Class12 History Half yearly Suggestion 2024 25  

Class12 History Half yearly Suggestion 2024 25

Class12 History Half yearly Suggestion 2024 25

SUBJECT-History

 Class-12

By SUMAN DAS(CEO of Study Tripura

 

1.ইট, পুঁতি ও অস্থিসমূহ : হরপ্পা সভ্যতা

সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো। লোথাললোথাল1×2=2

1.ভারতের প্রথম নগরকেন্দ্রিক সভ্যতা ছিল

(ক)মেহেরগড় সভ্যতা (খ)সিন্ধু সভ্যতা (গ)বৈদিক সভ্যতা (ঘ)আর্য সভ্যতা

2. হরপ্পা সভ্যতায় কোন্ ধাতুর ব্যবহার দেখা যায় না ?

( ক)সোনা (খ)তামা (গ)লোহা (ঘ)ব্রোঞ্জ

3.হরপ্পা সভ্যতায় বিখ্যাত স্নানাগারটি অবস্থিত ছিল

 ( ক)হরপ্পায় ( খ)লোথালে (গ)মহেন-জো-দারো ( ঘ)কালিবঙ্গানে

4.ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রথম অধিকর্তা বা জনক ছিলেন

( ক)আলেকজান্ডার ক্যানিংহাম ( খ) আর্নেস্ট ম্যাকে ( গ) রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় ( ঘ) দয়ারাম সাহানি

5. হরপ্পা সভ্যতায় কোন্ পশুর অস্তিত্ব ছিল না ?

 ( ক) হাতি (খ)ঘোড়া (গ)গোরু(ঘ)কুকুর

6. হরপ্পায় স্বস্তিক চিহ্ন কোন্ পুজোর ইঙ্গিত বহন করে ?

( ক)অগ্নি (খ)পবন (গ)ইন্দ্ৰ (ঘ) সূর্য

7. হরপ্পা লিপি ছিল— ( ক) চিত্রলিপি (গ) হায়রোগ্লিফিক লিপি ( খ) রৈখিক লিপি (ঘ) কোনোটিই নয়

৪.মহেন – জোদারো শব্দের অর্থ কী ?

( ক)মৃতের স্তূপ ( খ )পাখির বাসা ( ঘ)মাটির স্তূপ ( গ )বালির স্তুপ

9. হরপ্পা সভ্যতার একমাত্র বন্দরটির নাম ছিল

( ক) লোথাল ( খ)সুরাট ( গ ) সিটাডেল (ঘ) মহেঞ্জোদারো

10. নীচের কোন্ বিষয়টি হরপ্পার প্রত্নতত্ত্বের সঙ্গে যুক্ত নয় ?

 ( ক ) আর.ই.এম.হুইলারের খননকার্য ( খ)আলেকজান্ডার ক্যানিংহামের প্রতিবেদন ( গ) বাহাওয়লিপুর আবিষ্কার ( ঘ)জন মার্শালের রচনা

11. ধ্বংসপ্রাপ্ত হরপ্পা সভ্যতা আবিষ্কার করেন প্রত্নতাত্ত্বিক

 ( ক)আর.ডি.ব্যানার্জি ( খ)ডি.আর.সাহানি( 1921) গ)আলেকজান্ডার ক্যানিংহাম(য)এস. আর. রাও

12. হরপ্পা সভ্যতার সঙ্গে কোন বক্তব্যটির মিল রয়েছে?

(ক)হরপ্পায় কোনো শাসক ছিলনা  (খ)সমাজে সকলেরই সমমর্যাদা ছিল (গ)অনেক শাসক ছিল (ঘ) বহুতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা ছিল

13.  হরপ্পা সভ্যতায় শোরতুঘাই নামক স্থানটি অবস্থিত—

(ক)পাকিস্তানে (খ)ভারতে (গ) আফগানিস্তানে  (ঘ) ভুটানে

14. সিন্ধু সভ্যতায় প্রথম আবিষ্কৃত শহর হল—

(ক)কালিবঙ্গান (খ)লোথাল  (গ) মহেন-জো-দারো  (ঘ)হরপ্পা

একটি বাক্যে উত্তর দাও 1×1=1

  1. হরপ্পাবাসীর প্রধান খাদ্য কী ছিল?

উত্তর: হরপ্পাবাসী প্রাণীজ ও উদ্ভিজ্জ দুধরনের খাবারই গ্রহণ করত। যেমন- বিভিন্ন পশুর মাংস, খেজুর, দুধ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করত।

2. কাকে ভারতীয় প্রত্নতত্ত্বের জনক বা ভারতীয় পুরতত্ত্বের পিতাবলা হয়?

উত্তর: ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রথম ডাইরেক্টর জেনারেল আলেকজান্ডার ক্যানিংহামকে ভারতীয় প্রত্নতত্ত্বের জনক বলা হয়।

3. হরপ্পা সভ্যতার প্রধান প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন কী?

উত্তর: হরপ্পা সভ্যতার অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হল সিলমোহর। আর অন্যান্য প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে ঘরবাড়ির ভগ্নাংশ, মৃৎপাত্র, পুঁতি, বাটখারা, পোড়া ইট, পাথরের যন্ত্রপাতি ইত্যাদি।

 4. হরপ্পা সভ্যতায় লোকেরা কোন্ কোন্ ধাতুর ব্যবহার করত?

উত্তর: হরপ্পা সভ্যতায় লোকেরা তামা, টিন, ব্রোঞ্জ, সোনা, রূপা ইত্যাদি ধাতুর ব্যবহার করত। কিন্তু তারা লোহার ব্যবহার জানত না।

5. জন মার্শাল কে ছিলেন?

উত্তর: জন মার্শাল ছিলেন ভারতের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ডাইরেক্টর জেনারেল, যাঁর আমলে প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণায় বিরাট পরিবর্তন আসে।

6. হরপ্পা সভ্যতায় ভারতে অবস্থিত দুটি স্থান এবং পাকিস্তানে অবস্থিত দুটি স্থানের উল্লেখ করো।

উত্তর: হরপ্পা সভ্যতায় ভারতে অবস্থিত দুটি স্থান হল লোথাল ও ধোলাভিরা এবং পাকিস্তানে অবস্থিত দুটি স্থান হল হরপ্পা ও মহেন-জো-দারো।

7. সিন্ধু সভ্যতা সম্পর্কে জানার প্রধান উপাদান কী?

উত্তর: সিন্ধু সভ্যতা সম্পর্কে জানার প্রধান উপাদান হল প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন কেননা ওই সভ্যতার লোকেদের ব্যবহৃত লিপির পাঠোদ্ধার এখনও সম্ভব হয়নি।

8. সিন্ধু সভ্যতা বা হরপ্পা সভ্যতায় কোন্ স্থানটি প্রথম আবিষ্কৃত হয় ?

উত্তর: সিন্ধু সভ্যতায় ‘হরপ্পা’ স্থানটি প্রথম আবিষ্কৃত হয়। 

9. কোন্ নদীর তীরে মেহেরগড় সভ্যতা গড়ে উঠেছিল

উত্তর: বোলান নদীর তীরে মেহেরগড় সভ্যতা গড়ে উঠেছিল।

10. ভারতের প্রাচীনতম লিপির নাম কী?

উত্তর: ভারতের প্রাচীনতম লিপির নাম সিন্ধু লিপি।

11. মহেন-জো-দারো কোথায় অবস্থিত?

উত্তর: সিন্ধু প্রদেশের লারকানা জেলায় অবস্থিত মহেন-জো-দারো।

12. হরপ্পা সভ্যতার সঙ্গে সমসাময়িক কোন্ সভ্যতার সম্পর্ক ছিল?

উত্তর: সমসাময়িক মিশর এবং মেসোপটেমিয়া সভ্যতার সম্পর্ক ছিল।

13. হরপ্পা সভ্যতায় মানুষের উপজীবিকা কী ছিল?

উত্তর: হরপ্পা সভ্যতায় মানুষের উপজীবিকা ছিল কৃষি। 

14. মেহেরগড় সংস্কৃতির প্রধান শিল্প কোন্‌টি ছিল ?

উত্তর: মেহেরগড় সংস্কৃতির প্রধান শিল্প ছিল মৃৎশিল্প।

15. ভারতের প্রাচীনতম সভ্যতার নাম কী?

উত্তর: ভারতের প্রাচীনতম সভ্যতার নাম মেহেরগড়।

16. কোন্ পরীক্ষার দ্বারা ইতিহাসের প্রাচীনত্ব স্থির হয়?

উত্তর: রেডিয়োকার্বন-14 পরীক্ষার দ্বারা ইতিহাসের প্রাচীনত্ব স্থির হয়।

17. সিন্ধু লিপি লেখার পদ্ধতিটি উল্লেখ করো।

উত্তর: সিন্ধু লিপি সাধারণত ডান দিক থেকে বাম দিকে লেখা হয়।

18. ASI-এর সম্পূর্ণ নাম কী?

উত্তর: ASI-এর সম্পূর্ণ নাম আর্কিয়োলজিক্যাল সার্ভে অব ইণ্ডিয়া

 19. ‘My Archaeological Mission to India Pakistan’ গ্রন্থটির লেখক কে?

উত্তর: মর্টিমার হুইলার।

20. ‘Early Indus Civilization’ বইটির লেখক কে?

উত্তর: ‘Early Indus Civilization’ বইটির লেখক আর্নেস্ট ম্যাকে।

21. হরপ্পা সভ্যতায় প্রতীক হিসেবে কোন্ চিহ্নের প্রচলন ছিল ?

উত্তর: হরপ্পা সভ্যতায় প্রতীক হিসেবে স্বস্তিক চিহ্নের প্রচলন ছিল।

2.রাজা, কৃষক এবং শহর : প্রারম্ভিক রাজ্য এবং অর্থনীতি (৬০০ খ্রি. পূ.-৬০০ খ্রি.)

1. এপিগ্রাফি শব্দের অর্থ কী?

উত্তর: এপিগ্রাফি শব্দের অর্থ হল ‘শিলালিপি অধ্যয়ন’।

2. ষোড়শ মহাজনপদের দুটি প্রজাতান্ত্রিক রাজ্যের নাম লেখো।

উত্তর: ষোড়শ মহাজনপদের একটি প্রজাতান্ত্রিক রাজ্য ছিল বজ্জি ও মল্ল।

 3. কে শ্রেণিকউপাধি ধারণ করেন?

উত্তর: বিম্বিসার ‘শ্রেণিক’ উপাধি ধারণ করেন।

4. কে কুণিকউপাধি ধারণ করেন?

উত্তর: অজাতশত্রু ‘কুণিক’ উপাধি ধারণ করেন।

5. মগধের রাজধানী প্রথমে কোথায় ছিল?

উত্তর: মগধের রাজধানী প্রথমে রাজগৃহে বা রাজগিরে ছিল।

6. ধননন্দ কে ছিলেন ?

উত্তর: ধননন্দ ছিলেন নন্দবংশের শেষ রাজা।

7. হর্ষঙ্ক বংশের পর মগধের রাজা কে হন?

উত্তর: হর্যঙ্ক বংশের পর মগধের রাজা হন শিশুনাগ।এবং ওনি নাগ বংশ প্রতিষ্ঠা করেন।

৪. সেলুকাস কে ছিলেন?

উত্তর: সেলুকাস ছিলেন গ্রিক বীর আলেকজান্ডারের প্রধান সেনাপতি।

9. যে বংশের নেতৃত্বে মগধ সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয় সেটির নাম কী?

উত্তর: হর্যঙ্ক বংশের নেতৃত্বে মগধ সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়।

10. পলিবোথরা কার নাম?

উত্তর: পলিবোথরা পাটলীপুত্রের নাম। গ্রিক বিবরণে এই নামটির উল্লেখ আছে।

11. নন্দবংশ ধ্বংস করতে চন্দ্রগুপ্তের প্রধান সহায়ক কে ছিলেন?

উত্তর: নন্দবংশ ধ্বংস করতে চন্দ্রগুপ্তের প্রধান সহায়ক ছিলেন কৌটিল্য বা চাণক্য।

12. মৌর্য বংশের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্রাট কে ছিলেন?

উত্তর: মৌর্য বংশের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্রাট ছিলেন অশোক। 

13. কনিষ্কের শ্রেষ্ঠ শিল্পকীর্তি কোন্‌টি?

উত্তর: কনিষ্কের শ্রেষ্ঠ শিল্পকীর্তি হল ৬৩৮ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট বৌদ্ধবিহার নির্মাণ।

14. কনিষ্কের রাজধানী কোথায় ছিল?

উত্তর: পেশোয়ার বা পুরুষপুরে কনিষ্কের রাজধানী ছিল।

15. কনিষ্কের আমলে কোন্ বৌদ্ধসংগীতি অনুষ্ঠিত হয়?

উত্তর: কাশ্মীরে (জলন্ধরে) চতুর্থ বৌদ্ধসংগীতি অনুষ্ঠিত হয়।

16. গুপ্ত বংশের শ্রেষ্ঠ নরপতি কে ছিলেন?

উত্তর: গুপ্ত বংশের শ্রেষ্ঠ নরপতি ছিলেন সমুদ্রগুপ্ত।

17. কুষাণ যুগের শেষ শক্তিশালী রাজা কে ছিলেন?

উত্তর: কুষাণ যুগের শেষ শক্তিশালী রাজা ছিলেন বাসুদেব।

18. ‘ভারতের নেপোলিয়নকাকে বলা হয়?

উত্তর: সমুদ্রগুপ্তকে ‘ভারতের নেপোলিয়ন’ বলা হয়। 

19. দশমিক পদ্ধতি ও শূন্য চিহ্ন কোন্ যুগে আবিষ্কৃত হয়?

উত্তর: দশমিক পদ্ধতি ও শূন্য চিহ্ন গুপ্ত যুগে আবিষ্কৃত হয়।

20. ‘শকারীকাকে বলা হত?

উত্তর: দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তকে ‘শকারী’ বলা হত।

21. দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত কী উপাধি গ্রহণ করেছিলেন?

উত্তর: দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত ‘বিক্রমাদিত্য’ উপাধি গ্রহণ করেছিলেন।

22. ফা-হিয়েন রচিত গ্রন্থটির নাম লেখো।

উত্তর: ফা-হিয়েন রচিত গ্রন্থটির নাম হল ‘ফো কুয়ো কি’।

23. ফা-হিয়েন কত খ্রিস্টাব্দে ভারতে আসেন?

উত্তর: ফা-হিয়েন ভারতে আসেন ৩৯৯ খ্রিস্টাব্দে।

24. কালীদাসের লেখা দুটি গ্রন্থের নাম লেখো।

উত্তর: কালীদাসের লেখা দুটি গ্রন্থের নাম হলো ‘রঘুবংশম’ এবং ‘মেঘদূতম’।

25. কোন্ গুপ্তরাজা হুনদের পরাজিত করেন?

উত্তর: গুপ্ত সম্রাট স্কন্দগুপ্ত হুনদের পরাজিত করেন।

26. কোন্ গুপ্তরাজাকে ভারতের রক্ষাকর্তাবলা হয়?

উত্তর: স্কন্দগুপ্তকে ‘ভারতের রক্ষাকর্তা’ বলা হয়।

27. গুপ্ত যুগের বিখ্যাত কবি কে ছিলেন?

উত্তর: গুপ্ত যুগের বিখ্যাত কবি ছিলেন কালীদাস।

28. ‘সূর্যসিদ্ধান্তগ্রন্থের লেখকের নাম কী?

উত্তর: ‘সূর্যসিদ্ধান্ত’ গ্রন্থের লেখকের নাম আর্যভট্ট।

29. ‘হর্ষচরিতগ্রন্থের লেখক কে?

উত্তর: ‘হর্ষচরিত’ গ্রন্থের লেখক হলেন বাণভট্ট।

30. পাটলিপুত্রের বর্তমান নাম কী?

উত্তর: পাটলিপুত্রের বর্তমান নাম পাটনা।

31. ‘কুমারসম্ভবগ্রন্থটির লেখক কে?

উত্তর: ‘কুমারসম্ভব’ গ্রন্থটির লেখক হলেন কালীদাস।

32. ‘অভিজ্ঞান শকুন্তলমগ্রন্থটির লেখক কে?

উত্তর: ‘অভিজ্ঞান শকুন্তলম’ গ্রন্থটির লেখক কালীদাস।

33. সম্রাট অশোক কবে কলিঙ্গ জয় করেন?

উত্তর: সম্রাট অশোক রাজ্য অভিষেক করার প্রায় ৮ বছর পর আনুমানিক ২৬১ খ্রিস্টপূর্বাব্দে কলিঙ্গ রাজ্য জয় করেন। কাদের বলে?

34. ‘সমাহর্তাকাকে বলা হত?

উত্তর: মৌর্য শাসনব্যবস্থায় রাজস্ব বিভাগের মন্ত্রীদের ‘সমাহর্তা’ বলা হত।

35. কোন ভাষা ও লিপিতে অশোকের শিলালিপি রচিত হয়েছিল?

উত্তর: অশোকের অধিকাংশ শিলালিপি প্রাকৃত ভাষায় এবং ব্রাহ্মী ও খরোষ্ঠী লিপিতে রচিত হয়েছিল।

36. কে মৌর্য সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন?

উত্তর: চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য ৩২১ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মৌর্য সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।

37. মেগাস্থিনিস কে ছিলেন?

উত্তর: মেগাস্থিনিস ছিলেন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের রাজসভায় গ্রিকরাজা সেলুকাস প্রেরিত দূত।

38. মেগাস্থিনিস রচিত গ্রন্থটির নাম লেখো।

উত্তর: মেগাস্থিনিস রচিত গ্রন্থটির নাম হল ‘ইন্ডিকা’।

39. হরিষেণ কে ছিলেন?

উত্তর: হরিষেণ ছিলেন গুপ্ত বংশের শ্রেষ্ঠ সম্রাট সমুদ্রগুপ্তের সভাকবি।

40. বাণভট্ট রচিত গ্রন্থটির নাম কী?

উত্তর: বাণভট্ট রচিত গ্রন্থটির নাম হল ‘হর্ষচরিত’।

41. মৌর্য যুগের ইতিহাস জানার অন্যতম উপাদান কী কী?

উত্তর: মৌর্য যুগের ইতিহাস জানার অন্যতম উপাদান হল কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র এবং অশোকের শিলালিপিসমূহ।

42. কুষাণ কারা?

উত্তর: কুষাণরা ছিল মধ্য এশিয়া থেকে আগত একটি যাযাবর জাতি যারা মধ্য এশিয়া থেকে উত্তর-পশ্চিম ভারত অবধি বিশাল অঞ্চল শাসন করত এবং তাঁরাই ভারতে প্রথম স্বর্ণমুদ্রা প্রচলন করেন।

43. প্রথমে মগধের রাজধানী কোথায় ছিল?

উত্তর: প্রথমে মগধের রাজধানী ছিল রাজগৃহে।

44. ‘অর্থশাস্ত্রকে রচনা করেন?

উত্তর: ‘অর্থশাস্ত্র’ রচনা করেন কৌটিল্য বা চাণক্য।

04.চিন্তাবিদ, বিশ্বাস এবং ইমারতসমূহ: সাংস্কৃতিক বিকাশ (৬০০ খ্রি.পূ. -৬০০ খ্রি.)

 1. ‘ত্রিপিটককী?

উত্তর: ত্রিপিটক শব্দের আক্ষরিক অর্থ হল তিনটি ঝুড়ি। তিনটি বৌদ্ধ গ্রন্থ বিনয়পিটক, সূত্রপিটক এবং অভিধম্ম পিটক-কে একসাথে ত্রিপিটক বলে।

1.      বুদ্ধের জীবনের সাথে জড়িত চারটি স্থানের নাম লেখো।

উত্তর: বুদ্ধের স্মৃতি বিজাড়িত চারটি স্থান হল—লুম্বিনি যেখানে বুদ্ধ জন্মেছেন, বোধগয়া যেখানে বুদ্ধ জ্ঞান লাভ করেছেন, সারনাথ যেখানে বুদ্ধ প্রথম ধর্ম প্রচার করেন এবং কুশিনগর যেখানে তিনি নির্বাণ লাভ করেন।

3. ‘ধর্মচক্র প্রবর্তন’ কী?

উত্তর: গৌতম বুদ্ধ ‘জ্ঞানালোকপ্রাপ্ত’ হওয়ার পর বারাণসীর নিকট সারনাথ থেকে তাঁর ধর্মমত (ধম্ম) প্রচার যাত্রা শুরু করেন। এটিই ‘ধর্মচক্র প্রবর্তন’ নামে পরিচিত।

4. ‘স্তূপ’ কী?

উত্তর: স্তূপ হল একটি সাধারণ অর্ধবৃত্তাকার মাটির ঢিবি যার কাঠামো পাথর বা ইট দিয়ে তৈরি। এর গঠনে গোল এবং চৌকোনা আকারের মধ্যে সামঞ্জস্য রাখা হয়।

5. ‘বিহার’ কী?

উত্তর: বিহার হল বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের আবাস স্থল। এতে ছোটো ছোটো কুঠুরি সহ বিশাল হলঘর থাকে।

6. ‘বুদ্ধ’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তর: ‘বুদ্ধ’ শব্দের অর্থ হল যিনি ‘জ্ঞানের আলোকপ্রাপ্ত’ হয়েছেন।

7. ‘তীর্থঙ্কর’ বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: জৈনধর্ম মতানুসারে তীর্থঙ্কর হলেন তারা, যারা পুরুষনারী উভয়কেই সাংসারিক বন্ধন থেকে মুক্তির পথপ্রদর্শক।

8. ফা-হিয়েন এবং হিউয়েন সাঙ কে ছিলেন? তাঁরা কেন ভারতে আসেন ?

উত্তর: ফা-হিয়েন এবং হিউয়েন সাঙ উভয়ই ছিলেন চৈনিক বৌদ্ধ তীর্থযাত্রী। তাঁরা ভারতে এসেছিলেন বৌদ্ধ সাহিত্য সম্পর্কে জ্ঞান আহরণ করতে।

9. বৌদ্ধধর্মের দুটি মতবাদ কী?

উত্তর: বৌদ্ধধর্মের দুটি মতবাদ হল মহাযান এবং হীনযান। হীনযান হল বৌদ্ধধর্মের আদি পথ। আর মহাযান হল অনেকটা আধুনিক।

10. সাঁচী কোথায় অবস্থিত?

উত্তর: ভোপাল থেকে ২০ মাইল উত্তর-পূর্ব দিকে সাঁচী অবস্থিত। সেখানে এক আশ্চর্যজনক বৌদ্ধস্তূপ আবিষ্কৃত হয়।

11. জৈনধর্মে ‘ত্রিরত্ন’ বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: জৈনধর্মে ত্রিরত্ন বলতে বোঝায় তিনটি প্রধান নীতি— সঠিক জ্ঞান, সঠিক বিশ্বাস এবং সঠিক কাজ।

12. গোপুরম কাকে বলে?

উত্তর: বৌদ্ধমন্দিরের প্রবেশ দ্বারকে গোপুরম বলে।

13. কোনারকের সূর্যমন্দিরটি কোন্ রাজার আমলে তৈরি হয়?

উত্তর: নরসিংহ বর্মনের আমলে কোনারকের সূর্যমন্দিরটি তৈরি হয়।

14. কৈলাসনাথের মন্দির কোথায় অবস্থিত?

উত্তর: ইলোরায় কৈলাসনাথের মন্দির অবস্থিত।

15. সাঁচিস্তূপ’ কে নির্মাণ করেন?

উত্তর: মহামতি অশোক ‘সাঁচিস্তূপ’ নির্মাণ করেন।

 16. কে, কবে সাঁচিস্তূপ আবিষ্কার করেন?

উত্তর: জেনারেল টেলর, ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে ‘সাঁচিস্তূপ’ আবিষ্কার করেন।

17. জরাথুস্টু কে ছিলেন?

উত্তর: প্রাচীন পারস্যের একজন দার্শনিক ছিলেন জরাথুস্টু।

18. প্রথম জৈন তীর্থংকর কে ছিলেন?

উত্তর:প্রথম জৈন তীর্থংকর ছিলেন ঋষভনাথ।

19. ২৩তম জৈন তীর্থংকর কে ছিলেন?

উত্তর: ২৩তম জৈন তীর্থংকর ছিলেন পার্শ্বনাথ।

20. শেষ বা ২৪তম জৈন তীর্থংকর কে ছিলেন?

উত্তর: শেষ বা ২৪তম জৈন তীর্থংকর ছিলেন মহাবীর।

21. জৈনধর্মের শ্রেষ্ঠ প্রচারক কে?

উত্তর: জৈনধর্মের শ্রেষ্ঠ প্রচারক মহাবীর।

22. প্রথম বৌদ্ধসংগীতি কবে, কোথায় আহ্বান করা হয়?

উত্তর: প্রথম বৌদ্ধ সংগীতি ৪৮৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে রাজগৃহে আহ্বান করা হয়।

*অজাতশত্রুর আমলে রাজগৃহে 483 খ্রীষ্টপূর্বাব্দে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম বৌদ্ধ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন মহাকাশ্যপ।

23. সাঁচি কোন রাজ্যে অবস্থিত?

উত্তর: সাঁচি মধ্যপ্রদেশে অবস্থিত।

24. গৌতম বুদ্ধ কোথায় নির্বাণ লাভ করেন?

উত্তর: গৌতম বুদ্ধ কুশীনগরে নির্বাণ লাভ করেন।

25. মহাপরিনির্বাণ কী?

উত্তর: বুদ্ধদেবের দেহরক্ষার ঘটনাকে মহাপরিনির্বাণ বলে।

*80 বছর বয়সে বুদ্ধদেব দেহত্যাগ করেন।

26. জৈনধর্মের ২টি ভাগ কী কী?

উত্তর: জৈনধর্মের ২টি ভাগ হল—দিগম্বর এবং শ্বেতাম্বর।

27. মহাবীরের পূর্ব নাম কী ছিল?

উত্তর: মহাবীরের পূর্ব নাম ছিল বর্ধমান।

28. ত্রিরত্ন কী?

উত্তর: জৈনধর্মে (i) বিশ্বাস (ii) সদাচারণ এবং (iii) যথার্থ জ্ঞান এই তিনটি আদর্শ ‘ত্রিরত্ন’ নামে পরিচিত।

29.. কোথায় গৌতম বুদ্ধ প্রথম ধর্ম প্রচার করেন?

উত্তর: সারনাথে গৌতম বুদ্ধ প্রথম ধর্ম প্রচার করেন।

30. বৌদ্ধদের ধর্মগ্রন্থের নাম কী?

উত্তর: বৌদ্ধদের ধর্মগ্রন্থের নাম ত্রিপিটক।

06.ডক্তি ও সুফিবাদের ঐতিহ্য : ধর্মীয় বিশ্বাসে পরিবর্তন এবং ভক্তিমূলক গ্রন্থ (অষ্টম শতাব্দী-অষ্টাদশ শতাব্দী)

1. সুফিবাদে গুরুকে কী বলা হয়?

উত্তর: সুফিবাদে গুরুকে পির বলা হয়।

2. অদ্বৈতবাদের প্রবর্তক কে?

উত্তর: অদ্বৈতবাদের প্রবর্তক হলেন শঙ্করাচার্য।

3. সর্বপ্রথম মহাভারত বাংলা ভাষায় কে অনুবাদ করেন?

উত্তর: সর্বপ্রথম মহাভারত বাংলা ভাষায় অনুবাদ করেন কবীন্দ্র পরমেশ্বর।

4. ‘রামচরিত মানস’ এবং ‘শ্রীকৃষ্ণবিজয়’ গ্রন্থের রচয়িতা কে?

উত্তর: রামচরিত মানস—তুলসী দাস

শ্রীকৃষ্ণবিজয়—মালাধর বসু।

5. কে শ্রীচৈতন্যকে সন্ন্যাস ধর্মে দীক্ষিত করেন?

উত্তর: তোতাপুরী শ্রীচৈতন্যকে সন্ন্যাস ধর্মে দীক্ষিত করেন।

6. কবীর কার শিষ্য ছিলেন?

উত্তর: কবীর রামানন্দের শিষ্য ছিলেন।

7. নানকের শিষ্যরা কী নামে পরিচিত?

উত্তর: নানকের শিষ্যরা শিখ নামে পরিচিত।

৪. সিলসিলা কোন্ মতবাদের সাথে যুক্ত?

উত্তর: সিলসিলা সুফিবাদের সাথে যুক্ত।

 9. শিখদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থের নাম কী?

উত্তর: শিখদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থের নাম গ্রন্থ সাহেব।

10. কবিরের শিষ্যদের কী বলা হয়? ।

উত্তর: কবীরের শিষ্যদের কবিরপন্থী বলা হয়

11. ভক্তিবাদের মূলকথা কী?

উত্তর: আত্মার সাথে পরমাত্মার অতীন্দ্রিয় মিলনই হল ভক্তিবাদের মূলকথা।

12. ‘শিখ’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তর: ‘শিখ’ শব্দের অর্থ শিষ্য।

13. ‘হাদিস’ কী?

উত্তর: ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা হজরত মহম্মদের বাণী সংকলিত গ্রন্থকে ‘হাদিস’ বলা হয়।

14. ‘জাকাত’ কী?

উত্তর: ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী একজন মুসলিম ধর্মের লোক তাঁর সম্পত্তির যে একটি নির্দিষ্ট অংশ গরিবদের দান করে তাকেই ‘জাকাত’ বলে।

15. কবীর কোথায় ভক্তিবাদ প্রচার করেন?

উত্তর: কবীর বারাণসীতে ভক্তিবাদ প্রচার করেন।

16. পুরীর মূল দেবতা কে?

উত্তর: পুরীর মূল দেবতা হলেন ভগবান জগন্নাথ যিনি বিহ্বর অবতাররূপে পরিগণিত। জগন্নাথ শব্দের আক্ষরিক অর্থ হল ‘জগতের প্রভু’।

17. ‘লিঙ্গায়েত’ কারা?

উত্তর: বাসাবন্না নামে এক ব্রাক্ষ্মণ চালুক্য রাজসভায় মন্ত্রী ছিলেন । তিনি বীর শৈব নামে একটি ধর্মীয় ধারার প্রবর্তন করেন। তাঁর অনুগামীরাই বীরশৈব বা লিঙ্গায়েত নামে পরিচিত ছিলেন।

 18. ‘উলেমাকারা?

উত্তর: ইসলামধর্মের পণ্ডিতদের উলেমা বলা হয়। তাঁদেরকে ইসলামের সংরক্ষক এবং প্রচারক বলা হয়। তাঁরা ধর্মীয় বিষয়ের সাথে বিচার সংক্রান্ত বিষয় দেখাশোনা করতেন।

19. ‘শরিয়া’ কী?

উত্তর: ‘শরিয়া’ বলতে বোঝায় ইসলামিক আইন। কোরান, হাদিস এবং পয়গম্বর মহম্মদের বিভিন্ন বাণী নিয়ে এই আইন রচিত হয়।

20. ‘জিনান’ দ্বারা কী বোঝানো হয়?

উত্তর: ‘জিনান’ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত ‘জ্ঞান’ থেকে।

21. ‘কাওয়াল’ কী?

উত্তর: ‘কাওয়াল’ হল একটি আরবি শব্দ যার অর্থ হল ‘বাণী’। কাওয়ালি গানের আগে বা পরে এটি গাওয়া হয়।

22. কে কাওয়াল প্রবর্তন করেন?

উত্তর: কাওয়াল প্রবর্তন করেন আমির খুসরু।

23. ‘মসনবি’ কী?

উত্তর: সুফি সন্তদের রচিত দীর্ঘ কবিতাকে মসনবি বলা হত।

24. মীরাবাঈ কে ছিলেন?

উত্তর: মীরাবাঈ ছিলেন মেবারের রাজপুত রমণী। তিনি শ্রীকৃষ্ণের উপাসনা করতেন এবং ভক্তি আন্দোলনের তিনি একজন মহিলা কবি ছিলেন।

25. বৈষ্ণব ধর্মের অন্যতম প্রবক্তা কে ছিলেন?

উত্তর:বৈষ্ণব ধর্মের প্রবক্তা ছিলেন শংকরদেব। তাঁর শিক্ষা ‘ভগবতী ধর্ম’ নামে পরিচিত।

26. কারা দিল্লিতে সুলতানি শাসনের প্রবর্তন করেন?

উত্তর: তুর্কি এবং আফগানরা দিল্লিতে সুলতানি শাসনের প্রবর্তন করেন।

 27. মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা মক্কায় তীর্থযাত্রাকে কী বলে?

উত্তর: মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা মক্কায় তীর্থযাত্রাকে হজ বলে।

07.একটি সাম্রাজ্যের রাজধানী: বিজয়নগর (চতুর্দশ শতাব্দী-ষোড়শ শতাব্দী)

1. ‘বিজয়নগর’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তর: বিজয়নগর শব্দের অর্থ হল যে নগর জয় করা হয়েছে। এর দ্বারা একাধারে নগর ও সাম্রাজ্যকে বোঝায়।

 2. কে, কবে হাম্পি শহরের ধ্বংসাবশেষ প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন?

উত্তর: ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মচারী কর্নেল কলিন ম্যাকেনজি ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে হাম্পি শহরের ধ্বংসাবশেষ প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন।

3. কারা, কবে বিজয়নগর সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন?

উত্তর: ঐতিহ্য এবং প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন অনুসারে হরিহর ও বুক্কা নামে দুই ভাই ১৩৩৬ খ্রিস্টাব্দে বিজয়নগর সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।

4. সমসাময়িক যুগের মানুষ বিজয়নগর সাম্রাজ্যকে কী নামে বর্ণনা করেছেন?

উত্তর: সমসাময়িক যুগের মানুষ বিজয়নগর সাম্রাজ্যকে ‘কর্ণাটক সাম্রাজ্যমু’ নামে বর্ণনা করেন।

5. কাদের রায় বলা হত?

উত্তর: বিজয়নগর সাম্রাজ্যের রাজাদের রায় বলা হত।

6. বিজয়নগর সাম্রাজ্য শাসন করেছে এমন চারটি রাজবংশের নাম দাও।

উত্তর: বিজয়নগর শাসন করেছে এমন চারটি রাজ বংশের নাম হল—সঙ্গম, সালুভ, তুলুভ এবং তিরুমালা।

7. কোন্ দেবীকে পম্পাদেবী বলা হয়?

উত্তর: দেবী পার্বতীকে পম্পাদেবী বলা হয়।

৪. কর্নেল কলিন ম্যাকেনজি কে ছিলেন?

উত্তর: ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মচারী ভারতের প্রথম সার্ভেয়ার জেনারেল ছিলেন কর্নেল কলিন ম্যাকেনজি।

9. জরিপ করে হাম্পি শহরের মানচিত্র কে প্রথম তৈরি করেন?

উত্তর: জরিপ করে হাম্পি শহরের মানচিত্র প্রথম তৈরি করেন কর্নেল কলিন ম্যাকেনজি।

10. তালিকোটার যুদ্ধ কাদের মধ্যে হয়েছিল?

উত্তর: বিজয়নগর সাম্রাজ্যের সাথে দাক্ষিণাত্যের সুলতানের তালিকোটার যুদ্ধ হয়েছিল।

11. তালিকোটার যুদ্ধে কে পরাজিত হয়েছিল?

উত্তর: তালিকোটার যুদ্ধে বিজয়নগর সাম্রাজ্যের পরাজয় ঘটেছিল।

12. বিজয়নগর শহরের দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাসাদের নাম লেখো।

উত্তর: বিজয়নগর শহরের দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাসাদ ছিল মহানবমী দিব্য এবং পদ্মমহল।

13. গোপুরম কী?

উত্তর: গোপুরম হল মন্দির বা প্রাসাদের পিরামিডাকৃতির চূড়াবিশেষ যা মন্দিরের প্রবেশদ্বারের ওপর থাকত।

14. বিট্টল মন্দির কার উদ্দেশ্যে উৎসর্গীকৃত?

উত্তর: বিউল মন্দিরটি ভগবান বিষ্ণুর উদ্দেশ্যে উৎসর্গীকৃত।

15. বিট্টল মন্দির কে নির্মাণ করেন?

উত্তর: বিট্টল মন্দির নির্মাণ করেন কৃষ্ণদেব রায়

16. কৃষ্ণদেব রায় কোন্ বংশের রাজা ছিলেন?

উত্তর: কৃষ্ণদেব রায় ছিলেন তুলুভ বংশের রাজা। 

17. তালিকোটার যুদ্ধে বিজয়নগরের সেনাপতি কে ছিলেন?

উত্তর: তালিকোটার যুদ্ধে বিজয়নগরের সেনাপতি ছিলেন রাম রায়। 

18. তালিকোটার যুদ্ধ কবে হয়েছিল?

উত্তর: ১৫৬৫ খ্রিস্টাব্দে তালিকোটার যুদ্ধ হয়েছিল।

19. আবদূর রেজ্জাক কোন্ দেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন?

উত্তর: আবদুর রেজ্জাক ছিলেন পারস্য দেশের রাষ্ট্রদূত।

20. বার্বোসা কোন্ দেশের পর্যটক ছিলেন ?

উত্তর: বার্বোসা ছিলেন একজন পোর্তুগিজ পর্যটক।

21. মহানবমী দিব্য কী?

উত্তর: মহানবমী দিব্য ছিল একটি বিশালাকৃতির প্ল্যাটফর্ম যার আয়তন ছিল ১১০০০ বর্গফুট এবং উচ্চতা ৪০ ফুট।

22. বঙ্গদেশে মহানবমী দিব্য কীভাবে উদযাপিত হয়?

উত্তর: বঙ্গদেশে মহানবমী দিব্য দুর্গাপুজো হিসেবে উদযাপিত হত।

23. বিজয়নগর সাম্রাজ্যের রাজধানীর নাম কী ছিল?

উত্তর: বিজয়নগর সাম্রাজ্যের রাজধানীর নাম ছিল হাম্পি।

24. কৃষ্ণদেব রায় কোন্ বংশের রাজা ছিলেন?

উত্তর: কৃষ্ণদেব রায় তুলুভ বংশের রাজা ছিলেন।

25. কৃষ্ণদেব রায় রচিত একটি গ্রন্থের নাম লেখো।

উত্তর: মাহমুদ গাওয়ান আমুক্ত মালা মন্ত্রী ছিলেন।

26. কার রাজসভায় ‘অষ্টদিগ্‌গজ’ নামে পণ্ডিতরা বিরাজ করতেন?

উত্তর: রাজা কৃয়দেব রায়ের রাজসভায় ‘অষ্টদিগ্‌গজ’ নামে পণ্ডিতরা বিরাজ করতেন।

27. ‘বিজয়নগর’ কথার অর্থ কী?

উত্তর: ‘বিজয়নগর’ কথার অর্থ ‘City of Victory |

28. কোন্ সুলতানের শাসনকালে বিজয়নগর সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়?

উত্তর: সুলতান মহম্মদ বিন তুঘলকের শাসনকালে বিজয়নগর সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়।

29. বিজয়নগর সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা কারা ছিলেন?

উত্তর: বিজয়নগর সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন হরিহর এবং বুক্ক।

30. বিজয়নগরের আধুনিক নাম কী ছিল?

উত্তর: বিজয়নগরের আধুনিক নাম ছিল হাম্পি।

31. বিজয়নগর সাম্রাজ্যের অপর নাম কী?

উত্তর: বিজয়নগর সাম্রাজ্যের অপর নাম কর্ণাটকের সাম্রাজ্য।

32. কর্নেল কলিন ম্যাকেনজি কে ছিলেন?

উত্তর: কর্নেল কলিন ম্যাকেনজি ছিলেন একজন ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মচারী।

33. তালিকোটার যুদ্ধ কাদের মধ্যে হয়েছিল?

উত্তর: বিজয়নগর সাম্রাজ্য ও তালিকোটার সুলতানের মধ্যে তালিকোটার যুদ্ধ হয়েছিল।

34. ‘মহানবমী’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তর: ‘মহানবমী’ শব্দের অর্থ হল—নয়টি মহান দিন।

35. Robert Sewell-এর লেখা একটি গ্রন্থের নাম লেখো।

উত্তর: Robert Sewell[ez-toc]-এর লেখা একটি গ্রন্থের নাম হল A Forgotten Empire.

11.ব্রিটিশ রাজত্ব এবং বিদ্রোহীরা : ১৮৫৭-এর বিদ্রোহ এবং এর বিবরণ

 1. সিপাহি বিদ্রোহ প্রথম কোথায় আত্মপ্রকাশ করে?

উত্তর: সিপাহি বিদ্রোহ প্রথম কলকাতার কাছে ব্যারাকপুরে আত্মপ্রকাশ করে।

  1. মেরা ঝাঁসি নেহি দেউঙ্গা”—কার উক্তি?

উত্তর: ‘মেরা ঝাঁসি নেহী দেউঙ্গা’—উক্তিটি লক্ষ্মীবাঈয়ের।

3. নানা সাহেব কে ছিলেন?

উত্তর: নানা সাহেব ছিলেন পেশোয়া দ্বিতীয় বাজিরাও-এর দত্তক

4. তাঁতিয়া তোপি কে ছিলেন?

উত্তর: নানা সাহেবের অন্যতম সহযোগী ছিলেন তাঁতিয়া তোপি।

5. লক্ষ্মীবাঈ-এর দত্তক পুত্রের কী নাম ছিল?

উত্তর: লক্ষ্মীবাঈ-এর দত্তক পুত্রের নাম ছিল দামোদর রাও।

6. কোথায় দ্বিতীয় বাহাদুর শাহের মৃত্যু হয়?

উত্তর: বার্মার রেঙ্গুনে দ্বিতীয় বাহাদুর শাহের মৃত্যু হয়।

7. ভাইসরয় শব্দের অর্থ কী?

উত্তর: ভাইসরয় শব্দের অর্থ রাজপ্রতিনিধি।

9. কোন্ আইনের দ্বারা কোম্পানির শাসনের অবসান হয়?

উত্তর: ‘Act for the Better Government of India’ নামক আইন দ্বারা কোম্পানির শাসনের অবসান হয়।

10. স্বত্ববিলোপ নীতি প্রথম কোন্ রাজ্য গ্রহণ করে?

উত্তর: স্বত্ববিলোপ নীতি প্রথম সাতারা রাজ্য গ্রহণ করে।

11. ‘অধীনতামূলক মিত্ৰতা নীতিপ্রথম কে গ্রহণ করেন?

উত্তর: অধীনতামূলক মিত্ৰতা নীতি’ প্রথম হায়দ্রাবাদের নিজাম গ্রহণ করেন।

12. মহাবিদ্রোহ কবে শুরু হয়।

উত্তর: ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের ১০ মে মহাবিদ্রোহ শুরু হয়।

13. কোথায় প্রথম সিপাহি বিদ্রোহ শুরু হয়?

উত্তর: সিপাহি বিদ্রোহ প্রথম শুরু হয় মিরাটে

14. ‘ফিরিঙ্গিশব্দের অর্থ কী?

উত্তর: ফিরিঙ্গি একটি ফারসি শব্দ যার অর্থ হল বিদেশি। ফিরিঙ্গি শব্দ দ্বারা ইউরোপীয়দের বোঝানো হত।

15. সিপাহি বিদ্রোহের তিনজন নেতার নাম লেখো।

উত্তর: সিপাহি বিদ্রোহের অন্যতম তিনজন নেতা হলেন—ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাঈ, কানপুরের নানা সাহেব এবং লক্ষ্ণৌয়ের বিরজিস কাদের।

16. সতীদাহপ্রথা কবে রদ হয়?

উত্তর: ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে সতীদাহপ্রথা রদ হয়।

17. অবধের শেষ নবাব কে ছিলেন?

উত্তর: অবধের শেষ নবাব ছিলেন ওয়াজেদ আলি শাহ।

18. সিপাহি বিদ্রোহের দুজন মহিলা নেতৃত্বের নাম লেখো।

উত্তর: সিপাহি বিদ্রোহের দুজন মহিলা নেতৃত্বে ছিলেন ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাঈ এবং বেগম হজরত মহল।

19. কোন্ গভর্নর জেনারেল ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তনের নীতি ঘোষণা করেছিলেন?

উত্তর: লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তনের নীতি ঘোষণা করেছিলেন।

13.মহাত্মা গান্ধি এবং জাতীয়তাবাদী আন্দোলন: অইিন অমান্য এবং তার পরবর্তী ঘটনা

 1. কংগ্রেসের তিনজন চরমপন্থী নেতার নাম লেখো।

উত্তর: কংগ্রেসের তিনজন চরমপন্থী নেতা হলেন বালগঙ্গাধর তিলক, বিপিনচন্দ্র পাল ও লালা লাজপত রায়।

2. ভারতে হিন্দু-মুসলিম ঐক্য স্থাপনের প্রচেষ্টায় গান্ধিজি কোন্ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন শুরু করেছিলেন?

উত্তর: ভারতে হিন্দু-মুসলিম ঐক্য স্থাপনের প্রচেষ্টায় গান্ধিজি খিলাফৎ আন্দোলন শুরু করেছিলেন।

4. ভারতীয়রা কেন সাইমন কমিশন’-এর বিরোধিতা করে?

উত্তর: সাইমন কমিশনের সব সদস্য শ্বেতাঙ্গ হওয়ায় ভারতীয়রা সাইমন কমিশনের বিরোধিতা করে।

5. কোন্ দিনটি ভারতের প্রথম স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালিত হয়?

উত্তর: ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ২৬শে জানুয়ারি দিনটি ভারতের প্রথম স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালিত হয়।

6. কে প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস’-এর ডাক দিয়েছিলেন?

উত্তর: মহম্মদ আলি জিন্নাহ ‘প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস’-এর ডাক দিয়েছিলেন।

7. গান্ধিজির আত্মজীবনীটির নাম লেখো।

উত্তর: গান্ধিজির আত্মজীবনীটির নাম The Story of My Experiments with Truth |

৪. হরিজনপত্রিকার সম্পাদক কে ছিলেন?

উত্তর: ‘হরিজন’ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন মহাত্মা গান্ধি।

9. ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের লাহোর কংগ্রেসের সভাপতি কে ছিলেন?

উত্তর: ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের লাহোর কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন জওহরলাল নেহরু।

11. গান্ধিজি কোথা থেকে ডান্ডি অভিযান আরম্ভ করেছিলেন?

উত্তর: গান্ধিজি সবরমতী আশ্রম থেকে ডান্ডি অভিযান আরম্ভ করেছিলেন।

12. কোন্ পরিকল্পনা দ্বারা ভারতের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়?

উত্তর: মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনার দ্বারা ভারতের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়।

13. “করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে”—উক্তিটি কার?

উত্তর: প্রদত্ত উক্তিটি মহাত্মা গান্ধির।

14. ‘মন্ত্রী মিশন’-এর নেতৃত্ব প্রদান করেন কে?

উত্তর: স্যার প্যাথিক লরেন্স ‘মন্ত্রী মিশন’-এর নেতৃত্ব প্রদান করেন।

15. ‘ক্যাবিনেট মিশনবা মন্ত্রী মিশনকবে ভারতে আসে?

উত্তর: ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ২৪ মার্চ ‘ক্যাবিনেট মিশন’ বা ‘মন্ত্রী মিশন’ ভারতে আসে।

16. “A Post-Dated Cheque on a Crushing Bank”—উক্তিটি কার?

উত্তর: প্রদত্ত উক্তিটি গান্ধিজির

17. কোন্ মহিলা গান্ধি বুড়িনামে খ্যাত?

উত্তর: মাতঙ্গিনি হাজরা ‘গান্ধি বুড়ি’ নামে খ্যাত।

18. নেতাজি আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের নাম কী রাখেন?

উত্তর: নেতাজি আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের নাম রাখেন যথাক্রমে ‘শহিদ দ্বীপ’ এবং ‘স্বরাজ দ্বীপ’।

19. ‘Prison Diary’র লেখক কে ছিলেন?

উত্তর: ‘Prison Diary’-র লেখক ছিলেন জয়প্রকাশ নারায়ণ।

20. ‘India Wins Freedom’-এর লেখক কে?

উত্তর: ‘IndiaWins Freedom’-এর  লেখক দাদাভাই নৌরজি।

23. ‘পুনা চুক্তিকত সালে চুক্তিস্বাক্ষরিত হয়

উত্তর: ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে ২৫শে সেপ্টেম্বর ‘পুনা চুক্তি’ স্বাক্ষরিত হয়।

24. সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি কবে ঘোষিত হয়?

উত্তর: ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি ঘোষিত হয়।

25. ‘গদরকথার অর্থ কী?

উত্তর: ‘গদর’ কথার অর্থ বিপ্লবী।

27. কারা লাল-বাল-পালনামে পরিচিত ছিলেন?

উত্তর: লালা লাজপত রায়, বালগঙ্গাধর তিলক এবং বিপিনচন্দ্ৰ পাল ‘লাল-বাল-পাল’ নামে পরিচিত ছিলেন।

28. কখন স্বদেশি আন্দোলন হয়েছিল?

উত্তর: ১৯০৫-০৭ খ্রিস্টাব্দে স্বদেশি আন্দোলন

30. ‘রাওলাট আইনকী?

উত্তর: ব্রিটিশ বিচারপতি স্যার সিডনি রাওলাটের প্রস্তাবমতো ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ২১ মার্চ রাওলাট আইন পাস হয়। এই আইন অনুযায়ী যে-কোনো ব্যক্তিকে বিনা বিচারে শাস্তি প্রদান করা যেত।

31. কারা খিলাফৎ আন্দোলনের নেতা ছিলেন?

উত্তর: খিলাফৎ আন্দোলনের নেতা ছিলেন মহম্মদ আলি এবং সৌকত আলি, যারা আলি ভ্রাতৃদ্বয় নামে পরিচিত।

33. গান্ধিজি কবে ডান্ডি অভিযান শুরু করেছিলেন?

উত্তর: ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ১২ মার্চ গান্ধিজি সবরমতি আশ্রম থেকে ডান্ডি অভিযান শুরু করেছিলেন।

34. ক্রিপস মিশন কবে ভারতে আসে?

উত্তর: ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে ক্রিপস মিশন ভারতে আসে

35. ‘প্রত্যক্ষ সংগ্রামদিবস কী?

উত্তর: ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ও মুসলিম লিগের মতপার্থক্যের কারণে জিন্না বলপ্রয়োগর মাধ্যমে পৃথক পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠনে উদ্যোগী হন। তাই ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৬ আগস্ট তিনি প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস ঘোষণা করেন। ওই দিন থেকে কলকাতায় রক্তক্ষয়ী দাঙ্গা শুরু হয়ে যায়।

36. লর্ড ওয়াভেলের পর ভারতের ভাইসরয় কে হন?

উত্তর: লর্ড ওয়াভেলের পর ভারতের ভাইসরয় হন লর্ড মাউন্টব্যাটেন (১৯৪৭-এর ফেব্রুয়ারি মাসে)।

38. চৌরিচৌরার ঘটনা কবে ঘটেছিল?

উত্তর: চৌরিচৌরার পুলিশচৌকি আক্রমণের ঘটনা ঘটেছিল ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে।

40. কবে ভারতে প্রথম স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হয়?

উত্তর: ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি ভারতে প্রথম স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হয়।

41. গান্ধিজি কবে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন?

উত্তর: ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ৮ আগস্ট গান্ধিজি ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন।

রাজা, কৃষক এবং শহর

1.ষোড়শ মহাজনপদের যেকোনো দুটি বৈশিষ্ট্য লিখ?***

উত্তর: ষোড়শ মহাজনপদের 2টি  গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ছিল নিম্নরূপ —

(i) মহাজনপদুগুলির মধ্যে বজ্জি ও মল্ল ছিল প্রজাতান্ত্রিক।বাকি ১৪টি ছিল রাজন্য শাসিত।

(ii) প্রত্যেকটি মহাজনপদের সুরক্ষিত রাজধানী ছিল।

(iii) অবস্থানগত দিক থেকেও মহাজনপদগুলির বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল। ১৫টি মহাজনপদ উত্তর ভারতে অবস্থিতছিল এবং শুধুমাত্র অস্মক দক্ষিণ ভারতে অবস্থিত ছিল।

2.মহাজনপদ বলতে কী বোঝ? শ্রেষ্ঠত্বের বিচারে/প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কোন জনপদ বিজয়ী হয়?

উত্তর: মহাজনপদ: ‘জনপদ’ শব্দের অর্থ হল রাজ্য। মহাজনপদ মানে বৃহৎ রাজ্য। প্রাচীন ভারতে আর্যবর্তে তথা উত্তর ভারতে বড়ো বড়ো ষোলোটি রাজ্য বা জনপদ গড়ে উঠেছিল।এর প্রতিটি রাজ্য এক-একটি মহাজনপদ নামে পরিচিত। মগধ শ্রেষ্ঠত্বের বিচারে/প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়।

বংশের উদ্ভব হয়েছে।

3. ষোড়শ মহাজনপদ কী? ষোড়শ মহাজনপদগুলির নাম লেখো।***

উত্তর: ষোড়শ মহাজনপদগুলির নাম হল – (i) কাশী, (ii) কোশল, (iii) অঙ্গ, (iv) মগধ, (v) বৃজি, (vi) মল্ল, (vii) চেদী, (viii) বৎস, (ix) কুরু, (x) পাঞ্চাল, (xi) মৎস্য, (xii) শূরশেন, (xiii) অস্মক, (xiv) অবন্তী, (xv) গান্ধার ও (xvi) কম্বোজ।

4. মগধ সবচেয়ে শক্তিশালী গণরাজ্যে পরিণত হওয়ার : দুটি কারণ লেখো।***

উত্তর: মগধ সবচেয়ে শক্তিশালী গণরাজ্যে পরিণত হওয়ার দুটি কারণ হল

(i) অনুকূল ভৌগোলিক পরিস্থিতি। মগধ নদী ও পর্বত পরিবেষ্টিত হওয়ায় শত্রুপক্ষের সাথে মোকাবেলা সহজ ছিল।

(ii) মগধে তামা ও লোহার প্রাচুর্য্য থাকায় অস্ত্র ও কৃষি যন্ত্রপাতি নির্মাণে সুবিধা হয়।

5. এপিগ্রাফিস্ট (লিপিকাররা) যেসব সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন তার মধ্যে দুটি লেখো।

উত্তর: এপিগ্রাফিস্ট (লিপিকাররা) যেসব সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন, তার মধ্যে দুটি হল –

(i) প্রাচীন ভারতের কয়েক হাজার বছর পূর্বের খোদিত লিপি আবিষ্কৃত করা হলেও এগুলির পাঠোদ্ধার করা এবং অনুবাদ প্রকাশ করা আজও সম্ভব হয় নি। এছাড়াও বলা যায় যে, সেই সময়ের অনেক লিপি সময়ের সাথে সাথে নষ্ট হয়ে গিয়েছে।

(ii) পুরানো হওয়ার ফলে অনেক খোদিত লিপিসমূহ বর্তমানে অস্পষ্ট হয়ে পড়েছে। যার ফলে লিপির পাঠোদ্ধার করতে গিয়ে লিপিকাররা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।

6. গুপ্তসাম্রাজ্যের পতনের দুটি কারণ লেখো। উত্তর: গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের দুটি কারণ হল –

(i) অযোগ্য উত্তরাধিকারী – উত্তরাধিকারীদের অযোগ্যতা গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের জন্য অনেকাংশে দায়ী। স্কন্দগুপ্তের পরবর্তী রাজারা সমসময় আরাম আয়েশে মেতে থাকত। যার পরিণতিতে গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতন অনিবার্য হয়ে উঠে।

(ii) বহিরাক্রমণ- গুপ্তরাজারা এক সময় সাময়িক শক্তির সাহায্যে বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিল। কুমারগুপ্ত, স্কন্দগুপ্ত প্রমুখ রাজারা এই সাম্রাজ্যকে বহিঃশত্রুর হাত থেকে রক্ষা করতে পারে নি।

7. গুপ্ত সম্রাট স্কন্দগুপ্তকে ভারতের রক্ষাকর্তা বলা হয় কেন?***

উত্তর: ৪৫৫ খ্রিঃপূঃ স্কন্দগুপ্ত সিংহাসনে বসেন। তাঁর রাজত্বকালেই উত্তর-পশ্চিম ভারতে হুণ আক্রমণ শুরু হয়। তিনি এই বর্বর জাতিদের আক্রমণ রোধ করেন। তিনি তাদের এমনভাবে প্রতিহত করেন যে পরবর্তী ৫০ বছরের মধ্যে হুণরা ভারতে আক্রমণের সাহস পায় নি। যদি হুণরা জয়লাভ করতে পারতো তবে ভারতের ইতিহাসের গতিধারা পাল্টে যেতো।এই কারণে ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার স্কন্দগুপ্তকে ‘ভারতের রক্ষাকর্তা’ বলে অভিহিত করেছেন।

8. অশোককে মৌর্য বংশের শ্রেষ্ঠ সম্রাট বলার কারণ কী?

উত্তর: মৌর্য বংশের শ্রেষ্ঠ সম্রাট অশোককে বলা হয়। বিভিন্ন ঐতিহাসিকরা অশোককে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্রাট বলে অভিহিত করেছেন। রাজা হিসাবে কলিঙ্গ রাজ্য জয় করেও রাজ্যবিজয় নীতি পরিত্যাগ করে তিনি ধর্মনীতি গ্রহণ করেন। সাম্য, মৈত্রী ও ভ্রাতৃত্ববোধ দ্বারা প্রজাদের মন তিনি জয় করে নেন।যুদ্ধভেরির পরিবর্তে ধর্মঘোষণা নীতি গ্রহণ করে মানুষের প্রিয়পাত্রে পরিণত হন। এই সমস্ত কারণে অশোককে শ্রেষ্ঠ সম্রাট বলা হয়।

9. অশোককে চন্ডাশোক বলা হয় কেন?

উত্তর: অশোক প্রথম জীবনে অত্যন্ত নিষ্ঠুর ও উগ্র প্রকৃতির শাসক ছিলেন। বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ অনুসারে জানা যায় যে—অশোক তাঁর ৯৮ জন ভ্রাতাকে হত্যা করে সিংহাসনে আরোহণ করেন। সিংহাসনে আরোহণের ত্রয়োদশ বর্ষে কলিঙ্গ রাজ্য আক্রমণ করেন। এই যুদ্ধে তিনি এক লক্ষ লোককে হত্যা করেন এবং হাজার হাজার ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দেন। এই সমস্ত কার্যকলাপের জন্য ইতিহাসে তাঁকে ‘চন্ডাশোক’ বলে অভিহিত করা হয়।

কলিঙ্গ যুদ্ধের ঐতিহাসিক গুরুত্ব কী ?   (TBSE Final 2023)

উত্তর: কলিঙ্গ যুদ্ধের ঐতিহাসিক গুরুত্ব বেশ তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। এই যুদ্ধের পরই সম্রাট অশোক আগ্রাসী নীতি পরিত্যাগ করেন। আগ্রাসী নীতি পরিত্যাগ করে তিনি নিজেকে অহিংসার পূজারী রূপে প্রমাণিত করার চেষ্টায় মেতে উঠেন।বস্তুত এই যুদ্ধের পর অশোক যুদ্ধনীতি পরিত্যাগ করে অহিংসার নীতি গ্রহণ করেন।

Class12 History Half yearly Suggestion 2024 25

ভক্তি ও সুফিবাদের ঐতিহ্য

1. ভক্তি আন্দোলন কাকে বলে?

উত্তর: মধ্যযুগে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে রাজনৈতিক সংঘর্ষ ধর্মীয় জীবনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। কিন্তু পরবর্তীতে হিন্দু-মুসলমান বহুকাল একত্রে বসবাস করে তাদের নৈকট্য গড়ে তোলে।ইসলামের গণতান্ত্রিক সংস্পর্শে এসে হিন্দু ধর্মের গোঁড়ামি ও রক্ষণশীলতার বিরুদ্ধে মানুষ সোচ্চার হয়ে উঠে। তারই কল্যাণে ধর্মক্ষেত্রে সমন্বয় দেখা দেয়। এই সমন্বয়ের পেছনে একদিকে,হিন্দু সাধু সন্ন্যাসী ও প্রচারকগণ এবং অন্যদিকে মুসলিম ফকির, দরবেশ ও সুফি সাধকরা অবদান রাখেন। উভয় ধর্মে একেশ্বরবাদের ধারণা ছিল মূলকথা।এই সমন্বয়ধর্মী আন্দোলনই ইতিহাসে ভক্তি আন্দোলন’ নামে পরিচিত

2.ভক্তিবাদের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

উত্তর: ভক্তিবাদের দুটি বৈশিষ্ট্য হল –

(i) একেশ্বরবাদ : ভক্তিবাদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য বা মূলনীতি হল—একেশ্বরবাদে বিশ্বাস। এখানেই হিন্দু ধর্মের গতানুগতিক বিশ্বাস থেকে ভক্তিবাদ সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র।

(ii) ভক্তির প্রাধান্য : ঈশ্বর সাধনায় সংস্কার রীতিনীতি ইত্যাদি নিয়ে যে চৰ্চা চলছিল—ভক্তিবাদ তার বিরুদ্ধে এক সোচ্চার প্রতিবাদ স্বরুপ দেখা দেয়। যথার্থ ভক্তির দ্বারা যে কোনো সাধনায় যে কোনো মানুষ সফল হতে পারে বলে ভক্তিবাদীরা বিশ্বাস করেন

3. সুফি পরম্পরায় বে-শরিয়া এবং বা শরিয়ার মধ্যে দুটি সাদৃশ্য লেখো।

উত্তর: সুফি পরম্পরায় বে-শরিয়া এবং বা-শরিয়ার মধ্যে দুটি সাদৃশ্য হল—

(i) উভয় শ্রেণিই ছিল মুসলিম ধর্মের অন্তর্গত দুটি শ্রেণি।

(ii) উভয় সম্প্রদায়ের কেহই মুসলিম ধর্মের বিরোধি ছিল

4. সুফি পরম্পরায় বে-শরিয়া এবং বা-শরিয়ার মধ্যে দুটি বৈসাদৃশ্য লেখো।

উত্তর: সুফি পরম্পরায় বে-শরিয়া এবং বা-শরিয়ার মধ্যে দুটি বৈসাদৃশ্য হল—

(i) বা-শরিয়ারা ছিল খুব রক্ষণশীল। তারা মুসলিম রীতিনীতি কঠোরতার সঙ্গে পালন করতো। কিন্তু বে-শরিয়ারা ছিল তুলনামুলক সহজ ও উদার।

(ii) বে-শরিয়ারা সুফি-সন্তদের নেতৃত্বে পরিচালিত হতো। কিন্তু বা-শরিয়ারা সুফি-সন্তদের নেতৃত্বে পরিচালিত হতো না।

5. সুফিবাদের উদ্ভবের কারণ কী?

উত্তর: ইসলাম ধর্মে উদারনৈতিক সংস্কার আন্দোলনের নাম সুফিবাদ। সুফিবাদের মূল উৎস কোরান এবং হজরত মহম্মদ হলেও বিভিন্ন ধর্মের আদর্শের সমন্বয় হতেই এ মতবাদ উদ্ভব হয়েছিল। অনেকে মনে করেন, এই মতবাদে বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাব রয়েছে। মধ্য এশিয়ার বৌদ্ধ অধিবাসীরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলে এই ধর্মে বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাব পড়ে। বৌদ্ধ ও হিন্দু সাধকরা পশ্চিম এশিয়ার ভ্রমণে গেলে এদের সঙ্গে যোগাযোগের ফলে সুফিবাদীদের অহিংসা, ত্যাগ, বৈরাগ্য, উপবাস, যোগসাধনা তাদের কাছ থেকে গ্রহণ করা হয়। সুতরাং, একথা বলা যায় যেবৌদ্ধধর্ম, হিন্দু বেদান্ত, দর্শন, ইসলাম ধর্ম প্রভৃতি নানা ধর্মীয় আদর্শ থেকে সুফিবাদের উদ্ভব ঘটে।

6.  ‘সুফিবাদে সিলসিলা বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: সুফিবাদের সঙ্গে ‘সিলসিলা’ শব্দটি অত্যন্ত ঘনিষ্টভাবে জড়িত। ‘সিলসিলা’ শব্দটির আক্ষরিক অর্থ হলো—শিকল। সিলসিলাতে শুধুমাত্র নবি মোহম্মদদ্বারা নির্দেশিত পথকেই অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। সুফিসন্তরা মূলত ১২ টি সিলসিলায় বিভক্ত ছিলেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ যে, প্রত্যেকটি সিলসিলাই একজন গুরু বা শেখ কিংবা পির দ্বারা পরিচালিত হতো।

7. কবীর সম্পর্কে লেখো।

উত্তর: কবীর ছিলেন একজন প্রসিদ্ধ ভক্তিবাদী সাধক।কবীর যে সমস্ত রচনাবলী রচনা করেছেন তাকে ‘দোঁহা’ বলে।কবীর তৎকালীন সমাজে বিরাজমান জাতিভেদ প্রথার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন। তিনি ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দু ধর্মের বাহ্যিক আচরণ সমন্ধীয় রীতিনীতির তীব্র সমালোচনা করেন। এছাড়াও মুসলিমদের কিছু সামাজিক রীতিনীতির প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাছাড়াও তিনি সমাজে পুরোহিতদের একাধিপত্যকে ঘৃণার চোখে দেখতেন। তাঁর ভাষায় এই পৃথিবীতে একজনই ঈশ্বর আর এই ঈশ্বরই সর্বশক্তিমান ও সর্বশ্রেষ্ঠ।

8. ভক্তিবাদের প্রচারক হিসেবে গুরু নানকের ভূমিকা আলোচনা করো।

উত্তর: পাঞ্জাবের লাহোরের কাছে তালবন্দী (বর্তমান নানকানা) গ্রামে ক্ষত্রীয় পরিবারে গুরু নানক জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকাল থেকেই তাঁর মন এক অতীন্দ্রিয় ভাবরাজ্যে বিভোর ছিল। অল্প বয়সেই তিনি সংসার ত্যাগ করে ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে ভারতের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ায়।গুরু নানকের প্রধান শিক্ষা এক ঈশ্বর, গুরু ও নামজপ। তাঁর মতে ঈশ্বর সত্য, স্রষ্টা, নির্ভীক, অমর ও অজ। তিনি ঈশ্বরের নামজপ করতে বলেছেন।

19. ভক্তিবাদের দুটি অবদান লেখো। :

উত্তর: ভক্তিবাদের দুটি অবদান হল

(i) সামাজিক বৈষম্য হ্রাস: ভক্তিবাদ ভারতীয় সমাজে আলোড়ন তুলেছিল। নারীরা ধর্মীয় এবং সামাজিক জীবনে স্বাধীনতার স্বাদ অনুভব করতে পারে। এর ফলে তৎকালীন সমাজে বিরাজমান নারী-পুরুষ, উঁচু-নিচু ভেদাভেদ অনেকটাই কমে যায়।

(ii) সাহিত্য চর্চায় অবদানঃ ভক্তিবাদ সাহিত্য চর্চায় নতুন ধারা সৃষ্টি করে। বস্তুত ভক্তিবাদের প্রভাবে তৎকালীন সময়ে কবিরের ‘দোঁহা’ নানকের ‘গ্রন্থসাহের’ প্রভৃতি পুস্তকগুলি ছাড়াও বহু আঞ্চলিক ভাষায় সাহিত্য চর্চা শুরু হয়েছিল।

10. ভক্তিবাদের প্রচারক হিসেবে শ্রীচৈতন্যের ভূমিকা আলোচনা করো।

উত্তর: ভক্তিবাদ তথা বৈষুব ধর্মের প্রচারকদের মধ্যে শ্রীচৈতন্যদেব ছিলেন অন্যতম। তিনি নদীয় জেলার এক শিক্ষিত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকাল থেকেই তিনি ছিলেন ধর্মপরায়ণ। মাত্র চব্বিশ বছর বয়সে তিনি সংসারত্যাগী হন এবং সন্ন্যাস ধর্ম গ্রহণ করেন। হিন্দু-মুসলমান, পণ্ডিত-মুখ, ব্রাহ্মাণ-চণ্ডাল নির্বিশেষ সকলের মধ্যেই তিনি ভক্তিধর্ম প্রচার করেন। জীবে দয়া, ঈশ্বরে ঐকান্তিক ভক্তি এবং উদ্দীপনের জন্য নাম সংকীর্তন—এগুলিই তাঁর ধর্মমতের মূলকথা। তিনি প্রচার করেছিলেন যে, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষ সব মানুষই সমান আধ্যাত্মিক শক্তির অধিকারী হতে পারে। তিনি জাতিভেদ প্রথার ঘোর বিরোধী ছিলেন। হিন্দু-মুসলমান সকল ধর্মের লোকই তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছিল।বাংলার জনজীবনে তাঁর প্রভাব ছিল সর্বাত্মক।

সুফিবাদ কী ? . (TBSE Final 2023)

উত্তর: সুফিবাদের মূল কথা বল— ঈশ্বর এক, সবকিছুই তার অঙ্গ। সুফিবাদের মূল নীতিগুলির মধ্যে প্রধান কয়েকটি হল— (ক) সব মনুষ একই ঈশ্বরের সৃষ্টি, (খ) মানুষকে ভালোবাসলে ঈশ্বরের আশীর্বাদ মেলে, (গ) সব মানুষই সমান, (ঘ) সৎ জীবন যাপন করলে ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভ করা যায়।

মহাত্মা গান্ধি এবং জাতীয়তাবাদী

1. চৌরিচৌরা-র ঘটনার প্রতিক্রিয়া কী ছিল?***

উত্তর: ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ৫ ফেব্রুয়ারি চৌরিচৌরার ঘটনাটি ঘটে। এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত জনতার হাতে ২২ জন পুলিশ প্রাণ হারায়। চৌরিচৌরা ঘটনায় গান্ধিজি মর্মাহত হয়ে ‘অসহযোগ আন্দোলন’ প্রত্যাহার করে নেন। চিত্তরঞ্জন দাশ, মতিলাল নেহরু, জওহরলাল নেহরু, লালা লাজপত রায় প্রমুখ নেতারা এর তীব্র নিন্দা করেন। সুভাষ চন্দ্র বসু গান্ধিজির এই সিদ্ধান্তকে ‘জাতীয় বিপর্যয়’ বলে আখ্যা দেন।

2. জাতীয় কংগ্রেস কেন ভারত শাসন আইনসমৰ্থন করেনি তার দুটি কারণ লেখো।

উত্তর: ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ভারত শাসন আইনকে বিভিন্ন কারণে সমর্থন করে নি। এরমধ্যে দুটি কারণ হল-

(i) ভারত শাসন আইনে মাত্র 14% মানুষ ভোটের অধিকার লাভ করেছিল।

(ii) যুক্তরাষ্ট্র গঠনের বিষয়টি দেশীয় রাজ্যগুলির ইচ্ছে এবং অনিচ্ছার ওপর নির্ভরশীল ছিল।

3. লখনউ চুক্তি’-র দুটি শর্ত লেখো।

-উত্তর: ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে কংগ্রেস এবং মুসলিম লিগের মধ্যে লখনউ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির দুটি শর্ত হল-

(i) প্রতিটি প্রাদেশিক আইনসভায় মোট সদস্যের এক-তৃতীয়াংশ মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্ত করতে হবে।

(ii) কংগ্রেস এবং মুসলিম লিগ যৌথভাবে ভারত সরকারের কাছে শাসনতান্ত্রিক সংস্কারের দাবি জানাবে।

4. জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকান্ড সম্পর্কে লেখো।***

উত্তর: ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ১৩ এপ্রিল সরকারি দমন নীতির বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ জানাতে প্রায় ১০ হাজার মানুষ জালিয়ানওয়ালাবাগে সমবেত হয়। সভা চলাকালীন জেনারেল ডায়ারের নেতৃত্বে সৈন্যরা নিরস্ত্র জনতার ওপর ১৬০০ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে। এই নারকীয় নৃশংস হত্যাকান্ডে প্রায় এক হাজার মানুষ প্রাণ দেয়। বহু লোক আহত হয়। সরকারি মতে ৩৭৯ জন নিহত এবং ১২০০ জন গুরুতর আহত হয়।

5. চম্পারণ সত্যাগ্রহের গুরুত্ব কী ছিল?

উত্তর: বিভিন্ন দিক থেকে চম্পারণ সত্যাগ্রহ ছিল অতি গুরুত্বপূর্ণ। যেমন-

(i) চম্পারণ আন্দোলনের সাফল্য ভারতীয়দের বিশেষত ভারতীয় কৃষকদের মনোবল বৃদ্ধি করে। তারা উপলব্ধি করে যে, যোগ্য নেতৃত্ব ও সংগ্রামের সঠিক পদ্ধতির মাধ্যমে ইংরেজ · মালিকও তাদের কর্মচারীদের বিরোধিতা সত্ত্বেও আন্দোলন সফল হতে পারে।

(ii) চম্পারণের কৃষকদের ওপর নীলকর সাহেবদের অকথ্য অত্যাচারের প্রতিবাদে গান্ধিজির নেতৃত্বে সত্যাগ্রহ আন্দোলন শুরু হলে সরকার ‘তদন্ত কমিটি’ নিয়োগ করে। এরফলে সরকার ‘চম্পারণ কৃষি বিল’ পাস করান। এতে চম্পারণে শতবর্ষব্যাপী অত্যাচারের অবসান হয়।

6. লবণ আইন সংগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে ওঠার দুটি কারণ লেখো।

উত্তর: লবণ আইন সংগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে ওঠার দুটি কারণ হল:

(i) লবণ ছিল প্রত্যেকদিনের জন্য ব্যবহার্য একটি বস্তু। কিন্তু ব্রিটিশ সরকার একটি বিশেষ আইন পাস করে এই লবণ উৎপাদন এবং বিক্রির উপর একচেটিয়া অধিকার দখল করে নেয়। যার ফলে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ এর বিরোধিতা করে।

(ii) লবণ আইনের ফলে ভারতীয়রা লবণ উৎপাদনের অধিকার হারায়। এর ফলে গ্রামীণ শিল্প ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। তাছাড়াও তৎসময়ে লবণের মূল্য প্রায় ১০০০ শতাংশের অধিক বৃদ্ধি পায়। ফলে লবণ আইন সংগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছিল।

7. গান্ধি-আরউইন চুক্তির দুটি শর্ত লেখো। উত্তর: গান্ধি-আরউইন চুক্তির দুটি শর্ত হল***

(i) কংগ্রেস আইন অমান্য আন্দোলন বন্ধ রাখবে এবং গোল টেবিল বৈঠকে যোগ দেবে।

(ii) ইংরেজ সরকার দমনমূলক আইন ও অর্ডিন্যান্স তুলে

8. অসহযোগ আন্দোলনের দুটি গুরুত্ব লেখো।***

উত্তর: অসহযোগ আন্দোলনের দুটি গুরুত্ব হল

(i) গণ চেতনার সম্প্রসারণ : অসহযোগ আন্দোলন ভারতের নানা স্থানে প্রসারিত হওয়ায় সাধারণ জনগণের মধ্যে গণচেতনার সম্প্রসারিত হয়েছিল। বিভিন্ন জায়গায় নানা শ্রেণির মানুষ এই আন্দোলনে শামিল হয়েছিল।

(ii) আন্দোলনের সর্বভারতীয় রূপ: অসহযোগ আন্দোলনের সবচেয়ে বড়ো সাফল্য হল এর সর্বভারতীয় রূপ। জাতীয় কংগ্রেসের আহবানে গ্রাম-শহরের সকল স্তরের মানুষ এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে ইংরেজ সরকারকে উদ্বিগ্ন করে তোলে।

9. খিলাফত আন্দোলনের গুরুত্ব কী ছিল ?

 উত্তর: ভারতীয় ইতিহাসে খিলাফত আন্দোলনের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। যেমন –

(i) খিলাফতের প্রশ্নকে জাতীয় কংগ্রেস সমর্থন করায় জাতীয় আন্দোলনে হিন্দু-মুসলমানের মিলনের এক অপূর্ব সুযোগ আসে।

(ii) এই আন্দোলনে গান্ধিজি ভারতীয় রাজনীতির পাদপ্রদীপের সামনে আসেন। ফলে জাতি-ধর্ম-নির্বিশেষে তিনি সারা ভারতের নেতার মর্যাদা পান।

10. মহাত্মা গান্ধি কর্তৃক চরকাকে জাতীয়তাবাদী চিহ্ন হিসেবে বাছাই করার যে-কোনো দুটি কারণ লেখো।***

উত্তর: মহাত্মা গান্ধি কর্তৃক চরকাকে জাতীয়তাবাদী চিহ্ন হিসেবে বাছাই করার দুটি কারণ হল

(i) গান্ধিজি মনে করতেন—সমাজের দরিদ্র শ্রেণি চরকা ব্যবহার করে নিজেদেরকে স্বাবলম্বী করতে সক্ষম হবে।

(ii) শারীরিক শ্রমের মাধ্যমে চরকার উৎপাদন কার্য হয়। এটি মূলত আত্ম নির্ভর কর্মসংস্কৃতির পরিচয়বাহক। অন্যদিকে জাতিভেদ প্রথায় আঘাত হানার অন্যতম মুখ্য হাতিয়ার হল চরকা। তাই চরকা জাতীয়তাবাদের চিহ্ন।

11. সাইমন কমিশনের দুটি উদ্দেশ্য লেখো।

উত্তর: সাইমন কমিশনের দুটি উদ্দেশ্য হল

(i) ভারতীয়দের প্রশাসনিক ক্ষেত্রে নিয়োগ করে তাদের দক্ষতা যাচাই করে দেখা।

(ii) ভারতে আগামী দিনে কতটুকু শাসন সংস্কার কার্যকরী করা যাবে তা নির্ধারণ করা।

12. ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠিত লাহোর কংগ্রেসের গুরুত্ব লেখো।***

উত্তর: ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠিত লাহোর কংগ্রেসের গুরুত্ব অপরিসীম। যেমন – –

(i) মহাত্মা গান্ধির নেতৃত্ব দৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়। (ii) লাহোর কংগ্রেসেই জাতীয় কংগ্রেস সর্বপ্রথম দ্বিধাহীনভাবে দেশবাসীকে পূর্ণ স্বাধীনতার জন্য আহবান জানায়। (iii) ১৯৩১ সালের ২৬ জানুয়ারি দিনটিকে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে উদ্যাপনের জন্য ডাক দেওয়া হয়। আইনের

13. ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দের মর্লে-মিন্টো সংস্কার যে-কোনো দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

উত্তর: ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দের মর্লে-মিন্টো সংস্কার আইনের দুটি বৈশিষ্ট্য হল

(i) কেন্দ্রীয় আইন সভার সদস্যসংখ্যা ১৬ থেকে বাড়িয়ে ৬০ করা হয়।

(ii) কতগুলি বিশিষ্ট সম্প্রদায় থেকে ৩ জন বেসরকারি সদস্য মনোনীত করার অধিকার বড়োলাটকে দেওয়া হয়।

সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি কী? TBSE Final 2023

ব্রিটিশ সরকার ভারতে তাদের শাসনকে নিরাপদ ও দীর্ঘস্থায়ী করার উদ্দেশ্যে হিন্দু, মুসলিম-সহ বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা চালায়। এজন্য সরকার ভারতে বিভাজন ও শাসননীতি অনুসরণ করে। সরকারের বিভাজন ও শাসননীতিকে কার্যকরী করতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ম্যাকডোলান্ড ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য পৃথক নির্বাচনের কথা ঘোষণা করেন।তার এই নীতি ‘সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা’ নামে পরিচিত

Class12 History Half yearly Suggestion 2024 25

Class12 History Half yearly Suggestion 2024 25

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর: প্রতিটি প্রশ্নের মান-3

ভক্তি ও সুফিবাদের ঐতিহ্য

১। তামিলনাড়ু ও কর্ণাটক রাজ্যে বেদ ও ব্রাত্মণ্যবাদ বিরোধী আন্দোলন সম্পর্কে লেখো।

উত্তর: প্রাচীন ভক্তি আন্দোলনের অন্যতম উদাহরণ হল তামিলনাড়ুর আলভার (বিয়ুর উপাসক) এবং নায়নার (শিবের উপাসক) সম্প্রদায়। ঈশ্বরের স্তুতিগান করতে করতে তাঁরা বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াতেন। পরিক্রমণের সময় এঁরা বিভিন্ন স্থানকে ঈশ্বরের আবাসভূমি হিসেবে নির্বাচিত করতেন। পরবর্তী সময়ে সেই স্থানগুলিতে সুবিশাল মন্দির স্থাপন করা হয় এবং স্থানগুলি তীর্থকেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।অনেক ঐতিহাসিকের মতে আলভার এবং নায়নার সম্প্রদায়ের সন্তরা জাতপাত এবং ব্রাহ্মণ্যবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। শিল্পী, কৃষক, এমনকি তথাকথিত অস্পৃশ্য জাতিভুক্ত বলে চিহ্নিত মানুষও এঁদের ভক্তি আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন। আলভার এবং নায়নার সাধকদের রচনা সমূহকে বেদের মতো অভ্রান্ত বলে বিবেচনা করা হত।

২। সুফি ধর্মগুরুদের মধ্যে দিল্লি সুলতান ও মোগল বংশের শাসকগণের মধ্যে সম্পর্ক কেমন ছিল?

উত্তর: সুফি ধর্মগুরুদের মধ্যে দিল্লি সুলতান ও মোগল বংশের শাসকগণের মধ্যে সুসম্পর্ক ছিল। যেমন— (i) দ্বাদশ শতকে এদেশের দিল্লি এবং এর আশে পাশের কিছু অঞ্চলে মুসলিম শাসক প্রতিষ্ঠিত হয়। এই মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠার পেছনে সুফিবাদ ভীষণ ভাবে কাজ করেছিল। কারণ মুসলিম জনগোষ্ঠী সুফিবাদের সহজ ও সরল নীতিবোধ অনুধাবন করতে পেরে ছিল।

(ii)তৎকালিন সময় মুসলিম ধর্ম পরিত্যাগ না করেও দিল্লির কিছু কিছু শাসক রাজ্য শাসনে বেশ কিছু বাস্তব নীতি গ্রহণ করতে পেরেছিলেন। সুফিবাদের প্রতি জনসাধারণের আনুকুল্যের কারণেই ইহা করা সম্ভব হয়েছিল বলে সমসাময়িক অনেক ঐতিহাসিক তাঁদের মতামত ব্যক্ত করেছেন।

(iii) সেই সময়ের শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং সুফিবাদের অনুপ্রেরণায় সুলতানগণ দরগা বা খানকাহ এবং মিনার নির্মাণ করেছিলেন। ইলতুৎমিস ‘কুতুবমিনার’ তৈরির কাজ সম্পন্ন করেছিলেন। এই মিনারটি তিনি সুফিবাদের অন্যতম সুফি সাধক কুতুবউদ্দিন কাকির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেছিলেন।

৩। ভক্তিবাদের উৎপত্তির যে-কোনো তিনটি কারণ লেখো।***

উত্তর: ভক্তিবাদের উৎপত্তির তিনটি কারণ হল-

(1) ইসলাম ধর্মের প্রভাব : ভক্তিবাদের উৎপত্তির একটি কারণ হলো—ইসলাম ধর্মের প্রভাব। সাম্য এবং ভ্রাতৃত্ববোদ হলো ইসলাম ধর্মের বৈশিষ্ট্য। এই ধর্মানুসারে পৃথিবীর সব মানুষ ঈশ্বরের করুণার পাত্র। এক কথায় ইসলাম ধর্মের একেশ্বরবাদ, জাতিভেদ প্রথার প্রতি অবিশ্বাস ভক্তিবাদকে অনুপ্রাণিত করেছিল।

(ii) সুফিবাদের প্রভাব: ইসলমা ধর্মের গোঁড়ামির প্রতিবাদস্বরূপ সুফিবাদের উদ্ভভ হয়। এই সুফিবাদও ভক্তিবাদকে প্রভাবিত করেছিল। সুফিগণ ঈশ্বরের প্রতি ঐকান্তিক ভক্তিকে মুক্তির পথ বলে মনে করতেন।

(iii) হিন্দু শাস্ত্রের প্রভাব : নতুন ভক্তিবাদ কোনো নতুন ধর্ম আন্দোলন নয়। অনেকে মনে করেন, এই ধর্ম আন্দোলনে বাইরের প্রভাব তেমন ছিল না। হিন্দু ধর্মে ভক্তিবাদের আদর্শ প্রাচীন। হিন্দু ধর্মশাস্ত্রে লিখিত আছে যে, জ্ঞান, কর্ম ও ভক্তির মাধ্যমে আত্মা মুক্তি পেতে পারে। ভক্তিবাদীরা হিন্দু ধর্মের একটি পুরোনো আদর্শকে প্রচার করেছিল মাত্র।

৪।জৈন ধর্ম বৌদ্ধ ধর্মের মধ্যে তিনটি সাদৃশ্য ও বেসাদৃশ্য লিখ?***

৬।গুরু নানক সম্পর্কে লেখ?***

উত্তর: গুরুনানক ছিলেন শিখ ধর্মের প্রবর্তক। তিনি লাহোরের কাছে তালবন্দী গ্রামের এক ক্ষত্রিয় পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন, বাল্যকালে তাঁর বিয়ে হয়। ছোটোবেলা থেকেই তিনি ছিলেন ধর্মপ্রাণ। তিনি স্ত্রী-পুত্র ছেড়ে ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে ভারতের নানা স্থানে ভ্রমণ করেন। তিনি সর্বধর্ম সহিষ্ণুতার কথা বলেন। হিন্দু ধর্মের বাহ্যিক অনুষ্ঠান ও জাতিভেদ প্রথার তিনি ঘোর বিরোধি ছিলেন। তিনি হিন্দু এবং মুসলমানদের অভিন্নতার কথা এবং ঈশ্বরের মোক্ষলাভের কথা বলেন। ধর্ম সংঘাতের অবসান ঘটানোই ছিল গুরু নানকের প্রধান উদ্দেশ্য। নানকের শিষ্যদের মধ্যে বহু মুসলমান ছিলেন।

কবির সম্পর্কে লেখ? (TBSE Final 2023)

ইতিহাস রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর প্রশ্নমান 4

চিন্তাবিদ, বিশ্বাস এবং ইমারতসমূহ: সাংস্কৃতিক বিকাশ (৬০০ খ্রি.পূ.-৬০০ খ্রি.)

1.সাঁচীর মূর্তিকলা সম্পর্কে জানার জন্য বৌদ্ধ সাহিত্যের জ্ঞান কতটুকু সহায়ক?

উত্তর: সাঁচী স্তূপের চতুর্দিকে গৌতম বুদ্ধের জীবনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বিভিন্ন বৃক্ষ, হাতি, মানব-মানবী ইত্যাদির নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়েছে। নিচে এই সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো

(i) বৃক্ষ: বৃক্ষ জ্ঞানের আলোক। গৌতম বুদ্ধ যে বৃক্ষের নিচে বসে ধ্যান করেছেন এবং সিদ্ধিলাভ করেছেন সেই বৃক্ষকে বলা হয় -বোধিবৃক্ষ। বৃক্ষের নিচে বসে গৌতম বুদ্ধের এই সিদ্ধিলাভের ঘটনা সাঁচী স্তূপে অত্যন্ত নিপুনভাবে খোদাই করা হয়েছে।

(ii) প্রতীক চিহ্ন : প্রাচীন স্থাপত্য শিল্পে গৌতম বুদ্ধকে মানুষের রূপের পরিবর্তে বিশেষ প্রতীক চিহ্নের দ্বারা বোঝানো হয়েছে। স্থাপত্যশিল্পে বর্ণিত প্রতিটি প্রতীক গৌতম বুদ্ধের জীবনের কোনো না কোনো ঘটনাকে ব্যাখ্যা প্রদান করেছে। যেমন—শূন্য আসন মূলত গৌতম বুদ্ধের ধ্যানে মগ্ন থাকার ঘটনাকেই নিদর্শন করে।

(iii) খোদিত চক্র : খোদিত চক্র দ্বারা ইহা বোঝানো হয়েছে যে, গৌতম বুদ্ধ সারনাথে প্রথম শ্রমণরূপে নিজের ধর্মপ্রচার করে চলেছেন। এছাড়াও পদ্মফুল তাঁর আধ্যাত্মিক জ্ঞানের স্ফুটনকেই বুঝিয়েছে। তাছাড়া হস্তি তাঁর জন্মবৃত্তান্তের কাহিনির সাথে যুক্ত। সর্বোপরি অশ্ব বা ঘোড়ার দ্বারা তাঁর আত্মত্যাগকেই বোঝানো হয়েছে।

(iv) জাতকের অবদান : জাতকে প্রচুর বন্য পশুর ছবি অঙ্কন করা রয়েছে এবং এগুলির বর্ণনা সাঁচী স্তুপেও পাওয়া গিয়েছে। তৎকালে মানুষের গুণাবলি বোঝাতে পশুর প্রতিকৃতি অঙ্কন করা হতো।

(v) রমণীর চিত্র : তৎকালে পদ্ম এবং হাতি পরিবেষ্টিত অবস্থায় এক রমণীর উপর জল ছিটানোর চিত্র অঙ্কিত হয়েছে। সাহিত্যিকদের মতে, এর দ্বারা রাজ্য অভিষেকের বিষয়টিকে বোঝানো হয়েছে। আবার অনেক ঐতিহাসি এই রমণীকে বুদ্ধের মাতা মায়ার চিত্র হিসেবে কল্পনা করেছেন।

সুতরাং বলা যায় উপরোক্তভাবে বিভিন্ন পন্ডিতগণ বৌদ্ধ সাহিত্যের আঙ্গিকে সাঁচীস্তূপের উপর খোদিত ভাস্কর্যগুলোর রহস্য উদ্ঘাটন করতে প্রচেষ্টা করেছেন।

2.জৈন ধর্মের মুখ্য শিক্ষা বা উপদেশাবলী সম্পর্কে আলোচনা করো***

উত্তর: জৈন ধর্মের মূল শিক্ষাগুলি নিম্নরূপ

(I)জৈনধর্মের মূল নীতি হল অহিংসা। সকল মানবজাতি, জীবজন্তু গাছপালা, কীটপতঙ্গ সব কিছুর প্রতি দয়া বা অহিংসা প্রদর্শনের কথা লেখা আছে জৈন ধর্মে। জৈনরা মনে করেন এই বিশ্বব্রষ্মন্ডের সব কিছুতেই এমনকি পাথর, শিলা এবং জলে ও প্রাণের অস্তিত্ব বর্তমান।

(II) জৈনরা ঈশ্বরের অস্তিত্ব বিশ্বাস করে। জৈন ধর্মে বেদের কর্তৃত্ব অস্বীকার করে এবং সমাজে ব্রাহ্মণদের আধিপত্য মানেন না। জৈনদের মতে মুক্তির জন্য কোনো যাগযজ্ঞের প্রয়োজন নেই। সঠিক জ্ঞান, সঠিক বিশ্বাস এবং সঠিক কাজের মাধ্যমে মুক্তি সম্ভব।

(III)  জৈনদের মতে, পূর্ব জন্মের কর্মফলের জন্যই কোনো মানুষ বিশেষ জাতে জন্ম গ্রহণ করে।মহাবীরের মতে জন্ম ও মৃত্যুর চক্র থেকে নির্বান লাভই মানুষের জীবনের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। অহিংসা, কঠোর কৃচ্ছসাধন, অনাসক্তি, ধ্যান, ইত্যাদির মাধ্যমেই মুক্তিলাভ সম্ভব।

অতিরিক্ত প্রশ্ন

4. গান্ধার শিল্পের বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো।

উত্তর: (i) কুষাণ যুগে উত্তর-পশ্চিম ভারতের সীমান্ত অঞ্চলে গান্ধার শিল্পের বিকাশ ঘটেছিল।

(ii) এই ঘরানার শিল্পের কৌশলের সঙ্গে গ্রিক শিল্পের সঙ্গে ভারতীয় শিল্পের সমন্বয় লক্ষ করা যায়।

(iii) বাস্তব ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে বুদ্ধের মূর্তি গড়া হয়েছিল।আর মানব শরীর গঠিত হয় শারীরিক বিদ্যার নিয়ম মেনেই।

(iv) মূর্তির শারীরিক সৌন্দর্যবৃদ্ধির জন্য অলংকার, পরিচ্ছদ এবং বস্ত্র ব্যবহার করা হত।

(v) গান্ধার শিল্পের প্রায় সবটাই ছিল বৌদ্ধ ভাবনার উপর ভিত্তি করে।

(vi) মূর্তির আস্তরণ এবং অলংকরণে প্লাস্টারের ব্যবহার ছিল গান্ধার শিল্পের অন্যতম কৌশল।

5. মথুরা শিল্পের কয়েকটি বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ করো।

উত্তর: (i) গান্ধার শিল্পের সমসাময়িক মথুরা শিল্পের বিকাশ ঘটেছিল। এই শিল্পে দেশীয় ঐতিহ্য ও ধারাকেই অনুসরণ করা হয়েছিল।

(ii) মথুরা শিল্পে বুদ্ধ এবং মহাবীরের সুন্দর মূর্তি গড়ে তোলা হয়েছিল।
(iii) বৌদ্ধধর্মের মহাযান ধর্মমতের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এই শিল্পরীতিতে বুদ্ধ ও বোধিসত্ত্বের মূর্তির আকার, দাঁড়ানোর ভঙ্গিমা ইত্যাদি স্থির করা হয়।
(iv) মথুরা শিল্পই কনিষ্কের মস্তকহীন মূর্তির জন্য প্রসিদ্ধ।

6. জৈন ও বৌদ্ধধর্মের উৎপত্তির কারণসমূহ সংক্ষেপে আলোচনা করো***

উত্তর: খ্রিস্ট পূর্ব ষষ্ঠ শতকে জৈনধর্মের উৎপত্তির কারণসমূহ আলোচনা করা হল—

(i) বেদ পরবর্তীযুগে বর্ণবিভক্ত সমাজে বিদ্বেষের সৃষ্টি হয়। বৈদিক সমাজ প্রথমে চারটি বর্ণে বিভক্ত ছিল। ব্রাক্ষ্মণদের কাজ ছিল পূজার্চনা এবং শিক্ষা দান করা। তাদেরকে সমাজের সর্বোচ্চ স্থানে বসানো হয়েছিল। দান গ্রহণ, কর প্রদান ও শাস্তি প্রদান থেকে মুক্তিসহ নানা সুযোগসুবিধা ভোগ করত। সামাজিক মর্যাদার দিক থেকে ক্ষত্রিয়রা ছিল দ্বিতীয় স্থানে। তাদের কাজ ছিল যুদ্ধবিদ্যা, শাসনকার্য পরিচালনা এবং জনগণ-এর থেকে কর সংগ্রহ করা। বৈশ্যগণ কৃষি উৎপাদন, পশুপালন এবং ব্যাবসাবাণিজ্যের সাথে যুক্ত ছিল। তারাই ছিল রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ করদাতা। শূদ্রদের কাজ ছিল উপরের তিন শ্রেণির সেবা করা।

(ii) শাসক ক্ষত্রিয় শ্রেণি ব্রাক্ষ্মণদের ধর্মীয় বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি এবং অধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। জৈনধর্মের প্রবর্তক বর্ধমান মহাবীর এবং গৌতম বুদ্ধ উভয়েই ক্ষত্রিয় বংশোদ্ভূত এবং ব্রাক্ষ্মণ শ্রেণির কর্তৃত্ব বিরোধী। ব্রাক্ষ্মণ ও ক্ষত্রিয় শ্রেণির অতিরিক্ত প্রাধান্য বৃদ্ধির কারণে বৈশ্য এবং শূদ্রগণও সন্তুষ্ট ছিল না। বর্ণ অনুসারেই সামাজিক সুবিধা এবং শাস্তি নির্ধারিত হত। নিম্নবর্গের লোকেদের শাস্তির মাত্রা ছিল মারাত্মক।
(iii) নতুন কৃষি পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে নতুন করে কৃষি অর্থনীতি গড়ে উঠে। চাষের কাজে গোরু টানা লাঙলে লোহার ফলা যুক্ত হওয়ায় চাষের গতি অনেক বেড়ে যায়। বৈদিক বাণী কৃষিকাজের অগ্রগতির পথে বাধা সৃষ্টি করে।

(iv) কৌশাম্বী, কুশিনগর ইত্যাদির মতো শহরের সংখ্যা বৃদ্ধির এবং মুদ্রা ব্যবস্থার ফলে ব্যাবসাবাণিজ্যের প্রসার ঘটে। এতে বৈশ্য শ্রেণির প্রভূত অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ঘটে।

এইভাবে জৈন এবং বৌদ্ধধর্মের সহজসরল ধর্মাচরণ শিক্ষা আর ধর্মপ্রচারে প্রাকৃত ও পালি ভাষার ব্যবহার মানুষকে এই ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট করে তোলে।

বৌদ্ধ ধর্মের মূল নীতির আলোচনা করো।(TBSE Final 2023)

উত্তর: ভূমিকাঃ খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে ভারতের ইতিহাসে বৌদ্ধ ধর্মের আবির্ভাব ঘটে। গৌতম বুদ্ধ এই ধর্মমত প্রচার করেন। তিনি ৪৯ দিন যোগাসনে উপবিষ্ঠ থাকার পর ‘বোধিজ্ঞান’ অর্জন করেন তাঁর প্রবর্তিত ধর্মমতের বিবরণ ‘ত্রিপিটক’ নামক গ্রন্থে পাওয়া যায়।

ধর্মচক্র প্রবর্তন : দিব্যজ্ঞান লাভের পর বুদ্ধদেব কাশির নিকটবর্তী সারনাথের মৃগদাব উপবনে তাঁর পাঁচজন সঙ্গীর কাছে তিনি প্রথম তাঁর ধর্মমত প্রচার করেন যারা ‘পঞভিক্ষু’ নামে পরিচিত। এই ঘটনার ইতিহাসে ‘ধর্মচক্র প্রবর্তন’ নামে খ্যাত।

আর্যসত্য: গৌতম বুদ্ধ তাঁর প্রবর্তিত ধর্মমতকে চারটি মূল সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত করেন। এগুলো হল- (ক) জগৎ দুঃখময় (খ) কামনা বাসনা ও আসক্তিই হল দুঃখের কারন (গ) কামনা বাসনা ও আসক্তি নিবৃত্তি হলে মুক্তি সম্ভব (ঘ) বাসনা ও আসক্তি বিনাসের উপায় হল অষ্টাঙ্গিক মার্গ’র অনুসরণ। বৌদ্ধধর্মে এই চারটি সত্যই ‘আর্যসত্য’ নামে পরিচিত। –

অষ্টাঙ্গিক মার্গ : অষ্টাঙ্গিক মার্গ বলতে গৌতম বুদ্ধ আটটি পথ বা উপায়ের কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন এ আটটি পথ অনুসরণ করলে পরমজ্ঞান বা মুক্তি লাভ করা সম্ভব। বুদ্ধদেব প্রবর্তিত আটটি পথ বা উপায় হল— (ক) সৎ বাক্য (খ) সৎ কার্য (গ) সৎ জীবন (ঘ) সৎ চেষ্টা (ঙ) সৎ সংকলন (চ) সৎচিন্তা (ছ) সৎ দৃষ্টি এবং (জ) সৎ সমাধি।

নির্বাণ লাভ: নির্বাণ হল সকল প্রকার পার্থিব বন্ধন থেকে মুক্তি এবং তা কামনা বা বাসনা, শোক, দুঃখ কষ্টের উর্দ্ধে এমন এক অবস্থান সেখানে পরম শাস্তি পাওয়া যায়। অষ্টাঙ্গিক মার্গ অনুশীলনের মাধ্যমে পরমজ্ঞানের সঞ্চার হয় এবং তার মাধ্যমে নির্বাণ বা মোক্ষ লাভ করা যায়।

পঞ্চশীল : গৌতমবুদ্ধ তাঁর ধর্ম গ্রহণকারী মানুষের জন্য একটি আচারণবিধি তৈরী করেন যা ‘পঞ্চশীল’ নামে পরিচিত। পঞ্চশীল নীতির পাঁচটি নীতি হল— (ক) চুরি না করা, (খ) অসত্য পরিহার করা, (গ) হিংসা না করা, (ঘ) ব্যভিচার না করা, (ঙ) অন্যায় না করা।

ত্রিপিটক: বৌদ্ধদের ধর্মগ্রন্থ হল ‘ত্রিপিটক’এটি তিনটি খন্ডে বিভক্ত, সূত্তপিটক, বিনয় পিটক, অভিধম্ম পিটক এই গ্রন্থগুলোতে বৌদ্ধ দর্শণের নানা দিকের আলোচনা করা হয়েছে।

পরিশেষে বলা যায় যে, বৌদ্ধ ধর্মের মূলকথা হল জন্ম-জন্মান্তর থেকে মুক্তি। আর এই আদর্শে বিশ্বাসী অনেক মানুষ রয়েছেন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে।

ব্রিটিশ রাজত্ব এবং বিদ্রোহীরা : ১৮৫৭-এর বিদ্রোহ এবং এর বিবরণ

1.১৮৫৭-র বিদ্রোহ ব্যর্থ হয়েছিল কেন আলোচনা করো।

উত্তর: ১৮৫৭-র বিদ্রোহের ব্যর্থতার পেছনে অনেকগুলি কারণ ছিল—

(i) পরিকল্পনা ও সংগঠনের অভাব: ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদারের মতে, বিদ্রোহীদের কোনো প্রকার সামরিক পরিকল্পনা ও সংগঠন ছিল না। দিল্লি-সব কিছু অঞ্চলে ব্রিটিশ শাসনের উচ্ছেদ ঘটালেও ইংরেজদের বিরুদ্ধে পালটা আক্রমণের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি।ফলে বিদ্রোহীদের মনোবল ভেঙে যায়।

(ii) উপযুক্ত নেতৃত্বের অভাব: এই বিদ্রোহকে সফল করার জন্য বিদ্রোহীদের মধ্যে উপযুক্ত কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব গড়ে ওঠেনি। রানি লক্ষ্মণীবাঈ, নানাসাহেব,বাহাদুর শাহ প্রমুখ নিজ নিজ রাজা পুনরুদ্ধার করতে বস্ত ছিলে। ফলে ভারত থেকে ইংরেজদের বিতাড়িত করার জন্য কোনো কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা তৈরি করা হয়নি।

(iii) বিদ্রোহের স্বল্প ব্যাপ্তি: চতুর্থত, মহাবিদ্রোহ ভারতের সমস্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েনি। দক্ষিণ ভারত ও পশ্চিম ভারতের বিস্তীর্ণ অংশ শান্ত ছিল। এমনকি শিখ ও গোর্খা বাহিনী বিদ্রোহ দমনে ব্রিটিশদেরসাহায্য করেছিল। বস্তুত সারা দেশে বিদ্রোহ ছড়িয়ে না পড়ার ফলে ইংরেজরা দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারত থেকে সেনাবাহিনী এনে সহজেই বিদ্রোহ দমন করেছিল।
(iv) উন্নত সমারস্ত্রের অভাব: বিদ্রোহী সেনাদের উন্নত অস্ত্রশস্ত্রের অভাব ছিল। অন্যদিকে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে উন্নত মানের অস্ত্র এবং আউট্রাম, হিউরোজ প্রমুখদক্ষ সেনাপতি নেতৃত্ব দিয়েছিল। এদের আক্রমণের সামনে ভাতীয় সিপাহিরা সফলহতে পারেনি।

পরিশেষে বলা যায়, সিপাহিরা এই বিদ্রোহ শুরু করলেও সাধারণ মানুষ এই বিদ্রোহে স্বতঃস্ফূর্তভাবে যোগাদনা করেনি। শুধুমাত্র কিছু রাজা, জমিদার ও অভিজাত শ্রেণিরমানুষ মহাবিদ্রোহের যোগ দিয়েছিল। ফলে জনসমর্থনের অভাবে বিদ্রোহ সহজেই ব্যর্থ হয়ে যায়।

2. ১৮৫৭-র মহাবিদ্রোহের ফলাফল বা তাৎপর্য লেখো।

উত্তর: ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহ ভারতের ইতিহাসে এক গৌরবময় অধ্যায়। এটি ছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম। এই বিদ্রোহ ব্যর্থ হলেও ভারতবর্ষের ইতিহাসে মহাবিদ্রোহের ফলাফল বা তাৎপর্য ছিল নিম্নরূপ—

(i) ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহে সিপাহি ও জনসাধারণের মিলিত প্রয়াস ব্রিটিশ শাসনের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিল। তাই এই বিদ্রোহ থেকে শিক্ষা নিয়ে ইংরেজরা পরবর্তীকালে সামরিক শক্তিকে জনসাধারণের কাছে থেকে বিচ্ছিন্ন রাখার নীতি অনুসরণ করে।

(ii) মহাবিদ্রোহের ফলে কোম্পানির শাসন বাতিল হয়। পরিবর্তে সরাসরি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের শাসনাধীনে ভারতকে আনা হয়। রানি ভিক্টোরিয়া ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের এক ঘোষণার মাধ্যমে কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটান। ভারত সচিবের মাধ্যমে এদেশকে শাসনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ভারত সচিব ভাইসরয়দের সাহায্যে ভারতবর্ষের শাসন পরিচালনা শুরু করেন।

(iii) মহারানি ভিক্টোরিয়ার ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে স্বত্ববিলোপ নীতি বাতিল হয়। ব্রিটিশ সরকার ভারতে সাম্রাজ্যবিস্তার নীতি বাতিল করে। দেশীয় রাজারা পুনারায় দত্তক পুত্র গ্রহণের অধিকার পায়। এ ছাড়া ভারতীয়দের জাতিধর্মবর্ণনির্বিশেষে সরকারি উচ্চপদে নিয়োগের কথা বলা হয়।

(iv) মহাবিদ্রোহের সেনাবাহিনীকে সাজানো হয়। সেনাবাহিনীতে ইউরোপীয় সৈন্যের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়। এ ছাড়া কামান ও গোলন্দাজ বাহিনীর মতো গুরুত্বপূর্ণ বাহিনীতে ইংরেজ সৈন্যদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। আর ভারতীয় সৈন্যের সংখ্যা হ্রাস করা হয়।

(v) মহাবিদ্রোহের ফলে মোগল সাম্রাজ্যের সম্পূর্ণ বিলুপ্তি ঘটে। মুসলিম সমাজের দ্বারা ইংরেজদের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়েছিল। ফলে মুসলমানদের প্রতি বিট্রিশ সরকারের বিরোধিতা বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে দমন নীতির ফলে ইংরেজ সরকারের সঙ্গে ভারতীয়দের সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে |

পরিশেষে বলা যায়, মহাবিদ্রোহের ফলে ভারতের সমাজজীবনে পরিবর্তন আসে। হিন্দুরা ইংরেজি শিক্ষা গ্রহণ করে বিভিন্ন সুযোগসুবিধা লাভ করে। আর মুসলমান সম্প্রদায় ক্রমশ পিছিয়ে পড়ে।

3. ইংরেজরা বিদ্রোহীদের দমন করার জন্য কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল?

উত্তর: ব্রিটিশ শক্তিকে ইতিপূর্বে ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের মতো এত ব্যাপক বিদ্রোহের মোকাবিলা করতে হয়নি। ব্রিটিশরা বুঝতে পেরেছিল যে বিদ্রোহকে শক্ত হাতে দমন না করলে ভবিষ্যতে ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য ভেঙে পড়বে। সুতরাং এই বিদ্রোহ দমনে ব্রিটিশ সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল, সেগুলি হল—

(i) সামরিক আইন জারি ও ব্যাপকহারে কারারুদ্ধ করা:উত্তর ভারতে বিদ্রোহ দমনে সামরিক আইন জারি করা হয়।এর পাশাপাশি সামরিক আধিকারিকদের হাতে বিচার ও শাস্তিপ্রদানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। একইভাবে বিদ্রোহী এবং বিদ্রোহীদের প্রতি সহানুভূতিশীল ব্যক্তিদেরও দোষী ঘোষণা করা হয়।

(ii) নৃশংশ শাস্তিপ্রদান: বিদ্রোহীদের শাস্তির ব্যবস্থা শুধু দ্রুতই করা হত না। এটা ছিল অত্যন্ত নিষ্ঠুর ও নারকীয়। সকল ধরনের শাস্তিই কার্যকরী করা হয়। অভিযুক্ত বিদ্রোহীদের প্রকাশ্য স্থানে কামানের মুখে বেঁধে উড়িয়ে দেওয়া হত। আবার অনেককে গাছে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখা হত। এসবের উদ্দেশ্য ছিল, এমন ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করা যাতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে কেউ মাথা তুলতে না পারে।

(iii) কূটনীতি: বিদ্রোহীদের দুর্বল এবং ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ প্রভুরা কূটনীতির আশ্রয় গ্রহণ করে। বিদ্রোহীদের সাথে যোগাযোগ নেই এমন দেশীয় রাজাদের, তারা স্বপক্ষে রাখতে চেষ্টা করত।

(iv) প্রযুক্তির ব্যবহার: যুদ্ধক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনের জন্য. ব্রিটিশরা আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে। শুধু উন্নত অস্ত্রের ব্যবহারই নয়, বিদ্রোহ দমনে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থারও সাহায্য নেওয়া হয়।
যাই হোক, এত কিছুর মধ্যে অসীম সাহসে লড়াই করা সত্ত্বেও বিদ্রোহীরা একসময় ব্রিটিশ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ায় শক্তি হারায়।

4. অধীনতামূলক মিত্ৰতা নীতির শর্তাবলি লেখো। অথবা, অধীনতামূলক মিত্রতা নীতির অন্যতম বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো।

উত্তর: ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য বিস্তারের লক্ষ্যে লর্ড ওয়েলেসলি ১৭৯৮ খ্রিস্টাব্দে অধীনতামূলক মিত্রতা নীতির প্রবর্তন করেন। এই নীতি গ্রহণ করে সন্ধিপত্রে স্বাক্ষর করলে দেশীয় রাজারা নিম্নলিখিত শর্তগুলি অনুসরণ করতে বাধ্য থাকতেন।

(i) তাদের শাসিত অঞ্চলে স্থায়ীভাবে ব্রিটিশ সামরিক বাহিনী রাখতে হবে।

(ii) এই ব্রিটিশ সৈন্যদের ভরণপোষণের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট রাজ্যকে গ্রহণ করতে হবে।

(iii) তার রাজ্যে একজন ব্রিটিশ রেসিডেন্টকে রাখতে হবে।

(iv) ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া তিনি অন্য কোনো ইউরোপীয়কে কোন্ কাজে নিয়োগ করতে পারবেন না এবং গভর্নর জেনারেলের আদেশ ছাড়া অন্য কোনো শাসকের সাথে কোনো ধরনের আলাপআলোচনা করতে পারবেন না।

সিপাহি বিদ্রোহের কারণসমূহ আলোচনা করো।(TBSE Final 2023)

উত্তর: ১৮৫৭খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহ ছিল ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের প্রথম সর্বভারতীয় সংগ্রাম। এই মহাবিদ্রোহের সৃষ্টির পিছনে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয়, সামরিক প্রভৃতি কারণগুলি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

(i) রাজনৈতিক কারণ: ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহ সৃষ্টির পিছনে রাজনৈতিক কারণ ছিল অন্যতম। লর্ড ওয়েলেসলি তাঁর অধীনতামূলক মিত্ৰতা নীতির মাধ্যমে অধিকাংশ দেশীয় রাজ্যকে কোম্পানির প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ অধীনতার মধ্যে দিয়ে আসেন।এর ফলে একাধারে দেশীয় রাজন্যবর্গের মনে আতঙ্ক ও ঘৃণার সৃষ্টি হয়, অন্যদিকে তারা ব্রিটিশবিরোধী হয়ে ওঠে।

(ii) অর্থনৈতিক কারণ: মহাবিদ্রোহ সৃষ্টির জন্য অর্থনৈতিক কারণ ছিল বিশেষ উল্লেখযোগ্য। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ইংল্যান্ডের শিল্পবিপ্লবের জন্য এদেশের কাঁচামাল এবং প্রচুর পরিমাণ অর্থ ও সম্পদ নিজেদের দেশে নিয়ে যায় এবং সেখানকার যন্ত্রে তৈরি দ্রব্য এদেশে বিক্রয় শুরু করে। ফলে ভারতের বস্ত্র শিল্প ও অন্যান্য কুটির শিল্পগুলি ধ্বংস হয়ে যায় এবং ভারতবাসীর দুর্দশা চরমে ওঠে। তা ছাড়া ব্রিটিশ সরকারের বিভিন্ন ধরনের ভূমিরাজস্ব নীতি প্রচলনের ফলে কৃষক সম্প্রদায়ের জীবন দুর্বিসহ হয়ে ওঠে।

(iii) সামাজিক কারণ: মহাবিদ্রোহ ঘটার পিছনে সামাজিক কারণও দায়ী ছিল। বিজেতা ব্রিটিশ সরকারের বিজিত ভারতবাসীর প্রতি বৈষম্যমূলক আচার-আচারণ ভারতীয়দের অসন্তোষ বৃদ্ধি করেছিল। সরকারি উচ্চপদে ভারতীয়দের নিয়োগ করা হত না। এই বিষয়গুলি ইংরেজদের প্রতি ভারতীয়দের বিরূপ মনোভাব তৈরি করেছিল।

(iv) ধর্মীয় কারণ: ভারতীয়রা খ্রিস্টান মিশনারিদের কার্যকলাপকে সন্দেহের চোখে দেখত। তাদের গির্জা তৈরি, খ্রিস্টধর্ম প্রচার, হিন্দু দেবদেবী সম্পর্কে সমালোচনামূলক বক্তব্য ধর্মপ্রাণ ভারতীয়দের মনে ক্ষোভ সৃষ্টি করে।

(v) সামরিক কারণ: ইংরেজ সরকারের প্রতি ভারতীয় সিপাহিদের অসন্তোষ এই বিদ্রোহের অন্যতম কারণ ছিল। ইংরেজ সেনাদের তুলনায় ভারতীয় সিপাহিরা অনেক কম বেতন পেত। যোগ্যতার দিক থেকে ভারতীয় সিপাহিরা সমকক্ষ হলেও ইংরেজ সৈন্যরা বহু অতিরিক্ত সুযোগসুবিধা পেত। ফলে ভারতীয় সিপাহিদের মনে বিদ্রোহের মনোভাব সৃষ্টি হয়।

 রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর প্রশ্নমান 5

 ইট, পুঁতি ও অস্থিসমূহ : হরপ্পা সভ্যতা

 1. (ক) হরপ্পা সভ্যতা কে, কত খ্রিস্টাব্দে আবিষ্কার করেন। (খ) হরপ্পা সভ্যতার বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো।

উত্তর: (ক) আবিষ্কার: ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে প্রখ্যাত প্রত্নতত্ত্ববিদ রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় দয়ারাম সাহানির সহায়তায় যথাক্রমে সিন্ধুপ্রদেশের লারকানা জেলার মহেন-জো-দারো এবং পাঞ্জাবের মন্টগোমারি জেলার হরপ্পা নামক স্থান দুটিতে খননকার্য চালিয়ে এক সুপ্রাচীন সভ্যতার আবিষ্কার করেন। এই সুপ্রাচীন সভ্যতাই হল—হরপ্পা সভ্যতা।

 (খ)বৈশিষ্ট্যসমূহ: হরপ্পা সভ্যতার আবিষ্কার ভারত তথা বিশ্বের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা। নীচে এই সভ্যতার বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করা হল—

(i) নগর বিন্যাস: হরপ্পা সভ্যতার একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল এর সুপরিকল্পিত নগরী। শহরের অধিকাংশ বাড়িই ছিল পোড়াইটের দ্বারা নির্মিত।

(ii) স্নানাগার ও পয়ঃপ্রণালী: হরপ্পা সভ্যতার আবিষ্কৃত প্রতিটি বাড়িতেই স্নানাগার ও পয়ঃপ্রণালীর সুবন্দোবস্ত ছিল। হরপ্পা নগরীতে খননকার্যের ফলে একটি সুবৃহৎ স্নানাগার আবিষ্কৃত হয়েছিল। এই স্নানাগারটি ৩৯ ফুট লম্বা, ২৩ ফুট প্রশস্ত এবং ৮ ফুট গভীর।

(iii) দুর্গের অবস্থান: হরপ্পা ও মহেন-জো-দারোতে নিরাপত্তার জন্য যে বড়ো বড়ো দুর্গ নির্মিত হয়েছিল তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।

(iv) কৃষিকাজ: হরপ্পা সভ্যতার অধিবাসীদের প্রধান জীবিকা ছিল কৃষি। কৃষিজাত দ্রব্যের মধ্যে গম, যব, বার্লি ছিল প্রধান। 

(v) আবর্জনাগারের অবস্থান: হরপ্পা সভ্যতায় নগরীর রাস্তাগুলি ছিল প্রশস্ত এবং রাস্তার মাঝে আবর্জনা ফেলার জন্য আবর্জনাগারের ব্যবস্থা ছিল। এ ছাড়াও প্রত্যেক বাড়ি থেকে জল নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা ছিল।

(vi) পোশাক-পরিচ্ছদ: হরপ্পা সভ্যতায় সুতিবস্ত্র ও পশম বস্ত্রের ব্যাপক ব্যবহার ছিল। সে যুগে স্ত্রী ও পুরুষ উভয়ই বিভিন্ন ধরনের অলংকার পরিধান করত। স্ত্রীলোকেরা কেশ বিন্যাসও করতো।

(vii) ধর্ম: হরপ্পা সভ্যতার লোকেরা প্রধানত প্রকৃতির উপাসক হলেও মাতৃদেবী এবং শিবের পুজো করত। সিলমোহর থেকে জানা যায় যে, তারা শিব ও শক্তির পুজো ছাড়াও অগ্নি, গাছ প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তির পুজো করত।

সবশেষে বলা যায় যে, প্রতিটি সভ্যতার মানুষের মতো হরপ্পা সভ্যতার মানুষও ব্যতিক্রম ছিল না। তাই হরপ্পা সভ্যতার মানুষেরও জীবনধারণের নানা বৈশিষ্ট্য ছিল।

2. হরপ্পা সভ্যতার বহির্বাণিজ্য সম্পর্কে কী জান?

উত্তর: হরপ্পার মানুষ সমসাময়িক অন্যান্য সভ্যতার সঙ্গে যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল তার অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া গেছে।

(i) পণ্ডিতেরা অভিমত ব্যক্ত করেন যে, হরপ্পার সঙ্গে পশ্চিম এশিয়া, ওমান, এবং মেসোপটেমিয়ার বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল। মেসোপটেমিয়ার সঙ্গে হরপ্পার যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল তার অনেক নিদর্শন পাওয়া গেছে। মেসোপটেমিয়াতে হরপ্পা সংস্কৃতির পুঁতি, সিলমোহর ইত্যাদি পাওয়া গেছে।

(ii) সুমেরীয় সভ্যতার উপাদান যেমন, ভেড়ার নমুনা, মূর্তি এবং পোড়ামাটির আংটি হরপ্পায় পাওয়া গেছে।

(iii) মেসোপটেমীয় গ্রন্থে উল্লেখ আছে যে, মেসোপটেমিয়ার পণ্য আমদানি-রপ্তানি কেন্দ্র ছিল দিলমুন (সম্ভবত বাহারিন দ্বীপ), মেলুহা এবং মগান।

(iv) হরপ্পা অঞ্চলে মেলুহা ও মগানের চিহ্নিত সামগ্রী পাওয়া গেছে। মেলুহাকে সমুদ্র ভ্রমণকারীদের স্থান বলে বর্ণনা করা হয়েছে।

(v) জাহাজ এবং নৌকার নিদর্শন দেখে পণ্ডিতেরা মনে করেন যে সেগুলি হরপ্পার সঙ্গে বহির্বিশ্বের বাণিজ্যিক সম্পর্কের প্রমাণ বহন করে।

(vi) প্রত্নতাত্ত্বিক উৎস থেকে জানা যায় যে, হরপ্পার মানুষ ওমান থেকে তামা আমদানি করত। হরপ্পার একটি বিশাল পাত্র পাওয়া গেছে ওমানে। এতে অনেকে মনে করেন যে হয়তো তামার বিনিময়ে ওমানে পাত্রটি পাঠানো হয়েছিল।

(vii) রাসায়নিক বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, হরপ্পার শিল্পের মধ্যে নিকেলের উপস্থিতি রয়েছে। মেসোপটেমীয় গ্রন্থ থেকে আরও জানা যায় যে, মগান থেকে হরপ্পায় তামা আসত এবং মেসোপটেমিয়া অঞ্চলে প্রাপ্ত তামাতেও নিকেলের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।

অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর

3.সিন্ধু সভ্যতার ধ্বংসপ্রাপ্তের বা পতনের কারণগুলি আলোচনা করো।***

উত্তর: আনুমানিক কৃষির ১৫০০ খ্রিস্টাব্দে হরপ্পা সভ্যতা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। তবে এই ধ্বংসের সঠিক কোনো কারণ জানা যায় নি। ঐতিহাসিকরা শুধুমাত্র এই সভ্যতার ধ্বংসের কতগুলি কারণ অনুমান করেছেন।

নিচে এই সম্ভাব্য কারণগুলি আলোচনা করা হলো—

জলবায়ুর পরিবর্তন : ঐতিহাসিকরা হরপ্পা সভ্যতার ধ্বংসের পশ্চাতে জলবায়ুর পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন। তাঁরা বলেছেন—এই সভ্যতায় একসময় বৃষ্টির পরিমাণ হ্রাস পায়। ফলে ভূগর্ভস্থ লবন উপরে ওঠে আসে এবং এই সভ্যতাকে মরুভূমিতে পরিণত করে। ফলে ইহা ধ্বংস হয়ে যায়।

প্রাকৃতিক বিপর্যয় : অধিকাংশ ঐতিহাসিক হরপ্পা সভ্যতার ধ্বংসের পেছনে প্রাকৃতিক শক্তির ভূমিকাকে মেনে নিয়েছেন। তাঁদের মতে, বন্যা, ভূমিকম্প, খড়া, অগ্নিকান্ড ইত্যাদির কারণে এই সভ্যতা ধ্বংসের মুখে পতিত হয়।

বৈদেশিক আক্রমণ : ঐতিহাসিকদের মতে, হরপ্পার অধিবাসীরা নিজেদের প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা করতে না পারায় বৈদেশিক আক্রমণকে তারা প্রতিহত কতে পারেন নি। তাই বৈদেশিক আক্রমণ হরপ্পা সভ্যতার অন্যতম কারণ বলে অনেকে মনে করেন।

গৃহ যুদ্ধ : বিভিন্ন ঐতিহাসিক হরপ্পা সভ্যতা ধ্বংসের জন্য গৃহযুদ্ধকেও দায়ী করেছেন। হরপ্পা উপত্যকা অঞ্চলে খননকার্যের ফলে প্রাপ্ত স্তুপিকৃত কঙ্কাল, মাথায় ভারী আঘাতের ফলে মৃত কঙ্কাল প্রভৃতি এই মতকে সমর্থন করে।

সিন্ধু নদের বন্যা: সিন্ধু নদের বন্যাকে হরপ্পা সভ্যতার ধ্বংসের আরেকটি কারণ বলে ঐতিহাসিকরা মতামত ব্যক্ত করেছেন। বস্তুত সিন্ধু নদের গর্ভে বালির স্তুপ জমে যাওয়ায় নদের গভীরতা নষ্ট হয় এবং এর ফলে হরপ্পা সভ্যতায় প্রায়ই বন্যা হতো। বন্যার হাত থেকে নগরকে রক্ষার করার জন্য বাঁধ নির্মাণ করা হলেও সেগুলিকে সময়মতো মেরামত না করায় তা সভ্যতা ধ্বংসের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

পরিশেষে এটুকুই বলা যায় যে, হরপ্পা সভ্যতা ধ্বংসের পেছনে এক বা একাধিক কারণ থাকতে পারে বলে অনেক আধুনিক ঐতিহাসিক মত পোষণ করেছেন।

1.গান্ধিজির নেতৃত্বে ডান্ডি অভিযানের প্রধান ঘটনাসমূহ বর্ণনা করো।ডান্ডি অভিযানের তাৎপর্য লেখো।***

উত্তর: ডান্ডি অভিযানের প্রধান ঘটনাসমূহ:

(i)গান্ধিজি তাঁর ৭৮ জন অনুগামী নিয়ে ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ১২ মার্চ গুজরাটের সবরমতি আশ্রম থেকে ডান্ডি অভিযান করেন

(ii)গান্ধিজির এই ডান্ডি অভিযানের সংবাদ সমগ্র দেশে বিস্তার লাভ করে।এই অভিযানে হাজার হাজার মানুষ অভিনন্দিত করার পাশাপাশি বহু মানুষ তাঁর এই অভিযানে যুক্ত হয়।

(iii)গান্ধিজিকে ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে ৬ এপ্রিল গান্ধিজি ডান্ডি আসেন এবং সমুদ্র-তীর থেকে একমুঠো লবন সংগ্রহ করে লবণ আইন ভঙ্গ করেন।গান্ধিজি ব্রিটিশ প্রবর্তিত আইনকে অস্বীকার করার প্রতীক স্বরূপ ডান্ডি অভিযান করে লবণ আইন ভঙ্গ করেন।

(iv)গান্ধিজির এই প্রতীকি আইন ভঙ্গের দ্বারাই সমগ্র দেশে আইন অমান্য আন্দোলন শুরু হয় এবং সমগ্র দেশে এই আন্দোলনের বিস্তৃতি ঘটে। ভারতের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে খান আব্দুল গফফর খানের নেতৃত্বে আইন অমান্য আন্দোলন ব্যাপক রূপ ধারণ করে।

তাৎপর্ :

(i) লবণ উৎপাদনে ব্রিটিশের একচেটিয়া অধিকারে ভারতীয়দের মধ্যে যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছিল, লবণ আইন ভঙ্গের মধ্য দিয়ে তা ব্যক্ত হয়েছিল ।

(ii) লবণ আইন ভঙ্গের অভিযানে গান্ধিজি জনগণের কাছ থেকে যে সাড়া পান তাতে ভারতীয়দের মধ্যে ব্রিটিশ বিরোধী মনোভাব তীব্র ছিল – তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটে।

(iii) সাধারণ গরিব মানুষ থেকে শুরু করে ধনী প্রত্যেকের কাছেই লবণ অপরিহার্য হওয়ায় গান্ধিজির লবণকে নিয়ে আন্দোলন জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল।

2.অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি এবং উদ্দেশ্য আলোচনা করো। এই আন্দোলনের গুরুত্ব কী ছিল?***

উত্তর:অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি:অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি ছিল দু-ধরনের।যেমন

(i)ইতিবাচক কর্মসূচি: iঅসহযোগ আন্দোলনের ইতিবাচক কর্মসূচিগুলি হল- (ক)চরকা এবং তাঁতের ব্যাপক প্রচলন।(খ)দেশীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন।(গ)অস্পৃশ্যতাদূরীকরণ করা।(ঘ)হিন্দু-মুসলমান ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা(ঙ)মাদক দ্রব্য বর্জন করা।

(ii) নেতিবাচক কর্মসূচি :অসহযোগ আন্দোলনের নেতিবাচক কর্মসূচির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল(ক)সকল ক্ষেত্রেবিদেশি সরকারের সঙ্গে অসহযোগিতা করা।(খ)সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বর্জন করা।(গ)সরকারি চাকরি এবং আইন আদালত বর্জন করা।(ঘ)বিদেশি পণ্য বর্জন করা।(ঙ)সরকারি পদবি এবং উপাধি বর্জন করা।

উদ্দেশ্য:(i) কুখ্যাত রাওলাট আইনের দমন-পীড়ন ও নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে দেশবাসীকে আন্দোলনে শামিল করা। (ii) জালিয়ানওয়ালাবাগের মর্মান্তিক গণ হত্যার প্রতিবাদ আন্দোলন গড়ে তোলা। (iii) কংগ্রেসি আন্দোলনে নরমপন্থীদের নিষ্ক্রিয়তা এবং অনুপস্থিতিজনিত শূন্যতায় কংগ্রেসের পক্ষে গণমুখী আন্দোলন পরিচালনা। (iv) খিলাফৎ প্রশ্নে ভারতে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে ঐক্যস্থাপন।

অসহযোগ আন্দোলনের গুরুত্ব: ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অসহযোগ আন্দোলনের গুরুত্ব অপরিসীম। যেমন- (1) গণ চেতনার সম্প্রসারণ: অসহযোগ আন্দোলন ভারতের নানা স্থানে প্রসারিত হওয়ায় সাধারণ জনগণের মধ্যে গণচেতনা সম্প্রসারিত হয়েছিল। বিভিন্ন জায়গায় নানা শ্রেণির মানুষ এই আন্দোলনে শামিল হয়েছিল।

(ii) আন্দোলনের সর্ব ভারতীয় রূপ: অসহযোগ আন্দোলনের সবচেয়ে বড়ো সাফল্য হল এর সর্বভারতীয় রূপ। জাতীয় কংগ্রেসের আহ্বানে গ্রাম শহরের সকল স্তরের মানুষ এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে ইংরেজ সরকারকে উদ্বিগ্ন করে তোলে।

(iii) কংগ্রেসের শক্তি বৃদ্ধি : অসহযোগ আন্দোলনের ফলে কংগ্রেসের শক্তি বৃদ্ধি পায়। মহিলারা সহ অনেকেই কংগ্রেস দলে অংশগ্রহণ করে।এরফলে কংগ্রেস একটি সুসংবদ্ধ রাজনৈতিক সংগঠনে পরিণত হয়।

(iv) নতুন উদ্দীপনার সৃষ্টি: কংগ্রেস দল ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণি নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষকে জাতীয় আন্দোলনের সঙ্গে

যুক্ত করে ভারতীয় রাজনীতিতে এক নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করে।

জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা কী ছিল, সংক্ষিপ্তভাবে ব্যাখ্যা করো।(TBSE Final 2023)

উত্তর: জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকান্ড ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ১৩ই এপ্রিল ঘটে। এক সময় পাঞ্জাবের জনপ্রিয় নেতা সৈফুদ্দিন কিচলু ও ড. সত্যপালকে গ্রেপ্তার করা হলে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায় নির্বিশেষে পাঞ্জাবের অধিকাংশ মানুষ বিক্ষোভে মেতে উঠে। বিক্ষোভ দমন করতে পাঞ্জাব সরকার ১১ই এপ্রিল সমগ্র পাঞ্জাবে সামরিক শাসন জারি করে। ১৩ই এপ্রিল সরকারি দমন নীতির বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ জানাতে প্রায় ১০ হাজার মানুষ জালিয়ানওয়ালাবাগে সমবেত হয়। সভা চলাকালীন জেনারেল ডায়ারের নেতৃত্বে সৈন্যরা নিরস্ত্র জনতার উপর ১৬০০ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে। এই নারকীয় নৃশংস হত্যাকাণ্ডে প্রায় এক হাজার মানুষ প্রাণ দেয়। বহু লোক আহত হয়। সরকারি মতে ৩৭৯ জন নিহত এবং ১২০০ জন গুরুতর আহত হয়। সরকার এই হত্যাকাণ্ডের খবর চেপে রাখার চেষ্টা করলেও সফল হয় নি। ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তে তা ছড়িয়ে পড়ে। ভারতবাসীদের মধ্যে ইংরেজ বিদ্বেষ বহুগুণ বেড়ে যায়। জেনারেল ডায়ারের জীবনীকার নাইজেল কোলেট এই হত্যাকান্ডের জন্য জেনারেল ডায়ারকে ‘অমৃতসরের কসাই’ বলে অভিহিত করেন। চার্চিল এই ঘটনাকে ‘monostrous’ বা দানবীয় বলে আখ্যা দিয়েছেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শাসকবর্গের এই জঘন্য বর্বরতার প্রতিবাদে তাঁকে দেওয়া ‘নাইট’ উপাধি সরকারকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে নেতৃবৃন্দ পর্যন্ত সকলে ব্রিটিশ শাসনের অবসানের জন্য দৃঢ়সংকল্প হয়।

কী প্রেক্ষিতে গান্ধিজি ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন? এটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল (TBSE Final 2023)

উত্তর: ঘটনাবলি:

(i) ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দের ৩ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়। ব্রিটিশ সরকার ভারতীয়দের সাথে কোনোরূপ আলোচনা ছাড়াই ভারতকে যুদ্ধরত দেশ বলে ঘোষণা করে। তাই ভারতীয় জাতীয় নেতৃবৃন্দ মোটেই এতে সন্তুষ্ট ছিলেন না।

(ii) ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে ব্রিটিশ সরকার সাংবিধানিক অচলাবস্থা দূর করার জন্য ভারতে ক্রিপস মিশন পাঠায়।

(iii) ক্ষমতা হস্তান্তর বিষয়ে কংগ্রেসের দাবি প্রত্যাখ্যাত হলে ক্রিপস মিশনের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়। বরং পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে।

(iv) ১৯৪২-এর মধ্যবর্তী সময়ে যুদ্ধ পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করে—জাপানি আক্রমণের বিপদ ভারত সীমান্তে পৌঁছায়।

(v) ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে ৮ মার্চ কংগ্রেসের বোম্বে অধিবেশনে গান্ধিজির নেতৃত্বে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রস্তাব গৃহীত হয়। সিদ্ধান্ত হয় যে, স্বাধীনতা ভারতবাসীর জন্মগত অধিকার। আর তাই ব্রিটিশ শক্তিকে উৎখাতের জন্য আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

গুরুত্ব:

(i) ব্রিটিশের নির্মম অত্যাচার সত্ত্বেও আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে। ব্রিটিশকে এই আন্দোলন সম্পূর্ণরূপে দমন করতে এক বছরের অধিক সময় ব্যয় করতে হয়েছিল। ভারত ছাড়ো আন্দোলন ভারতে ব্রিটিশ শাসনের ভিত্তি নাড়িয়ে দিয়েছিল।

(ii) এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ভারতবাসীর দেশপ্রেম এবং সাহসের পরিচয় পাওয়া যায়। এটি প্রকৃত অর্থেই ছিল একটি গণ আন্দোলন যাতে সব অংশের মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। অনেক ভারতীয় ধর্মঘট, হরতাল এবং ব্রিটিশের বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাতমূলক কাজে যোগদান করে।

(iii) ভারত ছাড়ো আন্দোলন ব্রিটিশের ভারত ত্যাগকে অনিবার্য করে তুলেছিল। ব্রিটিশ সরকার ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে ভারতীয়দের সাথে কথা বলতে সরকারি প্রতিনিধি পাঠাতে বাধ্য হয়েছিল। সরকার এটা ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছিল যে ভারতবাসীর স্বাধীনতার দাবিকে আর উপেক্ষা করা যাবে না।

Class 12 History half-yearly exams, it’s essential to focus on key themes, events, and concepts that are crucial for a comprehensive understanding of the subject. This suggestion guide aims to highlight significant topics, important dates, and critical thinkers that have shaped historical narratives. By concentrating on these areas, you can enhance your understanding and retention, ensuring you’re well-equipped for both your exams and further studies in history. Let’s delve into the pivotal moments and figures that have influenced our world today

Visit my website

www.studytripura.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *