্টাব্দে(c)1895 খ্রিস্টাব্দে (d) 1897 খ্রিস্টাব্দে

উত্তর:(b)1893 খ্রিস্টাব্দে।
*দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভারতে ফিরে এসেছিলেন ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে।
3.বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়-
(a)1915 খ্রিস্টাব্দে (b)1916 খ্রিস্টাব্দে (c) 1919 খ্রিস্টাব্দে (d) 1920 খ্রিস্টাব্দে
উত্তর: (c)1916 খ্রিস্টাব্দে ।
4. লর্ড মাউন্টব্যাটেন ভারতে আসেন—
(a)1942 খ্রিস্টাব্দে (b)1944 খ্রিস্টাব্দে (c)1946 খ্রিস্টাব্দে (d)1947 খ্রিস্টাব্দে
উত্তর: (d) 1947 খ্রিস্টাব্দে।
5. চৌরিচৌরা গ্রামে অগ্নিসংযোগ ঘটায়—
(a) 1920 খ্রিস্টাব্দে (b) 1921 খ্রিস্টাব্দে (c)1922 খ্রিস্টাব্দে (d) 1923 খ্রিস্টাব্দে
উত্তর:(c)1922 খ্রিস্টাব্দ।
VSA 1
1. কংগ্রেসের তিনজন চরমপন্থী নেতার নাম লেখো।
উত্তর: কংগ্রেসের তিনজন চরমপন্থী নেতা হলেন বালগঙ্গাধর তিলক, বিপিনচন্দ্র পাল ও লালা লাজপত রায়।
2. ভারতে হিন্দু-মুসলিম ঐক্য স্থাপনের প্রচেষ্টায় গান্ধিজি কোন্ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন শুরু করেছিলেন?
উত্তর: ভারতে হিন্দু-মুসলিম ঐক্য স্থাপনের প্রচেষ্টায় গান্ধিজি খিলাফৎ আন্দোলন শুরু করেছিলেন।
4. ভারতীয়রা কেন ‘সাইমন কমিশন’-এর বিরোধিতা করে?
উত্তর: সাইমন কমিশনের সব সদস্য শ্বেতাঙ্গ হওয়ায় ভারতীয়রা সাইমন কমিশনের বিরোধিতা করে।
5. কোন্ দিনটি ভারতের প্রথম স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালিত হয়?
উত্তর: ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ২৬শে জানুয়ারি দিনটি ভারতের প্রথম স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালিত হয়।
6. কে ‘প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস’-এর ডাক দিয়েছিলেন?
উত্তর: মহম্মদ আলি জিন্নাহ ‘প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস’-এর ডাক দিয়েছিলেন।
7. গান্ধিজির আত্মজীবনীটির নাম লেখো।
উত্তর: গান্ধিজির আত্মজীবনীটির নাম The Story of My Experiments with Truth |
৪. ‘হরিজন’ পত্রিকার সম্পাদক কে ছিলেন?
উত্তর: ‘হরিজন’ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন মহাত্মা গান্ধি।
9. ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের লাহোর কংগ্রেসের সভাপতি কে ছিলেন?
উত্তর: ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের লাহোর কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন জওহরলাল নেহরু।
11. গান্ধিজি কোথা থেকে ডান্ডি অভিযান আরম্ভ করেছিলেন?
উত্তর: গান্ধিজি সবরমতী আশ্রম থেকে ডান্ডি অভিযান আরম্ভ করেছিলেন।
12. কোন্ পরিকল্পনা দ্বারা ভারতের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়?
উত্তর: মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনার দ্বারা ভারতের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়।
13. “করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে”—উক্তিটি কার?
উত্তর: প্রদত্ত উক্তিটি মহাত্মা গান্ধির।
14. ‘মন্ত্রী মিশন’-এর নেতৃত্ব প্রদান করেন কে?
উত্তর: স্যার প্যাথিক লরেন্স ‘মন্ত্রী মিশন’-এর নেতৃত্ব প্রদান করেন।
15. ‘ক্যাবিনেট মিশন’ বা ‘মন্ত্রী মিশন’ কবে ভারতে আসে?
উত্তর: ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ২৪ মার্চ ‘ক্যাবিনেট মিশন’ বা ‘মন্ত্রী মিশন’ ভারতে আসে।
16. “A Post-Dated Cheque on a Crushing Bank”—উক্তিটি কার?
উত্তর: প্রদত্ত উক্তিটি গান্ধিজির
17. কোন্ মহিলা ‘গান্ধি বুড়ি’ নামে খ্যাত?
উত্তর: মাতঙ্গিনি হাজরা ‘গান্ধি বুড়ি’ নামে খ্যাত।
18. নেতাজি আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের নাম কী রাখেন?
উত্তর: নেতাজি আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের নাম রাখেন যথাক্রমে ‘শহিদ দ্বীপ’ এবং ‘স্বরাজ দ্বীপ’।
19. ‘Prison Diary’র লেখক কে ছিলেন?
উত্তর: ‘Prison Diary’-র লেখক ছিলেন জয়প্রকাশ নারায়ণ।
20. ‘India Wins Freedom’-এর লেখক কে?
উত্তর: ‘IndiaWins Freedom’-এর লেখক দাদাভাই নৌরজি।
23. ‘পুনা চুক্তি’ কত সালে চুক্তি’ স্বাক্ষরিত হয়
উত্তর: ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে ২৫শে সেপ্টেম্বর ‘পুনা চুক্তি’ স্বাক্ষরিত হয়।
24. সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি কবে ঘোষিত হয়?
উত্তর: ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি ঘোষিত হয়।
25. ‘গদর’ কথার অর্থ কী?
উত্তর: ‘গদর’ কথার অর্থ বিপ্লবী।
27. কারা ‘লাল-বাল-পাল’ নামে পরিচিত ছিলেন?
উত্তর: লালা লাজপত রায়, বালগঙ্গাধর তিলক এবং বিপিনচন্দ্ৰ পাল ‘লাল-বাল-পাল’ নামে পরিচিত ছিলেন।
28. কখন স্বদেশি আন্দোলন হয়েছিল?
উত্তর: ১৯০৫-০৭ খ্রিস্টাব্দে স্বদেশি আন্দোলন
30. ‘রাওলাট আইন’ কী?
উত্তর: ব্রিটিশ বিচারপতি স্যার সিডনি রাওলাটের প্রস্তাবমতো ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ২১ মার্চ রাওলাট আইন পাস হয়। এই আইন অনুযায়ী যে-কোনো ব্যক্তিকে বিনা বিচারে শাস্তি প্রদান করা যেত।
31. কারা খিলাফৎ আন্দোলনের নেতা ছিলেন?
উত্তর: খিলাফৎ আন্দোলনের নেতা ছিলেন মহম্মদ আলি এবং সৌকত আলি, যারা আলি ভ্রাতৃদ্বয় নামে পরিচিত।
33. গান্ধিজি কবে ডান্ডি অভিযান শুরু করেছিলেন?
উত্তর: ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ১২ মার্চ গান্ধিজি সবরমতি আশ্রম থেকে ডান্ডি অভিযান শুরু করেছিলেন।
34. ক্রিপস মিশন কবে ভারতে আসে?
উত্তর: ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে ক্রিপস মিশন ভারতে আসে
35. ‘প্রত্যক্ষ সংগ্রাম’ দিবস কী?
উত্তর: ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ও মুসলিম লিগের মতপার্থক্যের কারণে জিন্না বলপ্রয়োগর মাধ্যমে পৃথক পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠনে উদ্যোগী হন। তাই ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৬ আগস্ট তিনি প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস ঘোষণা করেন। ওই দিন থেকে কলকাতায় রক্তক্ষয়ী দাঙ্গা শুরু হয়ে যায়।
36. লর্ড ওয়াভেলের পর ভারতের ভাইসরয় কে হন?
উত্তর: লর্ড ওয়াভেলের পর ভারতের ভাইসরয় হন লর্ড মাউন্টব্যাটেন (১৯৪৭-এর ফেব্রুয়ারি মাসে)।
38. চৌরিচৌরার ঘটনা কবে ঘটেছিল?
উত্তর: চৌরিচৌরার পুলিশচৌকি আক্রমণের ঘটনা ঘটেছিল ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে।
40. কবে ভারতে প্রথম স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হয়?
উত্তর: ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি ভারতে প্রথম স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হয়।
41. গান্ধিজি কবে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন?
উত্তর: ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ৮ আগস্ট গান্ধিজি ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন।
MARK 5
1. ডান্ডি অভিযানের প্রধান ঘটনাবলির বর্ণনা দাও। জাতীয় আন্দোলনের ইতিহাসে এর তাৎপর্য লেখো।
উত্তর: (i) ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ১২ মার্চ গান্ধিজি তাঁর ৭৮ জন অনুগামী নিয়ে গুজরাটের সবরমতি আশ্রম থেকে ঐতিহাসিক ডান্ডিযাত্রা করেন। তিনি ২৪ দিনে প্রায় ৩৮৪ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে গুজরাটের উপকূলবর্তী গ্রাম ডান্ডিতে পৌঁছান।
(ii) গান্ধিজির ডান্ডিযাত্রার খবর সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। যাত্রাপথে হাজার হাজার মানুষ গান্ধিজিকে অভিনন্দিত করে এবং অনেকেই পদযাত্রায় অংশগ্রহণ করে।
(iii) জনগণ গান্ধিজির জন্য প্রার্থনা করে এবং তাঁর প্রতি শ্রদ্ধার চিহ্নস্বরূপ চরকায় সুতো কাটে।
(iv) ৬ এপ্রিল গান্ধিজি ডান্ডি পৌঁছান এবং সমুদ্রের তীর থেকে একমুঠো লবণ সংগ্রহ করে লবণ আইন ভঙ্গ করেন। এটি ছিল ব্রিটিশ প্রবর্তিত আইনকে অস্বীকার করার প্রতীক স্বরূপ।
(v) এই প্রতীকী আইনভঙ্গের মধ্য দিয়ে সারাদেশে আইন অমান্য আন্দোলন শুরু হয়ে যায় এবং আন্দোলনে এক উত্তাল জনতরঙ্গের সৃষ্টি হয়। ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এই আন্দোলন পৌঁছে যায়। এমনকি ভারতের উত্তরপশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে খান আবদুল গফফর খান তাঁর অনুগামীদের নিয়ে আইন অমান্য আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন।
তাৎপর্য:
(i) ডান্ডি অভিযানের মধ্য দিয়ে গান্ধিজি ব্যাপক অংশের মানুষের মধ্যে ব্রিটিশবিরোধী সাড়া জাগাতে পেরেছিলেন।
(ii) লবণ উৎপাদনে ব্রিটিশের একচেটিয়া অধিকার ভারতবাসীর মধ্যে যে ক্ষোভের সৃষ্টি করে লবণ আইন ভঙ্গের মধ্য দিয়ে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটে।
(iii) ধনী-দরিদ্র সকল অংশের মানুষই যেহেতু লবণ ব্যবহার করে তাই গান্ধিজি লবণকে আইন অমান্য আন্দোলনের প্রতীক করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন।
2.চরকাকে কেন জাতীয়তাবাদের চিহ্ন হিসেবে বাছাই করা হয়?***
উত্তর:: মহাত্মা গান্ধি দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে চরকায় সুতো কাটতেন।তিনি চরবাকে জাতীয়তাবাদের চিহ্ন রূপে বাছাই করেছিলেন।অবশ্য এর পেছনে অনেক কারণ ছিল।নিচে এই কারণগুলি উল্লেখ করা হলো—
(i)গান্ধিজি মনে করতেন—সমাজের দরিদ্র শ্রেণি চরকা ব্যবহার করে নিজেদেরকে স্বাবলম্বী করতে সক্ষম হবে।
(ii)চরকা ক্রয় করার জন্য বেশি টাকার প্রয়োজন হতো না।তাই যে কোনো দরিদ্র মানুষ কম অর্থের মাধ্যমে চরকা ক্রয় করতে পারতো।তাই চরকার মাধ্যমে কুটির শিল্পের উন্নতি যে কোনো ভাবেই সম্ভব।
(iii)শারীরিক শ্রমের মাধ্যমে চড়কার উৎপাদন কার্য হয়।এটি মূলত আত্ম নির্ভর কর্মসংস্কৃতির পরিচয়বাহক। অন্যদিকে জাতিভেদ প্রথায় আঘাত হানার অন্যতম মুখ্য হাতিয়ার হলো চরকা।তাই চরকা জাতীয়তাবাদের চিহ্ন।
(iv)শারীরিক শ্রমকে গুরুত্ব দেওয়া ছিল গান্ধিজির অন্যতম উদ্দেশ্য।তাই সেই জন্য চরকার ব্যবহারকে সাধারণের মধ্যে জনপ্রিয় করে তোলার জন্য তিনি সর্বাত্মক প্রয়াস চালান।
3.মহাত্মা গান্ধি কীভাবে জাতীয় আন্দোলনের চরিত্রে পরিবর্তন আনেন বা ঘটালেন?***
উঃ গান্ধিজি ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভারতে ফিরে আসেন।তারপর থেকে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে তাঁর মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত তিনিই ছিলেন ভারতীয় রাজনীতির প্রধান চরিত্র।তাই ওই সময়কে ‘Gandhian Era’ বলা হয়।গান্ধিজিই প্রথম ভারতের জাতীয় আন্দোলনকে গণসংগ্রাম বা আন্দোলনে পরিণত করেন। গান্ধিজি যেভাবে জাতীয় আন্দোলনে পরিবর্তন আনেন, তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো-
(i)ভারতীয় রাজনীতির অঙ্গনে গান্ধিজির আত্মপ্রকাশের পূর্বে ভারতের জাতীয় আন্দোলন মুষ্টিমেয় বুদ্ধিজীবী ও উচ্চবিত্ত মানুষের হাতে কেন্দ্রীভূত ছিল। কিন্তু গান্ধিজি কৃষক, শ্রমিক, দলিত, ছাত্র, যুবক প্রভৃতি সকল স্তরের মানুষকে সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত করেন।
(ii) গান্ধিজি কৃষকদের সাধারণ সমস্যা নিয়ে চম্পারণ ও খেদা এবং শ্রমিকদের সমস্যা নিয়ে আমেদাবাদে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম পরিচালনা করে সাফল্য পান। তারপর তিনি জাতীয় গণ আন্দোলন হিসেবে অসহযোগ আন্দোলন, আইন অমান্য আন্দোলন ও ভারত ছাড়ো আন্দোলন পরিচালনা করেন।
(iii)গান্ধিজি শুধু রাজনীতিবিদ ছিলেন না, তিনি অন্যতম সমাজ সংস্কারকও ছিলেন।তিনি মনে করতেন স্বাধীনতা লাভের যোগ্য হতে ভারতীয়দের অবশ্যই বাল্যবিবাহ, কুসংস্কার প্রভৃতি থেকে মুক্ত হতে হবে।তাছাড়া তিনি ভারতের হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য সংহতি রক্ষার ওপরও গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
(iv)গান্ধিজি এক বড়ো স্তরের নেতা হওয়া সত্ত্বেও নিজের জীবনশৈলী অতি সাধারণ মানুষের মতো গড়ে তুলেছিলেন।তিনি যেমন সাধারণ ধুতি পরিধান করতেন ঠিক তেমনি সাধারণ হিন্দুস্থানি ভাষায় কথা বলতেন।এর ফলে তিনি সমগ্র ভারতে সকল স্তরের নেতাতে পরিণত হন।
(v) গান্ধিজির উদ্যোগেই সর্বপ্রথম কংগ্রেস দল শহরের সাথে সাথে গ্রামাঞ্চলেও সম্প্রসারিত হয়।
15. সংবিধান প্রণয়ন : এক নতুন যুগের সূচনা
MCQ 1
1.নেহরু গণপরিষদে আইনের উদ্দেশ্য প্রস্তাব উত্থাপন
করেন, ১৯৪৬-এর-
(ক) ১১ ডিসেম্বর (খ)২৬ জানুয়ারি (গ) ১৩ ডিসেম্বর (ঘ)৩০ জানুয়ারি
উত্তর: (গ) ১৩ ডিসেম্বর।
2.গণ পরিষদের সভাপতি ছিলেন –
(ক) বল্লভভাই প্যাটেল (খ) মৌলানা আবদুল কালাম আজাদ (গ) ড. বি আর আম্বেদকর (ঘ) ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ
উত্তর: (ঘ) ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ।
3.ভারতের সংবিধান গৃহীত হয়
(ক) ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি (খ) ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের ২৬ নভেম্বর (গ) ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ৩০ জানুয়ারি (ঘ) ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি
উত্তর: (ক) ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের ২৬ নভেম্বর।
4.ভারতের সংবিধান কার্যকর হয়।-
(ক) ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি (খ) ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের ২৪ নভেম্বর(গ) ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ৩০ জানুয়ারি (ঘ) ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি
উত্তর: (ক) ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি।
6.ভারতের সংবিধানের খসড়া কমিটির চেয়ারম্যান :
ছিলেন—
(ক) নেহরু (খ) ড. বি আর আম্বেদকর (গ) বল্লভভাই প্যাটেল (ঘ) সোমনাথ লাহিড়ি
উত্তর: (খ) ড. বি আর আম্বেদক
7.‘পৃথক নির্বাচন কেবল রাষ্ট্রের জন্য নয়, সংখ্যালঘুদের জন্যও ক্ষতিকর।‘ একথা বলেছেন
(ক) জয়পাল সিং (গ) প্যাটেল (খ) গোবিন্দ বল্লভ পন্থ (ঘ) নেহরু
উত্তর: (খ) গোবিন্দ বল্লভ পন্থ।
8.‘আমরা অনেক সহ্য করেছি, কিন্তু এখন আর কষ্ট
সহ্য করতে রাজি নই।‘ মন্তব্যটি করেছেন।
(ক) নাগাপ্পা (খ) নেহরু (গ) তিলক (ঘ) জয়পাল সিং
উত্তর: (ক) নাগাপ্পা।
9.গণপরিষদে উপজাতি প্রতিনিধি ছিলেন
(ক) বি পি খৈলাস (খ) কৃষ্ণস্বামী আয়ার (গ) কে এম মুন্সি (ঘ) জয়পাল সিং
উত্তর: (ঘ) জয়পাল সিং।
10.ভারত সরকারের সাংবিধানিক উপদেষ্টা মন্ডলী ছিলেন
(ক) আই. আই. চুন্দ্রিগড় (খ) বি. এন. রাও (ঘ) নেহরু (গ) গান্ধিজি
উত্তর: (খ) বি. এন. রাও
VSA 1
1. কাকে ‘ভারতের সংবিধানের জনক’ বলা হয়?
উত্তর: ড. বি আর আম্বেদকরকে ‘ভারতের সংবিধানের জনক’ বলা হয়।
2. ভারতীয় সংবিধানের ব্যাখ্যাকর্তা কে?
উত্তর: ভারতীয় সংবিধানের ব্যাখ্যাকর্তা হলেন—সুপ্রিম কোর্ট।
3. গণপরিষদের সভাপতি কে ছিলেন?
উত্তর: গণপরিষদের সভাপতি ছিলেন ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ।
4. ভারতীয় সংবিধানে কটি মৌলিক কর্তব্য সংযোজিত হয়েছে?
উত্তর: ভারতীয় সংবিধানে ১১টি মৌলিক কর্তব্য সংযোজিত হয়েছে।
5. সর্বজনীন ভোটাধিকার স্বীকৃত হয়েছে সংবিধানের কত নং ধারায় ?
উত্তর: ৩২৬ নং ধারায় সর্বজনীন ভোটাধিকার স্বীকৃত হয়েছে।
6. ভারতীয় সংবিধানে বর্তমানে মোট তফশিল কয়টি রয়েছে?
উত্তর: ভারতীয় সংবিধানে ১২টি মোট তফশিল হয়েছে।
7. পৃথিবীর বৃহত্তম লিখিত সংবিধান কোন্‌টি?
উত্তর: পৃথিবীর বৃহত্তম লিখিত সংবিধান হল- —ভারতের সংবিধান।
৪. ভারতীয় সংবিধানের ‘প্রস্তাবনা’ কতবার সংশোধিত হয়েছে?
উত্তর: ভারতীয় সংবিধানের ‘প্রস্তাবনা’ সংশোধিত হয়েছে একবার।
9. ভারতীয় সংবিধানের অন্যতম বৈশিষ্ট্য কী?
উত্তর: ভারতীয় সংবিধানের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল এটি পৃথিবীর সর্ববৃহৎ সংবিধান।
11. ‘খসড়া’ কী?
উত্তর: আইনি দলিলের সংসদীয় রূপকে ‘খসড়া’ বলে।
12. খসড়া সংবিধান রচনা কমিটির সভাপতি কে ছিলেন?
উত্তর: খসড়া সংবিধান রচনা কমিটির সভাপতি ছিলেন ডঃ বি আর আম্বেদকর।
13. গণপরিষদের প্রধান কাজ কী ছিল?
উত্তর: গণপরিষদের প্রধান কাজ ছিল ভারতের সংবিধান রচনা করা।
14. গণপরিষদে আদিবাসী নেতা কে ছিলেন?
উত্তর: গণপরিষদে আদিবাসী নেতা ছিলেন জয়পাল সিং।
15. গণপরিষদ কী?
উত্তর: খসড়া সংবিধান রচনার জন্য যে প্রতিনিধি নির্বাচন করা হয়েছিল তাকেই গণপরিষদ বলা হয়।
16. ভারত সরকারের সাংবিধানিক উপদেষ্টা কে ছিলেন?
উত্তর: ভারত সরকারের সাংবিধানিক উপদেষ্টা ছিলেন বি এন রাও।
17. ভারতীয় সংবিধানের কোন্ কোন্ ধারায় ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকারের কথা লিপিবদ্ধ আছে?
উত্তর: ভারতীয় সংবিধানের ২৫-২৮ নং ধারায় ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকারের কথা লিপিবদ্ধ আছে।
4 Mark Questions
1. ভারতের সংবিধানের প্রস্তাবনায় কী কী আদর্শ ব্যক্ত করা হয়েছিল?
উত্তর: ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৩ ডিসেম্বর গণপরিষদের সভায় জওহরলাল নেহরু সংবিধানের বাস্তব সংকল্পের কথা উল্লেখ করেন। এর দ্বারা ভারতীয় সংবিধানের আদর্শ ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র পাওয়া যায়।
(i) এতে ঘোষণা করা হয় ভারতবর্ষ হবে একটি ‘স্বাধীন সার্বভৌম প্রজাতন্ত্র’।
(ii) ক্ষমতা ন্যস্ত থাকবে ভারতীয় জনগণের ওপর।
(iii) সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নাগরিকদের ন্যায় দান করা হবে। রাষ্ট্রে সকল নাগরিকেরা সমমর্যাদা, সমান সুযোগ এবং ন্যায়বিচার পাবে। মতপ্রকাশ, চিন্তা, বিশ্বাস, ধর্মাচরণ, বৃত্তি গ্রহণ, সংগঠন প্রতিষ্ঠা প্রভৃতি ক্ষেত্রে স্বাধীনতা প্রদান করা হবে।
(iv) সংখ্যালঘু, পশ্চাৎপদ শ্রেণি, উপজাতি, দলিত ইত্যাদি সমাজের সকল শ্রেণির মানুষকে যথেষ্ট নিরাপত্তা প্রদান করা হবে।
(v) ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের সংহতি ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা হবে। একটি সভ্য জাতি হিসেবে দেশকে গড়ে তোলা হবে।
এই সমস্ত আদর্শগুলি সংবিধানের প্রস্তাবনায় প্রতিফলিত হয়েছে।
2. গান্ধিজি কেন হিন্দুস্তানি ভাষা জাতীয় ভাষা হওয়া উচিত বলে মনে করতেন?
উত্তর: (i) মহাত্মা গান্ধির মতে হিন্দুস্তানি হল এমন একটি ভাষা যা সাধারণ মানুষ সহজেই বুঝতে পারে। হিন্দুস্তানী ছিল হিন্দি এবং উর্দুর মিশ্রণ বা মিলিত রূপ।
(ii) একটি বিরাট অংশের মানুষের মধ্যে এই ভাষা ছিল খুবই জনপ্রিয়। এ ছাড়া এটি একটি মিশ্রিত ভাষা যা বিভিন্ন সংস্কৃতির সমন্বয়ে সমৃদ্ধ হয়েছে। বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন ভাষার শব্দ এতে সংযোজিত হয়েছে।
(iii) ফলে বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ এই ভাষা সহজেই বুঝতে পারে। মহাত্মা গান্ধির মতে হিন্দুস্তানি হল বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে যোগাযোগের বা মত বিনিময়ের জন্য একটি আদর্শ ভাষা।
(iv) এই ভাষা হিন্দু মুসলমান এবং উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের মধ্যে মেলবন্ধনে সাহায্য করবে।
(v) উনিশ শতকের শেষ দিক থেকে ভাষা, রাজনীতি ও ধর্মীয় পরিচিতির সাথে যুক্ত হয়ে পড়ে এবং হিন্দুস্তানি একটি ভাষারূপে ধীরে ধীরে পরিবর্তন হতে থাকে। সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হিন্দি এবং উর্দু দূরে সরে যেতে থাকে।
3.ভারতের গণপরিষদের গঠন কীভাবে হয়েছিল? ব্যাখ্যা কর।***
উত্তর: ১৯৪৬ খ্রিঃ ৯ ডিসেম্বর ক্যাবিনেট মিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী গণপরিষদ গঠিত হয়। মোট সদস্য সংখ্যা ছিল ৩৮৯ জন।এই গণপরিষদের প্রধান কাজ ছিল ভারতের সংবিধান রচনা করা।
গণপরিষদের সদস্য নির্বাচন : গণপরিষদের সদস্যরা সর্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে নির্বাচিত হননি। সদস্য সংখ্যায় কংগ্রেসের আধিপত্য বেশি ছিল। শতকরা ৮২ শতাংশ ছিল কংগ্রেসের সদস্য। প্রাদেশিক আইনসভা থেকে, মুসলিম লিগ থেকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
প্রাথমিক আলোচনা ও গঠন : ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ ১৯৪৬ সালের ১১ ডিসেম্বর স্থায়ী সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত হন এবং হরেন্দ্র কুমার মুখার্জিকে সহ সভাপতি করা হয়। গণপরিষদের পরামর্শদাতা হিসাবে বি এন রাওকে নিয়োগ করা হয়।
সদস্য সংখ্যার পুনর্গঠন : প্রাথমিকভাবে গণপরিষদের সদস্য সংখ্যা ছিল ৩৮৯ জন। ভারত বিভাজনের পর গণপরিষদের সদস্য সংখ্যা কমে ২৯৯ জন করা হয়।
সংবিধান খসড়া কমিটি : গণপরিষদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কমিটি ছিল খসড়া কমিটি। ১৯৪৭ সালে ২৯ আগষ্ট এই কমিটি গঠন করা হয়। তার চেয়ারম্যান ছিলেন ডঃ বি. আর. আম্বেদকর।
খসড়া প্রকাশ : প্রাথমিকভাবে ২১শে ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮ সালে খসড়া কমিটি প্রথম ড্রাফট প্রকাশ করেন। দীর্ঘ আলোচনার পর অক্টোবর বাসে সংশোধন করে দ্বিতীয় ড্রাফট পেশ করেন। অবশেষে ৩৯৫টি ধারা ও ৮টি প্রশিল নিয়ে ১৯৪১ সালের ২৬শে নভেম্বর গণপরিষদ পৃথিবীর সর্ববৃহৎ গণতন্ত্রের নতুন সংবিধান গ্রহণ করে। গণপরিষদের সভাপতি ডঃ রাজেন্দ্রপ্রসাদ নতুন সংবিধান স্বাক্ষর করেন।
১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারি নতুন সংবিধান কার্যকরী হয় এবং ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ স্বাধীন ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হন।

Welcome to our blog dedicated to exploring the fascinating world of history! Here, we will delve into the past, examining significant events, influential figures, and cultural developments that have shaped our present. Whether you’re a history buff or simply curious about the world around you, our blog offers a wealth of information and insights.

Join us as we unravel the mysteries of the past, analyze historical sources, and engage in critical thinking. We will cover a wide range of topics, from ancient civilizations to modern-day events, ensuring there is something for everyone.

Through our blog posts, we aim to foster a deeper understanding of history and its relevance to contemporary issues. We encourage you to actively participate in the discussion, share your thoughts, and ask questions. Together, we can explore the rich tapestry of human history and appreciate the lessons it holds for the future.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *